নামাজের সুন্নাত সমূহ
নবীর নামাযের মধ্যে ফরয এবং ওয়াজিব ছাড়াও অন্য কতকগুলো জিনিসও করেছেন কিন্তু সে সবের এমন কোনো তাকীদ তিনি করেছেন বলে প্রমাণিত নেই- যেমন ফরয এবং ওয়াজিবের বেলায় রয়েছে। নামাযের সুন্নাত বলা হয়। যদিও এগুলো ছুটে গেলে নামায নষ্ট হয় না এবং সাহু সিজদাও অপরিহার্য হয় না, তথাপি এগুলো মেনে চলা উচিত। কারণ নবী (স.) এগুলোকে মেনে চলেছেন এবং প্রকৃতপক্ষে নামায তো তাই যা নবী সালাম-এর নামাযের সদৃশ। এগুলোকে নামাযের সুন্নাত একুশটি-যথা,
১. তাকবীরে তাহারীমা বলার আগে পুরুষের কানের নিম্নভাগ পর্যন্ত এবং নারীর কাঁধ পর্যন্ত দু’হাত উঠানো। ওজর বশত : পুরুষ কাঁধ পর্যন্ত দু’হাত উঠালে সহীহ হবে।
২. তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় দু’হাতের আঙুলগুলো খুলে রাখা এবং দুই হাতুলি এবং আঙুলগুলো কেবলামুখী করা।
৩. তাকবীরে তাহরীমা বলার পরক্ষণেই পুরুষের নাভির ওপরে এবং মেয়েদের বুকের ওপরে হাত বাঁধা। হাত বাঁধার মাসনূন তরীকা এই যে, ডান হাতের হাতুলি বাম হাতের হাতুলির পিঠের ওপর রাখবে এবং ডান হাতের বুড়ো আঙুল এবং ছোট আঙুল দিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরবে। আর বাকী তিন আঙুল বাম হাতের ওপর বিছিয়ে রাখবে। এ তরীকা নারী পুরুষ উভয়ের জন্য । অবশ্য দুই আঙুল দিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরা নারীদের জন্য সুন্নাত নয়।
৪. তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় মস্তক অবনত না করা।
৫. ইমামের জন্য তাকবীর তাহরীমা এবং এক রুকন থেকে অন্য রুকনে যাবার সময় তাকবীর জোরে বলা।
৬. সানা পড়া । অর্থাৎ ‘সুবহানাকাল্লাহুমা’ শেষ পর্যন্ত পড়া।
৭. اعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطِنِ الرَّحِيمِ পড়া।
৮. প্রত্যেক রাকায়াতে সূরা ফাতেহার পূর্বে بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ টা পড়া।
৯. ফরয নামাযের তৃতীয় এবং চতুর্থ রাকায়াতে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পড়া।
১০. আমীন বলা । ইমামও আমীন বলবে এবং একাকী নামায পাঠকারীও আমীন বলবে। যেসব নামাযে উচ্চস্বরে কেরাত পড়বে তাতে সূরা ফাতিহা শেষ হওয়ার পর সকল মুক্তাদী আমীন বলবে।
১১. সানা, আউযুবিল্লাহ’ বিসমিল্লাহ এবং আমীন পড়বে।
১২. কিরায়াতে মাসনূন তরীকা অনুসরণ করা। যে যে নামাযে যতখানি কুরআন পড়া সুন্নাত সে মুতাবেক পড়া।
১৩. রুকূ’ এবং সিজদায় অন্ততপক্ষে তিনবার তাসবীহ পড়া। অর্থাৎ রুকূ’তে سُبْحَانَ رَبِيَ الْعَظِيمِ এবং সিজদায় سُبْحَانَ رَبِّي الأعلى পড়া।
১৪. রুকূ’তে মাথা এবং কোমর সটান সোজা রাখা এবং দু’হাতের আঙুল দিয়ে উভয় হাঁটু ধরা।
১৫. কাওমার (রুকূ’ থেকে উঠে দাঁড়ানো অবস্থায়) ইমামের سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حمده বলা এবং মুক্তাদীর ربنا لك الحمده বলা।
১৬. সিজদায় যাবার সময় প্রথমে হাঁটু, তারপর দু’হাত, তারপর নাক এবং তারপর কপাল রাখা।
১৭. জলসা এবং কা’দায় বাম পা বিছিয়ে তার ওপর বসা এবং ডান পা এমনভাবে খাড়া রাখা যেন আঙুলগুলোর মাথা কেবলার দিকে থাকে। দু’হাত হাঁটুর ওপর রাখা।
১৮. আত্তাহিয়্যাতুতে ‘লা-ইলাহা’ বলার সময় শাহাদাত আংগুলি দ্বারা ইশারা করা।
১৯. শেষ কা’দায় আত্তাহিয়্যাতুর পর দরুদ পড়া।
২০. দরুদের পর কোনো মাসনূন দোয়া পড়া।
২১. প্রথমে ডান দিকে এবং পরে বাম দিকে সালাম ফেরা নো।
নামাজের মুস্তাহাব সমূহ
নামাযের মুস্তাহাবগুলো নামাযে পাঁচটি মুস্তাহাব। তা মেনে চলা খুবই সওয়াবের কাজ এবং ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে না।
১. পুরুষ যদি চাদর প্রভৃতি গায়ে দিয়ে থাকে, তাহলে তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠাবার সময় চাদর থেকে হাত বাইরে বের করা, মেয়েদের হাত বের না করে তাকবীর তাহরীমা বলা।
২. দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার স্থানের দিকে, রুকূ’ অবস্থায় দু’পায়ের ওপর, জলসা ও কা’দার সময় দু’হাঁটুর ওপর এবং সালাম ফেরাবার সময় দু’কাধের ওপর নযর রাখা।
৩. নামাযী একাকী নামায পড়লে রুকূ’ এবং সিজদায় তিনবারের বেশী তাসবীহ পড়া।
৪. কাশি যতদূর সম্ভব ঠেকিয়ে রাখা।
৫. হাই এলে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করা, মুখ খুলে গেলে দাঁড়ানো অবস্থায় ডান হাত দিয়ে এবং অন্যান্য অবস্থায় বাম হাতের পিঠ দিয়ে মুখ ঢাকা।
আরো পড়ুন :
ট্যাগ সমূহ : নামাজের সুন্নাত সমূহ,নামাজের সুন্নাত,নামাজের সুন্নাত কেরাত,নামাজের সুন্নাত মুয়াক্কাদা 12 টি,নামাজের সুন্নাত কাকে বলে,নামাজের সুন্নাত নামাজ,সুন্নত নামাজের নিয়ম,namajer sunnat bangla,namazer sunnat,namajer sunnat somuho,নামাজের মুস্তাহাব সমূহ |