৮৩.সূরা মুতাফফিফীন سورة المطففين Al Mutaffifin এর তাফসির ও শানে নুযুল

সূরা আল মুতাফ্ফিফীন,سورة المطففين, সূরা আল মুতাফ্ফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন এর তাফসির,সূরা মুতাফফিফীন এর শানে নুযুল, ৮৩ নং সূরা,সূরা আল মুতাফফিফীন, সূরা আল মুতাফফিফীন তাফসীর, সূরা আল মুতাফফিফীন অর্থ, সূরা আল মুতাফফিফীন বাংলা উচ্চারণ, সূরা মুতাফ্ফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন ১৪, সূরা মুতাফফিফীন বাংলা, সূরা মুতাফফিফীন অর্থ,সূরা আল মুতাফফিফীন, সূরা আল মুতাফফিফীন অর্থ,Al-Mutaffifin, al-mutaffifin ayat 1-3, al mutaffifin latin, al mutaffifin 14, al mutaffifin transliteration, al mutaffifin 1-3, al mutaffifin ayat 15, al mutaffifin latin saja, al mutaffifin ayat 1, سوره المطففين, تفسير سورة المطففين, تفسير سورة المطففين للاطفال,

সূরার পরিচয় :

সূরার নাম : সূরা মুতাফফিফীন।সূরার অর্থ : প্রতারকগন।
সূরা নং : ৮৩রুকু সংখ্যা : ১
আয়াত সংখ্যা : ৩৬সিজদা সংখ্যা : ০
শব্দ সংখ্যা : ১৬৯পারার সংখ্যা : ৩০
অক্ষর সংখ্যা :শ্রেণী : মাক্কী।

সূরা মুতাফফিফীন سورة المطففين Al Mutaffifin এর তাফসির ও শানে নুযুল


بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহ তা’আলার নামে, যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

(١) وَيْلٌ لِّلْمُطَفِّفِينَ

(১) যারা মাপে কম করে, তাদের জন্য দুর্ভোগ,

(٢) ٱلَّذِينَ إِذَا ٱكْتَالُوا۟ عَلَى ٱلنَّاسِ يَسْتَوْفُونَ

(২) যারা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণমাত্রায় নেয়।

(٣) وَإِذَا كَالُوهُمْ أَو وَّزَنُوهُمْ يُخْسِرُونَ

(৩) এবং যখন লোকদের মেপে দেয় কিংবা ওজন করে দেয়, তখন কম করে দেয়।

(٤) أَلَا يَظُنُّ أُو۟لَٰٓئِكَ أَنَّهُم مَّبْعُوثُونَ

(৪) তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে।

(٥) لِيَوْمٍ عَظِيمٍ

(৫) সেই মহাদিবসে,

(٦) يَوْمَ يَقُومُ ٱلنَّاسُ لِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ

(৬) যেদিন মানুষ দাঁড়াবে বিশ্ব পালনকর্তার সামনে।

(٧) كَلَّآ إِنَّ كِتَٰبَ ٱلْفُجَّارِ لَفِى سِجِّينٍ

(৭) এটা কিছুতেই উচিত নয়, নিশ্চয়ই পাপাচারীদের আমলনামা সিজ্জীনে (লিপিবদ্ধ খাতায়) আছে।

(٨) وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا سِجِّينٌ

(৮) আপনি জানেন, সিজ্জীন কী?

(٩) كِتَٰبٌ مَّرْقُومٌ

(৯) এটা লিপিবদ্ধ খাতা।

(١٠) وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ

(১০) সেদিন দুর্ভোগ মিথ্যারোপকারীদের,

(١١) ٱلَّذِينَ يُكَذِّبُونَ بِيَوْمِ ٱلدِّينِ

(১১) যারা প্রতিফল দিবসকে মিথ্যারোপ করে।

(١٢) وَمَا يُكَذِّبُ بِهِۦٓ إِلَّا كُلُّ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ

(১২) প্রত্যেক সীমালঙ্ঘনকারী পাপিষ্ঠই কেবল একে মিথ্যারোপ করে।

(١٣) إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ ءَايَٰتُنَا قَالَ أَسَٰطِيرُ ٱلْأَوَّلِينَ

(১৩) তার কাছে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হলে সে বলে, পূর্ববর্তীদের রূপকথা।

(١٤) كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَىٰ قُلُوبِهِم مَّا كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ

(১৪) কখনো না, বরং তারা যা করে, তাই তাদের হৃদয়ে মরিচা ধরিয়ে দিয়েছে।

(١٥) كَلَّآ إِنَّهُمْ عَن رَّبِّهِمْ يَوْمَئِذٍ لَّمَحْجُوبُونَ

(১৫) কখনো না, তারা সেদিন তাদের পালনকর্তার থেকে পর্দার আড়ালে থাকবে।

(١٦) ثُمَّ إِنَّهُمْ لَصَالُوا۟ ٱلْجَحِيمِ

(১৬) অতঃপর তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

(١٧) ثُمَّ يُقَالُ هَٰذَا ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ

(১৭) এরপর বলা হবে, একেই তো তোমরা মিথ্যারোপ করতে।

(١٨) كَلَّآ إِنَّ كِتَٰبَ ٱلْأَبْرَارِ لَفِى عِلِّيِّينَ

(১৮) কখনো না, নিশ্চয়ই সৎলোকদের আমলনামা আছে ইলিয়্যীনে।

(١٩) وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا عِلِّيُّونَ

(১৯) আপনি জানেন ইল্লিয়ীন কী?

(٢٠) كِتَٰبٌ مَّرْقُومٌ

(২০) এটা লিপিবদ্ধ খাতা।

(٢١) يَشْهَدُهُ ٱلْمُقَرَّبُونَ

(২১) আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ একে প্রত্যক্ষ করবে।

(٢٢) إِنَّ ٱلْأَبْرَارَ لَفِى نَعِيمٍ

(২২) নিশ্চয়ই সৎলোকগণ থাকবে পরম আরামে,

(٢٣) عَلَى ٱلْأَرَآئِكِ يَنظُرُونَ

(২৩) সিংহাসনে বসে অবলোকন করবে।

(٢٤) تَعْرِفُ فِى وُجُوهِهِمْ نَضْرَةَ ٱلنَّعِيمِ

(২৪) আপনি তাদের মুখমণ্ডলে স্বাচ্ছন্দ্যের সজীবতা দেখতে পাবেন।

(٢٥) يُسْقَوْنَ مِن رَّحِيقٍ مَّخْتُومٍ

(২৫) তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধ পানীয় পান করানো হবে।

(٢٦) خِتَٰمُهُۥ مِسْكٌ وَفِى ذَٰلِكَ فَلْيَتَنَافَسِ ٱلْمُتَنَٰفِسُونَ

(২৬) তার মোহর হবে কস্তুরী। এ বিষয়ে প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা করা উচিত।

(٢٧) وَمِزَاجُهُۥ مِن تَسْنِيمٍ

(২৭) তার মিশ্রণ হবে তাসনিমের পানি।

(٢٨) عَيْنًا يَشْرَبُ بِهَا ٱلْمُقَرَّبُونَ

(২৮) এটা একটা ঝর্ণা, যার পানি পান করবে নৈকট্যশীলগণ।

(٢٩) إِنَّ ٱلَّذِينَ أَجْرَمُوا۟ كَانُوا۟ مِنَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ يَضْحَكُونَ

(২৯) যারা অপরাধী, তারা ঈমানদারদের নিয়ে উপহাস করত।

(٣٠) وَإِذَا مَرُّوا۟ بِهِمْ يَتَغَامَزُونَ

(৩০) এবং তারা যখন তাদের কাছ দিয়ে গমন করত তখন পরস্পরে ইশারায় কটাক্ষ করত।

(٣١) وَإِذَا ٱنقَلَبُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَهْلِهِمُ ٱنقَلَبُوا۟ فَكِهِينَ

(৩১) তারা যখন তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরত, তখনও হাসাহাসি করে ফিরত।

(٣٢) وَإِذَا رَأَوْهُمْ قَالُوٓا۟ إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ لَضَآلُّونَ

(৩২) আর যখন তারা ঈমানদারদেরকে দেখত, তখন বলত, নিশ্চয়ই এরা বিভ্রান্ত।

(٣٣) وَمَآ أُرْسِلُوا۟ عَلَيْهِمْ حَٰفِظِينَ

(৩৩) অথচ তারা ঈমানদারদের তত্ত্বাবধায়করূপে প্রেরিত হয়নি।

(٣٤) فَٱلْيَوْمَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مِنَ ٱلْكُفَّارِ يَضْحَكُونَ

(৩৪) আজ যারা ঈমানদার, তারা কাফেরদের উপহাস করবে।

(٣٥) عَلَى ٱلْأَرَآئِكِ يَنظُرُونَ

(৩৫) সিংহাসনে বসে তাদের অবলোকন করছে,

(٣٦) هَلْ ثُوِّبَ ٱلْكُفَّارُ مَا كَانُوا۟ يَفْعَلُونَ

(৩৬) কাফেররা যা করত, তার প্রতিফল পেয়েছে তো?

সূরা মুতাফফিফীন এর আলোচ্য বিষয়

সূরা মুতাফফিফীনের আলোচ্য বিষয় দুটি-
এক. মাপে বা ওজনে কম দেওয়ার ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন।

দুই. ভালো-মন্দ সব ধরনের কর্মফলের বর্ণনা।


পাপীরা তাদের অসৎ ও পাপ কর্মের ফল হিসেবে আখেরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। পক্ষান্তরে আল্লাহর নেক বান্দা যারা, তারা স্বীয় সৎ কর্মের ফল হিসেবে আখেরাতে জান্নাতের অনাবিল সুখ-শান্তি ভোগ করবে।

সূরা মুতাফফিফীন এর শানে নুযুল

হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ স. যখন মদীনায় আগমন করেন তখন মদীনাবাসীর সাধারণ কাজ-কারবার ‘কাইল’ তথা পরিমাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। তারা এ ব্যাপারে চুরি করা ও কম দেওয়ায় খুবই অভ্যস্ত ছিল । এর প্রেক্ষিতে ‘সূরা আল-মুত্বাফফিফীন’ নাযিল হয়। এই সূরা নাযিল হওয়ার পর তারা এ বদ-অভ্যাস থেকে এমন বিরত হয় যে, আজ পর্যন্ত তাদের সুখ্যাতি সর্বজনবিদিত। (নাসায়ী; আসুনানুল কুবরা : হা. ১১৫৯০, ইবনে মাজাহ : হা. ২২২৩ হাসান)

সূরা মুতাফফিফীন এর তাফসির

আয়াত ১-৩
যারা মাপে বা ওজনে কম দেয় তাদের জন্য দুর্ভোগ রয়েছে। যারা মানুষের কাছ থেকে নিজে মেপে নেওয়ার সময় পুরোপুরি নেয়। আর যখন তারা মানুষদের মেপে বা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়। لقد تطفيف (তাতফীফ) মাফে কম দেওয়া এই পরিভাষাটি শুধু মাপে কম করার অর্থে সীমিত নয়। বরং যেকোনো ধরনের প্রাপককে কম দিলে تطفيف -এর অন্তর্ভুক্ত হবে, যা হারাম।

কুরআন-হাদীসে মাপে কম দেওয়াকে হারাম করা হয়েছে। এ আয়াতে তাদের জন্য দুর্ভোগ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণত লেনদেন মাপ ও ওজনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। তাই মাপ বা ওজনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত যেকোনোভাবে প্রাপককে তার পাওনা প্রদানের ক্ষেত্রে কম করা হারাম। চায় তা মাপের মাধ্যমে হোক, গণনার মাধ্যমে হোক বা যেকোনো পন্থায় হোক । এমনকি ওযু, নামায, রোযা ইত্যাদি ইবাদতে অসম্পূর্ণ করলে তাও تطفيف -এর অন্তর্ভুক্ত এবং হারাম হিসেবে গণ্য হবে। তার জন্য রয়েছে দুর্ভোগ।

মুয়াত্তা মালেকে বর্ণিত, ওমর রা. জনৈক ব্যক্তিকে দেখেন যে, সে নামাযে রুকু-সিজদা ঠিকমতো করে না এবং নামায দ্রুত শেষ করে দেয়। তিনি তাকে বললেন, لقد تطفيف ‘তুমি আল্লাহর প্রাপ্য আদায়ে تطفيف (কম) করেছো।’ এই উক্তিটি উদ্ধৃত করে ইমাম মালেক রহ. বলেন, لكل شئ وففاء و تطفيف ‘প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে পূর্ণমাত্রায় দেওয়া ও কম করা আছে।’ এমনকি নামায ও ওযুর মধ্যেও।

এমনিভাবে যে ব্যক্তি আল্লাহর অন্যান্য হক ও ইবাদতে এবং বান্দার পাওনা আদায়ে ত্রুটি ও কম করে, সেও تطفيف এর অপরাধে অপরাধী। মজুর কর্মচারী যতটুকু সময় কাজ করার চুক্তি করে, তাতে কম করাও تطفيف ও অন্যায় । কাজে অলসতা করাও تطفيف এর অপরাধে অপরাধী। শ্রমিকের পাওনা যথাযথভাবে ও যথাসময়ে পরিশোধ না করাও এই আয়াতের আলোকে অপরাধ-হারাম। তাদের জন্য রয়েছে ويل দুর্ভোগ ।

মানুষের নিকট থেকে নিজের হক পুরোপুরি আদায় করা নিন্দনীয় নয়। এখানে তা উল্লেখ করার দ্বারা স্বয়ং এর নিন্দা করা উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো, কম দেওয়ার নিন্দাকে জোরদার করা। অর্থাৎ কম দেওয়া যদিও এমনিতেই নিন্দনীয় কাজ, কিন্তু তার পাশাপাশি যদি নিজের হক আদায় করে নেওয়ার সময় অন্যদের প্রতি একেবারেই লক্ষ না রাখা হয় তখন তা আরো বেশি নিন্দনীয় হয়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অন্যদের প্রতি লক্ষ রাখে তার মধ্যে একটি দোষের পাশাপাশি একটি গুণও আছে। তাই প্রথম ব্যক্তির দোষ দ্বিতীয় ব্যক্তির তুলনায় গুরুতর। আর এখানে মাপের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ সম্ভবত এই যে, আরবদেশে তখন ওজনের তুলনায় মাপের প্রচলনই বেশি ছিল।

আয়াত ৪-৫
ওরা কি বিশ্বাস করে না যে, তাদের পুনরুত্থিত করা হবে। এক বড় দিনে। অর্থাৎ তারা যদি চিন্তা করত যে, মৃত্যুর পর এক ভয়ংকর দিনে তাদের পুনরায় উত্থিত হতে হবে এবং আল্লাহর সামনে সমস্ত হক ও কর্তব্যের হিসাব দিতে হবে, তাহলে কখনো তারা এমন করত না।

আয়াত-৬.
যেদিন মানুষ জগৎসমূহের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে। আল্লাহর তাজাল্লী দেখার উদ্দেশ্যে এবং হিসাব-নিকাশের পর নিজেদের পক্ষে তাঁর কোনো ফয়সালা শোনার আগ্রহে।

আয়াত-৭.
কখনো নয়। অর্থাৎ এমন উপস্থিত না হওয়ার ধারণা তারা কখনো করবে না। আর পাপাচারীদের আমলনামা, অর্থাৎ আমলের বিবরণসংবলিত রেজিস্টার খাতা ‘সিজ্জীন’ তথা জেলখানায় থাকবে। কোনো কোনো অতীত মনীষীর মতে ‘সিজ্জীন’ তথা ওই বিশেষ জেলখানাটি মাটির সপ্তম স্তরের নিচে অবস্থিত।

আয়াত-৮.
তুমি কি জানো সিজ্জীন কী? অর্থাৎ সিজ্জীনে সংরক্ষিত আমলনামাটি কেমন? আল্লাহ তা’আলা এখানে উক্ত আমলনামার ভয়াবহতা তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এ প্রশ্ন করেছেন। কিছু জানার উদ্দেশ্যে এ প্রশ্ন করা হয়নি।

আয়াত-৯.
‘সিজ্জীন’ একটি দফতর। সেখানে সমস্ত জাহান্নামির নাম লেখা আছে। তাফসীর গ্রন্থে এসেছে যে, বান্দার আমলনামার লেখক হচ্ছেন ফেরেশতাগণ। তাঁরা বদকারদের মৃত্যুর পর আমল বন্ধ হওয়ার সঙ্গে তাদের আমলনামা পৃথক পৃথক তালিকায় উঠিয়ে উক্ত দফতরে জমা করেন । তারপর সেই তালিকায় অথবা প্রত্যেক জাহান্নামির নামের ওপর একটি করে চিহ্ন এঁকে দেন, যা দেখা মাত্র বুঝে আসবে যে, লোকটি জাহান্নামি । কতিপয় বর্ণনা মতে, কাফেরদের আত্মাও সেখানে রাখা হয়।

আয়াত-১০.
সেদিন, অর্থাৎ কিয়ামতের দিন অস্বীকারকারীদের জন্য দুর্ভোগ থাকবে ।

আয়াত-১২.
প্রত্যেক সীমালঙ্ঘনকারী পাপিষ্ঠই কেবল কর্মফল দিবসকে অস্বীকার করে। আর যে এসব বিষয় অস্বীকার করে তার অন্য সব পাপ যত অধিক হোক, খুবই সামান্য।

আয়াত-১৩.
যখন তার সামনে আমার আয়াতগুলো পাঠ করা হয়, তখন সে বলে, এগুলো পূর্ববর্তীদের রূপকথা । এ রকম কথা অতীতের লোকেরাও বলেছে। সে (নবী) ওই সব পুরনো গল্প-কাহিনিই বর্ণনা করছে। আমরা কি এসব অবাস্তব কিচ্ছা-কাহিনি শুনে ভীত হওয়ার মানুষ?

আয়াত-১৪.
কখনো নয়। অর্থাৎ আমার আয়াতসমূহে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। বরং তারা (অস্বীকারকারীরা) যা উপার্জন করত, তা তাদের অন্তরে মরিচা ধরিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ বারবার ও বেশি বেশি গুনাহ করার কারণে তাদের অন্তরে জং ধরে গেছে। তাই তাদের অন্তরে সঠিক তত্ত্বের প্রতিফলন হয় না।

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, মানুষ যখন গুনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে। তাওবা করলে সে দাগ মুছে যায়। আর তাওবা না করলে যতই গুনাহ করে ওই দাগ ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং বিস্তৃত হতে থাকে। একসময় অন্তর সম্পূর্ণ কালো হয়ে যায়। তখন আর ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা অবশিষ্ট থাকে না। কিয়ামত অস্বীকারকারীদের অবস্থাও তদ্রূপ। (তিরমিযী শরীফ : ৯/২৫৩, হা. ৩৩৩৪, মুস্তাদরাকে হাকেম: ৩/৩৫৯, হা. ৩৯৬৩, হাসান)

আয়াত-১৫, ১৬, ১৭
কখনো নয়। অবশ্যই তাদেরকে সেদিন তাদের প্রতিপালক থেকে আড়ালে রাখা হবে। অর্থাৎ এ অস্বীকারের পরিণতি সম্পর্কে নিশ্চিন্ত থাকা উচিত নয়। এমন একটি সময় অবশ্যই আসবে, যখন ঈমানদারগণ আল্লাহ তা’আলার দীদার (দর্শন) লাভ করে ধন্য হবে। আর এ হতভাগারা তা থেকে বঞ্চিত হবে।

আয়াত-১৮. ১৯
কখনো নয়। অর্থাৎ নেককার ও বদকারদের সমান পরিণতি কিছুতেই হতে পারে না। অবশ্যই নেককারদের আমলনামা ইল্লিয়্যীনে (সর্বোচ্চ স্থানে) থাকবে। কারো কারো মতে, ইল্লিয়্যীন শব্দটি علو এর বহুবচন। অর্থ উচ্চতা। সাহিত্য বিশারদ ইমাম ফাররা বলেন, এটা বহুবচন নয়। বরং তা একটি স্থানের নাম।

অপর আয়াতে উল্লেখ আছে عند سدرة المنتهى সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে, যার কাছে উপস্থিত বসবাসের জান্নাত’ (সূরা নাজম-১৪, ১৫) এ থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, জান্নাত সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে। আর সিদরাতুল মুনতাহা যে সপ্তম আকাশে তা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আর আত্মার স্থান ইল্লিয়্যীন জান্নাতের সংলগ্ন এবং আত্মাসমূহ জান্নাতের বাগিচায় ভ্রমণ করে ।

একটি হাদীসের ভাষ্য মতে, ইল্লিয়্যীন তথা উক্ত সর্বোচ্চ স্থানটি সপ্তম আকাশের ওপর ও আরশের নিচে অবস্থিত। এতে মুমিনদের রূহ ও আমলনামা রাখা হয় । (দূররে মানসূর : ১৫/৩০২, কুরতুবী : ১৯/২২৫)

আয়াত-২০.
তা একটি চিহ্নিত আমলনামা। অর্থাৎ জান্নাতীদের নাম-ঠিকানা তাতে লিপিবদ্ধ আছে। তাদের আমলনামাগুলো সেখানে সুবিন্যস্তভাবে রাখা হয় এবং তাদের রূহগুলোকেও প্রথমে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর নিজ নিজ ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয় । কবরের সঙ্গেও সেসব রূহের এক ধরনের সম্পর্ক বিদ্যমান রাখা হয়।

আয়াত-২১.
يَشْهَدُهُ অর্থ উপস্থিত হওয়া, প্রত্যক্ষ করা । নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ তা দেখে। যখন রূহ কবজকারী ফেরেশতাগণ মুমিনদের রূহ কবজ করে নিয়ে যায়, তখন প্রত্যেক আকাশের নৈকট্যশীল ফেরেশতাগণ তার সাথি হয়ে যায়। তারপর সপ্তম আকাশে পৌঁছে রূহটি রেখে দেওয়া হয়। তখন নৈকট্যশীল ফেরেশতাগণ তাঁর আমলনামা দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তারপর আমলনামা খুলে দেওয়া হয়, তারা দেখবে এবং তত্ত্বাবধান ও হেফাজত করবে।

আয়াত-২২. ২৩.
নিশ্চয়ই সৎ লোকগণ থাকবে পরম আরামে । সুসজ্জিত আসনে বসে দেখবে । অর্থাৎ বর্ণাঢ্য সোফা ও সুসজ্জিত আসনে বসে তারা জান্নাতে বিচরণ করবে, জান্নাতের দৃশ্যাবলি দেখবে এবং আল্লাহর দীদার লাভ করে চক্ষু শীতল করবে।

আয়াত-২৪.
তুমি তাদের চেহারায় স্বাচ্ছন্দ্যের সজীবতা দেখতে পাবে। অর্থাৎ জান্নাতের আরাম-আয়েশে তাদের চেহারা এত জাঁকজমকপূর্ণ ও সমুজ্জ্বল হবে, যা দেখে প্রত্যেক ব্যক্তিই বুঝতে পারবে যে, এরা অত্যন্ত সুখে আছে।

আয়াত-২৫.
তাদেরকে মোহরযুক্ত বিশুদ্ধ পানীয় হতে পান করানো হবে। হযরত শাহ আব্দুল কাদের দেহলভী রহ. লিখেছেন, প্রত্যেক জান্নাতির ঘরে ঘরে পবিত্র মদের নহর থাকবে, কিন্তু এ মদ বিরল । এ মদ সিলমোহরকৃত অবস্থায় থাকবে। সিলমোহরকৃত হওয়া কেবল সম্মানের নিদর্শনস্বরূপই হবে। নতুবা জান্নাতে এ ধরনের হেফাজতের প্রয়োজন হবে না। সাঈদ ইবনে জুবায়ের ও ইবরাহীম বলেছেন, ختمه مسك অর্থ হলো জান্নাতীদের খানার শেষে থাকবে পানীয়।

আয়াত-২৬.
তার মোহর হবে কস্তূরীর। এক রকম হরিণের নাভিতে খুব সুগন্ধি জিনিস পয়দা হয়, এরই নাম কস্তুরী বা মৃগনাভি। আয়াতের উদ্দেশ্য হলো, পৃথিবীতে যেমন সিল করার জন্য গালা হয় মোম বা মাটি, জান্নাতে উক্ত মদের বোতলের সিলমোহরের গালা হবে কস্তূরী । বোতল হাতে নেওয়ার সাথে সাথেই মন-মস্তিষ্ক সুঘ্রাণে মোহিত হয়ে যাবে। দুনিয়ার নাপাক শরাব কোনো রুচিবান মানুষের আগ্রহের বস্তু হতে পারে না। বস্তুত জান্নাতের শরাব হচ্ছে পবিত্র।

অতএব, জান্নাতের এ সকল নিয়ামত ভোগ করার ক্ষেত্রেই প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা করা উচিত। আর তা হবে সৎ আমলের মাধ্যমে। দুনিয়ার জিনিস ক্ষণস্থায়ী এসবের জন্য প্রতিযোগিতা করার উপযুক্ত নয় । জান্নাতের নিয়ামত স্থায়ী । অতএব তার জন্য প্রতিযোগিতা করা উচিত।

আয়াত-২৭.
তার মিশ্রণ হবে তাসনীমের। আরবের লোকেরা সাধারণত মদে পানি মিশিয়ে পান করত। জান্নাতের পবিত্র মদের সাথে যে পানি মেশানো হবে, তা হবে তাসনীমের পানি।

আয়াত-২৮.
এটা (তাসনীম) একটি ঝরনা, যার পানি পান করবে নৈকট্যপ্রাপ্তগণ। যারা আল্লাহর তুলনামূলক অধিক নৈকট্য লাভ করে ‘নৈকট্যপ্রাপ্ত’ গুণে ভূষিত হয়, যাদের অপর নাম ‘সাবেকীন’ বা অগ্রবর্তীদল, তারা ‘তাসনীম’ নামক ঝরনার নির্ভেজাল পানি পান করবে। তাদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত নিম্ন শ্রেণির মুমিনগণ, যাদেরকে ‘আবরার’ (নেককার) ও ‘আসহাবুল ইয়ামীন’ (ডানপন্থি)ও বলা হয়, তাদেরকে উক্ত ঝরনার পানি গোলাবের মতো অন্য পানির সাথে মিশ্রিত অবস্থায় দেওয়া হবে।

আয়াত-২৯.
অপরাধীরা (দুনিয়ায়) ঈমানদারদের উপহাস করত। তারা বলত, এই হাবাগোবাদের মাথায় কী বাজে খেয়াল চাপল যে, তারা জান্নাতের কাল্পনিক ভোগ-বিলাসের আশায় অনুভূত ও উপস্থিত আরাম-আয়েশ বর্জন করছে।

আয়াত-৩০.
যখন কাফেররা মুমিনদের পাশ দিয়ে যেত, তখন পরস্পর ইশারা বিনিময় করত। হাতে বা চোখ টিপে কটাক্ষ করত—এই দেখো, এরাই হলো বোকা ও নির্বোধ । এরা জান্নাতের বাকির আশায় দুনিয়ার নগদ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করছে। অথচ বাকির অপর নাম ফাঁকি।

আয়াত-৩১.
যখন তারা নিজেদের পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরত, তখন উৎফুল্ল হয়ে ফিরত। অর্থাৎ কৌতুক করত এবং মুসলমানদের ওপর টিপ্পনী কাটত। নিজেদের আরাম-আয়েশ দেখে প্রতারিত হয়ে মনে করত, আমাদের আক্বীদা-বিশ্বাসই সঠিক। অন্যথায় আমরা কেন এসব নিয়ামত ভোগ করছি।

আয়াত-৩২.
আর যখন তারা মুমিনদের দেখত, তখন বলত নিশ্চয়ই এরা পথভ্রষ্ট । নিরর্থক দরবেশী ও সাধনা করে নিজেদের জীবন ক্ষয় করছে। উপস্থিত আরাম-আয়েশের ওপর কাল্পনিক আরাম-আয়েশকে প্রাধান্য দিচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় চেষ্টা-সাধনার নাম দিয়েছে ‘আসল উৎকর্ষতা বা পূর্ণতা’। গৃহসজ্জা ও আরাম-আয়েশকে বিসর্জন দিয়ে একজন মানুষের (রাসূলের) পেছনে ছোটা এবং নিজেদের পৈতৃক ধর্মকে ত্যাগ করা কি সুস্পষ্ট গোমরাহি নয়?

আয়াত-৩৩.
অথচ তাদের (কাফেরদের) মুমিনদের তত্ত্বাবধায়করূপে পাঠানো হয়নি । অর্থাৎ এই নির্বোধ কাফেরদের নিজেদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মুমিনদের কর্মকাণ্ডের তত্ত্বাবধান করার জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়নি। তারা নিজেদের আত্মশুদ্ধির চেষ্টা না করে যারা সঠিক-সরল পথে চলছে, তাদের পথভ্রষ্ট ও নির্বোধ আখ্যা দিচ্ছে।

আয়াত-৩৪.
তাই আজ ঈমানদাররা কাফেরদের নিয়ে উপহাস করবে। অর্থাৎ কিয়ামতের দিন মুসলমানরা কাফেরদের ঠাট্টা করে বলবে, এরা কেমন অপরিণামদর্শী ও নির্বোধ ছিল যে তুচ্ছ ও ধ্বংসশীল জিনিসকে মূল্যবান ও স্থায়ী জিনিসের ওপর প্রাধান্য দিয়েছিল। ফলে আজ জাহান্নামে কেমন স্থায়ী আজাবের স্বাদ আস্বাদন করছে!

আয়াত-৩৬.
কাফেররা যা করত, তাদেরকে তার প্রতিদান দেওয়া হয়েছে তো? অর্থাৎ যারা পৃথিবীতে মুসলমানদের নিয়ে ঠাট্টা করত, আজ তারা নিজেরাই উপহাসের পাত্র হয়েছে। মুসলমানরা কাফেরদের অতীত বোকামির কথা স্মরণ করে হাসবে।

নির্দেশনা :

১. মানুষদের তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার সময় মাপে বা ওজনে কম দেওয়া হারাম।
২. পুনরুত্থান ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ইসলামী আক্বীদার মৌলিক বিষয়। পুনরুত্থান, পরকাল এবং পরকালের বিচার ও প্রতিদান অস্বীকার করা দ্বীন-ধর্ম অস্বীকারের নামান্তর।
৩. প্রত্যেককে পরকালে স্বীয় কর্মের ফল ভোগ করতে হবে। কাফেররা আল্লাহ ও তাঁর নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করার কারণে এবং পাপীরা তাদের পাপাচারের দরুন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহর ওপর ঈমান এনে তাঁর মর্জি মোতাবেক জীবন যাপন করেছে, তারা ঈমান ও সৎকর্মের ফল হিসেবে জান্নাতের অনাবিল সুখ-শান্তি ভোগ করবে।


৪. আল্লাহ তা’আলার নাফরমানী করার দ্বারা অন্তরে কালো দাগ পড়ে যায়। তাই গুনাহ সংঘটিত হওয়া মাত্রই খাঁটি মনে তাওবা করে উক্ত দাগটি মুছে ফেলতে হবে। অন্যথায় সে দাগ বৃদ্ধি পেতে পেতে পুরো অন্তরটাই কালো হয়ে যাবে। ফলে আর ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা অবশিষ্ট থাকবে না।
৫. ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে কোনো ধরনের বিষোদগার করা যাবে না। যারা আজ ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে কটূক্তি করছে, ঠাট্টা-বিদ্রূপ করছে, ইনশাআল্লাহ অচিরেই তারা পরকালে তার প্রতিদান পাবে। এমন একদিন সময় আসবে, মুমিনরা তাদের নিয়ে উপহাস করবে।

৬. নিজেদের জীবনকে আল্লাহর আদেশ এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তরিকা মোতাবেক পরিচালনা করতে হবে। কারণ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামত দিবসে নিজ বন্ধুদের সম্মানিত করবেন আর তাঁর ও রাসূলের দুশমনকে লাঞ্ছিত ও অপমান করবেন। তাই নেক কাজে প্রতিযোগিতা করা উচিত।

আরো পড়ুন :

৮৬.সূরা তারিক سورة الطارق Surah Tariq এর তাফসির ও শানে নুযুল

৮৫.সূরা বুরুজ سورة البروج Surah Al Buruj এর তাফসির ও শানে নুযুল

৮৪.সূরা ইনশিকাক سورة الانشقاق Surah Inshiqaq এর তাফসির ও শানে নুযুল

ট্যাগ সমূহ : সূরা আল মুতাফ্ফিফীন,سورة المطففين, সূরা আল মুতাফ্ফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন এর তাফসির,সূরা মুতাফফিফীন এর শানে নুযুল, ৮৩ নং সূরা,সূরা আল মুতাফফিফীন, সূরা আল মুতাফফিফীন তাফসীর, সূরা আল মুতাফফিফীন অর্থ, সূরা আল মুতাফফিফীন বাংলা উচ্চারণ, সূরা মুতাফ্ফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন ১৪, সূরা মুতাফফিফীন বাংলা, সূরা মুতাফফিফীন অর্থ,সূরা আল মুতাফফিফীন, সূরা আল মুতাফফিফীন অর্থ,Al-Mutaffifin, al-mutaffifin ayat 1-3, al mutaffifin latin, al mutaffifin 14, al mutaffifin transliteration, al mutaffifin 1-3, al mutaffifin ayat 15, al mutaffifin latin saja, al mutaffifin ayat 1, سوره المطففين, تفسير سورة المطففين, تفسير سورة المطففين للاطفال, সূরা মুতাফফিফীন,সূরা মুতাফফিফীন,সূরা মুতাফফিফীন,সূরা আল মুতাফ্ফিফীন,سورة المطففين, সূরা আল মুতাফ্ফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন এর তাফসির,সূরা মুতাফফিফীন এর শানে নুযুল, ৮৩ নং সূরা,সূরা আল মুতাফফিফীন, সূরা আল মুতাফফিফীন তাফসীর, সূরা আল মুতাফফিফীন অর্থ, সূরা আল মুতাফফিফীন বাংলা উচ্চারণ, সূরা মুতাফ্ফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন, সূরা মুতাফফিফীন ১৪, সূরা মুতাফফিফীন বাংলা, সূরা আল মুতাফফিফীন, সূরা আল মুতাফফিফীন অর্থ,Al-Mutaffifin, al-mutaffifin ayat 1-3, al mutaffifin latin, al mutaffifin 14, al mutaffifin transliteration, al mutaffifin 1-3, al mutaffifin ayat 15, al mutaffifin latin saja, al mutaffifin ayat 1, سوره المطففين, تفسير سورة المطففين, تفسير سورة المطففين للاطفال,সূরা মুতাফফিফীন,সূরা মুতাফফিফীন,সূরা মুতাফফিফীন,সূরা মুতাফফিফীন অর্থ,সূরা মুতাফফিফীন,সূরা মুতাফফিফীন বাংলা উচ্চারণ,সূরা মুতাফফিফীন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top