১০৪.সূরা হুমাযাহ سورة الهمزة Sura humajah এর তাফসির ও শানে নুযুল

সূরা হুমাযাহ,سورة الهمزة,سوره الهمزه, সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থ, সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ সহ, সূরা হুমাযাহ এর ফজিলত, সূরা হুমাযাহ এর শানে নুযুল, সূরা হুমাযাহ এর তাফসীর, সূরা হুমাযাহ অর্থ, সূরা হুমাজাহ আয়াত ১, সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থসহ, সূরা হুমাযাহ এর দারস, sura humaja,sura humajah, সূরা হুমাযাহ এর শিক্ষা, সূরা হুমাযাহ এর বাংলা উচ্চারণ, সূরা হুমাযাহ ব্যাখ্যা, সূরা হুমাযাহ ছবি,sura humaja bangla,sura humajah bangla,سورة الهمزة للاطفال,
সূরা হুমাযাহ এর শানে নুযুল

সূরার পরিচয় :

সূরার নাম : সূরা হুমাযাহ্সূরার অর্থ : নিন্দা করা, গীবত করা।
সূরা নং : ১০৪রুকু সংখ্যা : ১
আয়াত সংখ্যা : ৯সিজদা সংখ্যা : ০
শব্দ সংখ্যা : ৩৪পারার সংখ্যা : ৩০
অক্ষর সংখ্যা : ১৩২শ্রেণী : মাক্কী

সূরা হুমাযাহ سورة الهمزة sura humajah এর তাফসির ও শানে নুযুল

بسم الله الرحمن الرحيم
”শুরু করছি আল্লাহ তা’আলার নামে; যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
(١)-وَيْلٌ لِّكُلِّ هُمَزَةٍ لُّمَزَةٍ
(১) প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ,
(٢)-ٱلَّذِى جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُۥ
(২) যে অর্থ সঞ্চিত করে ও গণনা করে
(٣)-يَحْسَبُ أَنَّ مَالَهُۥٓ أَخْلَدَهُۥ
(৩) সে মনে করে যে, তার অর্থ-সম্পদ তাকে চিরকাল রাখবে!
(٤)-كَلَّا لَيُنۢبَذَنَّ فِى ٱلْحُطَمَةِ
(৪) কখনো না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্যে।
(٥)-وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا ٱلْحُطَمَةُ
(৫) আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কী?
(٦)-نَارُ ٱللَّهِ ٱلْمُوقَدَةُ
(৬) এটা আল্লাহর প্রজ্বলিত অগ্নি,
(٧)-ٱلَّتِى تَطَّلِعُ عَلَى ٱلْأَفْـِٔدَةِ
(৭) যা হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছবে।
(٨)-إِنَّهَا عَلَيْهِم مُّؤْصَدَةٌ
(৮) এতে তাদেরকে বেঁধে দেওয়া হবে,
(٩)-فِى عَمَدٍ مُّمَدَّدَةٍۭ
(৯) লম্বা লম্বা খুঁটিতে।

শাব্দিক বিশ্লেষণ

وَيْلٌ : দুর্ভোগ। وَيْلٌ জাহান্নামের একটি উপত্যকার নাম। এখানে وَيْلٌ দ্বারা সেই উপত্যকা উদ্দেশ্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

هُمَزَةٍ : শব্দটির মূল হলো همزةٍ” (নিন্দা করা, গীবত করা) আর همزةٍ বিশেষ্য। অর্থ: গীবতকারী পশ্চাতে নিন্দাকারী।

لُّمَزَةٍ : শব্দটির মূল হলো لمز ” নিন্দা করা, দোষ অন্বেষণ করা। আর لُّمَزَةٌ বিশেষ্য । অর্থ: দোষ অন্বেষণকারী।

عَدَّدَهُۥ : শব্দটির মূল হলো تعديد (বারবার গণনা করা) আর عَدَّدَۥ (বারবার গণনা করে) ক্রিয়া, অতীতকাল, প্রথম পুরুষ, পুংলিঙ্গ, একবচন । عَدَّدَهُۥ অর্থ: তা বারবার গণনা করে ।

يَحْسَبُ : শব্দটির মূল হলো حسبان (মনে করা, ধারণা করা)। আর يَحْسَبُ (সে মনে করে) ক্রিয়া, বর্তমানকাল, প্রথম পুরুষ, পুংলিঙ্গ, একবচন।

أَخْلَدَ : শব্দটির মূল হলো احبلاد (চিরস্থায়ী করা, অমর করা) আর أَخْلَدَ (চিরস্থায়ী করে) ক্রিয়া, অতীতকাল, প্রথম পুরুষ, পুংলিঙ্গ, একবচন । أَخْلَدَهُ (তাকে চিরস্থায়ী করবে)।

لَيُنۢبَذَنَّ : শব্দটির মূল হলো انباذ (বিতাড়িত করা, নিক্ষেপ করা, দূরে সরিয়ে দেওয়া) আর لَيُنۢبَذَنَّ অর্থ (সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে) ক্রিয়া, ভবিষ্যৎকাল, প্রথম পুরুষ, পুংলিঙ্গ। একবচন, কর্মবাচ্য । ক্রিয়া বিশেষণ ل পূর্বে যুক্ত হওয়ায় অবশ্যই, অর্থে ব্যবহার হয়। তার পূর্বে ক্রিয়া বিশেষণ كلا অর্থ: কখনোই না।

ٱلْحُطَمَةُ : শব্দটি বিশেষ্য, স্ত্রীলিঙ্গ, একবচন । অর্থ: চূর্ণকারী। حُطَمَةُ জাহান্নামের একটি স্তরের নাম। ٱلْحُطَمَةُ শব্দে ال নির্দিষ্টি অর্থ বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে এবং فى সম্বন্ধসূচক অব্যয়, যা মধ্যে অর্থে ব্যবহার হয় । فِى ٱلْحُطَمَةِ অর্থ: এমন আগুন, যেখানে নিক্ষিপ্ত হলে চূণ-বিচূর্ণ করে দেবে।

ٱلْمُوقَدَةُ : শব্দটির মূল হলো ايقاد (আগুন ধরানো, জ্বালানো, আলোকিত করা) বিশেষ্য, স্ত্রীলিঙ্গ, একবচন । ٱلْمُوقَدَةُ অর্থ: প্রজ্বালিত । শুরুতে ال নির্দিষ্ট অর্থ বোঝাতে ব্যবহার হয়।

تَطَّلِعُ : শব্দটির মূল হলো اطلاع (অবহিত হওয়া, জানতে পারা, আরোহণ করা, লাফ দিয়ে দ্রুত পৌছা) تَطَّلِعُ (সে পৌছে যাবে) ক্রিয়া, ভবিষ্যৎকাল, স্ত্রীলিঙ্গ, একবচন । পূর্বে সর্বনাম التى তাহলে যা পৌঁছে যাবে।

ٱلْأَفْـِٔدَةُ : শব্দটি বিশেষ্য, বহুবচন, এর একবচন হলো فواد শব্দটি অন্তর, মন, হৃৎপিণ্ড অর্থে ব্যবহৃত হয়। عَلَى ٱلْأَفْـِٔدَةِ শব্দে ال নির্দিষ্ট বিষয় বোঝাতে, আর على সম্বন্ধসূচক অব্যয় ‘ওপরে’ অর্থে ব্যবহার হয়। عَلَى ٱلْأَفْـِٔدَةِ অর্থ: অন্তরসমূহের ওপরে।

مُّؤْصَدَةٌ : শব্দটির মূল হলো ايصاد (চারদিক থেকে পরিবেষ্টন করা) বিশেষ্য, স্ত্রীলিঙ্গ, একবচন। আর مُّؤْصَدَةٌ অর্থ: পরিবেষ্টিত।

عَمد : শব্দটি বিশেষ্য, বহুবচন, এর একবচন عماد অর্থ: খুঁটি, ঠেকনা, স্তম্ভ। فى পূর্বে সম্বন্ধসূচক অব্যয় থাকায় অর্থ হবে স্তম্ভসমূহের মধ্যে।

সূরার আলোচ্য বিষয় :

জাহেলি যুগে আরবসমাজে মারাত্মক ধরনের তিনটি অপরাধ বিদ্যমান ছিল ।

এক. هُمَزَةٍ কারো গীবত তথা পশ্চাতে নিন্দা করা। দুই. لُّمَزَةٍ সামনাসামনি কাউকে মন্দ বলা এবং তিন. সম্পদের প্রতি অতিমাত্রায় লোভ।

ইহকালে এই অন্যায়গুলোর ভয়াবহতা এবং পরকালে এর খারাপ পরিণাম সম্পর্কে খুব কঠোর ভাষায় সূরা হুমাযাতে আলোচনা করা হয়েছে।

সূরা হুমাযাহ এর শানে নুযুল

উমাইয়া ইবনে খালফ যখন রাসূল স.-কে দেখত তখন তাকে ভর্ৎসনা ও তিরস্কার করত। এই পরিপ্রেক্ষিতে সূরাটি অবতীর্ণ হয়। কেউ কেউ অন্যদের নামও বলেছেন। কেউ বলেছেন আখনাস বিন শারীক, কারো কারো মতে ওয়ালিদ বিন মুগীরা প্রসঙ্গে সূরাটি অবতীর্ণ হয়। সবাই এ গর্হিত কাজে লিপ্ত ছিল, তা-ও অসম্ভব নয়। অতএব হতে পারে সবার আচরণের প্রেক্ষাপটে এ সূরাটি অবতীর্ণ হয়েছে।

সূরা হুমাযাহ এর তাফসীর

আয়াত-১.
এই আয়াতে তাদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যারা রাসূলুল্লাহ স. এবং মুসলমানদের দুর্নাম করে বেড়াত। যেমন উমাইয়া ইবনে খালফ, ওয়ালিদ ইবনে মুগীরা প্রমুখ। বলা হয়েছে, দুর্ভোগ অথবা জাহান্নামের একটি উপত্যকা তাদের জন্য যারা পশ্চাতে এবং সম্মুখে লোকের নিন্দা করে। এ সূরার প্রথম আয়াতে দুটি জঘন্য গুনাহ ও এর ভয়াবহতা বর্ণনা করা হয়েছে।

এক. هُمَزَةٍ দুই. لُّمَزَةٍ
শব্দ দুটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয় । অধিকাংশ তাফসীরকারের মতে هُمَزَةٍ অর্থ: গীবত করা, তথা পশ্চাতে পরনিন্দা করা। আর لُّمَزَةٍ অর্থ: সামনাসামনি দোষারোপ করা ও মন্দ বলা। দুটি কাজই জঘন্য গুনাহ-মহাপাপ। পশ্চাতে পরনিন্দার ভয়াবহতা ও কঠিন শাস্তি কুরআন-হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এ গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তির সামনে কোনো বাধা থাকে না। ফলে গুনাহ বৃহৎ থেকে বৃহত্তর ও অধিকতর হতে থাকে। এ ছাড়া পশ্চাতে নিন্দা করা এ কারণেও
বড় অন্যায় যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানতেও পারে না যে, তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে। ফলে সে সাফাই করার সুযোগ পায় না। কুরআনের আলোকে পশ্চাতে নিন্দা করা মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করার সমতুল্য উল্লেখ করা হয়েছে । (সূরা আল হুজরাত-১২)

দ্বিতীয়ত অপরাধ لُّمَزَةٍ তথা সামনাসামনি নিন্দা করাও জঘন্য গুনাহ-মহাপাপ। কেননা যার মুখোমুখি নিন্দা করা হয়, তাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করা হয়। এর কষ্টও অসহনীয়। ফলে এর শাস্তিও হবে গুরুতর।

উল্লেখ্য যে, যার দোষ-ত্রুটি বলা হয় সে যদি বাস্তবে দোষী হয় তাহলে এর নাম গীবত বা পশ্চাতে পরনিন্দা। আর যদি সেই ব্যক্তি আদৌ দোষী না হয়, এমন কিছু বর্ণনা করার নাম অপবাদ। অপবাদও একটি মারাত্মক অপরাধ। সাহাবী আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. ফরমান,
اتـدرون ما الغيبـة؟ قالوا : الله ورسوله اعلـم، قـال : ذكـرك اخـاك بمـا يكـره، قيـل افرايـت إن كان في اخي مـا اقـول؟ قـال: إن كان فيـه ماتقـول فقـد اغتبتـه، وان لـم يكن فيه فقد بهته.

তোমরা কি জানো পরনিন্দা কী? সাহাবাগণ বলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বেশি জ্ঞাত। রাসূলুল্লাহ স. বললেন, তোমার ভাইয়ের এমন কিছু আলোচনা করাকে পরনিন্দা বলে, যা তিনি পছন্দ করেন না। বলা হলো, আপনি কি দেখেছেন, এই দোষ যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে বাস্তবেই থাকে? রাসূলুল্লাহ স. বললেন, এই দোষ যদি তার মধ্যে থাকে তাহলে অবশ্যই তুমি পরনিন্দা করেছো। আর যদি তার মধ্যে এই দোষ না থাকে তাহলে নিশ্চয়ই তুমি তাকে অপবাদ দিয়েছো। (সহীহ মুসলিম-২৫৮৯)

ফেসবুক, ইউটিউব, পত্রপত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের অপপ্রচার উল্লিখিত জঘন্য পাপের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।

আয়াত-২.
যে তিনটি জঘন্য পাপের শাস্তি এ সূরায় বর্ণিত হয়েছে, তন্মধ্যে তৃতীয়টি হলো, মালের লালসা বা অর্থ লালসা। এ সূরার দ্বিতীয় আয়াতের মর্ম হলো, মানুষের দোষ-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা বা পরনিন্দা করার কারণ হলো সম্পদের অহংকার। কারো অহংকারের মূল হলো অর্থ-সম্পদ। সে লোভের বশবর্তী হয়ে চতুর্দিক থেকে সম্পদ জমা করে। আবার কার্পণ্যের বশবর্তী হয়ে বারবার তা গণনা করে, যাতে হাতছাড়া হয়ে না যায় এবং এতেই সে আনন্দ অনুভব করে।

আয়াত-৩.
সে মনে করে তার সম্পদ তাকে অমর করে রাখবে। তাই বারবার তা গণনা করতে থাকে। এতে এতই নিমগ্ন হয়ে যায় যে এসব বিপুল অর্থ-সম্পদ ছেড়ে রিক্ত হস্তে একদিন যে মৃত্যুর করাল গ্রাসে নিপতিত হবে এবং আল্লাহর নিকট পৌঁছতে হবে, তা তার স্মৃতি থেকে মুছেই যায়। ভুলেও তার মনে এ কথা জাগ্রত হয় না।

উল্লেখ্য যে, কুরআন-হাদীসের আলোকে সর্বাবস্থায় অর্থ সঞ্চয় করা হারাম ও গুনাহ নয়। বরং অনেক ধন-সম্পদ বহু কল্যাণে আসে। ইহকালেও কল্যাণকর এবং পরকালেও অফুরন্ত বিনিময় লাভের সহায়ক হয়। তাই সেই ধরনের সঞ্চয় গর্হিত, যাতে জরুরি হক আদায় হয় না, কিংবা গর্ব করা বা অহমিকা লক্ষ্য হয়। অথবা সম্পদের লালসায় ধর্মীয় জরুরি আমল বিঘ্নিত হয়।

আয়াত-৪.
পরনিন্দা, ধনলিপ্সা এবং অনিয়ন্ত্রিত লালসা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। অন্যথায় আল্লাহর শপথ, অবশ্যই তাকে হুতামায় নিক্ষেপ করা হবে। হুতামা হলো এমন আগুন, যা দেহের হাড় জ্বালিয়ে চুরমার করে দেয়। সুতরাং আয়াতের মর্ম হলো, হে নিন্দুকেরা! তোমরা মানুষের পশ্চাতে ও সম্মুখে দোষ চর্চা করে তাদের মান-সম্মান চূর্ণ-বিচূর্ণ করছো । তোমাদের পেছনেও বিরাট হুতামা নামে এক অগ্নিকুণ্ড রয়েছে, যা তোমাদেরকে পুড়িয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবে।

আয়াত-৫.
তুমি কি জানো হুতামা কী? এখানে প্রশ্নাকারে জাহান্নামের আগুনের ভয়াবহতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য প্রশ্ন করা হয়নি। জাহান্নামের এই আগুন সম্পর্কে এ আয়াতে ঘোষণা হয়েছে,

لتي تطلع على الأفيدة এই অগ্নি হৃদয় পর্যন্ত গ্রাস করবে। প্রত্যেক আগুনের এটাই বৈশিষ্ট্য। যা কিছু তাতে পতিত হয়, তার সকল অংশ জ্বলে-পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়। মানুষ তাতে নিক্ষিপ্ত হলে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসহ হৃদয়ও জ্বলে যাবে। এখানে জাহান্নামের অগ্নির এই বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করার কারণ এই যে, দুনিয়ার আগুন মানুষের দেহে লাগলে হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছার আগেই মৃত্যু হয়ে যায়। জাহান্নামে মৃত্যু নেই। কাজেই জীবিত অবস্থায় হৃদয় পর্যন্ত অগ্নি পৌঁছাবে এবং হৃদয় দহন এর তীব্র যন্ত্রণা জীবদ্দশাতেই মানুষ অনুভব করবে।

আয়াত-৬.
এই আগুন কোনো বান্দার প্রজ্বলিত নয়, বরং সেটা আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন । আল্লাহর আগুন বলে আগুনের ভয়াবহতা বোঝানো হয়েছে। সাথে সাথে এটাও বোঝানো হয়েছে, জাগতিক জীবনে ধন-সম্পদের নাগাল পেয়ে যারা অহংকার করে বেড়ায়, তাদেরকে আল্লাহ তা’আলা খুব ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখেন। তিনি তাদেরকে হুতামা নামক আগুন দিয়ে শাস্তি দেবেন।

আয়াত-৭.
যে অন্তরে ঈমান নেই, কুফরী আছে সেই অন্তরে হুতামা নামক অগ্নি পৌঁছে যাবে। কারণ অন্তরই হচ্ছে সকল কিছুর মূল। কুফরী, নাস্তিকতা, বাতিল আক্বীদা ও ভ্রান্ত চিন্তাধারা সর্বপ্রথম অন্তরেই জাগ্রত হয়।

আয়াত-৮.
কাফেরদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপের পর চিরদিনের জন্য দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে তারা তা থেকে বের হতে পারবে না এবং জাহান্নামের উত্তাপও এই জাহান্নামের ভেতরেই থাকবে।

আয়াত-৯.
ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আল্লাহ তাদেরকে হুতামা নামক আগুনে নিক্ষেপ করার পর তাতে স্থাপিত সুদীর্ঘ স্তম্ভসমূহের সাথে শক্ত করে বেঁধে রাখবেন। যেন সামান্য নড়াচড়াও করতে না পারে । তখন তারা গলায় শিকল পরিহিত থাকবে এবং জাহান্নামের মুখকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে। (তাফসীরে তাবারী)

নির্দেশনা

১. অহংকারের মূলেই হলো অর্থ-সম্পদ অবৈধভাবে কুক্ষিগত করে রাখা। তাই সম্পদকে ” আল্লাহর হুকুমে যথাযথ জায়গায় ব্যয় করলে মানুষের মনে অহংকার নয়, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পায়।
২. কুফরী, নাস্তিকতা সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু হলো মানুষের অন্তর। তাই আল্লাহওয়ালা, মুত্তাকী-বুজুর্গদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে অন্তরকে পাক-পবিত্র রাখতে হবে। মহান প্রভু বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা খোদাভীতি অর্জন করো এবং সৎকর্মশীলদের সাথি হয়ে যাও।’ (সূরা তাওবা-১১৯)

ট্যাগ সমূহ : সূরা হুমাযাহ,سورة الهمزة,سوره الهمزه, সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থ, সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ সহ, সূরা হুমাযাহ এর ফজিলত, সূরা হুমাযাহ এর শানে নুযুল, সূরা হুমাযাহ এর তাফসীর, সূরা হুমাযাহ অর্থ, সূরা হুমাজাহ আয়াত ১, সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থসহ, সূরা হুমাযাহ এর দারস, sura humaja,sura humajah, সূরা হুমাযাহ এর শিক্ষা, সূরা হুমাযাহ এর বাংলা উচ্চারণ, সূরা হুমাযাহ ব্যাখ্যা, সূরা হুমাযাহ ছবি,sura humaja bangla,sura humajah bangla,سورة الهمزة للاطفال, সূরা হুমাযাহ,سورة الهمزة,سوره الهمزه, সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থ, সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ সহ, সূরা হুমাযাহ এর ফজিলত, সূরা হুমাযাহ এর শানে নুযুল, সূরা হুমাযাহ এর তাফসীর, সূরা হুমাযাহ অর্থ, সূরা হুমাজাহ আয়াত ১, সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থসহ, সূরা হুমাযাহ এর দারস, sura humaja,sura humajah, সূরা হুমাযাহ এর শিক্ষা, সূরা হুমাযাহ এর বাংলা উচ্চারণ, সূরা হুমাযাহ ব্যাখ্যা, সূরা হুমাযাহ ছবি,sura humaja bangla,sura humajah bangla,سورة الهمزة للاطفال,

আরো পড়ুন :

১০৫.সূরা ফীল سورة الفيل Sura fil এর তাফসির ও শানে নুযুল

১০৬.সূরা কুরাইশ سورة قريش Surah quraysh এর তাফসির ও শানে নুযুল

১০৭.সূরা মাউন سورة الماعؤن Sura maun এর তাফসীর ও শানে নুযুল

১০৮.সূরা কাউসার سورة الكوثر Sura kawsar এর তাফসির ও শানে নুযুল

1 thought on “১০৪.সূরা হুমাযাহ سورة الهمزة Sura humajah এর তাফসির ও শানে নুযুল”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top