
রমজান মাসে রাসূল সাঃ কি কি করতেন
নবী করীম (স) মুসলমানদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ। আল্লাহ তায়ালা যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি প্রতিটি আমল সেভাবে সুচারুরূপে পালন করেছেন। রমযান মাসেও তিনি যথাযথভাবে সর্বোত্তমরূপে অতিবাহিত করতেন। রাসূল (স) বিশেষ ইবাদত, কুরআন তেলাওয়াত ও জিকির, রাতজাগরণ, তওবা ও ইস্তেগফার, দান ও সদকা, মানবিক কল্যাণকামিতা ইত্যাদি পুণ্যময় কর্মের মধ্য দিয়ে রমযান মাস অতিবাহিত করতেন। তিনি সর্বোচ্চ পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাইতেন। পবিত্র রমযান নবী করীম (স)-এর কয়েকটি বিশেষ আমলের আলোচনা করা হলো-
» পবিত্র কুরআনের দাওর : রাসূল (স) রমযান মাসে হযরত জিবরাঈল (আ)-এর সঙ্গে বারবার কুরআনের দাওর করতেন। জিবরাঈল (আ) তাঁকে কুরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন এবং তিনি জিবরাঈল (আ)-কে তেলাওয়াত করে শোনাতেন। হযরত আবু বকর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর রমযানে একবার রাসূল (স)-এর কাছে কুরআন আবৃত্তি করা হতো। যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন সে বছর আবৃত্তি করা হয় দুইবার।’ (সহীহ বুখারী)
» কুরআন তেলাওয়াত : রাসূল (স) রমযানে অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। বিশেষ করে রাতের নামাযে তিনি অনেক বেশি কুরআন তেলাওয়াত করতেন।
» কিয়ামুল লাইল : রাসূল (স) রমযানের রাতে ইশার নামাযের পর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কিয়ামুল লাইল তথা তারাবীহ নামায আদায় করতেন। কখনো ঘরে গিয়ে এ নামায আদায় করতেন। উম্মতের ওপর ফরয হয়ে পড়ার আশঙ্কায় তিনি তা ঘরে আদায় করতেন।
» দান-সদকা : আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। দানের ব্যাপারে রাসূল (স) ছিলেন মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা দরাজদিল ও দানশীল। রমযান মাসে তাঁর দানশীলতা সর্বাধিক বেড়ে যেত।
» রাত জাগরণ : রাসূল (স) রমযান মাসের প্রতি রাতেই রাত জাগরণ করে ইবাদত করতেন। তবে শেষ ১০ দিন তাঁর ইবাদত আরও বেড়ে যেত। আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (স) তাঁর বিছানা গুটিয়ে ফেলতেন, স্ত্রীদের থেকে দূরে সরে যেতেন এবং রাতের খাবারকেই সাহরী বানাতেন।
» এতেকাফ : হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসূল (স) বরাবর রমযানের শেষ ১০ দিন এতেকাফ করেছেন যতদিন যাবৎ না আল্লাহ তায়ালা তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন। এরপর তাঁর স্ত্রীরাও এতেকাফ করেছেন।’ (বুখারী ও মুসলিম)। আবু হোরায়রা (রা) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (স) প্রতি বছর দশদিন এতেকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তিনি ইইন্তেকাল করলেন সে বছর এতেকাফ করলেন ২০ দিন। এতেকাফের সময় তিনি বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত এবং নফল নামায আদায় করতেন।
» শেষ সময়ে সাহরী এবং দ্রুততার সঙ্গে ইফতার : রাসূল (স) শেষ সময়ে সাহরী খেতেন এবং সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতেন। তিনি কখনও এ নিয়মের ব্যত্যয় করতেন না। তিনি সাহরী খেতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বলেছেন, ‘তোমরা সাহরী করো। সাহরীতে রয়েছে বরকত।’ (বুখারী ও মুসলিম)
» রোযাদারকে ইফতার করানো : রাসূল (স) সাধ্যমতো রোযাদারদের ইফতার করাতেন। তিনি যখন ইফতার করতেন তখন এক বা একাধিক সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে নিতেন। হযরত যায়েদ বিন খালেদ (রা) বলেন, রাসূল (স) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোযাদারকে ইফতার করিয়েছে অথবা কোনো গাজীকে জিহাদের সামগ্রী প্রদান করেছে তাদের জন্য একই পুণ্য রয়েছে।’ (তিরমিযী)
» পবিত্র কুরআনের দাওর : রাসূল (স) রমযান মাসে হযরত জিবরাঈল (আ)-এর সঙ্গে বারবার কুরআনের দাওর করতেন। জিবরাঈল (আ) তাঁকে কুরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন এবং তিনি জিবরাঈল (আ)-কে তেলাওয়াত করে শোনাতেন। হযরত আবু বকর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর রমযানে একবার রাসূল (স)-এর কাছে কুরআন আবৃত্তি করা হতো। যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন সে বছর আবৃত্তি করা হয় দুইবার।’ (সহীহ বুখারী)
আরো পড়ুন :
থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে ?
ভুল করে খেয়ে ফেললে কি রোজা হবে ?
রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে ?
মহিলাদের কাফনের কাপড় পড়ানোর নিয়ম
ট্যাগ সমূহ : রমজান মাসে রাসূল সাঃ কি কি করতেন, রমজানের কার্যাবলী, রাসূল সাঃ রমজান মাসে কি কি করতেন, রাসূল সাঃ রমজান মাসে যা যা করতেন, রমজানে করণীয়,নবী করীম (স)-এর রমজানের কার্যাবলি,রমজান মাসে রাসূল সাঃ কি কি করতেন, রমজানের কার্যাবলী, রাসূল সাঃ রমজান মাসে কি কি করতেন, রাসূল সাঃ রমজান মাসে যা যা করতেন, রমজানে করণীয়,নবী করীম (স)-এর রমজানের কার্যাবলি,রমজানের কার্যাবলী |