৮৪.সূরা ইনশিকাক سورة الانشقاق Surah Inshiqaq এর তাফসির ও শানে নুযুল

সূরা ইনশিকাক, সূরা ইনশিকাক এর তাফসীর, সূরা ইনশিকাক এর শানে নুযুল,সূরা ইনশিকাক আয়াত ৬, ৮৪ নং সূরা, سورة الانشقاق,সূরা ইনশিকাক এর ফজিলত, সূরা ইনশিকাক বাংলা উচ্চারণ, সূরা ইনশিকাক এর বাংলা অনুবাদ, সূরা ইনশিকাক অর্থ, সূরা ইনশিকাক ১৬, সূরা ইনশিকাক তেলাওয়াত, সূরা আল ইনশিকাক সূরা আল ইনশিকাক বাংলা উচ্চারণ, সূরা আল ইনশিকাক আয়াত ৬, সূরা আল ইনশিকাক এর অর্থ, surah al inshiqaq, surah al inshiqaq in hindi, surah al inshiqaq bangla, surah al inshikak, surah al inshiqaq transliteration, surah al inshiqaq in english, সূরা ইনশিকাক এর ফজিলত,সূরা ইনশিকাক,সূরা ইনশিকাক এর তাফসীর,সূরা ইনশিকাক এর অনুবাদ,سوره الانشقاق, سورة الانشقاق مكتوبة,
৮৪ নং সূরা

সূরার পরিচয় :

সূরার নাম : সূরা ইনশিকাক।সূরার অর্থ : খন্ড-বিখন্ড করণ।
সূরা নং : ৮৪রুকু সংখ্যা : ১
আয়াত সংখ্যা : ২৫সিজদা সংখ্যা : ১
শব্দ সংখ্যা : ১০৮পারার সংখ্যা : ৩০
অক্ষর সংখ্যা : ৪৩৬শ্রেণী : মাক্কী।


সূরা ইনশিকাক سورة الانشقاق Surah Inshiqaq এর তাফসির ও শানে নুযুল


بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহ তা’আলার নামে, যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

(١) إِذَا ٱلسَّمَآءُ ٱنشَقَّتْ

(১) যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে,

(٢) وَأَذِنَتْ لِرَبِّهَا وَحُقَّتْ

(২) ও তার পালনকর্তার আদেশ পালন করবে এবং এটাই এর করণীয়

(٣) وَإِذَا ٱلْأَرْضُ مُدَّتْ

(৩) এবং যখন পৃথিবীকে সম্প্রসারিত করা হবে।

(٤) وَأَلْقَتْ مَا فِيهَا وَتَخَلَّتْ

(৪) এবং পৃথিবী তার গর্ভস্থিত সব কিছু বাইরে নিক্ষেপ করবে ও শূন্যগর্ভ হয়ে যাবে।

(٥) وَأَذِنَتْ لِرَبِّهَا وَحُقَّتْ

(৫) এবং তার পালনকর্তার আদেশ পালন করবে এবং পৃথিবী এরই উপযুক্ত।

(٦) يَٰٓأَيُّهَا ٱلْإِنسَٰنُ إِنَّكَ كَادِحٌ إِلَىٰ رَبِّكَ كَدْحًا فَمُلَٰقِيهِ

(৬) হে মানুষ তোমাকে তোমার পালনকর্তা পর্যন্ত পৌঁছতে কষ্ট স্বীকার করে থাকো, অতঃপর তার সাক্ষাৎ হবে।

(٧) فَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ

(৭) অতঃপর যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে,

(٨) فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا

(৮) অতঃপর তার হিসাব-নিকাশ সহজে হয়ে যাবে

(٩) وَيَنقَلِبُ إِلَىٰٓ أَهْلِهِۦ مَسْرُورًا

(৯) এবং সে তার পরিবার-পরিজনের কাছে হৃষ্টচিত্তে ফিরে যাবে

(١٠)وَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَٰبَهُۥ وَرَآءَ ظَهْرِهِۦ

(১০) এবং যাকে তার আমলনামা পিঠের পশ্চাৎদিক থেকে দেওয়া হবে

(١١) فَسَوْفَ يَدْعُوا۟ ثُبُورًا

(১১) সে মৃত্যুকে আহ্বান করবে

(١٢) وَيَصْلَىٰ سَعِيرًا

(১২) এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

(١٣) إِنَّهُۥ كَانَ فِىٓ أَهْلِهِۦ مَسْرُورًا

(১৩) সে তার পরিবার-পরিজনের মধ্যে আনন্দিত ছিল।

(١٤) إِنَّهُۥ ظَنَّ أَن لَّن يَحُورَ

(১৪) সে মনে করত যে, সে কখনো ফিরে যাবে না।

(١٥) بَلَىٰٓ إِنَّ رَبَّهُۥ كَانَ بِهِۦ بَصِيرًا

(১৫) কেন যাবে না, তার পালনকর্তা তো তাকে দেখতেন।

(١٦) فَلَآ أُقْسِمُ بِٱلشَّفَقِ

(১৬) আমি শপথ করি সন্ধ্যাকালীন লাল আভার

(١٧) وَٱلَّيْلِ وَمَا وَسَقَ

(১৭) এবং রাত্রির এবং তাতে যার সমাবেশ ঘটে

(١٨) وَٱلْقَمَرِ إِذَا ٱتَّسَقَ

(১৮) এবং চন্দ্রের, যখন তা পূর্ণরূপ লাভ করে,

(١٩) لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَن طَبَقٍ

(১৯) নিশ্চয়ই তোমরা এক ধাপ থেকে আরেক ধাপে আরোহণ করবে।

(٢٠) فَمَا لَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ

(২০) অতএব, তাদের কী হলো যে, তারা ঈমান আনে না?

(٢١) وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ ٱلْقُرْءَانُ لَا يَسْجُدُونَ ۩

(২১) যখন তাদের কাছে কোরআন পাঠ করা হয়, তখন সিজদা করে না।

(٢٢) بَلِ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ يُكَذِّبُونَ

(২২) বরং কাফেররা এর প্রতি মিথ্যারোপ করে।

(٢٣) وَٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا يُوعُونَ

(২৩) তারা যা সংরক্ষণ করে, আল্লাহ তা জানেন।

(٢٤) فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ

(২৪) অতএব, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন।

(٢٥) إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍۭ

(২৫) কিন্তু যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।

সূরার আলোচ্য বিষয় :

সূরা ইশিকাকের মূল বিষয়বস্তু হলো, কিয়ামত ও পরকাল। কিয়ামতের পরিস্থিতি সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে, সেদিন আসমান বিদীর্ণ হবে, জমিন সম্প্রসারিত করে সমতল বানিয়ে দেওয়া হবে। মাটির গর্তে যা কিছু লুকানো রয়েছে, তা সবই বাইরে নিক্ষিপ্ত হবে। আর পরকালে মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হবে। এক ভাগ লোকের ডান হাতে আমলনামা দেওয়া হবে এবং জান্নাতের নিয়ামত ভোগ করবে। আর অপর ভাগের লোকেরা নিজেদের অসৎ কর্মের দরুন তাদের পেছনের দিক হতে আমলনামা দেওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।

সূরা ইনশিকাক এর শানে নুযুল :

উপরোক্ত সূরাটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কীজীবনের প্রাথমিক পর্যায়ের অবতীর্ণ সূরাগুলোর একটি। এই সূরা অবতীর্ণ হওয়ার পূর্ব পর্যায়ে কাফেররা কুরআনের আদর্শ ও আহ্বানকে প্রকাশ্যভাবে মিথ্যা মনে করেছিল এবং কিয়ামত দিবসে তাদেরকে যে হিসাব-নিকাশ দেওয়ার জন্য আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হতে হবে, এ কথা মেনে নিতে স্পষ্ট অস্বীকার করেছিল । আল্লাহ তা’আলা উক্ত সূরাটি অবতীর্ণ করে তাদের সেই মিথ্যা ও ভ্রান্ত বিশ্বাসকে নিরসন করেছেন।

সূরা ইনশিকাক এর তাফসীর

আয়াত-১.
যখন কিয়ামতের ফুৎকারের সময় আকাশ বিদীর্ণ হবে।

আয়াত-২.
এবং তার প্রতিপালকের নির্দেশ শুনবে, আর সে (এরই) যোগ্য। অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে যখন ভেঙে পড়ার প্রাকৃতিক নির্দেশ হবে, তখন আকাশ উক্ত নির্দেশ মেনে নেবে। নিজের বিশালতা ও উচ্চতা সত্ত্বেও আল্লাহর সামনে আত্মসমর্পণ করা ও তাঁর নির্দেশ মেনে নেওয়াই আকাশের জন্য স্বাভাবিক । কারণ, আকাশ আল্লাহর ক্ষমতা ও শক্তির আয়ত্তাধীন। শিঙ্গায় ফুৎকারের সময়, সংখ্যা ও অবস্থা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা সূরা নাবার ১৮ নম্বর আয়াত প্রসঙ্গে আলোচিত হয়েছে।

আয়াত-৩.
যখন পৃথিবীকে বিস্তৃত করা হবে। অর্থাৎ হাশরের দিন এ পৃথিবীকে যখন রাবারের মতো টেনে বিস্তৃত করা হবে । অট্টালিকা, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদিকে সমান করে দেওয়া হবে, যাতে একই সময়ে আগে-পরের সমস্ত মানুষ এক সমতল ভূমিতে সমবেত হতে পারে। হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা.-এর বর্ণিত রেওয়ায়েতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন পৃথিবীকে চামড়ার (অথবা রাবারের) ন্যায় টেনে সম্প্রসারিত করা হবে। এতদসত্ত্বেও পৃথিবীর আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সব মানুষ একত্রিত হওয়ার ফলে একজনের ভাগে কেবল পা রাখার স্থান পড়বে। (মুসতাদরাক-হাকিম, হা. ৮৭০১, তাবারী ফিত তাফসীর; ৯/১৮১, সহীহ)

আয়াত-৪.
এবং পৃথিবী তার গর্ভস্থিত (ধন-ভাণ্ডার, খনি এবং সৃষ্টির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত মৃত লোকদের খণ্ডিত অংশসমূহ ইত্যাদি) সব কিছু বাইরে নিক্ষেপ করবে ও শূন্যগর্ভ হয়ে যাবে ।

আয়াত-৫. ৬.
হে মানুষ! তোমাকে তোমার প্রতিপালকের নিকট পর্যন্ত পৌঁছতে কষ্ট স্বীকার করতে হবে, অতঃপর তাঁর সাক্ষাৎ ঘটবে। অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী নানা রকম চেষ্টা-সাধনা করে। কেউ আল্লাহর আনুগত্যে কষ্ট স্বীকার করে, কেউ মন্দ কাজ আল্লাহর অবাধ্যাচারণে জীবন ক্ষয় করে। সৎ পথে হোক বা অসৎ পথে হোক, পৃথিবীতে নানা রকম কষ্ট সহ্য করে অবশেষে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়। মৃত্যুর পর প্রত্যেক মানুষ পরকালে তার পালনকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং হিসাবের জন্য তার সামনে উপস্থিত হবে।

আয়াত-৭. ৮.
তার কাছ থেকে সহজ হিসাব নেওয়া হবে। সহজ হিসাবের স্তর বিভিন্ন রূপ। ১. কথায় কথায় পাকড়াও করা হবে না। শুধু আমলের নথিপত্র সামনে তুলে ধরা হবে। তারপর কোনো জিজ্ঞাসাবাদ না করে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিছু লোকের হিসাব এমনই হবে। ২. হিসাবের ফলে চিরস্থায়ী আজাব হবে না। এটা সাধারণ মুমিনদের জন্য হবে। এ ক্ষেত্রে অস্থায়ী আজাব হতে পারে।

এক হাদীসে হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন যার হিসাব নেওয়া হবে, সে আজাব থেকে রক্ষা পাবে না। এ কথা শুনে হযরত আয়েশা রা. প্রশ্ন করলেন, কুরআনে কি “يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا” (সহজ হিসাব নেওয়া হবে) বলা হয়নি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এই আয়াতে যাকে সহজ হিসাব বলা হয়েছে, সেটা প্রকৃতপক্ষে পরিপূর্ণ হিসাব নয়, বরং কেবল আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সামনে উপস্থিতি। যে ব্যক্তির কাছ থেকে তার কাজকর্মের পুরোপুরি হিসাব নেওয়া হবে, সে আজাব থেকে কিছুতেই রক্ষা পাবে না। (সহীহ বুখারী, হা. ১০৩, সহীহ মুসলিম, হা. ২৮৭৬)

আয়াত-৯.
এবং সে তার (জান্নাতি) পরিবার-পরিজনের নিকট আনন্দিত অবস্থায় ফিরবে। শাস্তির কোনো আশঙ্কা থাকবে না। থাকবে না আল্লাহর ক্রোধের ভয়। জান্নাতি বন্ধু-বান্ধব, নিকটাত্মীয় ও মুসলমান ভাইদের সঙ্গে আনন্দ উদযাপন করবে।

আয়াত-১০
আর যাকে তার আমলনামা পিঠের পেছন দিক থেকে (বাঁ হাতে) দেওয়া হবে। পেছনের দিক থেকে আমলনামা পাওয়া দু’ভাবে হতে পারে। ১. হাত দুটি পেছনের দিকে বেঁধে দেওয়া হবে। ফলে বাঁ হাতও পেছনেই থাকবে এবং তাতে আমলনামা দেওয়া হবে। ২. বুকে ছিদ্র করে বাঁ হাত উক্ত ছিদ্রপথে পিঠের দিকে বের করা হবে। আয়াত-১১. ১২. ১৩.

সে তখন ধ্বংসকে (অর্থাৎ শাস্তির ভয়ে মৃত্যুকে) ডাকবে। সে মরে মাটি হয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করবে, যাতে আজাব থেকে বেঁচে যায়, কিন্তু সেখানে তা সম্ভবপর হবে না। তাকে জাহান্নামে দাখিল করা হবে। সে (পৃথিবীতে) তার পরিবার-পরিজনের মাঝে আনন্দে ছিল । অর্থাৎ দুনিয়ায় অবস্থানকালে সে তার পরিবার-পরিজনের মধ্যে পরকালের প্রতি উদাসীন হয়ে আনন্দ-উল্লাসে দিন যাপন করত। যার ফলে আজ তাকে ভীষণ চিন্তাগ্রস্ত হতে হয়েছে।

আয়াত-১৪.
সে মনে করেছে যে, সে কস্মিনকালেও (আল্লাহর নিকট) প্রত্যাবর্তন করবে না। জীবনের চুলচেরা হিসাব তার দিতে হবে না। তাই নিঃসংকোচে ও নির্ভয়ে পাপাচারে লিপ্ত থেকেছে।

আয়াত-১৫.
(সে কেন প্রত্যাবর্তন করবে না?) অবশ্যই, তার পালনকর্তা তো তাকে দেখতেন । তার রূহ কোত্থেকে এসেছে, কোন কোন বস্তু দ্বারা তার দেহ তৈরি হয়েছে, কী ছিল তার আক্বীদা-বিশ্বাস, কী ছিল তার আমল, মনে কী কথা ছিল, মুখ থেকে কী কথা বের হয়েছে, হাত-পা দ্বারা কী উপার্জন করেছে, মৃত্যুর পর তার রূহ কোথায় গিয়েছে, শরীরের অঙ্গগুলো বিক্ষিপ্ত হয়ে কোথায় কোথায় পৌঁছেছে ইত্যাদি তিনি নিয়মিত প্রত্যক্ষ করে আসছেন। যে আল্লাহ মানুষের অবস্থা সম্পর্কে এ পরিমাণ ওয়াকিবহাল, ছোট-বড় সব অবস্থা যাঁর নখদর্পণে, তাঁর সম্পর্কে কি এমন ধারণার সুযোগ আছে যে, তিনি মানুষকে এমনি এমনিই ছেড়ে দেবেন? অবশ্যই তিনি মানুষকে তার কৃতকর্মের ফলাফল দেবেন।

আয়াত-১৬. ১৭.
এবং রাত্রির এবং তাতে যার সমাবেশ ঘটে তার। অর্থাৎ মানুষ ও জীবজন্তু দিনে জীবিকার সন্ধানে আবাসস্থল ত্যাগ করে এদিক-ওদিক ছড়িয়ে পড়ে। রাতে আবার নিজ নিজ ঠিকানায় ফিরে আসে। সুতরাং রাতই তাদের একত্রিত করল।

আয়াত-১৮. ১৯.
অবশ্যই তোমরা এক স্তর থেকে অন্য স্তরে (এক অবস্থায় থেকে আরেক অবস্থায়) আরোহণ। করবে। অর্থাৎ মানুষ সৃষ্টির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত কোনো সময় এক অবস্থায় স্থির থাকে। না, বরং তার ওপর পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন আসতে থাকে। দুনিয়ার জীবনের বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে শেষ পর্যায়ে আসে মৃত্যুর সিঁড়ি। এরপর কবর-জীবন। তারপর কিয়ামত কিয়ামতে একের পর এক কত অবস্থা ও কত পর্যায় যে মানুষকে অতিক্রম করতে হবে, তা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন।

আয়াত-২০.
অতএব, তাদের কী হলো যে, তারা ঈমান আনে না? যে, মৃত্যুর পরও তাদের একদিকে যেতে হবে এবং তাদের সামনে রয়েছে একটি দীর্ঘ ও কঠিন সফর। সে সফরের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ পাথেয় সঙ্গে রাখার দরকার হবে।

আয়াত-২১.
এবং যখন তাদের সামনে কুরআন পড়া হয়, তখন তারা সিজদা করে না। কুরআনের মতো মু’জিযাপূর্ণ বিবরণ শুনেও তারা সামান্যতম বিনয় প্রকাশ করে না। এমনকি মুসলমানরা যখন আল্লাহর আয়াত শ্রবণ করে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে, তখনো তাদের সিজদার তৌফিক হয় না।

আয়াত-২২. ২৩.
আর আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞাত আছেন তারা যা পাত্রে (অন্তরে) রাখে। অবিশ্বাস-অস্বীকার, ঘৃণা-বিদ্বেষ ও সত্যের শত্রুতায় তাদের অন্তর ভর্তি।

আয়াত-২৪. ২৫.
অবশ্য যারা ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে, তাদের জন্য (পরকালে) রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার । তা কখনো শেষ হবে না।

নির্দেশনা :

১. কিয়ামত ও পরকাল সত্য। তা অস্বীকার করলে ঈমান থাকবে না।
২. দুনিয়াতে যারা সৎ কাজ করবে এবং সৎ পথে চলবে, কিয়ামত দিবসে তাদের হিসাব-নিকাশ অনেক সহজ হবে। পক্ষান্তরে যারা দুনিয়ার মোহে পড়ে আখেরাত ভুলে গিয়ে অপকর্মে লিপ্ত ছিল তারা কঠিন হিসাব ও মর্মান্তিক আজাবের সম্মুখীন হবে।
৩. মানুষ মনে মনে কী কী বস্তু পোষণ করে, আল্লাহ তা’আলা সব কিছুই জানেন। অতএব প্রত্যেকের উচিত, ভালো চিন্তা-ফিকির করা, হিংসা-বিদ্বেষ, ক্রোধ ও শত্রুতা পরিহার করা।
৪. সূরা ইশিকাকের ২১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াতের পর সিজদা করা ওয়াজিব । আয়াতটি হলো- وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ ٱلْقُرْءَانُ لَا يَسْجُدُونَ,

আরো পডুন :

৮৫.সূরা বুরুজ سورة البروج Surah Al Buruj এর তাফসির ও শানে নুযুল

৮৭.সূরা আল আলা سورة الاعلى Surah Al A’la এর তাফসির ও শানে নুযুল

৮৮.সূরা আল গাশিয়াহ سورة الغاشية Surah Al Ghashiyah এর তাফসির ও শানে নুযুল

ট্যাগ সমূহ : সূরা ইনশিকাক, সূরা ইনশিকাক এর তাফসীর, সূরা ইনশিকাক এর শানে নুযুল,সূরা ইনশিকাক আয়াত ৬, ৮৪ নং সূরা, سورة الانشقاق,সূরা ইনশিকাক এর ফজিলত, সূরা ইনশিকাক বাংলা উচ্চারণ, সূরা ইনশিকাক এর বাংলা অনুবাদ, সূরা ইনশিকাক অর্থ, সূরা ইনশিকাক ১৬, সূরা ইনশিকাক তেলাওয়াত, সূরা আল ইনশিকাক সূরা আল ইনশিকাক বাংলা উচ্চারণ, সূরা আল ইনশিকাক আয়াত ৬, সূরা আল ইনশিকাক এর অর্থ, surah al inshiqaq, surah al inshiqaq in hindi, surah al inshiqaq bangla, surah al inshikak, surah al inshiqaq transliteration, surah al inshiqaq in english, সূরা ইনশিকাক এর ফজিলত,সূরা ইনশিকাক,সূরা ইনশিকাক এর তাফসীর,সূরা ইনশিকাক এর অনুবাদ,سوره الانشقاق, سورة الانشقاق مكتوبة,সূরা ইনশিকাক, সূরা ইনশিকাক এর তাফসীর, সূরা ইনশিকাক এর শানে নুযুল,সূরা ইনশিকাক আয়াত ৬, ৮৪ নং সূরা, سورة الانشقاق,সূরা ইনশিকাক এর ফজিলত, সূরা ইনশিকাক বাংলা উচ্চারণ, সূরা ইনশিকাক এর বাংলা অনুবাদ, সূরা ইনশিকাক অর্থ, সূরা ইনশিকাক ১৬, সূরা ইনশিকাক তেলাওয়াত, সূরা আল ইনশিকাক সূরা আল ইনশিকাক বাংলা উচ্চারণ, সূরা আল ইনশিকাক আয়াত ৬, সূরা আল ইনশিকাক এর অর্থ, surah al inshiqaq, surah al inshiqaq in hindi, surah al inshiqaq bangla, surah al inshikak, surah al inshiqaq transliteration, surah al inshiqaq in english, সূরা ইনশিকাক এর ফজিলত,সূরা ইনশিকাক,সূরা ইনশিকাক এর তাফসীর,সূরা ইনশিকাক এর অনুবাদ,سوره الانشقاق, سورة الانشقاق مكتوبة,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top