৯৬.সূরা আলাক سورة العلق Surah Alaq এর তাফসির ও শানে নুযুল

সূরা আলাক্ব, সূরা আলাক, سورة العلق,সূরা আলাক্ব এর ফজিলত,সূরা আলাক্ব এর শানে নুযুল, সূরা আলাক্ব বাংলা, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত দারস, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত, সূরা আলাক, সূরা আলাক আয়াত ১৪, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত শিক্ষা, সূরা আলাকের প্রথম ৫ আয়াত, সূরা আলাক এর বাংলা উচ্চারণ, সূরা আলাক এর অনুবাদ, সূরা আলাক এর ফজিলত, সূরা আলাক এর শিক্ষা, সূরা আলাক এর তাফসির, সূরা আলাক এর শানে নুযুল, sura alak,sura alak bangla, sura alaq,sura alaq translation, surah alaq, surah alaq first 5 verses, surah alaq bangla, surah alaq bangla tafsir,سوره العلق,حل درس سورة العلق,قصة سورة العلق,
সূরা আলাক এর তাফসির

সূরার পরিচয় :

সূরার নাম : সূরা আলাকসূরার অর্থ : জমাট রক্ত।
সূরা নং : ৯৬সিজদা সংখ্যা : ১
আয়াত সংখ্যা : ১৯রুকু সংখ্যা : ১
শব্দ সংখ্যা : ৭২পারার সংখ্যা : ৩০
অক্ষর সংখ্যা : ২৮৬শ্রেণী : মাক্কী

সূরা আলাক سورة العلق Surah Alaq এর তাফসির ও শানে নুযুল


بسم الله الرحمن الرحيم
শুরু করছি মহান আল্লাহ তা;য়ালার নামে; যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

(١) ٱقْرَأْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلَّذِى خَلَقَ
(১) পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

(٢) خَلَقَ ٱلْإِنسَٰنَ مِنْ عَلَقٍ
(২) সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।

(٣) ٱقْرَأْ وَرَبُّكَ ٱلْأَكْرَمُ
(৩) পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহাদয়ালু,

(٤) ٱلَّذِى عَلَّمَ بِٱلْقَلَمِ
(৪) যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,

(٥) عَلَّمَ ٱلْإِنسَٰنَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
(৫) মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন; যা সে জানত না।

(٦) كَلَّآ إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لَيَطْغَىٰٓ
(৬) সত্যি সত্যি মানুষ সীমালঙ্ঘন করে,

(٧) أَن رَّءَاهُ ٱسْتَغْنَىٰٓ
(৭) এ কারণে যে; সে নিজেকে অমুখাপেক্ষী মনে করে।

(٨) إِنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ ٱلرُّجْعَىٰٓ
(৮) নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তার দিকেই প্রত্যাবর্তন হবে ।

(٩) أَرَءَيْتَ ٱلَّذِى يَنْهَىٰ
(৯) আপনি কি তাকে দেখেছেন, যে নিষেধ করে

(١٠) عَبْدًا إِذَا صَلَّىٰٓ
(১০) এক বান্দাকে যখন সে নামায পড়ে?

(١١) أَرَءَيْتَ إِن كَانَ عَلَى ٱلْهُدَىٰٓ
(১১) আপনি কী দেখেছেন যদি সে সৎপথে থাকে।

(١٢) أَوْ أَمَرَ بِٱلتَّقْوَىٰٓ
(১২) অথবা খোদাভীতির আদেশ দেয়।

(١٣) أَرَءَيْتَ إِن كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰٓ
(১৩) আপনি কী দেখেছেন, যদি সে মিথ্যারোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।

(١٤) أَلَمْ يَعْلَم بِأَنَّ ٱللَّهَ يَرَىٰ
(১৪) সে কি জানে না যে, আল্লাহ দেখেন?

(١٥) كَلَّا لَئِن لَّمْ يَنتَهِ لَنَسْفَعًۢا بِٱلنَّاصِيَةِ
(১৫) কখনোই নয়, যদি সে বিরত না হয়; আমি কপালের সামনের কেশগুচ্ছ ধরে হেঁচড়াবই।

(١٦) نَاصِيَةٍ كَٰذِبَةٍ خَاطِئَةٍ
(১৬) মিথ্যাচারী, পাপীর কেশগুচ্ছ।

(١٧) فَلْيَدْعُ نَادِيَهُ
ۥ(১৭) অতএব, সে তার সভাসদদের আহ্বান করুক।

(١٨) سَنَدْعُ ٱلزَّبَانِيَةَ
(১৮) আমিও আহ্বান করব জাহান্নামের প্রহরীদের

(١٩) كَلَّا لَا تُطِعْهُ وَٱسْجُدْ وَٱقْتَرِب
(১৯) কখনোই নয়, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। আপনি সিজদা করুন ও আমার নৈকট্য অর্জন করুন।

সূরার আলোচ্য বিষয়

আলোচ্য সূরা আলাক্বে আল্লাহ কর্তৃক রাসূলুল্লাহ স.-এর প্রতি ঐশী জ্ঞান শিক্ষাদান এবং দ্বীন-ধর্মীয় কাজে যারা বাধা প্রদান করে ও নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য প্রদর্শন করে তাদের প্রতি ভয়-ভীতি প্রদর্শিত হয়েছে।

সূরা আলাক্ব এর শানে নুযুল

আলোচ্য সূরাটি দুটি অংশে অবতীর্ণ হয়েছে। প্রথম অংশটি হলো ১-৫ নং আয়াত আর দ্বিতীয় অংশটি হলো ৬ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত। আয়েশা রা. থেকে সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ স.-এর প্রতি ওহী নাযিল হওয়ার সূচনা হয়েছিল সত্য স্বপ্নরূপে। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন, তা দিনের উজ্জ্বল আলোকে দেখার মতোই হতো। পরে তিনি একাকী ও নিঃসঙ্গ থাকা পছন্দ করতেন ও তাতে অভ্যস্ত হতে লাগলেন। তিনি হেরা গুহায় নিঃসঙ্গ ইবাদতে মশগুল থাকতেন ও মুরাকাবায় রত থাকতেন। এ অবস্থায় একদিন হেরা গুহায় জিবরাঈল আ. তাঁর নিকট আগমন করেন এবং রাসূল সা. প্রথম ওহীপ্রাপ্ত হন। এ সময় সূরা আলাক্বের প্রথম পাঁচ আয়াত সর্বপ্রথম নাযিল হয়। (সহীহ বুখারী-৫/৪০০, হা. ৪৯৫৩)

অধিকাংশ আলিম একমত যে সূরা আলাক্ব থেকেই ওহীর সূচনা। এ সূরার প্রথম পাঁচটি আয়াত সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। কেউ কেউ সূরা মুদ্দাসসিরকে এবং কেউ কেউ সূরা ফাতিহাকে প্রথম অবতীর্ণ সূরা বলেছেন। অধিকাংশ আলিমদের মতই বিশুদ্ধ। তবে এই পাঁচটি আয়াত অবতরণের পর ওহী আসা দীর্ঘদিন বিরতি ছিল। ওই বিরতির পর প্রথমে সূরা মুদ্দাসসিরের প্রাথমিক আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। বিরতির পর প্রথমে এই সূরা থেকে অবতরণ প্রারম্ভ হওয়ার ফলে একেও প্রথম সূরা আখ্যা দেওয়া হয়। আর পূর্ণ সূরা হিসেবে সর্বপ্রথম সূরা ফাতিহাই সর্বপ্রথম একত্রে অবতীর্ণ হয়। তাই এ হিসেবে সূরা ফাতিহাকে সর্বপ্রথম অবতীর্ণ সূরা বলা হয় ।

ইবনে জারীর তাবারী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন, ইসলামের প্রথম দিকে প্রকাশ্যে যখন রাসূলুল্লাহ স. কা’বা প্রাঙ্গণে সালাত আদায় করছিলেন তখন আবু জাহেল সেখানে আগমন করে এবং সালাত আদায় করতে বাধা প্রদান করে। তখন অবশিষ্ট আয়াতগুলো নাযিল হয়।

ইবনে আব্বাসের সূত্রে তিরমিযী শরীফের বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ স. নামায পড়া অবস্থায় আবু জাহেল তাঁর কাছে এসে রূঢ়ভাবে বলে, ‘আমি কি তোমাকে এ কাজ থেকে নিষেধ করিনি?’ তখন রাসূল সা. তাকে ধমক দিয়ে প্রতিবাদ করেন। রাসূলের শক্ত অবস্থান দেখে আবু জাহেল বলল, ‘তুমি নিশ্চয়ই জানো যে, আমার থেকে বেশি পরিষদ সভা আর কারো নেই ।’ তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিউত্তরে পবিত্র কুরআনের আলোচ্য সূরার অবশিষ্ট আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। (তিরমিযী-৩৩৪৯ সহীহ)

সূরা আলাক এর তাফসির

আয়াত-১.
পড়ুন আপনার প্রভুর নামে, যিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। এখানে আল্লাহর নামে পড়ার জন্য নির্দেশ করা হয়েছে। আল্লাহর নাম বলতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’- মাধ্যমে পড়া শুরু করার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। কেননা, পড়ালেখার মাধ্যমে জ্ঞান তৈরি হয়, আর জ্ঞান হলো পবিত্র আলো, বিশেষত ঐশী জ্ঞান। তাই জ্ঞানের মতো পবিত্র জিনিস অর্জন করার শুরুতে আল্লাহর নামে শুরু করা উচিত। এতে বরকত লাভ হয়। হাদীসে এসেছে, ‘যেকোনো কাজ বিসমিল্লাহর মাধ্যমে বা আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করা। অন্যথায় তা বরকতহীন অসম্পূর্ণ থাকে।’ আল্লাহর নামে পড়ুন বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে-

আপনার প্রভুর নামে পড়ুন, তাহলে আপনি যদিও বর্তমান অবস্থায় উম্মি তবে তিনি উম্মী ব্যক্তিকে উচ্চতর শিক্ষা ও ভাষা জ্ঞান দান করতে পারেন। বিশেষ করে ‘রব’-এর নামে আপনার প্রভুর নামে পড়ুন, তাহলে আপনি যদিও বর্তমান অবস্থায় উম্মী তবে তিনি উম্মী উল্লেখ করায় বিষয়বস্তু আরো জোরদার হয়েছে। তিনি আপনাকে পালন করেন । তাই তিনি আপনাকে ডম্মা হওয়া সত্ত্বেও পাঠ করাতে সক্ষম।

আয়াত-২.
আল্লাহ মানুষকে জমাট রক্ত থেকে সৃষ্টি করেছেন । এর মাধ্যমে মূলত আল্লাহ তা’আলার অপার ক্ষমতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। ইতিপূর্বে বিশ্বজগৎ সৃষ্টির বর্ণনা ছিল । এ আয়াতে সেরা সৃষ্টি মানব সৃষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মানব সৃষ্টির বিভিন্ন স্তর অতিক্রান্ত হয়। মৃত্তিকা ও উপাদান চতুষ্টয় দ্বারা এর সূচনা হয়। এরপর বীর্য এবং এরপর বীর্য জমাট রক্তে পরিবর্তিত হয়। অতঃপর মাংসপিণ্ড, অস্থি ইত্যাদি সৃষ্টি করা হয়। এর মধ্যে জমাট রক্ত হচ্ছে একটি মধ্যবর্তী অবস্থা। এর উল্লেখ করার মাধ্যমে পূর্বাপর অবস্থাসমূহের প্রতি ইঙ্গিত হয়ে গেছে।

আয়াত-৩.
পড়ুন, আর আপনার পালনকর্তা সবচেয়ে বড় দানশীল ।

আয়াত-৪.
আল্লাহ কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। মানব সৃষ্টির বর্ণনার পর মানুষের শিক্ষার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন। কারণ শিক্ষাই মানুষকে অন্যান্য প্রাণী থেকে স্বতন্ত্র এবং সৃষ্টির সেরা রূপে পরিণত করে। শিক্ষার পদ্ধতি সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। মৌখিক ও কলমের মাধ্যমে। শিক্ষার সর্বপ্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় কলম। হাদীসে আছে,
ان اول ما خلق الله القلم. قال له : اكتب فقال : يا رب ما اكتب؟ قال: اكتب مقادیر كل شيئ حتى تقوم الساعة.
‘আল্লাহ তা’আলা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেছেন। তাকে লেখার নির্দেশ দেন। সে বলে, হে প্রভু! আমি কী লিখব? আল্লাহ তা’আলা বলেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা ঘটবে তা লিখো।’ আবু দাউদ-৪৭০০ সহীহ)

আল্লাহ মানুষকে কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। তবে নবী মুহাম্মদ যেহেতু উম্মী, লিখতে জানতেন না; তাই তাকে পড়ো বলার মাধ্যমে কলম ছাড়া শিক্ষা দেওয়ার ইশারা করা হয়েছে। আল্লাহ কলমের সাহায্যে যেমন জ্ঞান শিক্ষা দেন, তদ্রূপ কলমের সাহায্য ছাড়াও প্রিয় হাবীবকে শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ সব কিছুই করতে সক্ষম।

আয়াত-৫.
অজানা, অজ্ঞাত বিষয়ে আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান দান করেছেন। মানুষকে শিখিয়েছেন, যা সে জানত না। এর মাধ্যমে ইশারা হলো-হে নবী! আপনি নিরক্ষর হলেও আমি আল্লাহ আপনাকে শেখাতে সক্ষম। আল্লাহ তা’আলা মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে পূর্বে জানত না। এতে কলম অথবা কোনো উপায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং তা মানুষের জন্মলগ্ন হতে অব্যাহত । আদম আ.-এর বৈশিষ্ট্য ছিল শিক্ষা। তা বোঝানোর জন্য মানুষকে কী পদ্ধতিতে শিক্ষা দিয়েছেন, কলম বা অন্য কোনো পদ্ধতি কিছুই উল্লেখ নেই।

আয়াত-৬. ৭.
কখনো নয়, নিঃসন্দেহে মানুষ সীমালঙ্ঘন করে। আর মানুষ এটা করে নিজেকে অভাবমুক্ত মনে করার কারণে।

আয়াত-৮.
নিঃসন্দেহে আপনার প্রতিপালকের নিকট অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। প্রথমে যেমন তিনিই সৃষ্টি করেছেন, শেষেও তাঁর দিকেই ফিরে যেতে হবে।

আয়াত-৯. ১০.
আপনি তাকে দেখেছেন যে, সে নিষেধ করে। এক বান্দাকে যখন সে নামায পড়ে। এখান থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত একটি ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। নামায ফরজ হওয়ার পর যখন রাসূলুল্লাহ স. নামায পড়া শুরু করেন। তখন আবু জাহেল তাঁকে নামায পড়তে বারণ করে। এর প্রতি-উত্তরে আল্লাহ তা’আলা আলোচ্য আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করেন।

আয়াত-১১. ১২
আপনি কি দেখেছেন যদি সে সৎ পথে থাকে? অথবা তাকওয়ার আদেশ করে? তাকওয়ার আদেশ করা ও হেদায়াতের ওপর অবিচল থাকা ভালো কাজ। তাকওয়া মানবতার শিক্ষা দেয়, মানুষের ভালো করতে শেখায়। কিন্তু অহংকারীরা এ সকল ভালো কাজে বাধা দেয়। এটা কখনো ন্যায় আচরণ নয়।

আয়াত-১৩.
আপনি কি দেখেছেন, সে বাধাদানকারী ব্যক্তি সত্য ধর্মকে অস্বীকার করে এবং সত্য ধর্ম থেকে বিমুখ হয়। এখানে সত্য পথে চলা তাকওয়াবান ব্যক্তিকে সঠিক বলা হয়েছে এবং তাকওয়ার পথে বাধাদানকারী ব্যক্তিকে সীমালঙ্ঘনকারী ও সত্য থেকে বিচ্যুত বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

আয়াত-১৪.
সে কি জানে না যে আল্লাহ দেখেন? আল্লাহ তা’আলা কী দেখছেন, আয়াতে তা উল্লেখ নেই। অতএব ব্যাপক অর্থে তিনি নামায প্রতিষ্ঠাকারীকেও দেখছেন এবং বাধা দানকারী হতভাগাকেও দেখছেন। দেখার পর কী হবে, তা উল্লেখ না করার মধ্যে ইঙ্গিত হলো, এর পরিণতি হবে অনেক ভয়াবহ ও ব্যাপক।

আয়াত-১৫.
কখনো নয়, যদি সে বিরত না হয়, তাহলে অবশ্যই আমি ঝুঁটি ধরে সজোরে টেনে আনব। এখানে আল্লাহ তাঁর নবী স.-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, এই পাপিষ্ঠ ব্যক্তি যদি তার অনাচার থেকে নিবৃত না হয় তাহলে আপনি তার বিষয়টি আমার কাছে ন্যস্ত করুন । আমি তার ঝুঁটি ধরে লাঞ্ছিত-অপমানিত অবস্থায় টেনেহিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।

আয়াত-১৬.
মিথ্যুক পাপিষ্ঠের ঝুঁটি। نَاصِيَةٍ শব্দের অর্থ: কপালের উপরিভাগের কেশগুচ্ছ। যার এই কেশগুচ্ছ অন্যের মুঠোর ভেতরে চলে যায়, সে তার করতলগত হয়ে পড়ে।

আয়াত-১৭.
সুতরাং সে তার সভাসদবর্গকে ডাকুক। তার সাহায্যকারীদের আহ্বান করুক।

আয়াত-১৮.
আমিও প্রচণ্ড শক্তিশালীদের ডেকে আনব। তাদের জন্য জাহান্নামের প্রহরীদের ডাকব। আবু জাহেল রাসূলুল্লাহ স.-কে তার দলবলের ক্ষমতার মাধ্যমে ধমক দিলে আল্লাহ রাসূলুল্লাহ স.-কে এভাবেই সান্ত্বনার বাণী শোনালেন। একটি বর্ণনায় এসেছে, আবু জাহেল যখন রাসূলুল্লাহ স.-কে নামায পড়া হতে বাধা দিতে যাচ্ছিল তখন সে নবীজি স.-এর নিকট পৌঁছার পূর্বে আগুনের পরিখা দেখতে পায়। তাতে ডানাবিশিষ্ট কিছু মাখলুক ছিল । এগুলো দেখে সে বিচলিত হয়ে পেছনে ফিরে আসে। রাসূলুল্লাহ স. বলেন, যদি ওই অভিশপ্ত আর একটু সামনে অগ্রসর হতো তাহলে ফেরেশতারা তার হাড্ডিগুড্ডি গুঁড়িয়ে দিত। দুনিয়াতেই জাহান্নামের প্রহরীদের শাস্তি পেয়ে যেত।

আয়াত-১৯.
কখনো নয়, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। আপনি আল্লাহকে সিজদা করুন, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আল্লাহ রাসূলুল্লাহ স.-কে শিখিয়ে দিচ্ছেন, আপনি আবু জাহেলের কথায় ভীত হয়ে তার কথা মেনে নেবেন না। আপনি নামায পড়তেছেন, পড়তে থাকুন। আপনি সিজদা করুন, আমার নৈকট্য অর্জন করুন। এটাই আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য লাভের উপায়। আলোচ্য আয়াতটি যে পাঠ করে এবং যে শোনে, সবার ওপর সিজদা করা ওয়াজিব।

নির্দেশনা

১. এ সূরা অবতীর্ণের মাধ্যমে নবুওয়াত ও ওহীর শুভ সূচনা হলো।
২. আল কুরআন পাঠ করার পূর্বে বিসমিল্লাহর মাধ্যমে তা শুরু করতে হবে।
৩. যখন মানুষ ঈমান, হেদায়াত ও তাকওয়ার নূরে আলোকিত না হয় তাহলে তার প্রকৃতির বাস্তবিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
৪. আল্লাহ কর্তৃক তার নবীকে ফেরেশতাদের মাধ্যমে চাক্ষুস সাহায্য করার বিস্ময় প্রকাশিত হয়েছে।

আরো পড়ুন :

৯৭.সূরা ক্বদর سورة القدر Sura Kodor এর তাফসির ও শানে নুযুল

৯৮.সূরা বাইয়্যিনাহ سورة البينة Surah Bayyinah এর তাফসির ও শানে নুযুল

৯৯.সূরা যিলযাল سورة الزلزل Sura Jiljal এর তাফসির ও শানে নুযুল

ট্যাগ সমূহ : সূরা আলাক্ব, সূরা আলাক, سورة العلق,সূরা আলাক্ব এর ফজিলত,সূরা আলাক্ব এর শানে নুযুল, সূরা আলাক্ব বাংলা, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত দারস, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত, সূরা আলাক, সূরা আলাক আয়াত ১৪, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত শিক্ষা, সূরা আলাকের প্রথম ৫ আয়াত, সূরা আলাক এর বাংলা উচ্চারণ, সূরা আলাক এর অনুবাদ, সূরা আলাক এর ফজিলত, সূরা আলাক এর শিক্ষা, সূরা আলাক এর তাফসির, সূরা আলাক এর শানে নুযুল, sura alak,sura alak bangla, sura alaq,sura alaq translation, surah alaq, surah alaq first 5 verses, surah alaq bangla, surah alaq bangla tafsir,سوره العلق,حل درس سورة العلق,قصة سورة العلق,
সূরা আলাক্ব, সূরা আলাক, سورة العلق,সূরা আলাক্ব এর ফজিলত,সূরা আলাক্ব এর শানে নুযুল, সূরা আলাক্ব বাংলা, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত দারস, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত, সূরা আলাক, সূরা আলাক আয়াত ১৪, সূরা আলাক ১-৫ আয়াত শিক্ষা, সূরা আলাকের প্রথম ৫ আয়াত, সূরা আলাক এর বাংলা উচ্চারণ, সূরা আলাক এর অনুবাদ, সূরা আলাক এর ফজিলত, সূরা আলাক এর শিক্ষা, সূরা আলাক এর তাফসির, সূরা আলাক এর শানে নুযুল, sura alak,sura alak bangla, sura alaq,sura alaq translation, surah alaq, surah alaq first 5 verses, surah alaq bangla, surah alaq bangla tafsir,سوره العلق,حل درس سورة العلق,قصة سورة العلق,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top