তারাবি নামাজ কত রাকাত ?

তারাবির নামাজ কত রাকাত,তারাবি নামাজ ৮ রাকাতের দলিল, tarabir namaj koto rakat
তারাবির নামাজ কত রাকাত, Tarabir Namaj Koto Rakat

তারাবি নামাজ কত রাকাত তার বিস্তারিত বর্ননা :

আসসালামু আলাইকুম। আজকে তারাবি নামাজের রাকাতের সংখ্যা নিয়ে সহিহ হাদিস থেকে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। যেহেতু তারাবির নামাজ কয় রাকাত এই মর্মে অনেক মতভেদ আলেমদের মাঝে দেখা যায়। আজকের আলোচনা থেকে আপনারা সহজেই তারাবির নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে সে মর্মে স্পষ্ট ধারণা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

আশা করি লেখাটা সম্পূর্ণ পড়বেন।

লেখাটা সম্পূর্ণ পড়লে ‍আপনি সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

লেখাটা ৩ ধাপে লেখা হবে ইনশাআল্লাহ।

প্রথম ধাপ : ৮ রাকাত নিয়ে।

দ্বিতীয় ধাপ : ২০ রাকাত নিয়ে।

তৃতীয় ধাপ : ফলাফল।

প্রথম ধাপ ৮ রাকাত নিয়ে নিচে লিখা হলো :

যারা তারাবির নামাজ ৮ রাকাত নিয়ে কথা বলেন তাদের দলিলগুলো নিচে পেশ করা হল :

যেহেতু তারাবির নামাজ নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে একটি বিরাট দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে। আর যেখানে দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে বা বিভিন্ন মতানৈক্য রয়েছে, সেখানে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন-

“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্যে যিনি শাসক তার। তোমাদের মাঝে কোন বিষয়ে মতভেদ হলে, সেটাকে আল্লাহ ও রাসুলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক থেকে উত্তম। (সূরা নিসা : ৫৯)

তাই আমাদের এই বিষয়টিকে সরাসরি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে নিয়ে যেতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন এবং কি করেছেন, সেটাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। যেহেতু উম্মাহের মধ্যে একটি বিরাট দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে এক্ষেত্রে কেবলমাত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর অনুসরণ অনুকরণ করতে হবে। এখন দেখা যাক,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত রাকাত পড়েছেন ?

তারাবির নামাজ কত রাকাত সহিহ হাদিস :

আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান (রাঃ) বলেন- তিনি একদা আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রমজানের রাতের সালাত কেমন ছিল ? উত্তরে তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে এবং রমজানের বাহিরে ১১ রাকাতের বেশি সালাত আদায় করতেন না। তিনি প্রথমে (২+২) চার রাকাত পড়তেন। তুমি (আবু সালামা) তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিনি (২+২) চার রাকাত পড়তেন। অতঃপর তিনি তিন রাকাত বিতর পড়তেন। (সহিহ মুসলিম : ২০১৩)

হাদিসটি প্রায় সকল হাদীস গ্রন্থেই বর্ণিত হয়েছে। এর বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ ইমাম বুখারী (১৯৪-২৫৬ হি:) ও মুসলিম (২০৪-২৬১হি:) তারা তাদের সহিহ্ গ্রন্থে এটি বর্ণনা করেছেন। বিশেষ করে ইমাম বুখারী (রহ:) হাদিসটি তারাবির সালাত অধ্যায় বর্ণনা করেছেন। তিনি রামাজান ও অন্য মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর রাত্রির সালাত অধ্যায়ের হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। এছাড়া অন্য আরেকটি অধ্যায়ে ভিন্ন সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

উল্লেখ্য যে, ইমাম বুখারী (রহ:) উক্ত শিরোনাম উল্লেখ করলেও ভারত উপমহাদেশের ছাপা সহিহ বুখারী থেকে তা মুছে দেওয়া হয়েছে। কারণ হলো- তারাবি ও তাহাজ্জুত পৃথক সালাত, তারাবি ২০ রাকাত আর তাহাজ্জুদ ১১ রাকাত, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর হাদিসে তাহাজ্জুতের কথা বলা হয়েছে ইত্যাদি যে সমস্ত মিথ্যা কথা প্রচলিত আছে উক্ত শিরোনামের মাধ্যমে সেসব ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। সহীহ বুখারীর ও পাঠদান ও পাঠ গ্রহণকারী লক্ষ লক্ষ শিক্ষক ছাত্র ওলামায়ে কেরামের নিকট বিষয়টি যখন পরিষ্কার হয়ে যাবে; তখন তাদের মনে চিরতরে বদ্ধমূল হয়ে যাবে যে, তারাবির সালাত ৮ রাকাত।

কারণ তখন ইমাম বুখারীর ওপর অন্য কোন ব্যক্তির প্রাধান্য থাকবে না। তাই এই ন্যক্কার জনক কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। আমারা দৃঢ় বিশ্বাস করি যে, ছলচাতুরি করে ইসলামী শরীআকে কখনো গোপন করা যায় না। সহীহ বুখারী শুধু উপমহাদেশেই ছাপা হয় না বরং বিশ্বের বহু দেশে আল্লাহ তায়ালা তা ছাপানোর ব্যবস্থা রেখেছেন।

তাই সিরিয়া, মিশর, কুয়েত, লেবানন, সৌদি আরব সহ অন্যান্য দেশে সহিহ্ বুখারী যতবার ছাপানো হয়েছে; সেখানে উক্ত শিরোনাম বহাল রয়েছে। তা পুরাতন হোক আর নতুন হোক। আফসোস! হককে গোপন করার এ কৌশলী ব্যবসা আর কতদিন চলবে। উক্ত হাদিস থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, রমজান মাসে হোক আর অন্য মাসে হোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১১ রাকাতের বেশি কখনো পড়তেন না। যার মধ্যে আট রাকাত তারাবি বা তাহাজ্জুদ আর তিন রাকাত বিতর।

আরো প্রমাণিত হলো যে তারাবি ও তাহাজ্জুদ একই সালাত ভিন্ন কোন সালাত নয়। তাই ইমাম বুখারি হাদিসটি তাহাজ্জুদ সালাতের অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। উক্ত হাদিসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাত্রির সালাত অর্থাৎ তারাবিহ ও তাহাজ্জুদের রাকাতের সংখ্যার ব্যাপারে এর চেয়ে অধিক বিশুদ্ধ হাদিস পৃথিবীতে আর নেই। এছাড়া আয়েশা (রা) কে আবু সালামা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রমজান মাসের রাতের সালাত সম্পর্কেই জিজ্ঞেস করেছিলেন। আর তার জবাবে তিনি ১১ রাকাতের কথা উল্লেখ করেন।

আরো স্পষ্ট হয় যে, হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে আয়েশা (রা:) এর মাধ্যমে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – এর রাত্রির অবস্থা সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে তিনি বেশি জানবেন এটাই স্বাভাবিক। অতএব দিনের প্রকৃত অনুসারীদের জন্য এই একটি হাদিসই যথেষ্ট।

জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা:) বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে আমাদের সাথে ৮ রাকাত সালাত আদায় করেছেন এবং বিতর পরেছেন। (সহি ইবনে খুযায়মাহ্ ১০৭০)

হাদীসটি কয়েকটি সূত্রে হাসান সনদে বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা যাহাবী তার মিজানুল ইতিদাল গ্রন্থে হাদীসটি উল্লেখ করার পর বলেন, হাদীসটির সনদ উত্তম স্তরের অর্থাৎ হাসান; শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহ:) বলেন হাদিসটির সনদ হাসান; ইবনে খুযায়মাহ মুহাক্কিক ড. মুহাম্মদ মুস্তফা আল আজামী বলেন, এর সনদ হাসান। উল্লেখ্য হাদীসটিকে কেউ কেউ ত্রুটিপূর্ণ বলতে চাইলেও তা সঠিক নয়। কারণ ইমাম যাহাবী এর সম্পর্কে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন; তাই সাধারণ অন্যের মন্তব্যের অপেক্ষায় রাখে না।

তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল সরাসরি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে মারফু সূত্রে বর্ণিত উপরোক্ত সহিহ্ হাদিস সমূহের মধ্যে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, তারাবির সালাত ৮ রাকাতের বেশি নয়।

তাই শায়খ আলবানী উক্ত দলিল সমূহ পেশ করার পর বলেন- যা পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে তাতে আমাদের নিকট স্পষ্ট হয়েছে যে, রাত্রির সালাতের রাকাতের সংখ্যা হলো ১১ যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমল থেকে সহিহ দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।

সুতরাং উম্মতে মোহাম্মদের উপর অপরিহার্য কর্তব্য হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই সুন্নতকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরা। কারণ তিনি কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিলে সে বিষয়ে মুসলিম নর-নারীর স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে কিছু করার অধিকার থাকে না।

যদি কেউ আল্লাহ ও তার রাসুলের সিদ্ধান্তের বাইরে যায় তাহলে তার পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।

আল্লাহ তা’আলা বলেন-

আপনার প্রতিপালকের শপথ! তারা মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের বিবাদ- বিসম্বাদের বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করবে; অতঃপর আপনার দেওয়া সিদ্ধান্ত সমন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা থাকবে না এবং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে। (সূরা নিসা : ৬৫)

এছাড়া আরো নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে যে, কোন বিষয়ে মতনৈক্য দেখা দিলে আল্লাহ তার রাসূলের সিদ্ধান্তের দিকে ফিরে যেতে হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন-

“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্যে যিনি শাসক তার। তোমাদের মাঝে কোন বিষয়ে মতভেদ হলে সেটাকে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক থেকে উত্তম।” (সূরা নিসা : ৫৯)

উক্ত ঘোষণা সত্ত্বেও যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নতের বিরোধিতা করা হয় তাহলে ইহকালে ও পরকালে এর পরিণতি হবে অত্যন্ত মর্মান্তিক।

মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- “অতএব যারা রাসুলের আদেশের বিরুদ্ধাচারণ করে তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, তাদেরকে মহা বিপর্যয় পাকড়াও করবে (দুনিয়াতে) অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। (সূরা আন নূর : ৬৩)

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শের বিরোধী হওয়ার কারণে আজ বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহের এই মহা বিপর্যয়।

সাহাবীদের যুগে তারাবি নামাজ কত রাকাত ছিল ?

মুসলিম সমাজে প্রচার করা হয় যে, ওমর ও আলী (রা:) উভয়েই বিশ (২০) রাকাত তারাবীহ চালু করেছিলেন। এই বিষয়ে আলোকপাত করা হলো-

সায়িব ইবনু ইয়াজিদ (রা:) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, ওমর (রা:) উবাই ইবনে কা’ব ও তামিম আদ-দারি (রা:)- কে লোকদেরকে নিয়ে ১১ রাকাত সালাত আদায় করার নির্দেশ প্রদান করেন।

মুয়াত্তা মালেক ১/১১৫ পৃষ্ঠা, রামযান মাসে রাত্রের সালাত’ অনুচ্ছেদ; সহি ইবনে খুজায়মা ৪/৬৯৮ পৃষ্ঠা; সাঈদ ইবনু মানসূর; আস-সুনান; কিয়ামুল লাইল, পৃষ্ঠা- ৯১; আবু বকর আন- নিশাপুরী, আল ফাওযায়েদ ১/১৩৫ পৃষ্ঠা; বায়হাকি আল মারেফা; ফির ইয়াবি ১/৭৬ পৃষ্ঠা ও ২/৭৫ পৃষ্ঠা; আলবানি, তাহকীক মিশকাত (বৈরুত : আল মাকতাবুল ইসলামী, ১৯৮৫/১৪০৫), ১/৪০৭ পৃষ্ঠা হা/১৩০২- এর টিকা সহ দ্র:; বঙ্গানুবাদ মিশকাত, ৩/১৫২ পৃষ্ঠা, হা/১২২৮ রমজানের রাতের সালাত অনুচ্ছেদ।

উপরিউক্ত হাদীসটি অনেকগুলো সহি গ্রন্থে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে তার সবগুলোই সহিহ।

শায়খ আলবানি বলেন, এই হাদিসের সনদ অতীব বিশুদ্ধ। কারণ, সায়িব ইবনু ইয়াজিদ একজন সাহাবী, তিনি ছোটতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হজ্জ করেছেন।

অন্যত্র তিনি বলেন, আমি বলছি এই হাদিসের সনদ অত্যন্ত সহিহ। কেননা, এর রাবি মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ ইমাম মালেক (রহ:)-এর ওস্তাদ; সকলের ঐক্যমত তিনি একজন অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য রাবি। তাছাড়া ইমাম বুখারী ও মুসলিম তার হাদিস থেকে দলিল গ্রহণ করেছেন।

উল্লেখ্য যে মুয়াত্তার ভাষ্যকার আল্লামা জারকানি ইবনে আব্দুল বার এর বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন যে ইমাম মালেক ছাড়া অন্যরা কেউ ১১ রাকাতের কথা বর্ণনা করেননি বরং সবাই ২১ রাকাত বর্ণনা করেছেন; যা মোসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক এর বর্ণিত হয়েছে। অবশ্য পরেই তিনি এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন। ২১ রাকাত সংক্রান্ত উক্ত বক্তব্য চরম বিভ্রান্তির। কারণ ইমাম মালেক ছাড়াও অনেকেই ১১ রাকাতের উক্ত হাদিস বর্ণনা করেছেন। আবু বকর নিশাপুরি, বাইহাকি, ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ, আল কাতান, ২৪ ইসমাইল ইবনে উমাইয়া, ওসামা ইবনে জায়েদ, মোহাম্মদ ইবনে ইসহাক, ইসমাইল ইবনে জাফর প্রমুখ ওমর (রা:) নির্দেশিত ১১ রাকাতের হাদিস বর্ণনা করেছেন।

শায়খ আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মোবারকপুরী তার মিশকাতুল মাসাবীহ এর ভাষা মিররাতুল মাফাতি গ্রন্থে উক্ত হাদিসের আলোচনায় বলেন,

ওমর (রা:) রমজানের রাতের সালাতের জন্য লোকদেরকে যে একত্রিত করেছিলেন এবং তিনি যে তাদেরকে বিতরসহ ১১ রাকাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন; এই হাদিস তার প্রমান্য দলিল। এছাড়া তার যুগে সকল সাহাবা ও তাবেয়ীগণ যে তারাবির সালাত ১১ রাকাতে পড়তেন এটা তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। কারণ এ হাদিসটির পূর্বে বর্ণিত আয়েশা (রা:) হাদিসের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যশীল এবং জাবির (রা:) বর্ণিত হাদিসের সাথেও সামঞ্জস্যশীল।

মোহাম্মদ ইবনে ইউসুফ (রা:) বলেন, সায়ীব ইবনু ইয়াজিদ (রা:) কে জানানো হয়েছে যে, ওমর (রা:) উবাই ও তামিম আদ-দারির মাধ্যমে লোকদেরকে একত্রিত করেন। অতঃপর তারা উভয়ে ১১ রাকাত সালাত আদায় করান।

মুহাম্মদ ইবনে আবি শায়বা আল-কুফী, আল-মুসান্নাফ (দারুল ফিকর, ১৯৮৯/১৪০৭ হি:)

হাদিসটি সম্পর্কে আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মোবারকপুরী (রহ:) বলেন হাদিসটির সনদ সহিহ্।

মুহাদ্দিসগণের পক্ষ থেকে সহিহ বলে স্বীকৃত উক্ত হাদিস গুলোর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, দ্বিতীয় খলিফা ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাতের ন্যায় ১১ রাকাত তারাবির পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ওমর (রা:)-এর যুগে কত রাকাত তারাবি পড়া হত ?

মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রা:) বলেন- আমি সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রা:) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, আমরা ওমর (রা:) এর জামানায় ১১ রাকাত সালাত আদায় করতাম।

সাঈদ ইবনু মানসুর, আস-সুনান, আওনুল মাবুদ ৪/১৭৫, হা/১৩৭২- এর আলোচনা দ্র:।

ইবনে ইসহাক বলেন,

তারাবির সালাত সম্পর্কে আমি যা শুনেছি তার মধ্য এটি সর্বাধিক বলিষ্ঠ বর্ণনা।

শায়খ আলবানী ১১ রাকাত সংক্রান্ত রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও সাহাবায়ে কেরামের আমল বিশ্লেষণ করার পর মুসলিম উম্মাহের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর অবিস্মরণীয় ভাষণ সামনে রেখে বলেন-

উপরিউক্ত আলোচনা গুলো আমাদের জন্য সঠিক পথ উন্মোচন করেছে। তাই আমরা অবশ্যই বলব যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যর আনুগত্য করনার্থে নির্দিষ্ট সংখ্যা (১১ রাকাত) কে আঁকড়ে ধরা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বক্তব্য হল- নিশ্চয়ই আমার পরে তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে, তারা অতিসত্বর অসংখ্য মতপার্থক্য দেখতে পাবে। সে সময় তোমাদের অপরিহার্য কর্তব্য হবে আমার সুন্নত এবং অভ্রান্ত পথপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশিদিনের সুন্নতকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরা এবং দাত দ্বারা কামড়ে ধরা। আর শরীয়তের মধ্যে তোমরা নতুন সৃষ্ট বিষয় সমূহ থেকে সাবধান থাকবে; কারণ নতুন সৃষ্ট বস্তু বিদআত, আর প্রত্যেক বিদআতি পথভ্রষ্ট আর প্রত্যেক পথভ্রষ্টই জাহান্নামী।

আশা করি হাদীসটি শতধা বিভক্ত মুসলিমের জন্য ঐক্যের প্রতীক বিবেচিত হবে। হবে সঠিক পথের দিশারী। কারণ সহিহ বর্ণনা মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন আমল প্রমাণিত হলে, এর বিপরীত যে আমলেই সমাজে প্রচলিত থাকে না কেন, তা বাতিল বলে গণ্য হবে। চাই তা কোন ইমামের বক্তব্য হোক বা কোন মনিষী, আলেম, মুস্তাহিদ, ফকীহ এর বক্তব্য হোক কিংবা জয়ীফ ও জাল হাদিস সর্বাবস্থায় তা বাতিল সাব্যস্ত হবে।

দ্বিতীয় ধাপ : ২০ রাকাত নিয়ে :

এখন যারা ২০ রাকাত নিয়ে কথা বলেন তাদের দলিল সমূহ নিচে পেশ করা হলো :

রাসূল (সা:), সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে তাবেঈনগন এবং মুজতাহিদ ইমামগণের আমল দ্বারা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে, তারাবির নামাজ ২০ রাকাত।

তারাবি নামাজ ২০ রাকাত। সাহাবায়ে কেরাম (রা:) থেকে এই আমলই সারা পৃথিবীতে চালু হয়েছে। যা আজও সারা পৃথিবীতে আমল হয়ে আসছে। নব্য ফেতনা কতিপয় আহলে হাদিস নামধারী ছাড়া মসজিদে নববী ও বায়তুল্লাহসহ সারা পৃথিবীতে তা সকল মুসলমানগন আমল করে আসছেন। এই ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের মাঝে আমলী এজমা হয়েছিল।

ইবনে কুদামা হাম্বলী (রহ:) [মৃত্যু ৫৯৫ হিজরী] আলমুগনী গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ডের ১৬৭ নং পৃষ্ঠায়, আল্লামা কাশতাল্লানী শাফেয়ী (রহ:) [মৃত্যু ৯২৩ হিজরি] “ইরশাদুস সারী” এর তৃতীয় খন্ডের ৫১৫ নং পৃষ্ঠায় ২০ রাকাতের উপর ইজমার কথা উল্লেখ করেছেন।

কিন্তু ১২৮৪ হিজরীতে ভারতের আকবরবাদ থেকে সর্বপ্রথম এক লা-মাযহাবী মৌলভী সাহেব ৮ রাকাত তারাবির ফতোয়া প্রদান করেন। এরপর ১২৮৫ হিজরীতে পাঞ্জাব সীমান্তে মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন বাটালবী আট রাকাত তারাবি নামাজ পড়া সুন্নত হওয়ার দাবি করেন।

কিন্তু কোরআন ও হাদিস সম্পর্কে তৎকালীন হক্কানী ওলামায়ে কেরাম উক্ত ৮ রাকাত তারাবির ফাতওয়া কে ভুল হিসেবে প্রমাণিত করে প্রত্যাখ্যান করেন।

১৩৭৭ হিজরীতে আরবে শায়খ নসিব রেফারি ও শায়খ নাসিরউদ্দিন আলবানী (রহ:) সর্বপ্রথম আট রাকাত তারাবির মত প্রকাশ করেন। তখন শায়েখ আতিয়া সালিমসহ আরবের জমহুর ওলামায়ে কেরাম তাদের উক্ত রায়কে প্রত্যাখ্যান করেন এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা:) এর যুগ থেকে চলে আসা হারামাইন শরীফাইন তথা বাইতুল্লাহ শরীফ ও মসজিদে নববীতে ২০ রাকাত তারাবির আমলকে অব্যাহত রাখেন। যা আজও অব্যাহত রয়েছে। সুতরাং ৮ রাকাত তারাবি পড়ার মতকে অনুসরণের অর্থ হলো- সাহাবা ও তাবেঈগণের অনুসৃত আমলকে প্রত্যাখ্যান করে নব্য সৃষ্ট বিদআতি দলের অনুসরণ করা।

তারাবীহ নামায ২০ রাকাতের দলিল সমূহ :

২০ রাকাত তারাবির সহিহ হাদিস সমূহ নিচে দেওয়া হলো :

১. হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা:) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে ২০ রাকাত এবং বিতর পড়তেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা- ৫/২২৫, হাদিস নং-৭৬৯২, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ- ২১৮, আল মুজামুল কাবীর, হাদিস নং- ১২১০২, মাজমাউজ যাওযায়েদ, হাদিস নং-১৭২, সুনানে বাইহাকি কুবরা হাদিস নং-৪৩৯১)

২. হযরত জাবের (রা:) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, রমজান মাসের এক রাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহিরে তাশরীফে নিয়ে এলেন। আর সাহাবায়ে কেরামকে ২৪ রাকাত (চার রাকাত এশার আর ২০ রাকাত তারাবির) নামাজ পড়ালেন। আর তিন রাকাত বিতির পড়ালেন। (তারীখে জুরজান- ২৭)

যেহেতু কথিত আহলে হাদিস ভাইদের কাছে দলিল শুধু কোরআন ও সহীহ হাদিস। তথা আল্লাহ ও রাসূল (সা:) এর কথা। কোন ব্যক্তির মতামত তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আর এই দুটি হাদিসকে আল্লাহ এবং রাসূল (সা:) না সহিহ বলেছেন, না জয়ীফ বলেছেন। তাই গায়রে মুকাল্লিদরা এই দুটি হাদিসকে না সহিহ বলতে পারবে, না জয়ীফ বলতে পারবে। এবার দেখার বিষয় যে উম্মতে ঐক্যমতের আমল এর উপর আছে কি নেই ? যদি দেখা যায় যে উম্মতে আমল এর উপরই। তাহলে আমল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার দ্বারা উক্ত হাদিস সহিহ হয়ে যায়।

৩. হযরত ইয়াহিয়া বিন সাঈদ (রা:) থেকে বর্ণিত; নিশ্চয়ই ওমর বিন খাত্তাব (রা:) এক ব্যক্তিকে ২০ রাকাত পড়ার হুকুম দিলেন। (মোসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা- ৫/২২৩)

৪. হযরত সায়েব (রা:) বলেন, হযরত ওমর (রা:) এর সময়কালে ২০ রাকাত তারাবি ছিল। (ফাতহুল বারী- ৪/৪৩৬) যার সনদ বুখারিতে দুই স্থানে আছে।

৫. হযরত সায়েব বিন ইয়াজিদ (রা:) বলেন- আমরা হযরত ওমর (রা:) এর শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবি ও বিতির পড়তাম। (সুনানে সুগরা লিল বায়হাকী, হাদিস নং- ৮৩৩, মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার হাদিস নং- ১৪৪৩)

৬. মোহাম্মদ বিন কাব কুরজি বলেন- ওমর ফারুক (রা:) এর শাসনামলে লোকেরা রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবি ও তিন রাকাত বিতির পড়তো। (মোসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা- ৫/২২৩)

৭. হযরত ইয়াজিদ বিন রুমান (রা:) বলেন- লোকেরা হযরত ওমর (রা:) এর শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবি এবং তিন রাকাত বিতির রমজান মাসে আদায় করত। (মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদিস নং- ১৪৪৩; মুয়াত্তা মালিক, হাদিস নং- ৩৮০; সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদিস নং- ৪৩৯৪)

. হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত; হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু লোকেদের কে হযরত উবাই বিন কাব (রা:)-এর কাছে একত্র করে দিলেন। আর তিনি লোকদের ২০ রাকাত তারাবি পড়াতেন। (সুনানে আবু দাউদ- ১/২০২, সিয়ারু আলামিন নুবালা- ১/৪০০)

৯. হযরত উবাই বিন কাব (রা:) বলেন, হযরত ওমর (রা:) আমাকে এই মর্মে আদেশ দিলেন যে, আমি যেন লোকদেরকে তারাবি পড়াই। তখন ২০ রাকাত পড়া হতো । (কানযুল উম্মাল- ৮/২৬৪)

ইমাম বায়হাকী, আল্লামা বাজি, কাশতাল্লানি, ইবনে কুদামা, ইবনে হাজার মক্কী, তাহতাবী ইবনে হুমাম, বাহরুর বায়েক প্রণেতা (রহ:) প্রমুখগণ এ ব্যাপারে একমত হয়ে বলেন- হযরত ওমর ফারুক (রা:) এর শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবির উপরে সকলের সিদ্ধান্ত স্থির হয় এবং এভাবেই চলতে থাকে। ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন একজন মুহাদ্দিস বা ফকিহ এটাকে অস্বীকার করেনি। আর সুন্নত হওয়ার জন্য সেটির নিরিবিচ্ছিন্ন হওয়া শর্ত। তাই এই ২০ রাকাত তারাবিহ সুন্নতে ফারুকী হয়েছে।

এ সেই ওমর (রা:) যার ব্যাপারে রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন যে, যদি আমার পর কোন নবী হতো; তাহলে ওমর নবী হয়ে যেত। তিনি আরো বলেছেন, দিনের ব্যাপারে সবচেয়ে মজবুত হলেন ওমর রাদিয়াল্লাহ তা’আলা আনহু। যদি ২০ রাকাত তারাবি নামাজ বেদআত হয়, তাহলে হযরত ওমর (রা) সহ সে সময়কার সমস্ত আনসার ও মুজাহিদ সাহাবীগণের বেদআতি হওয়ার আবশ্যক হয়। ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ:) বলেন, উবাই বিন কাব (রা:) মুজাহির ও আনসার সাহাবীদের মাঝে তারাবিহ পড়াতেন। কোন একজনও এই ব্যাপারে আপত্তি উপস্থাপন করেনি। (মাজমুয়া ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া- ৩৩/১১২)

১০. হযরত সায়েব বিন ইয়াজিদ (রা:) বলেন, হযরত ওমর (রা:) এর শাসনামলে লোকেরা ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তেন আর হযরত ওসমান (রা:) এর শাসনামলে লম্বা কেরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন। (বায়হাকী- ৪/২৯৬)

১১. হযরত আবু আব্দুর রহমান সালামী (রা:) বলেন, হযরত আলী (রা:) রমজান মাসে কারীদের ডাকতেন। তারপর তাদের মাঝে একজনকে ২০ রাকাত তারাবি পড়াতে হুকুম দিতেন। আর বিতিরের জামাত হযরত আলী (রা:) নিজেই পড়াতেন। (বায়হাক্বী : ৪/৪৯৬)

১২. হযরত আবুল হাসনা (রা:) বলেন, হযরত আলী (রা:) এক ব্যক্তিকে পাঁচ তারাবি এর সাথে ২০ রাকাত পড়ার হুকুম দিয়েছন। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদিস নং- ৪৮০৫, ৪৩৯৭; কানযুল উম্মাল হাদিস নং- ২৩৪৭৪)

১৩. হযরত আলী (রা:) নিজেই রাসূল (সা:) থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি বিদআতের উৎপত্তি করবে তার ফরজ, নফল কিছুই কবুল হবে না। (বুখারী- ২/১০৮৪; মুসলিম- ১/১৪৪)

হযরত আলী (রা:) আজানের পর ইশার নামাজের জন্য আবার ডাকতে শুনে বললেন- এ বেদআতিকে মসজিদ থেকে বের করে দাও (বাহরুর বায়েক)

তিনি এক ব্যক্তিকে ঈদগাহে ঈদের নামাজের আগে নফল পড়তে দেখে খুবই ধমক দিলেন। যদি ২০ রাকাত তারাবি বিদআত হতো তাহলে এর হুকুম কেন দিলেন তিনি ?

১৪. হযরত ইমাম আবু হানিফা (রহ:) হযরত ইব্রাহিম [মৃত্যু ৯৬ হিজরী] থেকে বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই লোকেরা সাহাবী ও তাবেয়ীগণ রমজান মাসে পাঁচ তারবিহার সাথে ২০ রাকাত তারাবি পড়তো। (কিতাবুল আসার লিআবী ইউসুফ)

১৫. হযরত আতা [মৃত্যু- ১১৪ হিজরী] থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমি লোকদের (সাহাবী ও তাবেয়ীগণ) ২০ রাকাত তারাবি এবং তিন রাকাত বিতির পরতে দেখেছি। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৫/২২৪)

এরকম আরো অনেক হাদিস রয়েছে।

এ সকল হাদিস দ্বারা বুঝা যায় যে, ২০ রাকাতের সাথে তারাবীর শব্দ এবং ২০ রাকাতের তারাবির আমল তাবেঈগণের মাঝে বিনা প্রতিবাদে নির্বিঘ্নে প্রচলিত ছিল। আর পুরো খাইরুল কুরুনে কোন এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা যাবে না, যে ব্যক্তি ২০ রাকাত তারাবিকে অস্বীকার করেছেন বা অপছন্দ করেছেন; কিংবা ২০ রাকাত তারাবিকে বিদআত বলেছে। আট রাকাত জামাতের সাথে পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেছেন। পুরো খাইরুল কুরুনের মাঝে আট রাকাতের সাথে তারাবি শব্দ ব্যবহার করেছেন এরকম কোন প্রমাণ কোথাও বিদ্যমান নেই।

মসজিদে নববীতে ২০ রাকাত তারাবি :

মদিনার মাঝে হযরত ওমর (রা:), হযরত ওসমান (রা:), হযরত আলী (রা:) এর শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবি পড়ানো হতো। আজও মদিনা মুনাওয়ারায় বিশ রাকাত তারাবি পড়ানো হয়। হযরত আয়েশা (রা:) ও মদিনা মুনাওয়ারায় অবস্থান করতেন। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর এ ফরমান বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার দিনের মাঝে বিদআত বের করবে, তার কাজটি পরিত্যাজ্য। যদি ২০ রাকাত তারাবি নামাজ বিদআত ও নাজায়েয হতো তাহলে হযরত আয়েশা (রা:) বছরের পর বছর এর উপর চুপ করে বসে থাকতেন না।

হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রা:) ও মদিনায় অবস্থান করেছিলেন। তিনি ওই হাদিসের রাবি যাতে বলা হয়েছে যে, প্রত্যেকটি বিদআত গোমরাহী আর প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নামে নিক্ষেপকারী।

অথচ তারই সামনে অর্ধ শতাব্দী পর্যন্ত মসজিদে নববীতে ২০ রাকাত তারাবি জামাতের সাথে পড়া হচ্ছিল। অথচ তিনি এর বিরুদ্ধে কোন কথা বলেননি এটা হতে পারে না।

কুফায় হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা:) ২০ রাকাত তারাবি এবং তিন রাকাত বিতির পড়াতেন। (মুখতাসার কিয়ামুল লাইন- ১৫৭)

এমনকি বসরায় ও ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়ানো হতো। ( কিয়ামুল লাইল- ১৫৮)

চার ইমামের বক্তব্য :

শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দাসে দেহলবী (রহ:) বলেন: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চার মাযহাবে সীমাবদ্ধ। এ চার ইমামের মাঝে প্রথম ইমাম হলেন ইমাম আবু হানিফা (রহ:) [মৃত্যু ১৫০ হিজরী] ও ২০ রাকাত তারাবির প্রবক্তা। (ফাতাওয়া কাজিখান- ১/১১২) ইমাম মালিক (রহ:) এর একটি বক্তব্য ২০ রাকাতের পক্ষে, দ্বিতীয় বক্তব্য ৩৬ রাকাতের পক্ষে। [যাতে ২০ রাকাত তারাবি আর ১৬ রাকাত নফল] (হেদায়াতুন মুস্তাহিদ- ১/১৬৭)

ইমাম শাফেয়ী (রহ:) ২০ রাকাতের প্রবক্তা। (আলমুগনি- ২/১৬৭)

ইমাম আহমাদ বিন হাম্মাল (রহ:) এর মুখতার বক্তব্যও ২০ রাকাতের পক্ষে। (আলমুগনি- ২/১৬৭)

চার মাযহাবের ইবারতের মাঝে কোন একটি ইবারতেও শুধু আট রাকাত তারাবিকে সুন্নত আর ২০ রাকাত কে বিদআত বলা হয়নি।

উম্মতে মুসলিমার ইজমা :

১২৮৪ হিজরীর ইংরেজ আমলের আগে পৃথিবীর কোন মসজিদে রমজানের পুরো মাস মসজিদে আট রাকাত তারাবি জামাতের সাথে পরার কোন নজির নেই। একটি মসজিদের নাম কোন কথিত আহলে হাদিস দেখাতে পারবে না। না মসজিদে নববীতে কোনদিন আট রাকাত তারাবি পড়া হয়েছে; না বাইতুল্লাহয়। না পৃথিবীর কোন মুসলিম পল্লীতে। রানী ভিক্টোরিয়ার আমলে সর্বপ্রথম এই বিদআতের সূচনা হয়।

এর আগে সমগ্র উম্মতে মুসলিমা ঐক্যমতের ভিত্তিতে ২০ রাকাত তারাবি পড়ে আসছেন। দেখুন-

১- মিরকাত- ৩/১৯৪

২- ইতহাফুল সদাতিল মুত্তাকীন-৩/৪২২।

৩- আনারাতুল মাসাবিহ-১৮

৪- হাশিয়ায়ে শহরে বেকায়া মাওলানা আব্দুল হাই (রহ:)।

৫- উমদাতুল কারী-৫/২৬৭।

৬- ফাতাওয়ায়ে কাজীখান-১১০।

৭- আলমুগনী- ১/৮০৩।

৮- শহরে মুকান্না- ১/৮৫২।

৯- শরহুল বুখারী লিল কাসতাল্লানী।

১০- আওযাজুল masalek- ১/৩৯০।

১১- শহরে নুকায়া- ১০৪।

১২- আউনুল বারী -২/৩০৭।

১৩- কিতাবুল আজকার – ৮৩

১৪- ফাতহুল কাদির- ১/৪০৭

১৫- আরফুস শাজী -২৩০

১৬- আল বাহরুর রায়েক- ২/৬৬

১৭- ফাতাওয়ায়ে শামী- ১/৫১১

১৮- আলমাসাবিহ- ১৬

১৯- হালবী শরহে মুনিয়া- ৩৮৮

২০- বাদায়েউস সানায়ে- ১/২৮৮।

তাহাজ্জুদ ও তারাবির মাঝে পার্থক্য :

কথিত আহলে হাদিসরা বলেন “তাহাজ্জুদ আর তারাবিহ একই” তাদের এই দাবিটি ভুল নিম্ন বর্ণিত কারণে-

১. তাহাজ্জুদের মাঝে ডাকাডাকি জায়েজ নয় তারাবিতে জায়েজ।

২. তারাবির সময় ঘুমানোর আগে তাহাজ্জুদের সময় নির্ধারিত নয় তবে উত্তম ঘুমের পর।

৩. মহাদ্দিসগণ তাহাজ্জত ও তারাবির অধ্যায় ভিন্ন ভিন্ন লিখেছেন।

৪. তাহাজ্জুদ নামাজের হুকুম কুরআন দ্বারা প্রমাণিত। যথা, সূরা ইসরার ৭৯ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “আর রাতে তাহাজ্জুদ পড়ো এটি তোমার জন্য নফল। অচিরেই তোমাকে তোমার রব প্রশংসিত স্থানে অধিষ্ঠিত করবেন।”

আর তারাবির ব্যাপারে আল্লাহর নবী (সা:) বলেন- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা রমজানের রোজা তোমাদের উপর ফরজ করেছেন। আর আমি তোমাদের উপর এতে কিয়াম করাকে সুন্নাত করেছি। (সুনানে নাসায়ী- ১/৩০৮)

সুতরাং বুঝা গেল তাহাজ্জুত আল্লাহর আয়াত আর তারাবি নবীজির বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত।

৫. তাহাজ্জুদের হুকুম মক্কায় হয়েছে, আর তারাবির হুকুম মদিনায় হয়েছে।

৬. ইমাম আহমাদ (রহ:) তিনিও তারাবি ও তাহাজ্জুদ আলাদা বিশ্বাস করতেন। (মাকনা-১৮৪)

৭. ইমাম বোখারী (রহ্:) এর ক্ষেত্রে বর্ণিত হয়েছে যে তিনি রাতের প্রথম অংশে তার সাগরীদদের নিয়ে তারাবি পড়তেন আর শেষ রাতে একাকী তাহাজ্জুদ পড়তেন। (ইমাম বুখারী এর জীবনী।)

আমরা এতক্ষন ৮ রাকাত এবং ২০ রাকাত নিয়ে মন্তব্য গুলো পড়লাম, জানলাম ও শিখলাম এখন ফলাফল।

তৃতীয় ধাপ : ফলাফল

মূলত এই দুইটির কোনোটি কেই ডিসকারেজ করা কঠিন। রাসূলে কারীম (সাঃ) এর রমজান মাসের রাতের সালাত এ প্রসঙ্গে বোখারী মুসলিম সহ বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি এই মাসের রাতে এবং অন্য মাসের রাতে কখনো ৮ রাকাতের বেশি সালাত আদায় করতেন না। এই হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আম্মাজান আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা। এই হাদিসের উপর ভিত্তি করে অনেক ওলামায়ে কেরামগণ বলেন, রমজান হউক কিংবা রমজানের বাইরেই হোক রাতের এশার নামাজের পরে ৮ রাকাতের বেশি সালাতের অপশন নেই।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবি পড়েছেন এরকম কোন স্পষ্ট এবং বিশুদ্ধ সূত্রে হাদিস মিলানো ভার। বিধায় এই ৮ রাকাত কে আমরা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছি না। অতএব রমজান মাসে তারাবির রাকাত সংখ্যা নিয়ে যখনই বিতর্ক আসবে, আমরা বলবো ৮ রাকাত তাড়াবির কথা যারা বলে থাকেন; তাদের গ্রাউন্ড থেকে এটার স্বপক্ষে যুক্তি এবং দলিল রয়েছে।

কিন্তু সেই সাথে আমরা বলবো ২০ রাকাতের পক্ষেও যুক্তি এবং দলিল কম নয়। বরং আমরা দেখি ২০ রাকাত তারাবির পক্ষে আমরা পাই। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদিসের একটি নামকরা গ্রন্থ। ইমাম আবি শাইবা অনেক বড় মাপের একজন হাদিসের প্রণেতা সংকলনকারী। তিনি তার হাদীস গ্রন্থে ওমর (রা:) ও উবাই ইবনে কাব (রা:) এবং আতা রাহীমাহুল্লাহ থেকে তিনজন বড় বড় মনীষীষহ আরো আছে। আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারি এই তিনজন থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত; এমন এমন সনদে, যেগুলো বুখারী ও মুসলিমের সনদ। সেখানকার বর্ণনাকারীদের সমমানের সনদ।

অর্থাৎ শক্তিশালী সূত্রে তিনি বর্ণনা করেছেন যে, ওমর (রা:) এক ব্যক্তিকে নির্দেশ করেছেন ২০ রাকাত তারাবির সালাত আদায় করার জন্য এবং উবাই ইবনে কাব (রা:) তারাবি পড়েছেন। এই মর্মে অনেক বিশুদ্ধ হাদিস রয়েছে। আতা রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, আমি মানুষদের কে পেয়েছি তারা ২০ রাকাত তারাবীহ পড়ছে এবং বিতির সহ ২৩ রাকাত পড়ছেন।

এই বর্ণনাগুলো বিশুদ্ধ। আমরা জানি ওমর (রাঃ) ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা। তিনি ২০ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন ও পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সমস্ত সাহাবীগণ তা পড়েছেন।

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- আমার পরে তোমরা খলাফায়ে রাশেদার চার খলিফার সুন্নতকে পালন করবে। এবং সাহাবীদের সম্পর্কে তিনি বলেছেন- তারা তারকাদের মত, তাদেরকে অনুসরণ করবে।

তাহলে আমরা সবগুলো জিনিস একত্র করে দেখি ২০ রাকাত তারাবির ওমর (রা:) থেকে উবাই ইবনে কাব (রা:) থেকে, আতা রাহিমাহুল্লাহ থেকে এবং বিভিন্ন সাহাবীদের থেকে অত্যন্ত বিশুদ্ধ ভাবে এবং সঠিকভাবে বর্ণিত হয়েছে প্রমাণিত হয়েছে।

বিধায় ২০ রাকাত তারাবীহ কে উড়িয়ে দেওয়ার কোনো অপশন নাই। এ ব্যাপারে সাহাবীদের মাঝে কোন মতানৈক্য ছিল বলে আমাদের জানা নেই।

প্রিয় পাঠক ২০ রাকাত তারাবির এই সালাতটি যুগ যুগ ধরে প্রায় সকল মাযহাবের সকল চিন্তার ওলামায়ে কেরাম শত শত বছর ধরে হাজারো বছর ধরে ধারণ করে আসছেন ও আমল করে আসছেন। আর এই জন্য এখন পর্যন্ত মক্কা-মদিনায় ২০ রাকাত তারাবির প্রচলিত আছে। সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামাকেরাম পরিষদের সদস্য এবং বর্তমান বাদশা এবং বিগত বাদশা উভয় বাদশার পরামর্শে ধর্মীয় উপদেষ্টা ডঃ আব্দুল্লাহ আল মুতলাক তিনি দৈনিক আর রিয়াদ পত্রিকায় একটি আর্টিকেল লিখেছেন যে, ২০ রাকাত তারাবি সালাফে সালেহীন ইসলামের একেবারে পূর্ব থেকে যুগ যুগ ধরে সাহাবীদের থেকে এবং ওলামায়ে কেরামগণ থেকে প্রমাণিত এবং আমল হয়ে আসছে।

এটিকে সুন্নাত বিরোধী মনে করা বিভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি বলেছেন রমজান মাস নফল আমলের মাস এখানে রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। ৮ রাকাত যারা পড়েন তাদেরকেও আমরা ডিসকারেজ করবো না। কিন্তু ২০ রাকাত সাহাবীদের থেকে চলে আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। এটার বিরোধিতা করা কোন অবস্থাতেই সঠিক হবে না। তাহলে সাহাবীদের বিরোধিতা করতে হবে, খলিফাগণের বিরোধীতা করতে হবে যা আমাদের ঈমান আমলকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দেবে।

“অফি কুল্লিন খায়ের” ৮ রাকাত ২০ রাকাত সবগুলোর ভেতরেই কল্যাণ রয়েছে বিধায় রাখার সংখ্যা নিয়ে ঝগড়া করা কোনো অবস্থাতে উচিত নয়।

তারাবির রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করা এটি সুন্নাহ্ দ্বারা প্রমাণিত নয়। বরং সাহাবাদের থেকে ২০ রাকাত প্রমাণিত। এটাকে যদি কেউ সুন্নত বিরোধিতা মনে করে তাহলে ভুল হবে। আবার রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রমজানের এবং রমজানের বাইরে ৮ রাকাতের বেশি পড়তেন না। যারা এই বর্ণনাটা কে তারাবির জন্য ফিট করে থাকেন, সেটা তাদের ইশতেহাদ এবং বুঝ। এটা নিয়ে কেউ ডিসকারেজ করে সমাজে ঝগড়া করা; সেটাও কোন অবস্থাতেই সঠিক নয়।

মূল বিষয় হলো তারাবি ধীরস্থিরতার সাথে পড়তে হবে। আমাদের দেশে অনেক সময় দেখা যায় ২০ রাকাত তারাবি পড়তে গিয়ে অনেক তাড়াহুড়া করেন; এটা কোনভাবেই প্রশংসনীয় নয়। এর চেয়ে বরং অল্প পড়া ভালো। নফল সালাত আমরা ২০ রাকাতও পড়ি ১০ রাকাত ও পড়ি আবার ৮ রাকাত ও পরি তাতে গুনাহ হবে না। আমাদের রোজা হয়ে যাবে। কিন্তু তাড়াহুড়া করলে আমাদের সালাত নষ্ট হয়ে যাবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ইখলাসের সঙ্গে রমজান মাসে দাঁড়িয়ে রাতে ইবাদত করবে অর্থাৎ তারাবির নামাজ পড়বে; আল্লাহ তা’আলা তার পিছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন। (বুখারি; মুসলিম)

প্রিয় পাঠক আসুন সেজন্য আমরা এই বাড়াবাড়ি থেকে বেঁচে থাকি। ৮ রাকাত ২০ রাকাত নিয়ে বিতর্ক নয় বরং উভয়টিই আমরা সুন্নাহ্ মনে করবো। কিন্তু অপরটিকে আমরা ডিসকারেজ করবো না। যেহেতু সেটারো গ্রহণযোগ্য ভিত্তি দলিল আছে এবং বিষয়টি ইস্তেহাদি

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্দরভাবে, ধীরস্থিরতা ভাবে, সুষ্ঠুভাবে তারাবির নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুক। (আমীন)

ট্যাগ : তারাবির নামাজ কত রাকাত, তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল,তারাবি নামাজ ৮ রাকাতের দলিল, tarabir namaj koto rakatতারাবি নামাজ কত রাকাত, tarabir namaj koto rakatতারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল সৌদি আরবে তারাবির নামাজ কত রাকাত, তারাবি নামাজের নিয়ম, তারাবির নামাজ কত রাকাত সহিহ হাদিস, তারাবির নামাজ সর্বনিম্ন কত রাকাত পড়া যায়, তারাবির নামাজ কয় রাকাত করে পড়তে হয, ২০ রাকাত তারাবির সহিহ হাদিস তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল,তারাবির নামাজ কত রাকাত,তারাবির নামাজ কত রাকাত ২০ রাকাত তারাবির সহিহ হাদিস ২০ রাকাত তারাবির সহিহ হাদিস tarabir namaj koto rakat
তারাবির নামাজ আসলে কয় রাকাত, তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা, তারাবি নামাজের ২০ রাকাতের দলিল, তারাবি নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে, ৮ রাকাত তারাবি নামাজের সহি হাদিস। ২০ রাকাত তারাবির সহিহ হাদিস তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল ২০ রাকাত তারাবির সহিহ হাদিস ২০ রাকাত তারাবির সহিহ হাদিস তারাবির নামাজ কত রাকাত তারাবির নামাজ কত রাকাত তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল,তারাবির নামাজ কত রাকাত tarabir namaj koto rakat
তারাবি নামাজ কত রাকাত

আরো পড়ুন :

ভুল করে খেয়ে ফেললে কি রোজা হবে ?

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ

শবে কদরের ফজীলত ও আমলসমূহ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top