রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব
রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক। নবীজি (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! মুসলমানদের জন্য রমজানের চেয়ে উত্তম কোনো মাস আসেনি এবং মুনাফিকদের জন্য রমজান মাসের চেয়ে অধিক ক্ষতির মাসও আর আসেনি। কেননা মুমিনরা এ মাসে (সারা বছরের জন্য) ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সংগ্রহ করে। আর মুনাফিকরা তাতে মানুষের উদাসীনতা ও দোষত্রুটি অন্বেষণ করে। এ মাস মুমিনের জন্য গনিমত আর মুনাফিকের জন্য ক্ষতির কারণ।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৩৬৮)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বনকারী হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
নিম্নে কয়েকটি রমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস দেয়া হলো-
(১). হযরত আবু হোরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, যখন পবিত্র রমযান মাস আগমন করে তখন আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অপর এক বর্ণনায় এসেছে, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং (বিতাড়িত ও অভিশপ্ত) শয়তানগুলোকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। অপর এক বর্ণনায় এসেছে, রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। (বুখারী ও মুসলিম)
(২). হযরত আবু হোরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের আশায় পবিত্র রমযানের রোযা রাখে তার পূর্বের সমুদয় (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবলাভের আশায় রমযানের রাত ইবাদতে কাটাবে, তারও পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবলাভের আশায় কদরের রাত ইবাদতে কাটাবে, তারও পূর্বকৃত সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
(৩). হযরত সালমান ফারেসী (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (স) শাবান মাসের শেষ দিন আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ প্রদান করেন। অতঃপর তিনি বললেন, হে মানবমণ্ডলী! তোমাদের ওপর এক মহান ও বরকতপূর্ণ মাস ছায়া বিস্তার করেছে। এটা এমন মাস যাতে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম একটি মহিমান্বিত রজনী রয়েছে। এ মাসে মহান আল্লাহ (তোমাদের জন্য) রোযাকে ফরয এবং রাতে নামায আদায় করাকে নফল করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর নৈকট্যলাভের আশায় একটি নফল কাজ করবে, সে ঐ ব্যক্তির সমান হবে, যে অন্য মাসে একটি ফরয আদায় করেছে।
আর এ মাসে যে ব্যক্তি একটি ফরয আদায় করল, সে ঐ ব্যক্তির সমান হবে, যে অন্য মাসে সত্তরটি ফরয আদায় করে। এটা ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো জান্নাত। এটা পারস্পরিক সহানুভূতির মাস। এটা এমন বরকতপূর্ণ মাস যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়। এ মাসে যে ব্যক্তি কোনো রোযাদারকে ইফতার করাবে, তা তার জন্য গুনাহ মাফের মাধ্যম হবে এবং নিজের জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তির কারণ হবে। আর তাকে রোযাদার ব্যক্তির সমান সাওয়াব প্রদান করা হবে, এতে রোযাদারের সাওয়াব থেকে কোনো অংশ কমানো হবে না। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের সকলের তো তেমন সামর্থ্য নেই যদ্দ্বারা একজন রোযাদারকে ইফতার করাব?
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (স) বললেন, যে ব্যক্তি কোনো রোযাদারকে এক চুমুক দুধ, অথবা একটি খেজুর, অথবা একটু পানি দ্বারা ইফতার করাবে তাকেও আল্লাহ এ পরিমাণ সাওয়াব দান করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো রোযাদারকে পরিতৃপ্তির সাথে খাওয়াবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে আমার হাউযে কাউসার হতে (কেয়ামত দিবসে) পানি পান করিয়ে পরিতৃপ্ত করবেন। যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত আর তৃষ্ণার্ত হবে না। আর এটা এমন মাস যার প্রথমভাগ রহমত, মধ্যভাগ ক্ষমা এবং শেষভাগ জাহান্নাম হতে মুক্তির। যে ব্যক্তি এ মাসে তার অধীনস্ত চাকর বাকরের কাজের ভার হালকা করে দেবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জাহান্নাম হতে মুক্তিদান করবেন।
(৪). হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন পবিত্র রমযান মাস আগমন করত, তখন রাসূলুল্লাহ (স) সব বন্দিকে মুক্ত করে দিতেন এবং সব সাহায্যপ্রার্থীকে দান করতেন।
আরো পড়ুন :
থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে ?
ভুল করে খেয়ে ফেললে কি রোজা হবে ?
রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে ?
রমজান মাসে রাসূল সাঃ কি কি করতেন
ট্যাগ সমূহ : রমজানের ফজিলত, রমজানের ফজিলতরমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস,মাহে রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব,রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব,রমজানের ফজিলত সম্পর্কে আরবি হাদিস,পবিত্র মাহে রমজানের ফজিলত ও তাৎপর্য,মাহে রমজানের ফজিলত,রমযানের ফযিলত,রমজানের ফজিলত, রমজানের ফজিলতরমজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস, |