সূরার পরিচয় :
সূরার নাম : সূরা আন নাবা। | সূরার অর্থ : মহাসংবাদ। |
সূরা নং : ৭৮ | রুকু সংখ্যা : ১ |
আয়াত সংখ্যা : ৪০ | সিজদা সংখ্যা : ০ |
শব্দ সংখ্যা : ১৭৩ | পারার সংখ্যা : ৩০ |
অক্ষর সংখ্যা : | শ্রেণী : মাক্কী। |
সূরা আন নাবা سورة النبأ Surah Naba এর তাফসির ও শানে নুযুল
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ শুরু করছি আল্লাহ তা’আলার নামে, যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। |
(١) عَمَّ يَتَسَآءَلُونَ (১) তারা পরস্পরে কী বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে? |
(٢) عَنِ ٱلنَّبَإِ ٱلْعَظِيمِ (২) মহা সংবাদ সম্পর্কে, |
(٣) ٱلَّذِى هُمْ فِيهِ مُخْتَلِفُونَ (৩) যে সম্পর্কে তারা মতানৈক্য করে। |
(٤) كَلَّا سَيَعْلَمُونَ (৪) না, সত্বরই তারা জানতে পারবে, |
(٥) ثُمَّ كَلَّا سَيَعْلَمُونَ (৫) অতঃপর না, সত্বর তারা জানতে পারবে। |
(٦) أَلَمْ نَجْعَلِ ٱلْأَرْضَ مِهَٰدًا (৬) আমি কী করিনি ভূমিকে বিছানা |
(٧) وَٱلْجِبَالَ أَوْتَادًا (৭) এবং পর্বতমালাকে পেরেক?, |
(٨) وَخَلَقْنَٰكُمْ أَزْوَٰجًا (৮) আমি তোমাদের জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি, |
(٩) وَجَعَلْنَا نَوْمَكُمْ سُبَاتًا (৯) তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী, |
(١٠) وَجَعَلْنَا ٱلَّيْلَ لِبَاسًا (১০) রাত্রিকে করেছি আবরণ। |
(١١) وَجَعَلْنَا ٱلنَّهَارَ مَعَاشًا (১১) দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময় |
(١٢) وَبَنَيْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعًا شِدَادًا (১২) নির্মাণ করেছি তোমাদের মাথার ওপর মজবুত সপ্ত আকাশ । |
(١٣) وَجَعَلْنَا سِرَاجًا وَهَّاجًا (১৩) এবং একটি উজ্জ্বল প্রদীপ সৃষ্টি করেছি। |
(١٤) وَأَنزَلْنَا مِنَ ٱلْمُعْصِرَٰتِ مَآءً ثَجَّاجًا (১৪) আমি জলধর মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত করি, |
(١٥) لِّنُخْرِجَ بِهِۦ حَبًّا وَنَبَاتًا (১৫) যাতে তদ্বারা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ |
(١٦) وَجَنَّٰتٍ أَلْفَافًا (১৬) ও পাতাঘন উদ্যান। |
(١٧) إِنَّ يَوْمَ ٱلْفَصْلِ كَانَ مِيقَٰتًا (১৭) নিশ্চয়ই বিচার দিবস নির্ধারিত রয়েছে। |
(١٨) يَوْمَ يُنفَخُ فِى ٱلصُّورِ فَتَأْتُونَ أَفْوَاجًا (১৮) যেদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখন তোমরা দলে দলে সমাগত হবে। |
(١٩) وَفُتِحَتِ ٱلسَّمَآءُ فَكَانَتْ أَبْوَٰبًا (১৯) আকাশ উল্লোচিত হয়ে; তা বহু দরজা বিশিষ্ট হবে। |
(٢٠) وَسُيِّرَتِ ٱلْجِبَالُ فَكَانَتْ سَرَابًا (২০) এবং পর্বতমালা চালিত ত হয়ে মরীচিকা হয়ে যাবে। |
(٢١) إِنَّ جَهَنَّمَ كَانَتْ مِرْصَادًا (২১) নিশ্চয়ই জাহান্নাম প্রতীক্ষায় থাকবে, |
(٢٢) لِّلطَّٰغِينَ مَـَٔابًا (২২) সীমালঙ্ঘনকারীদের আশ্রয়স্থলরূপে। |
(٢٣) لَّٰبِثِينَ فِيهَآ أَحْقَابًا (২৩) তারা তথায় শতাব্দীর পর শতাব্দী অবস্থান করবে। |
(٢٤) لَّا يَذُوقُونَ فِيهَا بَرْدًا وَلَا شَرَابًا (২৪) তথায় তারা কোনো শীতল এবং পানীয় আস্বাদন করবে না; |
(٢٥) إِلَّا حَمِيمًا وَغَسَّاقًا (২৫) কিন্তু ফুটন্ত পানি ও পুঁজ পাবে। |
(٢٦) جَزَآءً وِفَاقًا (২৬) পরিপূর্ণ প্রতিফল হিসেবে। |
(٢٧) إِنَّهُمْ كَانُوا۟ لَا يَرْجُونَ حِسَابًا (২৭) নিশ্চয়ই তারা হিসাব-নিকাশ আশা করত না। |
(٢٨) وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا كِذَّابًا (২৮) এবং আমার আয়াতসমূহে পুরোপুরি মিথ্যারোপ করত। |
(٢٩) وَكُلَّ شَىْءٍ أَحْصَيْنَٰهُ كِتَٰبًا (২৯) আমি সব কিছুই লিপিবন্ধ করে সংরক্ষিত করেছি। |
(٣٠) فَذُوقُوا۟ فَلَن نَّزِيدَكُمْ إِلَّا عَذَابًا (৩০) অতএব, তোমরা আস্বাদন করো, আমি কেবল তোমাদের শাস্তিই বৃদ্ধি করব। |
(٣١) إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ مَفَازًا (৩১) পরহেজগারদের জন্য রয়েছে সাফল্য। |
(٣٢) حَدَآئِقَ وَأَعْنَٰبًا (৩২) উদ্যান, আঙ্গুর, |
(٣٣) وَكَوَاعِبَ أَتْرَابًا (৩৩) সমবয়স্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী। |
(٣٤) وَكَأْسًا دِهَاقًا (৩৪) এবং পূর্ণ পানপাত্র। |
(٣٥) لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا كِذَّٰبًا (৩৫) তারা তথায় অসার ও মিথ্যা বাক্য শুনবে না। |
(٣٦) جَزَآءً مِّن رَّبِّكَ عَطَآءً حِسَابًا (৩৬) এটা আপনার পালনকর্তার তরফ থেকে যথোচিত দান। |
رَّبِّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ٱلرَّحْمَٰنِ لَا يَمْلِكُونَ مِنْهُ خِطَابًا (٣٧) (৩৭) যিনি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, দয়াময়, |
يَوْمَ يَقُومُ ٱلرُّوحُ وَٱلْمَلَٰٓئِكَةُ صَفًّا لَّا يَتَكَلَّمُونَ إِلَّا مَنْ أَذِنَ لَهُ ٱلرَّحْمَٰنُ وَقَالَ صَوَابًا (٣٨) (৩৮) যেদিন রূহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে। দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন, সে ব্যতীত কেউ কথা বলতে পারবে না এবং সে সত্য কথা বলবে। |
ذَٰلِكَ ٱلْيَوْمُ ٱلْحَقُّ فَمَن شَآءَ ٱتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِۦ مَـَٔابًا (٣٩) (৩৯) এই দিবস সত্য । অতঃপর যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার কাছে ঠিকানা তৈরি করুক। |
إِنَّآ أَنذَرْنَٰكُمْ عَذَابًا قَرِيبًا يَوْمَ يَنظُرُ ٱلْمَرْءُ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ وَيَقُولُ ٱلْكَافِرُ يَٰلَيْتَنِى كُنتُ تُرَٰبًۢا (٤٠) (৪০) আমি তোমাদের আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম, যেদিন মানুষ প্রত্যক্ষ করবে যা সে সামনে প্রেরণ করেছে এবং কাফের বলবে হায়, আফসোস! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম। |
সূরা আন নাবা এর শানে নুযূল
পবিত্র কুরআনে কিয়ামতের আলোচনাকে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ মক্কার কাফেরদের ধারণায় এটি ছিল একটি অসম্ভব বিষয়। তাই তারা এ দিবসকে অস্বীকার করত এবং এটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য পরস্পরে একে অন্যকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করত । আল্লাহ তা’আলা তাদের ওই সব প্রশ্নের উত্তর প্রদান করার জন্য এবং কিয়ামত যে অবশ্যই সংঘটিত হবে তার সম্ভাব্যতা প্রমাণ করে তাদের দাবি খণ্ডন করার জন্য এ সূরা নাযিল করেছেন।
সূরার আলোচ্য বিষয়
সূরা নাবায় প্রথমে কাফের-মুশরিকরা যে কিয়ামতকে অস্বীকার করত, এ বিষয়ে পরস্পর একে অপরকে নানা প্রশ্ন করত, সে অবস্থা তুলে ধরে তাদের প্রশ্নের উত্তর ও কিয়ামতের সম্ভাব্যতা আলোচনা করা হয়েছে। অতঃপর পৃথিবীতে আল্লাহ তা’আলার অসীম কুদরত, বান্দার প্রতি তাঁর সীমাহীন রহমত, অনুগ্রহ ও তাঁর ব্যাপক বিস্তৃত জ্ঞানের কথা উল্লেখ করে কিয়ামতের সম্ভাব্যতার ওপর দলিল পেশ করা হয়েছে। তা এভাবে যে, তিনি যখন এত অত্যাশ্চর্য ও নজিরবিহীন মনোমুগ্ধকর সৃষ্টি দিয়ে পৃথিবীকে সাজাতে সক্ষম হয়েছেন, তখন তিনি মানুষকে এবং পৃথিবীকে ধংস করার পর পুনরায় সৃষ্টি করতে সক্ষম হবেন না? অবশ্যই সক্ষম হবেন।
আর এটাই তো কিয়ামতের মর্ম। অতঃপর বাস্তবে কিয়ামত ঘটার সময় ও তার পূর্বেকার কিছু অবস্থা তুলে ধরে কাফেরদের জন্য যে জাহান্নামের সিদ্ধান্ত হবে, সেই জাহান্নামের শাস্তির বিবরণ এবং শাস্তির কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। অতঃপর মুত্তাকী তথা আল্লাহর আনুগত্যশীল বান্দাগণের সফলতা ও পুরস্কারের বিবরণ সম্পর্কে আলোকপাত করে উপসংহারে হাশরের ময়দানে অবিশ্বাসীদের অনুশোচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সূরা আন নাবা এর তাফসীর
আয়াত-১-৩
কাফের-মুশরিকরা যে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ আর উপহাস করে একে অপরকে-এমনকি নবী সা. ও মুমিনদের জিজ্ঞাসা করে সেটি কী বিষয়ে? সেটি কি ওই গুরুতর বিষয়ে, যা নিয়ে তারা পরস্পরে এবং মুমিনদের সাথে মতবিরোধ করে? অর্থাৎ তারা কিয়ামত ও তার সম্ভাব্যতা নিয়ে পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে?
আয়াত-৪.৫
তারা যেমনটি মনে করে যে, কিয়ামত ঘটবে না। এমনটি কখনোই বাস্তবসম্মত নয়। আর এ বিষয়টা তারা যেভাবে পরস্পর প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে চাচ্ছে, এভাবে জানার বিষয় নয়। আলোচনা ও গবেষণায় হৃদয়াঙ্গমের বিষয় নয়; বরং এটা যখন সামনে আসবে, তখনই এর স্বরূপ জানা যাবে। তাই মহান প্রভু ঘোষণা করেন, كَلَّا سَيَعْلَمُونَ ثُمَّ كَلَّا سَيَعْلَمُونَ (অচিরেই তারা এর বাস্তবতা ও ভয়াবহতা জানতে পারবে। আবারও বলছি, তাদের ধারণা কখনোই বাস্তব নয়; বরং তারা অচিরেই জানতে পারবে।) অতিসত্বর মৃত্যুর পরপরই জগতের বস্তুসমূহ ভেসে উঠবে।
আয়াত-৬
এ আয়াতসমূহে আল্লাহ তা’আলার ক্ষমতার বিবরণ পেশ করা হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, যেই যমিন ও ভূপৃষ্ঠের ওপর তোমরা সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটাচ্ছ, তাকে কি আমি বিছানাস্বরূপ বানাইনি?
আয়াত-৭
আর পর্বতমালাকে কি পেরেকস্বরূপ বানাইনি? অর্থাৎ শুরুতে যখন পৃথিবী কাঁপছিল, তখন আমি পর্বতমালাকে সৃষ্টি করে তার ওপর পেরেকের ন্যায় স্থাপন করায় তা স্থিতিশীল হয়ে কম্পন দূর হয়ে যায়। ফলে, তোমরা এখন তার ওপর নিশ্চিন্তে নিরাপদে জীবন যাপন করছ।
আয়াত-৮
আমি তোমাদের, বরং প্রতিটি প্রাণী ও উদ্ভিদকে জোড়ায় জোড়ায় তথা নারী-পুরুষ রূপে সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা একে অপর থেকে উপকৃত হতে পারো এবং পার্থিব এ জীবনের গতিধারা অব্যাহত থাকে।
আয়াত-৯
আর আমি নিদ্রাকে তোমাদের জন্য বিশ্রাম ও আরামের উপকরণ বানিয়েছি। যাতে এর মাধ্যমে তোমাদের দিন-রাতের সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায় এবং আগামী দিনের জন্য সচেষ্ট হতে পারো।
আয়াত-১০
আর আমি রাতকে আচ্ছাদনস্বরূপ বানিয়েছি। আচ্ছাদন দিয়ে যেমন দোষ-ত্রুটি ও গোপন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ঢেকে রাখা যায়, তেমনি রাতের আঁধার ছড়িয়ে আমি সমগ্র সৃষ্টিকে আচ্ছাদিত করে দিয়েছি। যাতে তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় গোপনযোগ্য কাজকর্মগুলো সেই আঁধারের আচ্ছাদনে সম্পাদন করতে পারো।
আয়াত-১১
আর দিবসকে বানিয়েছি জীবিকা উপার্জনের সময়। অর্থাৎ রাতের বিপরীতে দিনকে আলোকময় বানিয়েছি। যাতে তোমরা সেই আলোতে জীবিকা নির্বাহসহ অন্য সকল প্রয়োজন পূরণ করতে পারো এবং এর মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করতে পারো।
আয়াত-১২
আর আমি তোমাদের মাথার ওপর সাতটি সুদৃঢ় আকাশ নির্মাণ করেছি। সেগুলো যেন ভূপৃষ্ঠের জন্য ছাদের ন্যায় এতটাই নিখুঁত ও মজবুত হয়ে বিরাজমান যে, হাজারো থেকে লাখো বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সামান্যতম ফাটল ধরেনি।
আয়াত-১৩
আর আমি সেই আকাশে একটি অত্যুজ্জ্বল প্রদীপ তথা সূর্য বানিয়েছি, যা হাজারো থেকে লাখো বছর ধরে বিশ্ববাসীকে সুদৃঢ় থেকে নিয়মিত আলো দিয়ে আসছে। কোনো এক মুহূর্তের জন্যও যার আলো বিকিরণ বন্ধ হয়নি।
আয়াত-১৪
আর আমি বৃষ্টিবর্ষণকারী মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করেছি, যার উদ্দেশ্য সামনের আয়াতসমূহে বর্ণিত হচ্ছে।
আয়াত-১৫
বৃষ্টিবর্ষণ করার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, সেই বৃষ্টির পানি দ্বারা যাতে আমি ভূপৃষ্ঠে নানা প্রকার শস্যদানা ও উদ্ভিদ উৎপন্ন করি, এবং প্রচুর পত্র-পল্লবে ভরা গাছপালা ও বাগ-বাগিচা উৎপন্ন করি। আর তোমরা ও তোমাদের জীবজন্তু সেগুলো খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে, অন্যথায় তোমরা পৃথিবীতে কীভাবে বেঁচে থাকতে?
আয়াত-১৭
নিশ্চয়ই সৃষ্টি জীবের মাঝে বিচার-মীমাংসার দিন সুনির্দিষ্ট আছে। তা হলো কিয়ামত দিবস, যা নির্দিষ্ট সময়ে আসবে। ওই দিবসকে উক্ত আয়াতে يَوْمَ ٱلْفَصْلِ (পৃথকরণ দিবস) বলেছেন। কেননা, ওই দিবসে ঈমানদার ও কাফেরদের পৃথক করা হবে। ভিন্ন করা হবে বিশ্বাসী ও বিতর্ককারীদের। তা হবে مِيقَٰاتً বা নির্দিষ্ট সময়ে । সেই নির্দিষ্ট সময়ের আগেও তা ঘটবে না, পরেও না। যা কেবলই আল্লাহ পাকের জ্ঞানে আছে।
আয়াত-১৮
বিচার-মীমাংসার জন্য সুনির্দিষ্ট দিনটি ধার্য হবে সেদিন, যেদিন ফেরেশতা ইস্রাফিল আ. সব মানুষকে কবর থেকে উঠে কিয়ামতের ময়দানে উপস্থিত হওয়ার জন্য দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকার দেবেন । ফলে, তখন মানুষ দলে দলে বিচারের মাঠে উপস্থিত হবে। প্রত্যেক উম্মত পৃথক পৃথক দলে থাকবে। আবার প্রত্যেক উম্মতের মুমিন ও কাফেরদের পৃথক পৃথক দল হবে। আবার মুমিনদের মধ্যে ভালো ও মন্দদের আলাদা আলাদা দল হবে। মোটকথা, প্রত্যেক দল অপর দল থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে উপস্থিত হবে।
শিঙ্গা ফুৎকারের সময় ও সংখ্যা বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে, শিঙ্গায় দুবার ফুৎকার দেওয়া হবে। প্রথম ফুৎকার অনেক দীর্ঘ হবে। ফুৎকারের শুরুতে আসমান-যমীনের সব প্রাণী বেহুঁশ ও ভীতবিহ্বল হয়ে যাবে। ফুৎকারের শেষ পর্যায়ে সবাই মারা যাবে। আর দ্বিতীয় ফুৎকারের ফলে মানুষ দলে দলে বিচারের মাঠে উপস্থিত হবে। (দেখুন, সূরা যুমার-৬৮, সূরা নামল-৮৭)
কারো মতে, তিনটি ফুৎকার হবে, প্রথম ফুৎকারে সকল প্রাণী বেহুঁশ ও ভীতবিহ্বল হয়ে পড়বে। দ্বিতীয় ফুৎকারে মৃত্যু হবে এবং তৃতীয় ফুৎকারে পুনরুত্থান হবে। তবে বিশুদ্ধ মত হলো, প্রথম ফুৎকারটি এত দীর্ঘক্ষণ হবে যে, এর শুরুতে সব প্রাণী বেহুঁশ হয়ে যাবে । এবং শেষ পর্যন্ত সবাই মারা যাবে।
উল্লেখ্য, তিনটি ফুৎকার সম্পর্কিত একটি হাদীস আছে। তা দুর্বল ।
আয়াত-১৯
সেদিন আকাশকে খুলে দেওয়া হবে। ফলে, তা অনেক দরজায় পরিণত হবে। আকাশ সব দিক থেকে বিদীর্ণ হয়ে এমন ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে যে, মনে হবে- কেবল দরজা আর দরজা। আর সেই দরজা দিয়ে ফেরেশতারা নেমে আসবে।
আয়াত-২০
পর্বতমালাকে আপন স্থান থেকে উপড়িয়ে এমনভাবে চলমান করা হবে যে, সেগুলো মরীচিকার ন্যায় হয়ে যাবে। অর্থাৎ উজ্জ্বল বালিরাশিকে দূর থেকে যেমন পানি বলে মনে হয়, অথচ বাস্তবে সেগুলো পানি নয়, তেমনি পাহাড়গুলোকে যে দেখবে সে এগুলোকে কিছু একটা মনে করবে। অথচ বাস্তবে সেগুলো কিছুই না। দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকারের পর পৃথিবী যখন তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে তখন ভূপৃষ্ঠে যেন কোনো আড়াল না থাকে, বরং সমগ্র বিশ্ব ভূখণ্ডে যেন একই সমতল দৃষ্টিগোচর হয় তাই তখন পর্বতমালাকে সমান করে দেওয়া হবে।
আয়াত-২১
নিঃসন্দেহে জাহান্নাম আল্লাহর দুশমন কাফেরদের অপেক্ষায় উৎপেতে অপেক্ষা করছে তার ভয়াবহ ও কঠিন শাস্তিতে তাদের নিপতিত করার জন্য, যেমনিভাবে মানুষ তার শত্রুকে ধরার জন্য সুযোগের অপেক্ষায় উৎপেতে বসে থাকে। উল্লিখিত আয়াতে জাহান্নামকে مِرْصَادً বলা হয়েছে। مِرْصَادً অর্থ: অপেক্ষার স্থান। তা হলো জাহান্নামের পুল বা পুলসিরাত। সওয়াবদাতা ও শাস্তিদাতা ফেরেশতা সেখানে অপেক্ষা করবে। প্রত্যেক সৎ ও অসৎ ব্যক্তিকে এই পুলের ওপর দিয়ে যেতে হবে। অবাধ্যদের আবাসস্থল হবে এই জাহান্নাম। তাই পরের আয়াতে ঘোষণা করেন, জাহান্নাম হলো অবাধ্য সীমালঙ্ঘনকারীদের আবাসস্থল।
আয়াত-২২
যারা আল্লাহর অবাধ্যতার সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে, যারা কুফর-শিরিক করে আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে জাহান্নাম তাদের প্রত্যাবর্তনের মূল ও শেষ ঠিকানা।
আয়াত-২৩
জাহান্নামে তারা যুগ যুগ ধরে থাকবে, যার কোনো শেষ নেই। আর শাস্তিও চলতে থাকবে, যা কখনোই শেষ হবে না। জাহান্নামে অবস্থানের সময়সীমা বর্ণনার জন্য আয়াতে احْقَابًا শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। যা মূলত حْقَبًةُ এর বহুবচন। আলী রা. থেকে বর্ণিত আছে, এক حْقَبًةُ আশি (৮০) বছর। প্রত্যেক বছর ১২ মাসে। আর প্রত্যেক মাস হবে ৩০ দিনে। প্রতিদিন হবে হাজার বছর সমতুল্য।
আহলে সুন্নত ওয়াল জামা’আতের ঐক্যবদ্ধ মতানুসারে কাফের ও খোদাদ্রোহীরা চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকবে। কোনো ঈমানদার মুসলমান চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে না। সুপারিশের মাধ্যমে অথবা যেকোনোভাবে আল্লাহ তা’আলা তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। তাহলে তারা জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। আর কোনো মুসলমান পাপীকে তাদের পাপের কারণে জাহান্নামে দেওয়া হলেও শাস্তির পর তাদেরকে মুক্ত করে বেহেশতে প্রবেশ করানো হবে। কারণ, চিরস্থায়ী জাহান্নাম সম্পর্কিত কিছু আয়াতে কাফেরদের কথা উল্লেখ আছে।
এছাড়া, অপর একটি আয়াত الا ما شاء ربك (তবে যার বিষয়ে তোমার প্রভু ইচ্ছা করেন’। সূরা হুদ-১০৭), এর মাধ্যমে মুসলমানদের চিরস্থায়ী জাহান্নামী হওয়া থেকে ভিন্ন বলে বোঝানো হয়েছে। অপর আয়াতে দয়াময় প্রভু ঘোষণা করেন, ‘মুমিনদের অণু পরিমাণ আমলের বিনিময় প্রদান করা হবে’। (সূরা যিলযাল-৮)
সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে, অণু পরিমাণ ঈমানদার ব্যক্তিকেও জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। (আহমদ-১৯৬৪৯ হাদীস সহীহ)
আয়াত-২৪
যেখানে তারা এমন কোনো শীতলতা আস্বাদন করবে না, যা জাহান্নামের উত্তাপ লাঘব করতে পারে । এমন কোনো পানীয়ও পান করতে পারবে না, যা তাদের তৃষ্ণা কিছুটা লাঘব করতে পারে।
আয়াত-২৫
হ্যাঁ, এমন ফুটন্ত পানি আস্বাদন করবে, যার উত্তাপে তাদের মুখমণ্ডল ঝলসে যাবে, নাড়ি-ভুঁড়ি ফেটে পেট থেকে বেরিয়ে পড়বে। আর এমন পুঁজ আস্বাদন করবে, যা তাদেরই ক্ষতস্থান থেকে প্রবাহিত হয়ে পড়বে।
আয়াত-২৬
এর মাধ্যমে দুনিয়াতে তাদের কৃত অপকর্মের যথাযথ প্রতিদান দেওয়া হবে, যা তারা অস্বীকার করত।
আয়াত-২৭
যেসব অপকর্মের কারণে তাদের উল্লিখিত শাস্তি দেওয়া হবে তার মধ্যে এটাও আছে যে, তারা নিজ কৃতকর্মসমূহের হিসাব এবং এর জন্য নির্ধারিত কিয়ামত দিবসের আশা করত না। বরং মিথ্যা প্রতিপন্ন করত।
আয়াত-২৮
এবং তারা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে আমার সে সকল আয়াতকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করত যেগুলোতে হিসাব-মীমাংসাও কিয়ামতসহ অন্য বাস্তব বিষয়সমূহের সংবাদ থাকত ।
আয়াত-২৯
আমি আমার ব্যাপক বিস্তৃত জ্ঞান ও সম্মানিত লেখক ফেরেশতাগণের মাধ্যমে তাদের প্রতিটি বিষয়কে আমলনামায় রেজিস্ট্রি খাতায় যথারীতি নথিভুক্ত করেছি। ভালো-মন্দ কোনো কিছুই এর বাইরে নেই ।
আয়াত-৩০
সুতরাং নথিভুক্ত তাদের সকল অপকর্ম সম্পর্কে তাদের অবহিত করে সেদিন তাদের বলা হবে যে, তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করো। আর আজ তোমাদের শাস্তি স্থগিতের প্রার্থনার জবাবে আমি কেবল তোমাদের শাস্তির ওপর শাস্তিই বাড়াতে থাকব। কেননা, দুনিয়াতে তোমরা তোমাদের অস্বীকার ও অবিশ্বাস বাড়িয়ে চলেছিলে ।
আয়াত-৩১
নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ তা’আলার শাস্তির ভয়ে তাঁর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থেকে মুত্তাকী ও পরহেযগার হয়েছে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের সীমাহীন নেয়ামত ও জাহান্নামের ভয়াবহ আজাব থেকে মুক্তির সফলতা ও কামিয়াবী।
আয়াত-৩২
সেই সফলতার কিছুটা বিবরণ এই যে, তাদের জন্য থাকবে সবুজ-শ্যামল উদ্যান, যাতে নানা প্রকার বৃক্ষ আর ফলমূলের পাশাপাশি থাকবে সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক আঙ্গুরসমূহ।
আয়াত-৩৫
সেখানে তারা অনর্থক বকাঝকা, প্রলাপ ও মিথ্যা প্রতারণামূলক কোনো কিছু শুনবে না। কারণ, কারো সাথে কারো কোনো হিংসা-বিদ্বেষ বা ঝগড়া থাকবে না।
আয়াত-৩৬
হে নবী! এর মাধ্যমে আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হবে পর্যাপ্ত পুরস্কার ও উপযুক্ত হিসাব অনুযায়ী প্রতিদান। অণু পরিমাণ জুলুমও তাদের প্রতি করা হবে না।
আয়াত-৩৭
নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সব কিছুর সেই প্রতিপালক বড়ই দয়ালু । তাই তিনি তাঁর সেই দয়ার মাধ্যমে আল্লাহভীরুদের জান্নাত ও জান্নাতের সীমাহীন নেয়ামত প্রদান করবেন। তবে কাফের ও অবাধ্যদের সেই জাহান্নাম ও তার শাস্তি প্রদান করবেন, যা স্থগিত করার কিংবা প্রত্যাহার করার সুপারিশ নিয়ে কথোপকথন করার জন্য তার পক্ষ থেকে কেউ পূর্ণাঙ্গ অধিকার লাভ করবে না।
আয়াত-৩৮
যেই কিয়ামতকে তারা অবিশ্বাস ও অস্বীকার করে সেই কিয়ামত দিবসের অবস্থা এতটাই ভয়ংকর হবে যে, সেদিন সমস্ত প্রাণীকুল অথবা জিবরাঈল আ. সহ সকল ফেরেশতা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আল্লাহর সম্মুখে বিনীতভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। তারা কেউ তখন কোনো কথা বলতে পারবে না। কারণ, কথা বলার অধিকার থাকবে না। তবে তিনি যাকে দয়া করে কথা বলার অনুমতি দেবেন, কেবলমাত্র সে-ই কথা বলবে। আর এমন কথাই বলবে, যা সঠিক ও যথার্থ। সুতরাং কোনো অযোগ্য ব্যক্তির জন্য কেউ কোনো অযৌক্তিক সুপারিশ করবে না এবং কেউ অসীম ও স্বয়ংসম্পন্ন সুপারিশও করতে পারবে না।
আয়াত-৩৯
সারকথা হলো, তারা যেই কিয়ামত দিবসকে অবিশ্বাস করে, তা একটি অবশ্যম্ভাবী সত্য দিবস। সুতরাং এখন যে সেদিন সফলতা অর্জন ও শাস্তি থেকে মুক্তি লাভের ইচ্ছা করে, সে যেন নিজ প্রতিপালকের দিকে ফিরে আসার রাস্তা খুঁজে নেয়।
আয়াত-৪০
কোনো সন্দেহ নেই যে, আমি তোমারদের অতি নিকটবর্তী এক শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক ও ভীতি প্রদর্শন করছি । সেদিন প্রতিটি মানুষ নিজের দুহাত দ্বারা ভালো-মন্দ কৃতকর্ম যেগুলো সে সামনে পাঠিয়েছে, সব উপস্থিত দেখতে পাবে। আর কিয়ামত অস্বীকারকারী কাফের অনুশোচনা করে বলবে-হায়! আমি যদি মাটি হতাম তাহলে তো অন্য জীব-জন্তুকে মাটিতে রূপান্তর করে দেওয়ায় তারা যেমন চিরস্থায়ী শাস্তি থেকে বেঁচে গেছে, আমিও তদ্রুপ বেঁচে যেতাম।
নির্দেশনা
১. মৃত্যুর পর পুনরুত্থান ও কিয়ামতের বিশ্বাস ইসলামী আক্বীদাসমূহের মধ্যে একটি অন্যতম ও মৌলিক বিষয়। কাজেই, এটিকে অবিশ্বাস করা, এটিকে নিয়ে বাদানুবাদ করা কিংবা কোনোরূপ সংশয় প্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই।
২. এখানে এমন কতিপয় নিদর্শন পেশ করা হয়েছে, যেগুলো এ কথার জ্বলন্ত প্রমাণ যে, যেই মহান কুদরত ও হিকমতের অধিকারী আল্লাহ তা’আলা সৃষ্টিজীবের কল্যাণার্থে এসব কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁর পক্ষে মৃত্যুর পর মানুষকে পুনরায় সৃষ্টি করা এবং হিসাব-নিকাশের উদ্দেশ্যে একত্রিত করা কোনো কঠিন কাজ নয়, বরং খুবই সহজ ও সাধারণ কাজ।
৩. নিঃসন্দেহে সৃষ্টিজীবের মাঝে বিচার-মীমাংসার দিন নির্দিষ্ট আছে। তাই দুনিয়াতে কারো প্রতি জুলুম করা যাবে না।
৪. কাফের-মুশরিকরা যেই কিয়ামতের কথা অবিশ্বাস করে সেই কিয়ামত তো অবশ্যম্ভাবী রূপে আসবেই এবং সেখানে তাদের বিরুদ্ধে জাহান্নামের সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে, যাতে তাদের জন্য ভয়ংকর শাস্তি অপেক্ষা করছে। সুতরাং সেই শাস্তি থেকে বাঁচতে হলে সকল প্রকার অবাধ্যতা-ঔদ্ধত্যতা ও সীমালঙ্ঘন পরিহার করে এখনই পরকালে শান্তির পথ ধরতে হবে।
আরো পড়ুন :
৭৯.সূরা নাযিয়াত سورة النازعات Surah An Naziat এর তাফসির ও শানে নুযুল
৮০.সূরা আবাসা سورة عبس Surah Abasa এর তাফসির ও শানে নুযুল
৮১.সূরা আত তাকভীর سورة التكوير Surah At Takwir এর তাফসির ও শানে নুযুল
ট্যাগ সমূহ : সূরা আন নাবা,সূরা আন নাবা বাংলা উচ্চারণ, সূরা আন নাবা এর তাফসির,সূরা আন নাবা এর শানে নুযুল, ৭৮ নং সূরা,সূরা আন নাবা আয়াত ৮, সূরা আন নাবা বাংলা অনুবাদ, সূরা আন নাবা এর ফজিলত, সূরা আন নাবা তেলাওয়াত, সূরা আন নাবা বাংলা তরজমা, সূরা আন নাবা ৭৮, সূরা an naba, surah an naba transliteration,সূরা নাবা, সূরা নাবা এর ফজিলত,سورة النبأ, সূরা নাবা বাংলা উচ্চারণ, সূরা নাবা pdf, সূরা নাবা আয়াত ৮, সূরা নাবা এর শানে নুযুল, সূৱা নাবা মশক, সূরা নাবা আয়াত ৪০, সূরা নাবা তেলাওয়াত,সূরা নাবা এর অপর নাম কি,সূরা আন নাবা, সূরা আন নাবা বাংলা অনুবাদ, সূরা আন নাবা বাংলা উচ্চারণ, সূরা আন নাবা আয়াত ৮, সূরা আন নাবা আয়াত ৮ তাফসির, সূরা আন নাবা এর ফজিলত, সূরা আন নাবা তেলাওয়াত, সূরা আন নাবা বাংলা তরজমা, সূরা আন নাবা ৭৮, সূরা আন-নাবা অর্থ, সূরা নাবা আয়াত ৪০, surah an naba, সূরা নাবা অর্থসহ, সূরা নাবা বাংলা অনুবাদ সহ, সূরা নাবা থেকে নাস, নাবা সুরা,surah naba, surah naba bangla, surah naba pdf, surah naba bangla pdf, surah naba with bangla translation, surah naba read online, surah naba tilawat, surah naba ayat 8,سوره النبا, سورة النبا, تفسير سورة النبأ, سورة النبأ مكتوبة كاملة بدون تشكيل, সূরা আন নাবা,সূরা আন নাবা বাংলা উচ্চারণ, সূরা আন নাবা এর তাফসির,সূরা আন নাবা এর শানে নুযুল, ৭৮ নং সূরা,সূরা আন নাবা আয়াত ৮, সূরা আন নাবা বাংলা অনুবাদ, সূরা আন নাবা এর ফজিলত, সূরা আন নাবা তেলাওয়াত, সূরা আন নাবা বাংলা তরজমা, সূরা আন নাবা ৭৮, |