সাহাবীদের সমালোচনা করার বিধান
আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সকল ইমাম ও আলেমের সর্বসম্মত মতানুসারে কোনো সাহাবীকে মন্দ বলা, সামান্যতম খারাপ ভাবা ও সমালোচনা করা পবিত্র কুরআন, হাদীস ও রাসূল (স)-এর সুন্নাতকে অবজ্ঞা করার শামিল। অতএব যে ব্যক্তি আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত অনুসৃত নীতির বাইরে গিয়ে সাহাবীগণের সমালোচনায় লিপ্ত হবে সে গোমরাহ, পথভ্রষ্ট ও অন্যদেরকে পথভ্রষ্টকারী। নিচে সাহাবীদের সমালোচনা করার বিধান বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
সাহাবীদের সমালোচনা করার বিধান
■ সাহাবীদের সমালোচনা করা নিষেধ । কুরআন হাদীসের আলোকে আহলে হকের সর্বসম্মত মত অনুযায়ী এটা নিষিদ্ধ। সাহাবীদের সমালোচনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে নবী করীম (স) ইরশাদ করেন- অর্থাৎ, মহানবী (স) বলেন, সাবধান! সাবধান! আমার সাহাবীগণের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় কর। আমার পর আমার সাহাবীগণকে তোমরা সমালোচনার বস্তুতে পরিণত করো না। বস্তুত যে আমার সাহাবীগণকে ভালোবাসল, সে আমার প্রতি ভালোবাসার কারণেই তাদেরকে ভালোবাসল, আর যে তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ রাখল, সে আমার প্রতি বিদ্বেষের কারণেই তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ রাখে । রাসূলুল্লাহ (স) আরো বলেন, তোমরা আমার সাহাবীগণকে গালি দিও না।
■ ইমাম আযম আবু হানীফা (র) ঊর্থীরা গ্রন্থে বলেছেন— আমরা সাহাবীগণের গুণ চর্চা করব, দোষ চর্চা করবো না।
■ আল্লামা মোল্লা আলী কারী (র) বলেন- সাহাবীগণকে গালি দেয়া হারাম এবং বড় অপরাধ ।
■ গ্রন্থকার বলেন- সাহাবীগণের আলোচনা করার সময় তাদের প্রশংসা ছাড়া অন্য আলোচনা হতে বিরত থাকবে।
■ ইমাম আবু যুরয়া (র) বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তিকে দেখবে, সে কোনো সাহাবীর সমালোচনা করছে, তাহলে নির্ঘাত মনে করবে সে যিনদীক তথা ধর্মত্যাগী। কারণ আমাদের দৃষ্টিতে রাসূল (স) হক ও কুরআন হক। এ কুরআন ও হাদীস সাহাবায়ে কেরামই আমাদের নিকট পৌঁছিয়েছেন। তারা চায় আমাদের এ সূত্রপরম্পরাকে বিক্ষত করতে, যাতে পরিণামে পূর্ণ কুরআন সুন্নাহ-ই বাতিল বলে বিবেচিত হয়। সুতরাং এরাই সমালোচনার অধিক উপযুক্ত। কারণ এরা যিনদীক তথা ধর্মত্যাগী।
■ মোল্লা আলী কারী (র) মিরকাতে লিখেছেন, আমাদের কোনো কোনো আলেম স্পষ্টই বলেছেন, যে ব্যক্তি হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর (রা)-কে মন্দ বলবে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।
■ ইবনে নুজাইম (র) বর্ণনা করেছেন, কোনো কাফের যদি তওবা করে, তবে তার তওবা কবুল হবে; কিন্তু ঐ কাফেরদের তওবা কবুল হবে না, যারা কাফের প্রমাণিত হয়েছে, নবী করীম (স)-কে মন্দ বলার কারণে। শায়খাইন (আবু বকর ও ওমর রা.)-কে মন্দ বলার কারণে কিংবা তাঁদের যে কোনো একজনকে মন্দ বলার কারণে, অথবা যাদু কিংবা নাস্তিকতার কারণে যারা কাফের হয়েছে, তাদের তওবা কবুল হবে না।
■ কাযী আয়ায (র) বলেছেন, কোনো একজন সাহাবীকে মন্দ বলাও কবীরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।
■ মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, সাহাবায়ে কেরামকে মন্দ বলা জঘন্যতম হারামের অন্তর্ভুক্ত।
■ মালেকী মাযহাবের কোনো কোনো ফকীহ বলেছেন, এমন ব্যক্তির শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড।
■ তবে জমহুরের মাযহাব হলো, এমন ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে না; তবে তাযীর করা হবে।
আরো পড়ুন :
ট্যাগ সমূহ : সাহাবীদের সমালোচনা করার বিধান,সাহাবাদের সমালোচনা করা হারাম,সকল সাহাবীদের গালি দেওয়া,সাহাবীদের গালি দেওয়া,সাহাবীগণের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার বিধান,সাহাবীদের সমালোচনা করা নিষেধ,সাহাবাগণের সমালোচনা করা জায়েজ আছে কি |