
মাহে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি :
ক্ষমা, রহমত ও মুক্তির অনন্য বার্তা নিয়ে শ্রেষ্ঠ মাস রমজান আমাদের নিকট প্রায় সমাগত। প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়ে এই মহাসম্মানিত মাসের অপেক্ষার সদা উদগ্রীব থাকে। রমজানের আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও নাজাতের জন্য আমাদের উচিত এই মাসকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা ও কঠোর পরিশ্রম এবং সাধনার মাধ্যমে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করা। এজন্য চাই বেশ কিছু কর্মভিত্তিক পূর্ব প্রস্তুতি। যা নিয়ে ইবাদতে সাধনায় আত্মনিয়োগ করলে সফলতা আসবে ইনশাআল্লাহ।
রমজান আসার আগে প্রস্তুতি মানে খাবারের বিশাল সমাহার সংগ্রহের প্রস্তুতি নয়; বরং আত্মিকভাবে নিজেকে প্রস্তুতি করাই মূল বিষয়। দুঃখজনক হলেও সত্য মানুষ আত্মিক প্রস্তুতি বাদ দিয়ে খাবারের আয়োজনের দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়ে।
রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি :
নিচে ১৫ টি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করা হলো-
১. মানসিক প্রস্তুতি ও প্রতিজ্ঞা নেওয়া।
২.খারাপ অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করা।
৩.রমজানের সব উপকারিতা স্মরণ করা।
৪.রমজান পাবার আশা এবং নিয়ত করা।
৫. বেশি বেশি তাওবা ইস্তেগফার পড়া।
৬. কাজা রোজা আদায় করা।
৭. সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার চেষ্টা করা।
৮. ফরজ রোজার নিয়মকানুন জেনে নেওয়া।
৯. বিগত রমজানের অসমাপ্ত কাজ চিহ্নিত করা।
১০. রমজানের মাসাআলা গুলো পুনরায় দেখে নেওয়া।
১১. শাবান মাসজুড়ে রমজানের মহড়া চালু রাখা।
১২. রমজানের ২৪ ঘন্টার রুটিন করা।
১৩. রমজানের চাঁদের অনুসন্ধান করা।
১৪. বেশি বেশি দান-সদকা করা।
১৫. বেশি বেশি দোয়া করা।
মাহে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে নিচে বিসাদভাবে আলোচনা করা হলো-
১. মানসিক প্রস্তুতি ও প্রতিজ্ঞা নেওয়া :
পবিত্র মাহে রমজানের রোজা পালন সহ অন্যান্য সকল ইবাদত পালনের জন্য আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়াটা খুবই জরুরী এবং প্রয়োজনীয় বটে।
রমজান মাসে পরিপূর্ণ সওয়াব ও ক্ষমা পেতে মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা। জীবন ভর যত গুনাহ করেছি, এ রমজানে সেসব গুনাহ বা অন্যায় থেকে পরিপূর্ণ ক্ষমা পেতে হবে। সবচেয়ে বেশি সওয়াব পেতে হবে। রমজান শুরু হওয়ার আগে এ প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করা জরুরী।
আফসোসের বিষয় অনেক সময় পূর্ব প্রস্তুতি না থাকার কারণে, রমজান পেয়েও মুমিন মুসলমান পরিপূর্ণ সাওয়াব ও ক্ষমা পাওয়ার থেকে বঞ্চিত হয়। প্রতিজ্ঞা এমন ভাবে করো যে, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য বা নিজের কাজ যেমনই হোক; আমি আমার বিগত জীবনের সব গুনাহ থেকে নিজেকে মাফ করিয়ে নেব। আমার প্রস্তুতি আল্লাহকে রাজি খুশি করিয়ে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।
২. খারাপ অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করা :
বিভিন্ন পাপের দ্বারা মানুষের আমলনামা কালিমালিপ্ত হয়ে যায়। রমজান আসে সে পাপ মোচনের জন্য। বিধায় পাপ হতে ফিরে এসে তাওবার মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে ইবাদতে মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে খালেছ তওবা করো; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাত সমূহের প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে নদী সমূহ প্রবাহিত। (সূরা : তাহরীম ৬৬/৮)
আমাদের অনেক ভাইবোনদের মাঝে অনেক বদ অভ্যাস রয়েছে। পবিত্র মাহে রমজান আসার আগেই আমরা আমাদের এই সকল খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করব ইনশাআল্লাহ। আর নিয়ত করব যেন আর কখনো এগুলো (হারাম কাজ) না করি। তাহলে আল্লাহ তা’আলা হয়তো আমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
৩. রমজানের সব উপকারিতার কথা স্মরণ করা :
মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেছেন, “রামাদান একটি পবিত্র এবং বরকতময় মাস। মহান আল্লাহ তা’আলা কুরআনে এই মাসের অনেক বারাকাতের কথা বলেছেন এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মাসের অনেক ফজিলত মর্যাদা ও উপকারিতার কথা বর্ণনা করেছেন। বরকতময় মাস রমজান সম্পর্কে কোরআন সুন্নাহ যেসব ফজিলত ও উপকারিতার বর্ণনা রয়েছে; রমজান শুরু হওয়ার আগেই সেসব সম্পর্কে জেনে নেওয়া। সেসব উপকার পেতে কোরআন সুন্নাহর নির্দেশনা গুলো মেনে চলার প্রস্তুতি নেওয়া।
৪. রমজান পাবার আশা ও নিয়ত করা :
যেকোনো কাজের সফলতার পূর্ব শর্ত হলো- সে বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প করা অর্থাৎ নিয়ত করা। আর ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য খালেছ নিয়ত এর বিকল্প নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সকল কাজের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।’ (বুখারী : ০১)
আল্লাহ তা’আলা বান্দার তাকওয়া দেখেন। আমাদেরকে রমজান পাবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে হবে। হয়তো বুঝতে পারছেন যে, আর কিছুদিন পরে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হবে। কিন্তু কে জানে এই রমজানের রোজা রাখা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো করা আপনার আমার নসিবে আছে কিনা। রমজান মাস বরকতম মাস, গোনাহ মাফের মাস, আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য লাভের মাস। তাই মহান আল্লাহর কাছে আমাদের এই মাস পাবার জন্য দোয়া করতে হবে এবং এই মাসের সবগুলো রোজা পালনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো পালন করার নিয়ত করতে হবে।
রমজান মাস পাবার লক্ষ্যে মানসিকভাবে বারবার এ কথা স্মরণ ও নেক আমলের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়া- “আল্লাহুম্মা বাল্লিগনা রামাদান” অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। অর্থাৎ রমজান পর্যন্ত হায়াত দান করুন।
সালাফে সালেহিনগণ রমজান মাসের ছয় মাস আগে থেকে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন, “হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রমজান পর্যন্ত হায়াত দান করেন। আর রমজানের শেষে তারা বাকি ছয় মাস দুয়া করতেন, হে আল্লাহ! রমজানের যা আমল করেছি তা আপনি কবুল করে নিন।”
তাই আমাদের অন্তরে দৃঢ় মনোবল নিয়ে রমজানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
৫. বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার পড়া :
রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি : তাওবা ইস্তেগফার বা অন্যায়ের কাছ থেকে ফিরে আসা বা মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া রমজানের প্রথম প্রস্তুতি। রমজান মাস আসার আগেই আমাদের আল্লাহর কাছে পেছনে সমস্ত গুনাহের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি যদি আমাদের কে ক্ষমা করেন; তাহলে পবিত্র মাহে রমজানে নতুন করে আবার আমরা আমাদের জীবনটাকে নেক আমল দিয়ে সাজাতে পারবো ইনশাআল্লাহ। রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে বন্দী করে রাখেন। তাই এই সময়ে আমাদের ঈমানকে আরো শক্ত মজবুত করতে আগে থেকেই আল্লাহর কাছে তওবা ইস্তেগফার করব ইনশাআল্লাহ।এজন্য বেশি বেশি পাঠ করতে হবে- “আল্লাহুম্মাগফিরলী” অর্থ হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিন।
এছাড়া আল্লাহ তায়ালা ক্ষমার সুসংবাদ দিয়ে বলেন- “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে খালেছ তওবা করো। আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপ সমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন; যার তলদেশে নদী সমূহ প্রবাহিত।” সূরা তাহরীম : ৬৬/৮)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- “হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকটে তওবা করো। কারণ, আমি তার কাছে দিনে ১০০ বার এর তাওবা করি।” (মুসলিম : ২৭০২)
তিনি আরো বলেন- “আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে 70 বারের অধিক ইস্তেগফার ও তওবা করে থাকি।” (বুখারী : ৬৩০৭)
রাসুল সাঃ এর পূর্বাপর সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। অথচ এরপরেও তিনি প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তওবা করেন সুতরাং আমাদেরকেও গুনাহ থেকে অধিকারে তওবা করা আবশ্যক।
৬. কাযা রোজা আদায় করা :
বিভিন্ন কারণে অনেকের সিয়াম কাজা হতে পারে। হয়তো নানা ব্যস্ততার কারণে যা আদায় করা হয়নি।রমজানের পূর্বেই শা’বান মাসের মধ্যেই তা আদায় করে নিতে হবে। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, “আমার ওপর রমজানের যে রোযা কাজা হয়ে যেত, তা পরবর্তী শাবান মাস ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না।” (বুখারী : ১৯৫০)
৭. ক্ষমা পাওয়ার চেষ্টা :
রমজান মাস অনেক বেশি রহমতের মাস। এই মাসে আল্লাহ তা’আলা শয়তানকে বন্দী করে রাখেন এবং কবরবাসীদের সমস্ত প্রকার আযাব বন্ধ করে রাখেন। আল্লাহ তা’আলা রমজান মাসে অনেক মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। তবে এ সাধারণ ক্ষমা সবার ভাগ্য জোটে না। কেননা, এই ক্ষমা পেতে হলে দুটি কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। ক্ষমা প্রার্থনা করে এই দুইটি কাজ থেকে ফিরে আসতে হবে। তা হলো-
(১). শিরক থেকে মুক্ত থাকা : আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা। কেউ ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় ছোট বা বড় শিরক করে থাকলে রমজান আসার আগেই তা থেকে তাওবা ইস্তেগফারের মাধ্যমে ফিরে আসা।
(২). দ্বিতীয় হিংসা থেকে মুক্ত থাকা : কারো প্রতি কোন বিষয়ে হিংসা না করা। কারণ, হিংসা মানুষের সব নেক আমল সেভাবে জ্বালিয়ে দেয়; যেভাবে আগুন কাঠকে জ্বালিয়ে দেয়। তাই হিংসা পরিহার করে মনকে ক্ষমা লাভের স্বচ্ছ রাখা।
৮. রোজার নিয়ম-কানুন জানা :
রমজান সম্পর্কিত নানা মাসআলা জেনে নেওয়া উচিত। যাতে রমজানের সিয়াম ত্রুটিপূর্ণ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সেইসাথে অনেক বিষয়ে অজ্ঞাত থাকার ফলে নানা অসুবিধা ও কষ্ট থেকে বাঁচা যায়। যেমন, সফরকালে সিয়াম ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ, ভুলবশত খেলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না, প্রবল ঘুমের কারণে সেহরি খেতে না পারলে সিয়াম সিদ্ধ হওয়া। এরপর স্বপ্নদোষের কারণে সিয়াম ভঙ্গ না হওয়া ইত্যাদি মাসআলা জানা থাকলে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এছাড়া রমজান মাস আসার আগে রোজা পালনের মাসআলা-মাসায়েল তথা নিয়ম কানুন গুলো ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরি। যেমন, রোজার নিয়ত, ইফতারের দোয়া, রোজা ভঙ্গের কারণ, রমজানের সময়সূচী ইত্যাদি। এতে করে রমজানের রোজা নষ্ট হওয়া থেকে বা অন্যান্য বিষয়গুলি থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।
৯. বিগত রমজানের অসমাপ্ত কাজ চিহ্নিত করা :
পবিত্র মাহে রমাদান পেয়েও আমাদের অনেকেই বিভিন্ন কারণে অকারনে এই সময়ে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আমলের গাফেলিত হয়ে যায়। তাই রমজান মাস আসার আগেই বিগত রমজানের যে সকল নেক আমল গুলো করা হয়নি: তা করতে না পারার কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করা। যেমন,
- কেন নিয়মিত কোরআন অধ্যয়ন করা হয়নি ?
- কেন তারাবিহ পড়া হয়নি ?
- কেন দান সহযোগিতা করা হয়নি ?
- কেন এতেকাফ থাকা হয়নি ?
- কেন রোজাদারকে ইফতার করানো হয়নি ?
- কেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা সম্ভব হয়নি ?
- কেন কোরআন সুন্নাহর আলোচনায় বসা হয়নি ?
- কেন রমজানের পাড়া-প্রতিবেশী হক আদায় করা হয়নি ?
এভাবে এই বিষয়গুলো চিহ্নিত করে নেওয়া এবং এ বছর রমজান আসার আগে আগে চিহ্নিত কারণগুলো থেকে নিজেকে বিরত রেখে কিংবা প্রস্তুতি গ্রহণ করে কল্যাণকর সব নেক আমল গুলো করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
১০. রমজানের মাসআলা গুলো পুনরায় দেখে নেওয়া :
যেসব কারণে রোজা নষ্ট হয়; যেসব কারণে রোজা নষ্ট হয় না; যেসব কারণে রোজা কাযা ও কাফফারা দেওয়া ওয়াজিব, এ সকল বিষয়গুলো পরিপূর্ণভাবে জেনে রাখা। এছাড়াও মুসাফির ও অসুস্থ অবস্থায় রোজার হুকুম। এছাড়া রমজানের এই সকল জরুরী মাসাআলা রমজান আসার আগেই ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
১১. শাবান মাসজুড়ে রমজানের মহড়া চালু রাখা :
রমজান মাসে বেশি বেশি ইবাদত করতে এবং রোজা রাখার জন্য, শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা, বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা, নফল নামাজ পড়া, তওবা ইস্তেগফার করা ও ত্যাগের মানসিকতা তৈরি করা। এ সকল বিষয়ের প্রস্তুতি এখন থেকে গ্রহণ করতে হবে।
১২. রমযানের রুটিন করা :
রুটিন মোতাবেক কাজ করা সব ক্ষেত্রেই অনেক ভালো ফলাফল বয়ে আনে। তাই আমাদের রমজান মাসে একটি সুন্দর রুটিন তৈরি করতে হবে। রমজান মাস জুড়ে যার যেই কাজ থাকুক না কেন পুরো সময়টি কোন কোন কাজে কিভাবে ব্যয় হয়, তার একটি সম্ভাব্য রুটিন তৈরি করে নেওয়া ভালো। আগম রুটিন থাকলে রমজানের চরম ব্যস্ততার মাঝেও অনেক আমল সহ অন্যান্য কাজগুলো ইবাদতের মধ্যে কেটে যাবে। এক কথায় সব কাজের তালিকা করে নেওয়া। বিশেষ করে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে; আমাদের রুটিনে যেন আমল করার সময়, সব থেকে বেশি জায়গা পায়।
১৩. রমজানের চাঁদের অনুসন্ধান করা :
আমরা জেনেছি যে, শাবান মাসের ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় চাঁদের অনুসন্ধান করা সুন্নত। বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এ সুন্নতটিকে আবারো জীবিত করার পূর্ব পরিকল্পনা গ্রহণ করা। বর্তমান সময়ে চাঁদ দেখা কমিটির দিকে তাকিয়ে থাকার রেওয়াজ পরিণত হয়েছে। আবার অনেকে মোবাইল বা রেডিও টিভির সংবাদ এর অপেক্ষা করেন। এতে চাঁদ দেখা এবং দোয়া পড়ার থেকে বঞ্চিত হয় মুসলমানরা। তা থেকে বেরিয়ে এসে চাঁদ অনুসন্ধান করা সুন্নত টি জীবিত করার সর্বাত্মক পূর্ব প্রস্তুতি রাখা। যারা রহমতের মাস রমজানের নতুন চাঁদ দেখবে, তারা বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পড়া সেই দোয়াটি পড়বে যেখানে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রার্থনা রয়েছে। দোয়াটি হলো-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাল্লিমনি লিরমাদান, ওয়া সাল্লিম রামাদানা লি, মিন্নী মুতাকাব্বিলা।
অর্থ : “হে আল্লাহ! আমাকে শান্তিময় রমজান দান করুন। রমজানকে আমার জন্য শান্তিময় করুন। আমার জন্য রমজানকে শান্তিময় করে দিন। রমজানের শান্তি ও আমার জন্য কবুল করুন।
১৫. বেশি বেশি দান সাদাকা করা :
রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি নফল কাজের সব ৭০.গুন বাড়িয়ে দেন। সে হিসাবে রমজানে এক টাকা দান করে ৭০ টাকা দানের সওয়াব লাভ করা সম্ভব। এই জন্য প্রত্যেক রোজাদারের উচিত নিজের সাধ্য অনুযায়ী অনাথ, অসহায়, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দানের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আল্লাহর পথে ব্যয় করো। নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। তোমরা মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করো। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদের ভালোবাসেন। (আল কোরআন)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, তুমি দান করো। তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর রহমত থেকে দান করা হবে।
আনাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেয়ে বেশী দানশীল আমি আর কাউকে দেখিনি।(মুসলিম)
তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি দান-সদকা করা।
Tag : রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি মাহে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি মাহে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতিরমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজান মাসের পূর্ব প্রস্তুতি রমজান মাসের প্রস্তুতি রমজান মাসের পূর্ব প্রস্তুতি রমজান মাসের প্রস্তুতি মাহে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি মাহে রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি |
আরো পড়ুন :