
সূরার পরিচয় :
সূরার নাম : সূরা আল গাশিয়াহ | সূরার অর্থ : বিহ্বলকর ঘটনা। |
সূরা নং : ৮৮ | সিজদা সংখ্যা : ০ |
আয়াত সংখ্যা : ২৬ | রুকু সংখ্যা : ১ |
শব্দ সংখ্যা : ৯২ | পারার সংখ্যা : ৩০ |
অক্ষর সংখ্যা : ২৮১ | শ্রেণী : মাক্কী। |
সূরা আল গাশিয়াহ سورة الغاشية Surah Al Ghashiyah এর তাফসির ও শানে নুযুল
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ শুরু করছি আল্লাহ তা’আলার নামে, যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু |
(١) هَلْ أَتَىٰكَ حَدِيثُ ٱلْغَٰشِيَةِ (১) আপনার কাছে আচ্ছন্নকারী কিয়ামতের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি? |
(٢) وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ خَٰشِعَةٌ (২) সেদিন অনেক মুখমণ্ডল হবে লাঞ্ছিত, |
(٣) عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ (৩) পরিশ্রমী, ক্লান্ত। |
(٤) تَصْلَىٰ نَارًا حَامِيَةً (৪) তারা তীব্র জ্বলন্ত আগুনে দগ্ধ হবে। |
(٥) تُسْقَىٰ مِنْ عَيْنٍ ءَانِيَةٍ (৫) তাদেরকে চূড়ান্ত উত্তপ্ত ঝর্ণা থেকে পান করানো হবে। |
(٦) لَّيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ إِلَّا مِن ضَرِيعٍ (৬) বিষাক্ত কাঁটাযুক্ত ঘাস ব্যতীত তাদের জন্য কোনো খাদ্য নেই। |
(٧) لَّا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِى مِن جُوعٍ (৭) এটা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং ক্ষুধাও দূর করবে না। |
(٨) وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاعِمَةٌ (৮) সেদিন অনেক মুখমণ্ডল হবে আনন্দে উজ্জ্বল। |
(٩) لِّسَعْيِهَا رَاضِيَةٌ (৯) তাদের (নেক) আমলের কারণে সন্তুষ্ট। |
(١٠) فِى جَنَّةٍ عَالِيَةٍ (১০) তারা থাকবে, সুউচ্চ জান্নাতে। |
(١١) لَّا تَسْمَعُ فِيهَا لَٰغِيَةً (১১) তথায় শুনবে না কোনো অনর্থক কথাবার্তা। |
(١٢) فِيهَا عَيْنٌ جَارِيَةٌ (১২) তাতে রয়েছে প্রবহমান ঝর্ণা। |
(١٣) فِيهَا سُرُرٌ مَّرْفُوعَةٌ (১৩) সেখানে রয়েছে সুউচ্চ আসনসমূহ |
(١٤) وَأَكْوَابٌ مَّوْضُوعَةٌ (১৪) এবং প্রস্তুত পানপাত্রসমূহ |
(١٥) وَنَمَارِقُ مَصْفُوفَةٌ (১৫) এবং সারিবদ্ধ অনেক তাকিয়া |
(١٦) وَزَرَابِىُّ مَبْثُوثَةٌ (১৬) এবং বিস্তৃত বিছানো বহু গালিচা। |
(١٧) أَفَلَا يَنظُرُونَ إِلَى ٱلْإِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ (১৭) তারা কি উটের দিকে তাকায় না; কীভাবে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে? |
(١٨) وَإِلَى ٱلسَّمَآءِ كَيْفَ رُفِعَتْ (১৮) এবং আকাশের দিকে তাকায় না; কীভাবে তা উঁচু করা হয়েছে? |
(١٩) وَإِلَى ٱلْجِبَالِ كَيْفَ نُصِبَتْ (১৯) এবং পর্বতমালার দিকে; কীভাবে সেগুলোকে (জমিনে) স্থাপন করা হয়েছে . |
(٢٠) وَإِلَى ٱلْأَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ (২০) এবং জমিনের দিকে; কীভাবে তা সমতলভাবে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। |
(٢١) فَذَكِّرْ إِنَّمَآ أَنتَ مُذَكِّرٌ (২১) অতএব, আপনি উপদেশ দিন, আপনি তো কেবল একজন উপদেশদাতা, |
(٢٢) لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُصَيْطِرٍ (২২) আপনি তাদের ওপর কর্তৃত্বকারী নন, |
(٢٣) إِلَّا مَن تَوَلَّىٰ وَكَفَرَ (২৩) কিন্তু যে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও কুফরী করে, |
(٢٤) فَيُعَذِّبُهُ ٱللَّهُ ٱلْعَذَابَ ٱلْأَكْبَرَ (২৪) আল্লাহ তাকে মহা শাস্তি দেবেন। |
(٢٥) إِنَّ إِلَيْنَآ إِيَابَهُمْ (২৫) নিশ্চয়ই তাদেরকে আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে । |
(٢٦) ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا حِسَابَهُم (২৬) অতঃপর তাদের (কর্মের) হিসাব-নিকাশ নেওয়া আমারই দায়িত্ব। |
সূরার আলোচ্য বিষয় :
এ সূরায় চারটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে :
১. কিয়ামতের মাঠে ও জাহান্নামে কাফেরদের অবিরাম কষ্ট করে ক্লান্ত হওয়া ও কঠোর শাস্তি আস্বাদন করার বর্ণনা এসেছে। আর মুমিনদের কিয়ামতের মাঠে ও জান্নাতের শান্তি ও আরামের বর্ণনা এসেছে।
২. উট, উঁচু আসমান, দৃঢ় পাহাড় ও বিস্তৃত জমিনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। যেন মানুষ আল্লাহর এসব নিদর্শনের প্রতি শিক্ষাগ্রহণের দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার প্রভুকে চিনতে পারে।
৩. রাসূলুল্লাহ স.-এর দায়িত্ব হলো শুধু আল্লাহর পথে আহ্বান করা। কাউকে জোর করে মুসলমান বানানো নয়।
৪. মানুষ মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছে ফিরে যাবে। তিনি প্রত্যেকের কর্মের হিসাব নেবেন।
সূরা আল গাশিয়াহ এর তাফসীর
আয়াত-১.
আপনার কাছে কি আচ্ছন্নকারী কিয়ামতের বৃত্তান্ত এসেছে? প্রশ্নটি উত্তর জানার জন্য করা হয়নি। বরং সামনে বর্ণিত বিষয়ের প্রতি রাসূল স.-কে আগ্রহী ও আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে এই প্রশ্নশৈলী গ্রহণ করা হয়েছে। কিয়ামতকে আচ্ছন্নকারী বলার কারণ হলো, কিয়ামতের বিপদাপদ ও ভয়াবহতা গোটা মানুষকে আচ্ছন্ন ও বেষ্টন করে ফেলবে। কিয়ামতের দিন মানুষ মুমিন ও কাফের দুই দলে বিভক্ত হবে। তাদেরকে মুখমণ্ডল দ্বারা পৃথকভাবে চেনা যাবে। কাফেরদের মুখমণ্ডলের অবস্থা এই বর্ণিত হয়েছে-
আয়াত-২.
সেদিন অনেক মুখমণ্ডল আজাবের কারণে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে। কাফেররা দুনিয়াতে আল্লাহর সামনে নত হয়নি। তাই কিয়ামতে এর শাস্তিস্বরূপ তাদের মুখমণ্ডল লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে।
আয়াত-৩.
কাফেররা পরকালে পরিশ্রম ও কষ্টের অনেক কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাবে। তা হলো কিয়ামতের মাঠে তারা নগ্ন, জুতাবিহীন, ক্ষুধার্ত ও পিপাসিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে এবং তাদের গলায় বেড়ি ও শরীরে ভারী শিকল পরিয়ে দেওয়া হবে। তা টেনে টেনে চলবে এবং উট যেভাবে কাদামাটিতে কষ্ট করে চলে, সেভাবে আগুনে সে চলবে । কেউ কেউ বলেন, কাফেররা দুনিয়াতে মুশরিকসুলভ ইবাদত ও বাতিল পন্থায় সাধনা করতে করতে ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে যায়। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তারা এসব ইবাদত করলেও তা বাতিল পন্থায় হওয়ার কারণে গ্রহণযোগ্য হবে না ।
আয়াত-৪.
কাফেরদের বসবাসের জায়গা সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা তীব্র জ্বলন্ত আগুনে দগ্ধ হবে। এ আগুনের উত্তাপ এত তীব্র হবে যে, অন্য কোনো আগুনের উত্তাপ এর সাথে তুলনা করা যাবে না।
আয়াত-৫.
তাদের পানীয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা যখন জাহান্নামে চরম পিপাসার কারণে ‘পানি’ ‘পানি’ বলে চিৎকার করতে থাকবে, তাদেরকে তখন চূড়ান্ত উত্তপ্ত ঝরনার পানি পান করানো হবে। জাহান্নাম সৃষ্টি করার পর থেকে তা দ্বারা এ ঝরনার পানি উত্তপ্ত করা হয়েছে। এ পানি মুখে নেওয়া মাত্রই ঠোঁট ও চেহারা পুড়ে যাবে এবং নাড়িভুঁড়ি ফেটে বেরিয়ে যাবে।
আয়াত-৬.
তাদের খাদ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত কাঁটাযুক্ত ঘাস ব্যতীত তাদের জন্য কোনো খাদ্য নেই । ضَرِيعٍ (যরী) একটি দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত কাঁটাযুক্ত ঘাস, যা মাটিতে ছড়ায় । জাহান্নামের যরী হবে সবিরের (এক জাতীয় তিতা ঔষধ) চেয়েও তিক্ত, মৃত প্রাণীর চেয়েও দুর্গন্ধযুক্ত ও আগুনের চেয়েও উত্তপ্ত । এক শ্রেণির জাহান্নামিরা খাদ্যের জন্য চিৎকার করলে তাদেরকে তা খেতে দেওয়া হবে।
আয়াত-৭. ১০.
এই দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত কাঁটাযুক্ত ঘাস তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং তাদের ক্ষুধাও দূর করবে না। যেকোনো খাবার খাওয়ার তিনটি উদ্দেশ্য থাকে : স্বাদ আস্বাদন করা, শরীর পুষ্ট করা ও ক্ষুধা নিবারণ করা। যরী খাওয়ার দ্বারা এ তিনটি উদ্দেশ্যের একটিও অর্জিত হবে না। ‘স্বাদ’ যে লাভ হবে না, তা তো যরী শব্দ থেকেই স্পষ্ট। আর পরবর্তী দুটি উদ্দেশ্য অর্জন না হওয়ার কথা এ আয়াতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, আরবে কোনো কোনো স্থানে এক প্রকার যরী আছে, যা উট ভক্ষণ করে। তবে দুনিয়ার যরী আর জাহান্নামের যরী এক নয়। কাফেরদের দুরবস্থার বর্ণনার পর মুমিনদের সুন্দর অবস্থার কথা বর্ণনা করা হয়েছে- তাদের মুখমণ্ডল সেদিন সজীব হবে, তাদের কর্মফলে তারা সন্তুষ্ট হবে, জান্নাতের আরো অন্যতম কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলো,
এক. তারা সুউচ্চ ও উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন জান্নাতে থাকবে। সেখানে যা মনে চায়, তা-ই পাবে এবং সেখানে সুন্দর দৃশ্য দেখে তারা তৃপ্ত হবে। সুউচ্চ জান্নাত বলার কারণ হলো, জান্নাত সপ্তম আকাশের ওপরে অবস্থিত । এক আয়াতে উল্লেখ হয়েছে ‘عند سدرة المنتهى- عندها جنة المأوى’ ‘সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে, যার কাছে আছে বসবাসের জান্নাত।’ (সূরা নাজম-১৪, ১৫)
এই থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, জান্নাত সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে। আর সিদরাতুল মুনতাহা যে সপ্তম আকাশে তা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তা ছাড়া জান্নাতে অনেক স্তর রয়েছে। একটি স্তর অপরটির ওপরে। দুই স্তরের মধ্যে আসমান-জমিন সমান দূরত্ব রয়েছে।
আয়াত-১১.
দুই. জান্নাতিরা বেহেশতে কোনো অনর্থক ও অসার কথা শুনবে না। মিথ্যা, গালমন্দ ও অপমানজনক কথার তো প্রশ্নই ওঠে না। তারা শুধু সেখানে আল্লাহর প্রশংসা ও যিকির করবে এবং প্রজ্ঞার সাথে কথা বলবে।
আয়াত-১২.
তিন. জান্নাতে প্রবহমান অনেক ঝরনা রয়েছে। এসব ঝরনা কোনো গর্ত ছাড়া জান্নাতের জমিনের ওপর থাকবে। এগুলোর পানিও অনন্য সুস্বাদু পানীয় হবে।
আয়াত-১৩.
চার. জান্নাতে রয়েছে সুউচ্চ আসনসমূহ । যেন মুমিন ব্যক্তি এসব আসনে বসে আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতে যত নিয়ামত ও রাজত্ব দেবেন, সব কিছু দেখতে পারে। জান্নাতি যখন এসব আসনে বসতে চাইবে, তখন এগুলো নিচে চলে আসবে। বসার পর পুনরায় আপন স্থানে চলে যাবে। স্বর্ণের তৈরি এসব আসন ইয়াকুত ও যবরজাদ পাথর দ্বারা সুসজ্জিত থাকবে।
পাঁচ. জান্নাতিদের পানপাত্র তাদের সামনে রক্ষিত থাকবে। কেউ বলেছেন, প্রবহমান ঝরনাসমূহের পাশে পানপাত্র থাকবে। যখনই তারা পান করতে চাইবে, তখনই এসব পাত্র ভরা পাবে।
আয়াত-১৫.
ছয়. জান্নাতে সারিবদ্ধভাবে সাজানো অনেক তাকিয়া রয়েছে। যেখানে মুমিন ব্যক্তির মনে চায়, সেখানে একটিতে বসবে ও আরেকটিতে হেলান দেবে।
সাত. সেখানে বিস্তৃত বিছানো অনেক গালিচা রয়েছে। জান্নাতিরা তাতে বসবে। যারা পরকালকে অস্বীকার করে, তাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তা’আলা পরবর্তী আয়াতে তাঁর কয়েকটি মহা সৃষ্টির মাঝে চিন্তা-ভাবনা করার কথা বলেছেন। যেন তারা এসব সৃষ্টির মধ্যে চিন্তা-ফিকির করে এগুলোর স্রষ্টা আল্লাহকে চিনতে পারে।
আয়াত-১৭.
কিয়ামতের অবস্থা এবং মুমিনদের প্রতিদান ও কাফেরদের শাস্তির বিষয় বর্ণনা করার পর কিয়ামত সম্পর্কে অবিশ্বাসীদের পথ প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তা’আলা তার কুদরতের কয়েকটি নিদর্শন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করার কথা বলেছেন। ঘোষণা করেন أَفَلَا يَنظُرُونَ إِلَى ٱلْإِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ তা তারা কি উটের প্রতি লক্ষ করে না যে, কীভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে তা? এভাবে আকাশের উচ্চতা, পাহাড় স্থাপন পৃথিবীর সমতল অবস্থার প্রতি তাকানোর কথা বলেছেন।
আল্লাহর নিদর্শন আকাশ ও পৃথিবীতে অসংখ্য। তবে এখানে মরুচারী আরবদের অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যশীল চারটি নিদর্শন উল্লেখ করা হয়েছে। আরবরা উটে আরোহণ করে দূর-দূরান্ত ভ্রমণ করে, তখন তাদের সর্বাধিক নিকটে থাকে উট, ওপরে আকাশ, নিচে ভূপৃষ্ঠ এবং সামনে-পেছনে ও ডানে-বাঁয়ে থাকে সারি সারি পর্বতমালা । তাই এই চারটি বস্তু সম্পর্কে তাদেরকে চিন্তা-ভাবনা করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য নিদর্শন বাদ দিয়ে যদি শুধু এ চারটি বস্তু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা হয়, তবে আল্লাহর অপার কুদরত ও মহান ক্ষমতা চাক্ষুষ দেখা যাবে। এ জন্য আল্লাহ তা’আলা রাসূলুল্লাহ স.-কে এসব বিষয় স্মরণ করিয়ে কাফেরদের উপদেশ প্রদান করার নির্দেশ করেছেন।
আয়াত-১৮.
এবং তারা কি আকাশের দিকে গভীর চিন্তা ও শিক্ষা গ্রহণের দৃষ্টিতে তাকায় না, কোনো খাম্বা ও স্তম্ভ ছাড়াই কীভাবে তা এত উঁচু করা হয়েছে? যিনি স্তম্ভ ছাড়া এত উঁচু আকাশ বানিয়েছেন, তিনি অবশ্যই মৃত মানুষকে পুনরায় জীবিত করার ক্ষমতা রাখেন।
আয়াত-১৯.
এবং তারা কি পর্বতমালার দিকে তাকায় না, কত দৃঢ়ভাবে সেগুলোকে জমিনে স্থাপন করা হয়েছে? এগুলো নিজ স্থান থেকে একটুও নড়ে না এবং জমিনকেও নড়তে দেয় না। যিনি পর্বতমালাকে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন, তিনি অবশ্যই মানুষকে মৃত্যুর পর জীবিত করতে পারেন।
আয়াত-২০.
এবং তারা কি জমিনের দিকে তাকায় না, কীভাবে তা সমতল করে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে? জমিন নিজ বিশালত্বের কারণে গোলাকার হওয়া সত্ত্বেও দেখতে সমতল মনে হয়। এই সমতল হওয়ার কারণেই তার ওপর বসবাস করা সহজ।
আয়াত-২১.
আপনি মানুষদেরকে ওহীর বাণী দ্বারা উপদেশ দিন। এরা যদি উপদেশ গ্রহণ না করে, তাহলে আপনি পেরেশান হবেন না। কারণ আপনি তো কেবল একজন উপদেশদাতা। আপনার দায়িত্ব শুধু উপদেশ দেওয়া।
আয়াত-২২.
সূরা গাশিয়ার উপসংহারে রাসূলুল্লাহ স.-এর সান্ত্বনার জন্য বলা হয়েছে, لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُصَيْطِرٍ ‘আপনি তাদের শাসক নন’ যে তাদেরকে মুমিন করতেই হবে। আপনার কাজ শুধু প্রচার করা ও উপদেশ দেওয়া। এতটুকু করেই আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। তাদের হিসাব-নিকাশ, শাস্তি ও প্রতিদান আমার কাজ।
ইসলামে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের স্থান নেই
ইসলাম একটি সর্বকালীন ও সার্বজনীন মতাদর্শ। চিরশান্তি ও পরম মানবতার ধর্ম ইসলাম ঐক্য, সৌহার্দ্য, সাম্য, মৈত্রী, সহিষ্ণুতা, শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক এই ধর্ম। হত্যা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি ও অশ্লীলতা ইত্যাদি চরমপন্থী কর্মকাণ্ডের অস্তিত্ব ইসলামে মোটেও নেই। নাশকতামূলক কার্যক্রম ইসলাম আদৌ সমর্থন করে না। অস্থিতিশীল পরিবেশ ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা ইসলামে কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আত্মঘাতী হামলা সম্পূর্ণ অবৈধ ও মহাপাপ।
জিহাদের নামে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অশ্লীলতা গর্হিত ও ঘৃণ্য অপকর্মের শামিল। জিহাদ আর সন্ত্রাস এক নয়। অন্যায়, অশান্তি ও অরাজকতা সৃষ্টির নাম হলো সন্ত্রাস। শান্তিপূর্ণ অবস্থানে জিহাদ ও ক্বিতালের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি মানেই ফ্যাসাদ। আর এসব নির্মূলে একমাত্র শরীয়তসম্মত শুভ পদক্ষেপের নামই জিহাদ। ইসলাম কোনো প্রকার সন্ত্রাসকে সমর্থন করে না। গায়ের জোরে কাউকে মুসলমান বানানোর একটিমাত্র ঘটনাও ইসলামের ইতিহাসে নেই। আল কুরআনের উপরোক্ত আয়াত এরই বাস্তব নিদর্শন। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُصَيْطِرٍ ‘আপনি তাদের শাসক নন’। অপর আয়াতে তিনি ঘোষণা করেন, لا اكراه في الدين ইসলামে কোনো জবরদস্তি নেই।’ (সূরা বাকারা-২৫৬)
ইসলামের নবী মুহাম্মদ স. সহিষ্ণুতার শিক্ষা দিয়েছেন। যারা পাথর ছুড়ে মারে তাদেরকে ফুলের মালা আর যারা পথে কাঁটা পুঁতে তাদের জন্য ফুল বিছিয়ে দেওয়া তাঁর আদর্শ। দীর্ঘ ১৩টি বছর মক্কায় আবু জাহেল গংদের সন্ত্রাস সহ্য করেছেন। সহ্য করেছেন ১০ বছর মদীনায় তাদের আক্রমণ ও অপবাদের ঝড় । এমনকি মক্কা বিজয়ের ঐতিহাসিক দিনে যখন রাসূলুল্লাহ স. ১০ হাজার সাহাবী নিয়ে জন্মভূমি মক্কায় প্রবেশ করলেন সেদিন চিরশত্রু পৌত্তলিকদের সমুচিত শাস্তি প্রদানের অপূর্ব সুযোগ গ্রহণ করেননি। ভীত-সন্ত্রস্ত শত্রু মক্কাবাসীদেরকে কোনো ভর্ৎসনা পর্যন্ত করলেন না। রাসূলুল্লাহ স. অত্যন্ত শান্ত কণ্ঠে নিঃশর্ত মুক্তি ঘোষণা করলেন। ‘আজকের দিনে তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, অনুযোগ নেই, তোমাদের অনুতাপের কোনো কারণ নেই, যাও তোমরা আজ মুক্ত।’ (সহীহ বুখারী, হা. ১৫৮৬, সীরাতে ইবনে হিসাম ২/৪১২)
রহমতে আলমের কণ্ঠে ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আনন্দে প্রায় দুই হাজার লোক ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নেয়। ক্ষমার মাধ্যমে তিনি মানবতার সেবা করেছেন। তলোয়ারের মাধ্যমে নয়। নয় প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার মাধ্যমে।
ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার কেন?
ইসলাম শান্তির ধর্ম। অশান্ত বিশ্বে শান্তির শ্বেত কপোত ওড়াতেই ইসলামের আগমন। ইসলামের অনুসারীরা সর্বত্রই সমাজের কাছে শান্তি, শৃঙ্খলা, মান-মর্যাদা ও সংহতির প্রতীক। মুসলমানরা বিশেষত আলেম-উলামাগণ সমাজে যে ‘গুডউইল’ অর্জন করেছেন, একশ্রেণির হিংসুটে মানুষের কাছে তা গাত্রদাহের কারণ হয়েছে। তাই একটি কুচক্রীমহল ইসলামের নামে কালিমা লেপন করতে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। যার অংশ হিসেবে ইসলামী বেশভূষাধারী কিছু লোক দিয়ে সাম্প্রতিককালে বোমা হামলা, অশ্লীলতা ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। ইসলামের সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখ এ ধরনের কোনো বিধ্বংসী কাজে কখনোই সায় দেয়নি। হঠাৎ করে এ ধরনের উগ্র কিছু লোক ইসলামী চেতনার নামে যা করে যাচ্ছে, তা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। জনমনে বিব্রত সৃষ্টি করেছে, ইসলাম সম্পর্কে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে ।
প্রকৃতপক্ষে এসব কিছুর পরিকল্পনা এসেছে বিধর্মীদের কাছ থেকে । তারা মীর জাফর শ্রেণির কিছু দাড়ি টুপিওয়ালাদের হাতে বোমা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তুলে দিয়ে তাদের ক্রীড়নকের ভূমিকা পালন করিয়েছে। এদেরই ষড়যন্ত্রের ফলশ্রুতিতে আজ আলেম সমাজ ও ইসলামের প্রতি মানুষের একটা চরম বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। বিনা তদন্তেই ইসলাম ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। মুসলমানদেরকে উগ্র মৌলবাদী আর সন্ত্রাসী বলে চিহ্নিত করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে জিহাদের কথা উচ্চারণ করে কলঙ্কিত করা হচ্ছে জিহাদের পবিত্র বিধানকে। আর এসবই একদিন মুসলমানদেরকে হত্যার ইস্যুতে পরিণত করতে পারে। রাসূলুল্লাহ স. এর বাণী চির অম্লান, ‘জিহাদের বিধান কিয়ামত পর্যন্ত চলমান।’ (আবু দাউদ-২৫৩২ এ অর্থে সহীহ বুখারী মুসলিমে কয়েকটি হাদীস রয়েছে) ।
সৎকর্মের আদেশ প্রদান ও মন্দ কর্ম প্রতিহত করার প্রতি কুরআন সুন্নায় যথেষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। অবশ্য, কুরআন সুন্নায় এর জন্য অনেক শর্ত এবং নীতিমালাও আরোপ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নিম্নরূপ-
১. দাওয়াত ও আহ্বানের পদ্ধতি অবলম্বনের সুযোগ থাকলে এভাবেই অগ্রসর হওয়া। যেকোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ও অবস্থা বুঝে কর্মসূচি প্রদান করা । মহান প্রভু ঘোষণা করেন-‘আপনার পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন, জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন, পছন্দ যুক্ত পন্থায়’। (সূরা আন নাহল-১২৫)
অতএব,আমাদের দায়িত্ব হলো,উত্তম পন্থায় উপদেশ ও দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাওয়া, আর বিজয় ও সফলতা অবশ্যই আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছাধীন।
২. সৎকর্মের আদেশ ও মন্দ কর্ম প্রতিহত করতে গিয়ে পরিস্থিতি যেন হীতে বিপরীত না হয়ে যায়, তা পর্যবেক্ষণ করা। মহান প্রভু ঘোষণা করেন-‘আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, পৃথিবীতে দাঙ্গা-সন্ত্রাস সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো সংশোধন করছি। সাবধান! তারাই হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী-সন্ত্রাসী। কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না।’ (সূরা বাকারা-১১. ১২)
৩. আপন আপন সাধ্য সামর্থ্যের ওপরও বিষয়টা নির্ভর করবে। নিজেদেরকে ধ্বংস করে দেওয়ার অনুমোদন ইসলামে আদৌ নেই। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না।’ (সূরা বাকারা-১৯৫) অপর আয়াতে বলেন,‘এখন হালকা করে দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা তোমাদের থেকে এবং তিনি জেনে নিয়েছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যদি একশত ধৈর্যশীল লোক বিদ্যমান থাকে, তবে
বিজয়ী হবে দু’শর ওপর। আর যদি তোমরা এক হাজার হও তবে বিজয়ী হবে দু’হাজারের ওপর আল্লাহর অনুমতিতে। আর আল্লাহ রয়েছেন ধৈর্যশীলদের সাথে।’ (সূরা আনফাল-৬৬)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘আল্লাহ তা’আলা কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না।’ (সূরা বাকারা-২৮৬)
মহানবী স. বলেন, তোমাদের যে ব্যক্তি কোনো মন্দ কর্ম দেখবে, সে তা হাতে প্রতিহত করবে। সে যদি সক্ষম না হয় তাহলে মুখে প্রতিবাদ করবে। আর যদি সক্ষম না হয় তাহলে অন্তরে, আর তা হলো দুর্বলতম ঈমান।’ (সহীহ মুসলিম-৪৯)
৪. বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের বিশাল অংশ জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমীর অথবা তার প্রতিনিধির অনুমোদন ও নিয়ন্ত্রণ একান্ত শর্ত বলে অভিহিত করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘আর যখন শান্তি অথবা শংকার কোনো সংবাদ তাদের নিকট আসে, তখন তারা সেগুলোকে রটিয়ে দেয়। আর যদি সেগুলো পৌঁছে দিত রাসূলুল্লাহ স. পর্যন্ত কিংবা তাদের শাসকদের পর্যন্ত, তখন অনুসন্ধান করে দেখা যেত সে সব বিষয়।’ (সূরা নিসা-৮৩)
বলাবাহুল্য, জিহাদের বিভিন্ন স্তর রয়েছে, পর্যায় আছে। আছে আরো বিভিন্ন নীতিমালা এবং শর্ত শরায়েত। যেকোনো বিধি-বিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-নীতি ও শর্ত শরায়েত থাকে । জিহাদের স্তর ও শর্তগুলো পালন করার মধ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা নিহিত রয়েছে । অন্যথায় অনিয়ম অরাজকতা ও সন্ত্রাস নির্মূলের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
একটি হাদীস এ পরিসরে উল্লেখ করা জরুরি মনে হচ্ছে, জনৈক ব্যক্তি সা’দ রা.-কে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি যে, তোমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো, যতক্ষণ না ফিতনা-ফ্যাসাদ দূরীভূত হয় এবং দ্বীন আল্লাহর জন্য হয়। তখন তিনি বললেন, আমরা লড়াই করেছি যতক্ষণ না ফিতনা-ফ্যাসাদ নির্মূল হয়েছে, আর তুমি ও তোমার সাথিগণ লড়াই করতে চাও ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টির জন্য। (দুররে মনসূর ২/৩১৭, সহীহ বুখারী শরীফে ইবনে উমর রা. থেকেও এমন একটি উক্তি আছে। হা. ৪৫৯৩ ও ৪৬৫০)
এতে বোঝা যায় যে, কুরআন-সুন্নাহর সার্বিক নির্দেশনা ও আমীরের আনুগত্য ছাড়া, মনগড়ারাজত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইন হাতে তুলে নেওয়া এবং স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানে জিহাদ ও ক্বিতালের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা ফ্যাসাদ ও সন্ত্রাসের অন্তর্ভুক্ত। এ সবই জিহাদের নামে জিহাদকে কলুষিত করা ও ইসলামকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র মাত্র। প্রতিটি মুসলমানকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সন্ত্রাসী, অশৃংখল ও পরস্পর অশ্লীল আচরণকারীদের সমস্ত চক্রান্ত থেকে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে রক্ষায় সবাইকে নিবেদিত হতে হবে।
আয়াত-২৩. ২৪
কিন্তু যে নেক আমল করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও কুরআনকে অস্বীকার করে, আল্লাহ তাকে পরকালে অনেক বড় শাস্তি দেবেন। দুনিয়াতে তাদেরকে হত্যা করা, বন্দি রাখা ও দুর্ভিক্ষের দ্বারা শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এসব শাস্তির চেয়ে জাহান্নামের আজাব অনেক বড় হওয়ার কারণে এটাকে বড় শাস্তি বলা হয়েছে।
আয়াত-২৫. ২৬.
নিশ্চয়ই তারা মৃত্যুর পর আমারই কাছে ফিরে আসবে। অতঃপর আমারই দায়িত্ব হাশরের ময়দানে তাদের কর্মের হিসাব নেওয়া এবং তাদেরকে প্রতিদান ও শাস্তি দেওয়া।
নির্দেশনা :
১. কিয়ামতের একটি নাম হলো ‘আল গাশিয়াহ’ (আচ্ছন্নকারী)। কেননা কিয়ামতের বিপদাপদ ও ভয়াবহতা সকল মানুষকে আচ্ছন্ন ও বেষ্টন করে ফেলবে।
২. পরকালে কাফের প্রজ্বালিত আগুনে অনেক ক্লান্ত হবে। পক্ষান্তরে জান্নাতে কোনো ধরনের কষ্ট ও ক্লান্তি থাকবে না।
৩. পরকালের প্রতি বিশ্বাস দৃঢ় ও মজবুত করার জন্য মৃত্যুর পর পুনরুত্থান হওয়া এবং শাস্তি ও প্রতিদান লাভের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
৪. মানুষ অনর্থক, মিথ্যা ও অসার কথাবার্তায় কষ্ট পায়। জান্নাতে মুমিন বান্দারা এসব কথাবার্তা থেকে পবিত্র থাকবে।
৫. আল্লাহ তা’আলা মানুষকে তাঁর কুদরতের চারটি নিদর্শন : উট, আসমান, পাহাড় ও জমিনের মধ্যে চিন্তা ও শিক্ষা গ্রহণের দৃষ্টিতে তাকানোর আহ্বান করেছেন। যেন মানুষ এসব সৃষ্টির মধ্যে চিন্তা-ভাবনা করে আল্লাহ ও পরকালকে বিশ্বাস করতে পারে।
৬. আল্লাহর পথে আহ্বানকারীর কাজ হলো, মানুষকে ইসলামের পথ প্রদর্শন করা। সে মুসলমান হবে কি হবে না, সেটা আল্লাহ তাঁর কুদরতি হাতে রেখেছেন।
৭. মানুষকে মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে। অতএব তার উচিত, ঈমান ও আমল নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার ব্যবস্থা করা। যেন সে পরকালের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাতে যেতে পারে।
আরো পড়ুন :
৯৩.সূরা আদ দুহা سورة الضحى Surah Duha এর তাফসির ও শানে নুযুল
৯৪.সূরা ইনশিরাহ سورة الشرح Surah Inshirah এর তাফসীর ও শানে নুযুল
৯৫.সূরা ত্বীন سورة التين Surah Tin এর তাফসির ও শানে নুযুল
ট্যাগ সমূহ : সূরা আল গাশিয়াহ,سورة الغاشية, সূরা আল গাশিয়াহ তাফসীর, surah al ghashiyah, surah al ghashiya, surah al ghashiyah in english, surah al-ghashiyah pdf, surah al-ghashiyah full, surah al ghashiyah translation, surah al ghashiyah bangla, surah al ghashiya bangla সূরা গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ শানে নুযুল, সূরা গাশিয়াহ আয়াত ২০, সূরা গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা গাশিয়াহ শানে নুযুল, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অর্থসহ, সূরা আল গাশিয়াহ, সূরা আল গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা আল গাশিয়াহ তাফসীর, সূরা আল গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অর্থসহ, গাশিয়াহ সূরা, সূরা আল গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ আয়াত ২০,সূরা গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ শানে নুযুল, সূরা গাশিয়াহ আয়াত ২০, সূরা গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা গাশিয়াহ তাফসীর, সূরা গাশিয়াহ এর তাফসীর সূরা গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়া বাংলা অর্থসহ, সূরা আল গাশিয়াহ, সূরা আল গাশিয়াহ তাফসীর, surah al ghashiyah surah al ghashiya with urdu translation, সূরা গাশিয়া, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অর্থসহ, সূরা গাশিয়া তাফসীর, গাশিয়াহ সূরা,سوره الغاشيه, سورة الغاشيه, معاني سورة الغاشية, সূরা আল গাশিয়াহ,সূরা আল গাশিয়াহ, সূরা আল গাশিয়াহ,سورة الغاشية, সূরা আল গাশিয়াহ তাফসীর, surah al ghashiyah, surah al ghashiya, surah al ghashiyah in english, surah al-ghashiyah pdf, surah al-ghashiyah full, surah al ghashiyah translation, surah al ghashiyah bangla, surah al ghashiya bangla সূরা গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ শানে নুযুল, সূরা গাশিয়াহ আয়াত ২০, সূরা গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা গাশিয়াহ শানে নুযুল, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অর্থসহ, সূরা আল গাশিয়াহ, সূরা আল গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা আল গাশিয়াহ তাফসীর, সূরা আল গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অর্থসহ, গাশিয়াহ সূরা, সূরা আল গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ আয়াত ২০,সূরা গাশিয়াহ, সূরা গাশিয়াহ শানে নুযুল, সূরা গাশিয়াহ আয়াত ২০, সূরা গাশিয়াহ বাংলা উচ্চারণ, সূরা গাশিয়াহ তাফসীর, সূরা গাশিয়াহ এর তাফসীর সূরা গাশিয়াহ বাংলা অনুবাদ, সূরা গাশিয়া বাংলা অর্থসহ, সূরা আল গাশিয়াহ, সূরা আল গাশিয়াহ তাফসীর, surah al ghashiyah surah al ghashiya with urdu translation, সূরা গাশিয়া, সূরা গাশিয়াহ বাংলা অর্থসহ, সূরা গাশিয়া তাফসীর, গাশিয়াহ সূরা,سوره الغاشيه, سورة الغاشيه, معاني سورة الغاشية,সূরা আল গাশিয়াহ,সূরা আল গাশিয়াহ, |