কিয়ামতের আলামত সমূহ

কিয়ামতের আলামত

কিয়ামতের আলামত :

কেয়ামত আরবি শব্দ এর অর্থ হচ্ছে ধ্বংস হওয়া। আল্লাহ সুবহান ওয়া তা’আলা এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং একদিন এর পরিসমাপ্তি ঘটাবেন আর সেই দিনটির নামেই হচ্ছে কেয়ামত। কিন্তু কেয়ামত কখন ঘটবে তা নির্ধারণ করা নেই। আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের সঠিক সময় কাউকে অবগত করেননি। উদ্দেশ্য হল মানুষ যাতে সব সময় সতর্ক থাকে। পরকালের জন্য পরিপূর্ণ উপস্থিতি গ্রহণ করে এবং সর্বদা সৎ কাজে লিপ্ত থাকে।

সূরা আরাফের ১৮৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন :

“তারা আমাকে জিজ্ঞেস করছে যে, কেয়ামত কখন প্রতিষ্ঠিত হবে ? আপনি বলে দিন যে, এই বিষয়ে আমার প্রতিপালকই জ্ঞানের অধিকারী। শুধু তিনি কেয়ামতকে নির্দিষ্ট সময় প্রকাশ করবেন। আকাশ রাজ্য ও পৃথিবীতে তা হবে একটি ভয়াবহ ঘটনা। তোমাদের উপর তা হঠাৎ করেই চলে আসবে। এমনভাবে ওরা আপনাকে প্রশ্ন করছে আপনি যেন এ বিষয়ে সব অবগত। অর্থাৎ তারা এটা মনে করে আপনাকে প্রশ্ন করছে যে, আপনি কিয়ামতের সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত আছেন। অথচ এ বিষয়ে আপনার কোন জ্ঞান নেই । আপনি বলে দিন যে, এ সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই এ সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখে না।” ( সুরা আরাফ : ১৮৭)

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন :

লোকেরা আপনাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। আপনি বলুন: এর জ্ঞান শুধু আল্লাহর কাছেই। আপনি এটা কি করে জানবেন যে, সম্ভবত কেয়ামত শীঘ্রই হয়ে যেতে পারে।” ( সূরা আহযাব : ৬৩)

“কিয়ামতের জ্ঞান শুধু আল্লাহর নিকট রয়েছে”। ( সূরা লুকমান : ৩৪)

তবে কিয়ামতের ছোট বড় আলামত রয়েছে। নিচে কিয়ামতের আলামত পেশ করা হলো:

কেয়ামতের ১০ টি বড় আলামত

১. ইমাম মাহাদীর আগমন।

২. দাজ্জালের আগমন।

৩. ইসা ইবনে মারিয়াম আলাইহিস সালাম এর আগমন।

৪. ইয়াজুয-মা’জুজের আগমন।

৫. দাব্বাহ। ( জমিন থেকে একটি জন্তু বের হওয়া)

৬. বিশাল একটি ধোয়ার আগমন।

৭. পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় হবে।

৮. পূর্ব দিকে ৩ টি ভূমিকম্প।

৯. পশ্চিম দিকে ভূমিকম্প।

১০. আরব উপদ্বীপে ভূমিকম্প।

ছোট ছোট কেয়ামতের আলামত

১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন ও ইন্তেকাল।

২. চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হওয়া।

৩. বায়তুল মাকদিস (ফিলিস্তিন) বিজয়।

৪. সম্পদ বৃদ্ধি পাবে।

৫. কিয়ামতের পূর্বে অনেক ফিতনা আবির্ভাব হবে।

৬. ভন্ড ও মিথ্যুক নবীর আগমন হবে।

৭. হেজয অঞ্চল থেকে বিরাট একটি আগুন

৮. আমানতের খেয়ানত হবে।

৯. দ্বীনি ইলম উঠে যাবে এবং মূর্খতা বিস্তার লাভ করবে।

১০. অন্যায় ভাবে জুলুম-নির্যাতনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

১১. সুদখোরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

১২. যেনা ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে।

১৩. গান-বাজনা এবং গায়িকার সংখ্যা বেড়ে যাবে।

১৪. মদ্যপান হালাল মনে করবে।

১৫. মসজিদ নিয়ে লোকেরা গর্ব করবে।

১৬. দালানকোটা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে।

১৭. দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে।

১৮. সময় এর বারাকা উঠে যাবে।

১৯. মুসলমানেরা শিরক এ লিপ্ত হবে।

২০. ঘন ঘন বাজার হবে।

২১. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হবে।

২২. লোকেরা কালো রঙ দিয়ে চুলদাড়ি রাঙাবে।

২৩. কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে।

২৪. ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বে।

২৫. ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবে।

২৬. ভূমিধস ও চেহারার বিকৃতির শাস্তি দেখা দিবে।

২৭. পরিচিত লোকদেরকেই সালাম দেওয়া হবে।

২৮. বেপর্দা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

২৯. মুমিনের স্বপ্ন সত্য হবে।

৩০. সুন্নতি আমল সম্পর্কে গাফিলতি করবে।

৩১. নতুন মাসের চাঁদ ওঠার সময় বড় হয়ে দিতে হবে।

৩২. মিথ্যা কথা বলার প্রচলন বৃদ্ধি পাবে।

৩৩. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার প্রচলন ঘটবে।

৩৪. মহিলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে।

৩৫. হঠাৎ মৃত্যুবরণ কারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

৩৬. আরব উপদ্বীপ নদনদী এবং গাছপালায় পূর্ণ হয়ে যাবে।

৩৭. প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে ফসল হবে না।

৩৮. ফুরাত নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় বের হবে।

৩৯. জড় পদার্থ এবং হিংস্র পশু মানুষের সাথে কথা বলবে।

৪০. ফিতনায় পতিত হয়ে মানুষ মৃত্যু কামনা করবে।

৪১. কাঁহতান গোত্র থেকে একজন সৎ লোক বের হবে।

আরো পড়ুন :

সমাজে প্রচলিত কিছু শিরক

সমাজে প্রচলিত কিছু বিদআত

১১৪. সূরা নাস এর তাফীসর

০১. সূরা ফাতিহা এর তাফসীর নামকরন ও শানে-নুযূল

ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয় এবং এর গুরুত্ব ও ফজিলত

আলহামদুলিল্লাহ এর ফজিলত ও গুরুত্ব এবং এর ব্যবহার বিস্তারিত

শবে কদরের ফজীলত ও আমলসমূহ

রোজার ফরজ কয়টি ও কি কি ?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top