৮০.সূরা আবাসা سورة عبس Surah Abasa এর তাফসির ও শানে নুযুল

 সূরা আবাসা, সূরা আবাসা বাংলা অনুবাদ, সূরা আবাসা এর তাফসীর, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল, সূরা আবাসা ৩৩-৪২, سورة عبس,সূরা আবাসা আয়াত ৩৪, সূরা আবাসা বাংলা অর্থ,সূরা আবাসা, সূরা আবাসা তাফসীর, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল, সূরা আবাসা বাংলা অনুবাদ, সূরা আবাসা আয়াত ৩৪, সূরা আবাসা ৩৩-৪২, সূরা আবাসা বাংলা অর্থ, সূরা আবাসা ৩৪ ৩৭, সূরা আবাসা তেলাওয়াত, সূরা আবাসা এর অর্থ, সূরা আবাসা দারস, সূরা আবাসা অর্থ, সূরা আবাসা আয়াত ১, surah a abasa,surah e abasa,surah e abasa with urdu translation,surah e abasa in which para,surah abasa,surah abasa bangla, surah abasa pdf, surah abasa bangla translation, surah abasa meaning, سبب نزول سورة عبس, surah abasa in english,ما سبب نزول سورة عبس, surah abasa transliteration, معاني سورة عبس, surah abasa tafseer, surah abasa bangla tafsir,سوره عبس, সূরা আবাসা, সূরা আবাসা বাংলা অনুবাদ, সূরা আবাসা এর তাফসীর, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল, সূরা আবাসা ৩৩-৪২, سورة عبس,

সূরার পরিচয় :

সূরার নাম :সূরা আবাসা।সূরার অর্থ : ভ্রকুঞ্চিত করা।
সূরা নং : ৮০রুকু সংখ্যা : ১
আয়াত সংখ্যা : ৪২সিজদা সংখ্যা : ০
শব্দ সংখ্যা : ১৩৩পারার সংখ্যা : ৩০
অক্ষর সংখ্যা : ৫৩৮শ্রেণী : মাক্কী।


সূরা আবাসা سورة عبس Surah Abasa এর তাফসির ও শানে নুযুল


بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহ তা’আলার নামে, যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু ।

(١) عَبَسَ وَتَوَلَّىٰٓ

(১) তিনি ভ্রুকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

(٢) أَن جَآءَهُ ٱلْأَعْمَىٰ

(২) কারণ, তাঁর কাছে এক অন্ধ ফিরিয়ে নিলেন আগমন করল।

(٣) وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّهُۥ يَزَّكَّىٰٓ

(৩) আপনি কি জানেন, সে হয়তো পরিশুদ্ধ হতো,

(٤) أَوْ يَذَّكَّرُ فَتَنفَعَهُ ٱلذِّكْرَىٰٓ

(৪) অথবা উপদেশ গ্রহণ করত এবং উপদেশে তার উপকার হতো।

(٥) أَمَّا مَنِ ٱسْتَغْنَى

(৫) পরন্তু যে বেপরোয়া,

(٦) فَأَنتَ لَهُۥ تَصَدَّىٰ

(৬) আপনি তার চিন্তায় মশগুল।

(٧) وَمَا عَلَيْكَ أَلَّا يَزَّكَّىٰ

(৭) সে শুদ্ধ না হলে আপনার কোনো দোষ নেই।

(٨) وَأَمَّا مَن جَآءَكَ يَسْعَىٰ

(৮) যে আপনার কাছে দৌঁড়ে এলো

(٩) وَهُوَ يَخْشَىٰ

(৯) এমতাবস্থায় যে, সে ভয় করে,

(١٠) فَأَنتَ عَنْهُ تَلَهَّىٰ

(১০) আপনি তাকে অবজ্ঞা করলেন।

(١١) كَلَّآ إِنَّهَا تَذْكِرَةٌ

(১১) কখনো এরূপ করবেন না, এটা উপদেশবাণী।

(١٢) فَمَن شَآءَ ذَكَرَهُۥ

(১২) অতএব, যে ইচ্ছা করবে, সে একে গ্রহণ করবে।

(١٣) فِى صُحُفٍ مُّكَرَّمَةٍ

(১৩) এটা লিখিত আছে সম্মানিত,

(١٤) مَّرْفُوعَةٍ مُّطَهَّرَةٍۭ

(১৪) উচ্চ পবিত্র পত্রসমূহে,

(١٥) بِأَيْدِى سَفَرَةٍ

(১৫) লিপিকারের হস্তে

(١٦) كِرَامٍۭ بَرَرَةٍ

(১৬) যারা মহৎ, পূত চরিত্র।

(١٧) قُتِلَ ٱلْإِنسَٰنُ مَآ أَكْفَرَهُۥ

(১৭) মানুষ ধ্বংস হোক, সে কত অকৃতজ্ঞ!

(١٨) مِنْ أَىِّ شَىْءٍ خَلَقَهُۥ

(১৮) তিনি তাকে কি বস্তু থেকে সৃষ্টি করেছেন?

(١٩) مِن نُّطْفَةٍ خَلَقَهُۥ فَقَدَّرَهُۥ

(১৯) শুক্র থেকে তাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে সুপরিমিত করেছেন।

(٢٠) ثُمَّ ٱلسَّبِيلَ يَسَّرَهُۥ

(২০) অতঃপর তার পথ সহজ করেছেন,

(٢١) ثُمَّ أَمَاتَهُۥ فَأَقْبَرَهُۥ

(২১) অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে।

(٢٢) ثُمَّ إِذَا شَآءَ أَنشَرَهُۥ

(২২) এরপর যখন ইচ্ছা করবেন তখন তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন।

(٢٣) كَلَّا لَمَّا يَقْضِ مَآ أَمَرَهُۥ

(২৩) সে কখনো কৃতজ্ঞ হয়নি, তিনি তাকে যা আদেশ করেছেন, সে তা পূর্ণ করেনি।

(٢٤) فَلْيَنظُرِ ٱلْإِنسَٰنُ إِلَىٰ طَعَامِهِۦٓ

(২৪) মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ করুক,

(٢٥) أَنَّا صَبَبْنَا ٱلْمَآءَ صَبًّا

(২৫) আমি আশ্চর্য উপায়ে পানি বর্ষণ করেছি,

(٢٦) ثُمَّ شَقَقْنَا ٱلْأَرْضَ شَقًّا

(২৬) এরপর আমি ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি,

(٢٧) فَأَنۢبَتْنَا فِيهَا حَبًّا

(২৭) অতঃপর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য,

(٢٨) وَعِنَبًا وَقَضْبًا

(২৮) আঙ্গুর, শাক-সবজি,

(٢٩) وَزَيْتُونًا وَنَخْلًا

(২৯) যয়তুন, খেজুর,

(٣٠) وَحَدَآئِقَ غُلْبًا

(৩০) ঘন উদ্যান,

(٣١) وَفَٰكِهَةً وَأَبًّا

(৩১) ফল এবং ঘাস

(٣٢) مَّتَٰعًا لَّكُمْ وَلِأَنْعَٰمِكُمْ

(৩২) তোমাদেরও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের উপকারার্থে।

(٣٣) فَإِذَا جَآءَتِ ٱلصَّآخَّةُ

(৩৩) অতঃপর যেদিন কর্ণবিদারক নাদ আসবে,

(٣٤) يَوْمَ يَفِرُّ ٱلْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ

(৩৪) সেদিন পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে,

(٣٥) وَأُمِّهِۦ وَأَبِيهِ

(৩৫) তার মাতা, তার পিতা,

(٣٦) وَصَٰحِبَتِهِۦ وَبَنِيهِ

(৩৬) তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে।

(٣٧) لِكُلِّ ٱمْرِئٍ مِّنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ

(৩৭) সেদিন প্রত্যেকেরই নিজের এক চিন্তা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে।

(٣٨) وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ مُّسْفِرَةٌ

(৩৮) অনেক মুখমণ্ডল সেদিন হবে উজ্জ্বল,

(٣٩) ضَاحِكَةٌ مُّسْتَبْشِرَةٌ

(৩৯) সহাস্য ও প্রফুল্ল।

(٤٠) وَوُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ عَلَيْهَا غَبَرَةٌ

(৪০) এবং অনেক মুখমণ্ডল সেদিন হবে ধূলি ধূসরিত।

(٤١) تَرْهَقُهَا قَتَرَةٌ

(৪১) তাদেরকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে।

(٤٢) أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْكَفَرَةُ ٱلْفَجَرَةُ

(৪২) তারাই কাফের পাপিষ্ঠের দল ।

সূরার আলোচ্য বিষয়

আবাসা সূরায় দানের পদ্ধতি, উপদেশ গ্রহণ না করার প্রতি তিরস্কার, উপদেশ গ্রহণে বিমুখ ব্যক্তিদের পরলৌকিক শাস্তি এবং উপদেশ গ্রহণকারীদের পরলৌকিক পুরস্কারের বর্ণনা করা হয়েছে এবং এতে মৌলিকভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে, যার অন্তরে সত্যের অনুসন্ধিৎসা আছে, খাঁটি মনে সে নিজেকে সংশোধনও করতে চায়, তাকে কিছুতেই অগ্রাহ্য করা চলে না; বরং তারই এ অধিকার বেশি যে, শিক্ষাদানের জন্য তাকে সময় দেওয়া হবে । পক্ষান্তরে এমনটি যারা চায় না, সত্যসন্ধানীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে তাদের প্রতি মনোযোগী হওয়া ও তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া কিছুতেই যুক্তিযুক্ত নয়। এরূপ কাজ মোটেই সমীচীন নয় ।

সূরা আবাসা এর শানে নুযুল

মা আয়েশা ছিদ্দীক্বা (রা:) বলেন, অত্র সূরাটি অন্ধ ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম সম্পর্কে
(মল্লায়) নাযিল হয়। তিনি কোন একটি বিষয় জানার জন্য রাসূল (ছাঃ) এর নিকটে আসেন। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক সুশরিক নেতার সাথে কথা বলছিলেন। এভাবে কথার মধ্যে কথা বলায় (অন্য বর্ণনায় এসেছে, ইবনে উম্মে মাকতুম পীড়াপীড়ি করায়) রাসূল (সা:) বিরক্ত হন এবং তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে ঐ নেতার প্রতি মনোনিবেশ করেন, যাতে তিনি হেদায়াত প্রাপ্ত হন। তখন অত্র আয়াতসমূহ নাযিল হয়।

সূরা আবাসা এর তাফসির

আয়াত-১-১১
এ আয়াতসমূহ একটি বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছিল। ঘটনাটি এরূপ—একদিন মহানবী স. কুরাইশ গোত্রের কয়েকজন বড় বড় নেতাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিলেন। তিনি তাদের সাথে দাওয়াতী কথাবার্তায় মশগুল ছিলেন, ঠিক এই মুহূর্তে প্রসিদ্ধ অন্ধ সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রা. সেখানে উপস্থিত হলেন। তিনি যেহেতু অন্ধ ছিলেন, তাই মহানবী স. কার কার সাথে কথায় ব্যস্ত আছেন, তা দেখতে পাচ্ছিলেন না। কাজেই এসেই তিনি তাঁকে কিছু শিক্ষাদানের জন্য মহানবী স.-কে অনুরোধ করলেন।

যেহেতু অন্যের কথা কেটে মাঝখানে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন, তাই তাঁর এ পন্থা মহানবী স.-এর পছন্দ হলো না। এ অসন্তুষ্টির ছাপ তাঁর চেহারায় ফুটে উঠল । তিনি তাঁর কথার কোনো উত্তর দিলেন না; বরং সেই কাফেরদের সাথেই যথারীতি আলোচনা চালিয়ে গেলেন । তবে কাফেরদের সাথে কথা চালু রাখার পরিবর্তে আগ্রহী মুসলমানকে উপদেশ করা বেশি উপকারী হিসেবে মহান প্রভু ঘোষণা করেন- “ عَبَسَ وَتَوَلَّىٰٓ ” বিরক্তি প্রকাশ ও মুখ ফিরিয়ে নেওয়া হলো। অন্ধ মুসলমানের সাথে এই আচরণ আপনার জন্য সমীচীন হয়নি বোঝানো হয়েছে।

বাক্যটিতে প্রথম পুরুষ ব্যবহার করা হয়েছে। সরাসরি সম্বোধন করে আপনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন, মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, বলা হয়নি। তা একমাত্র রাসূলুল্লাহ স.-এর সম্মান রক্ষার জন্য। وَمَا يُدْرِيكَ (আপনি কি জানেন?) রাসূলুল্লাহ স.-এর অপারগতার দিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, অন্ধ সাহাবীর জিজ্ঞাসিত বিষয়ের উপকারিতা নিশ্চিত এবং কাফেরদের সাথে আলোচনার উপকারিতা অনিশ্চিত। সাহাবীর জিজ্ঞাসার উত্তর প্রদান করা হলে সে পরিশুদ্ধ হতো।

কমপক্ষে আল্লাহকে স্মরণ করে প্রাথমিক উপকার লাভ করত। পরিশেষে أَمَّا مَنِ ٱسْتَغْنَىٰ فَأَنتَ لَهُۥ تَصَدَّىٰ (যে, ব্যক্তি আপনার প্রতি বেপরোয়া আপনি তার প্রতি আকৃষ্ট আছেন) বলে বোঝানো হয়েছে এ ধরনের লোক মুসলমান না হলে আপনাকে অভিযুক্ত করা হবে না। শিক্ষা, সংশোধন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মুসলমানদের পাকাপোক্ত মুসলমান করা অমুসলিমকে ইসলামে অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তা করা থেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অতঃপর কুরআন যে শ্রেষ্ঠতম উপদেশবাণী ও উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন, তা বর্ণনা করা হয়েছে।

আয়াত-১২
যার ইচ্ছা সে একে স্মরণ রাখবে । অর্থাৎ কুরআন মাজীদের নির্দেশনা মেনে নিয়ে সে অনুযায়ী চলবে।

আয়াত-১৩
এটা লিপিবদ্ধ আছে এমন সহীফাসমূহে, যা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। এই সহীফার দ্বারা লওহে মাহফুজ বোঝানো হয়েছে। সহীফার বহুবচন হলো ‘সুহুফুন’ কুরআন মাজীদ ছাড়া অন্যান্য ঐশী গ্রন্থ এতে লিপিবদ্ধ আছে। তাই ‘সুহুফুন’ বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে।

আয়াত-১৪
এই সহীফাগুলো مَّرْفُوعَةٍ উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন এবং مُّطَهَّرَةٍۭ উচ্চ স্তরের পবিত্র। অর্থাৎ সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি ও মলিনতা হতে পবিত্র এবং শয়তানের হাত থেকেও পবিত্র। তারা সেখানে পৌঁছতে পারবে না এবং তাতে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

আয়াত-১৫-১৬
এমন লিপিকারদের হাতে লিপিবদ্ধ। যারা অতি মর্যাদাসম্পন্ন, পুণ্যবান। এর দ্বারা যেসব ফেরেশতা লওহে মাহফুজের দায়িত্বে নিয়োজিত তাদের বোঝানো হয়েছে। سَفَرَةٍ শব্দটি سا فر এর বহুবচন । অর্থ: লিপিকার। অন্য আয়াতে কেরামুন কাতিবীন উল্লেখ হয়েছে।

আয়াত-১৭-১৯
ধ্বংস হোক মানুষ! সে কত অকৃতজ্ঞ! অর্থাৎ সে কুরআনের মতো মহা নিয়ামতের সম্মান করে না এবং আল্লাহ তা’আলার কোনো হক আদায় করে না। এখান থেকে মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যেসব নিয়ামত ভোগ করে, সেসব নিয়ামতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, হে মানুষ! চিন্তা করো, আল্লাহ তোমাকে কী বস্তু থেকে সৃষ্টি করেছেন? এ প্রশ্নের উত্তর নির্দিষ্ট। তাই নিজেই উত্তর দিয়েছেন যে, মানুষকে বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাকে এক বিশেষ পরিমিতিও দান করেছেন। অর্থাৎ মাতৃগর্ভে তাকে এমন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করেছেন, যা অত্যন্ত পরিমিত ও সুসামঞ্জস্য। এর আরেক ব্যাখ্যা হলো, তার জন্য তাকদীর নির্ধারণ করেছেন।

আয়াত-২০
অতঃপর তার জন্য পথ সহজ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ মাতৃগর্ভ হতে শিশুর বের হয়ে আসার পথ অত্যন্ত সুগম করে দিয়েছেন। এবং কেউ কেউ এর ব্যাখ্যা করেছেন, আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ায় মানুষের জীবনযাপনের পথ সহজ করে দিয়েছেন এবং এখানে তার সব রকম প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবস্থা রেখেছেন।

আয়াত-২১
অতঃপর তাকে মৃত্যু দিয়েছেন, পরে কবরে স্থাপন করেছেন। এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে মৃত্যু মানুষের জন্য প্রকৃতপক্ষে কোনো বিপদ নয়; বরং নিয়ামত। এমনিভাবে কবরস্থ করা, এটাও একটা নিয়ামত। কেননা আল্লাহ তা’আলা মানুষকে সাধারণ জন্তু-জানোয়ারের ন্যায় যেখানে মরে, সেখানেই পঁচেগলে যেতে দেননি; বরং তাকে গোসল দিয়ে পাক-সাফ কাপড় পরিয়ে সম্মান সহকারে কবরে দাফন করা হয়।

আয়াত-২২
অতঃপর আল্লাহ তা’আলা যখন ইচ্ছা করবেন তাকে পুনরায় জীবিত করবেন। অর্থাৎ যিনি একবার জন্ম-মৃত্যু দিয়েছেন তাঁরই ইচ্ছাধীন হলো যে, তিনি যখন চান পুনরুত্থানের মাধ্যমে কবর থেকে বের করবেন।

আয়াত-২৩
না, কখনো না। তাকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সে তা পালন করেনি। এতে অবিশ্বাসী মানুষকে হুঁশিয়ার করা হয়েছে যে, আল্লাহর উপরিউক্ত নিদর্শনাবলি ও নিয়ামতরাজির পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের উচিত ছিল এগুলো সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং তার বিধানাবলি পালন করা। কিন্তু হতভাগ্য মানুষ তা করেনি।

আয়াত-২৪-৩২
এ আয়াতগুলো মানবসৃষ্টির সূচনা ও পরিসমাপ্তির মাঝখানে যেসব নিয়ামত মানুষ ভোগ করে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ মানুষের রিজিক কীভাবে সৃষ্টি করা হয়? কীভাবে আকাশ থেকে পানি বর্ষিত হয়ে মাটির নিচে চাপা পড়া বীজকে সজীব ও সতেজ করে তোলে । ফলে একটি সরু ও ক্ষীণকায় অংকুর মাটি ভেদ করে ওপরে ওঠে। অতঃপর তা থেকে হরেক রকমের শস্য, ফল-মূল ও বাগ-বাগিচা সৃষ্টি হয় ।

আয়াত-৩৩
এমন কঠোর আওয়াজ, যার ফলে মানুষ শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলে। এখানে কিয়ামতের হট্টগোল তথা শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে।

আয়াত-৩৪-৩৭
এখানে হাশরের ময়দানে সকলের সমাবেশের দিনের কথা বোঝানো হয়েছে। সেদিন প্রত্যেকে আপন চিন্তায় বিভোর থাকবে । দুনিয়াতে যে সকল আত্মীয়তা ও সম্পর্কের কারণে মানুষ একে অপরে জন্য জীবন বিসর্জন দিতে কুণ্ঠিত হয় না, হাশরে তারাই নিজ নিজ চিন্তায় এমন নিমগ্ন হবে যে, কেউ কারো খবর নিতে পারবে না; বরং সামনে দেখলেও মুখ লুকাবে। প্রত্যেক মানুষ তার ভাইদের কাছ থেকে, পিতা-মাতা, স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে ফিরবে।

আয়াত-৩৮-৪২
এখানে হাশরের ময়দানে মুমিন ও কাফেরের পরিণতি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। মুমিনদের চেহারা ঈমানের নূরে উদ্ভাসিত হবে এবং অতি আনন্দে হাস্যোজ্জ্বল ও উৎফুল্ল হবে। আর কাফেরদের চেহারা কুফরের কারণে অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে এবং মলিনতা সমাচ্ছন্ন হবে। অতঃপর বলা হয়েছে যে তারাই কাফের দুষ্কার্যকারী লোক । অর্থাৎ তাদের বোঝানো হোক বা না হোক, তারা আল্লাহকে ভয় করবে না।

নির্দেশনা

১. পরকালের সফলতা ও পুরস্কার অর্জনের জন্য প্রত্যেক মুমিনের উচিত হলো, কুরআনের মাধ্যমে উপদেশ গ্রহণ করে তদানুযায়ী আমল করা।
২. যার অন্তরে সত্যের অনুসন্ধিৎসা আছে এবং খাঁটি মনে সংশোধনও হতে চায়, এমন ব্যক্তিকে শিক্ষাদানের জন্য সর্বদা প্রাধান্য দিতে হবে।
৩. আল্লাহ তা’আলা বান্দাকে সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে পরিসমাপ্তি পর্যন্ত এবং এতদুভয়ের মাঝখানে যে সমস্ত নিয়ামত দান করেছেন বান্দার জন্য উচিত হলো, এ নিয়ামতগুলোর প্রতি চিন্তা-ভাবনা করে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং নিয়ামতের যথোপযুক্ত শুকরিয়া আদায় করা।
৪. সর্বোপরি কথা হলো, যেদিন (কিয়ামতের দিন) কেউ কারো কাজে আসবে না, সেদিনের কথা স্মরণ রেখে পরকালের চূড়ান্ত সফলতার জন্য নিজের আমলকে পরিশুদ্ধ করতে হবে।

আরো পড়ুন :

৮১.সূরা আত তাকভীর سورة التكوير Surah At Takwir এর তাফসির ও শানে নুযুল

৮২.সূরা আল ইনফিতার سورة الانفطار Surah Al Infitar এর তাফসির ও শানে নুযুল

৮৩.সূরা মুতাফফিফীন سورة المطففين Al Mutaffifin এর তাফসির ও শানে নুযুল

ট্যাগ সমূহ : সূরা আবাসা, সূরা আবাসা বাংলা অনুবাদ, সূরা আবাসা এর তাফসীর, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল, সূরা আবাসা ৩৩-৪২, سورة عبس,সূরা আবাসা আয়াত ৩৪, সূরা আবাসা বাংলা অর্থ,সূরা আবাসা, সূরা আবাসা তাফসীর, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল, সূরা আবাসা বাংলা অনুবাদ, সূরা আবাসা আয়াত ৩৪, সূরা আবাসা ৩৩-৪২, সূরা আবাসা বাংলা অর্থ, সূরা আবাসা ৩৪ ৩৭, সূরা আবাসা তেলাওয়াত, সূরা আবাসা এর অর্থ,সূরা আবাসা এর তাফসীর, সূরা আবাসা দারস, সূরা আবাসা অর্থ, সূরা আবাসা আয়াত ১, surah a abasa,surah e abasa,surah e abasa with urdu translation,surah e abasa in which para,surah abasa,surah abasa bangla, surah abasa pdf, surah abasa bangla translation, surah abasa meaning, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল,سبب نزول سورة عبس, surah abasa in english,ما سبب نزول سورة عبس, surah abasa transliteration, معاني سورة عبس, surah abasa tafseer, surah abasa bangla tafsir,سوره عبس, সূরা আবাসা, সূরা আবাসা বাংলা অনুবাদ, সূরা আবাসা এর তাফসীর, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল, সূরা আবাসা ৩৩-৪২, سورة عبس,সূরা আবাসা আয়াত ৩৪, সূরা আবাসা বাংলা অর্থ,সূরা আবাসা, সূরা আবাসা তাফসীর, সূরা আবাসা এর শানে নুযুল, সূরা আবাসা বাংলা অনুবাদ, সূরা আবাসা আয়াত ৩৪, সূরা আবাসা ৩৩-৪২, সূরা আবাসা বাংলা অর্থ,সূরা আবাসা তেলাওয়াত, সূরা আবাসা এর অর্থ, সূরা আবাসা দারস, সূরা আবাসা অর্থ, সূরা আবাসা আয়াত ১, surah a abasa,surah e abasa,surah e abasa with urdu translation,surah e abasa in which para,surah abasa,surah abasa bangla, surah abasa pdf, surah abasa bangla translation, surah abasa meaning, سبب نزول سورة عبس, surah abasa in english,ما سبب نزول سورة عبس, surah abasa transliteration, معاني سورة عبس, surah abasa tafseer, surah abasa bangla tafsir,سوره عبس,সূরা আবাসা এর শানে নুযুল,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top