থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে ?

থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে
থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে

থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে ?

আমাদের মাঝে অনেক লোক রয়েছে যাদের রোজা অবস্থায় মুখে প্রচুর পরিমাণে থুথু জমে। তাদের ভিতরে একটাই ভয় কাজ করে যে থুতু গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে কিনা। এই নিয়ে অনেকে অনেক চিন্তা করেন; আবার অনেকে যত কষ্টই হোক না কেনো থুথু ভিতরে প্রবেশ করায় না। থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে ? নাকি ভাঙবে না ? এই নিয়ে নিচে হাদিসের আলোকে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো-

থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে :

প্রশ্ন : থুথু গিলে ফেললে কি রোজা ভেঙ্গে যাবে ? উত্তর : না।

“মুখের লালা পেটে ঢুকলে রোজা থাকে না” -এই বিশ্বাসের কোন ভিত্তি নেই। রোজাদার যদি থুথু গিলে ফেলে এতে তার রোজা নষ্ট হবে না। এমনকি সে থুথু অনেক বেশি হলেও; সেটা মসজিদে কিংবা অন্য কোন স্থানে হোক। তবে যদি কফের মত ঘন হয়, তাহলে গিলবে না। বরং আপনি মসজিদে থাকলে টিস্যু পেপারের কিংবা অন্য কিছুতে তা ফেলে দেবে। (ফতোয়া ও গবেষণা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি : ১০/২৭০)

রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে কফ গিলে ফেলা যাবে কি ?

এমন প্রশ্নের জবাব হলো- রোজাদার ও বে-রোজাদার উভয়ের জন্য কফ গিলে ফেলা নাজায়েয। কেননা কফ ঘৃণিত জিনিস। হতে পারে কফ এর মধ্যে এমন কিছু রোগ রয়েছে যা শরীর থেকে নিঃসৃত হয়েছিল। তবে কফ গিলে ফেললে রোজা ভাঙবে না। কেননা, কফ মুখে থেকে বের হয়নি। কফ গিলে ফেলাটা পানাহার হিসাবে গণ্য হয় না। তাই কফ মুখে চলে আসার পর তা গিলে ফেললে এতে করে রোজা ভাঙবে না। (আল- শারহুল মুমতী; শায়খ উছাইমিন : ৬/৪২৮)

এছাড়াও কফ গিলে ফেললেও রোজা নষ্ট না হওয়ার কারণ হলো- কফ মুখের সাধারণ থুতুর অন্তর্গত। মুখের মধ্যে সাধারণ পানি যাকে থুথু বলা হয় তা দ্বারা রোজা নষ্ট হয় না। সুতরাং কফ গিলে ফেলার কারণেও রোজা ভেঙ্গে যাবে না। (ফতাওয়ায়ে রিয়াজুল উলুম : ৩/৩০৩)

থুথু গিলে ফেললে কি রোজা হবে ?

এমনকি যদি থুতু মুখের মধ্যে একত্রিত করে গিলে ফেলে, তাতেও রোজার কনো ক্ষতি হবে না। তবে অনেকেই বলেছেন যে, বেশি পরিমাণে থুতু বা কফ জমিয়ে গিলে ফেললে- রোজা মাকরুহ হবে।

এ ছাড়া থুথু জিনিসটা খাবারের জন্য নয়; আসলে এই জিনিসটা মুখে উৎপন্ন স্যালাইভা বা লালা যা আমাদের খাবার পচন বা হজম করতে সহায়তা করে। এ থেকে বোঝা যায়, এই সেলাইভা বা লালা সাধারণ পানির মতো নয়; এর শক্তি অনেক বেশি। তাই এটা খুবই স্বাভাবিক যে, আমাদের পেটে যথেষ্ট পরিমাণে খাবার না থাকলেও স্যালাইভা বা লালা আমাদের পাচনতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করবে। এ কারণে অনেকে রোজা রাখা অবস্থায় মুখের লালা গিলতে বারণ করে থাকেন। তবে হঠাৎ করে কিছুই হবে না। বরং এসব চিন্তা থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারোর রোজা কবুল হবে কি না; সে বিচার করার ক্ষমতা মহান আল্লাহর নিজের কাছে রেখেছেন। আমাদের উচিত নিয়ত ঠিক রাখা

এই পৃথিবী আমাদের কাছে একটা পরীক্ষা হল। যেখানে আমরা পরীক্ষক কে দেখতে না পেলেও; পরীক্ষক আমাদের সবার উপর নজর রেখেছেন। আমাদের উচিত সৎ ভাবে পরীক্ষা দেওয়া। ইবাদত করলে তা মন থেকেই করা উচিত। লোক দেখানোর জন্য করা উচিত নয়। কোনো কাজ করলে তা নিষ্ঠার সঙ্গেই করা উচিত। নিজের সর্বোত্তম দিয়ে চেষ্টা করার পর ফলাফল আল্লাহর উপর ছেড়ে দেওয়ায় শ্রেষ্ঠ বলে মনে করি।

আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের কে সঠিক জ্ঞান দান করুক। (আমীন)

আরো পড়ুন :

ভুল করে খেয়ে ফেললে কি রোজা হবে ?

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ

রমজানের রোজা কত হিজরীতে ফরজ হয়েছে ?

রোজার ফরজ কয়টি ও কি কি ?

রোজার নিয়ত

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top