আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে আয়াত ও হাদিস
عن جـويربن عند الله قال كنا في صدر النّهـار عند رسـول الله صلى الله عليه وسلم فجاءه قوم عراة مجتابي الثمار أوالعباء متقلدى السيوف عامتهم من مضربل كلهم من مضر، فتمـعر وجه رسول الله صلى الله عليه وسلم فلما رأى بهم من الفاقة ـ فدخل ثم خرج فـامـربلالا فاذن واقام فصلى ثم خطب فـقـال ـ ياايها الناس اتقوا ربكم الذي خلقكم من نفس واحدة إلى أخر الأية ان الله كان عليكم رقيبا (النساء آیت : ۱)
والآية الأخرى التي في أخر الحشر ياايها الذين أمنوا تقو الله ولتنظر نفس مـاقـدمت لغـد ـ (سـورة حشر : آیت : ۱۸) ليـتـصـدق رجل من ديناره من درهمه ـ من ثوبه من صـاع تمـره حـتـى قـال ولوبشق تمرة فـجـاء رجل من الأنصـار بصرة كادت كفه تعجز عنها بل قد عجزت ثم تتابع الناس حتى
رایت كومين من طعام وثياب حتى رايت وجه رسول الله صلى الله عليه وسلم يتهلل كانه مذهبة فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم من سن في الإسلام سنة حسنة فله أجر من عمل بها بعده من غير أن ينقص من أجورهم شيئ ومن سن في الإسلام سنة سيئة كان علـيـه وزرها ووزر من عـمـل بـهـامن بـعـده مـن غـيـر أن ينقص من اوزارهم شییء- مسلـم
জাবীর ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত । আমরা একদিন সকাল বেলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসে ছিলাম। এমন সময় কিছু লোক কাঁধে তরবারী ঝুলিয়ে মোটা কম্বল গায়ে জড়ায়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে হাযির হলো। তাদের শরীরের অধিকাংশই ছিলো অনাবৃত। লোকগুলোর অধিকাংশই কিংবা সবাই ‘মুযার’ গোত্রের লোক। তাদের দুরবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেলো।
অতঃপর তিনি ঘরে প্রবেশ করে আবার বেরিয়ে এলেন এবং বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আযান দিতে বললেন। (তখন নামাযের সময় হয়ে গিয়েছিল) অতঃপর বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু আযান দিলেন। তাকবীর বললেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়ালেন। নামায শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বক্তৃতা প্রদান করলেন । তিনি বক্তৃতায় সূরায়ে নিসার প্রথম আয়াত এবং সূরায়ে হাশরের শেষ রুকূ’র প্রথম আয়াত তিলাওয়াত করে শুনালেন এবং বললেন- জনগণের উচিত আল্লাহর রাস্তায় দান করা। দীনার দেয়া, দেরহাম দেয়া। কাপড় চোপড় দেয়া। এক কাঠা গম দেয়া। শেষ পর্যন্ত তিনি বলেন, যদি কারো নিকট একটি খেজুরের অর্ধেক ও থাকে তবে সেটিও আল্লাহর পথে দিয়ে দিতে হবে।
বক্তব্য শোনার পর জনৈক আনসার একটি ভরা ব্যাগ হাতে নিয়ে এলেন। ব্যাগটি এত ভারী ছিলো যে তিনি তা ধরে রাখতে পারছিলেন না। এরপর লোকেরা একের পর এক সদকা দিতে আরম্ভ করলো। শেষ পর্যন্ত আমি দেখলাম গম, খাদ্য ও কাপড়ের দুটো স্তুপ হয়ে গেলো। জনগণের সদকা দেয়ার দৃশ্য দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন। তাঁর মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হয়ে চমকাতে লাগলো । মনে হচ্ছিলো যেনো তাঁর চেহারায় সোনালী রং ছিটিয়ে দেয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেন।
যে ব্যক্তি ইসলামে কোন উত্তম কাজ চালু করবে, তার সওয়াব তো সে পাবেই, অধিকন্তু পরবর্তীকালে যারা ঐ কাজ করবে তাদের সাথে সমান সওয়াবও পেতে থাকবে। কিন্তু পরবর্তীদের সওয়াব একটুও কমানো হবে না। অপরপক্ষে ইসলামে যদি কোন ব্যক্তি খারাপ রেওয়াজ চালু করে তাহলে সে তার গুনাহের ভাগীতো হবেই। অধিকন্তু পরবর্তীকালে যারা এ গুনাহের পথে চলবে তাদের সমান গুনাহ তার আমলনামায়ও লেখা হবে। কিন্তু তাদের গুনাহের বোঝা থেকে একটুও কমবে না।-(মুসলিম)
ব্যাখ্যাঃ ইসলামের দু’টি বুনিয়াদী শিক্ষার একটি হলো আল্লাহর একত্ববাদ। দ্বিতীয়টি আল্লাহর অভাবী বান্দাদের জন্যে দয়া, প্রীতি ও শুভেচ্ছা। মানুষের প্রতি শুভেচ্ছার কারণেই তাদের অভাব অনটন দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা দুঃখে বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিলো। তাদের খাদ্য ও কাপড়ের ব্যবস্থা হয়ে গেলে তিনি আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরায়ে নিসার যে আয়াত পাঠ করেছিলেন তার মর্ম হলো : হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্রোধ থেকে আত্মরক্ষা করো। যিনি তোমাদেরকে একটিমাত্র জীবন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকেই তার স্ত্রী বানিয়েছেন। এ দু’জন হতে পরবর্তীকালে অসংখ্য নারী পুরুষ সৃষ্টি করা হয়েছে। অতএব, তোমরা নিজেদের সৃষ্টিকর্তার নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করো। যার নাম নিয়ে তোমরা একে অপরের নিকট থেকে অধিকার আদায় করতে চাও। আত্মীয়তার বন্ধনের প্রতি লক্ষ রেখো এবং তাদের অধিকার প্রদান করো। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক ।
এ আয়াতে আল্লাহ দু’টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। একটি আল্লাহর একত্ববাদ ও অপরটি মানব জাতির ঐক্য। আল্লাহর একত্ববাদের অর্থ হলো, একমাত্র আল্লাহরই বন্দেগী ও আনুগত্য। এটার নাম হলো তৌহিদ। মানব জাতির ঐক্যের অর্থ হলো, সমস্ত বিশ্বের মানব মণ্ডলী একই পিতা-মাতার সন্তান । সুতরাং ভালোবাসার ভিত্তিতেই তাদের সকল সম্পর্ক নির্ধারিত হওয়া উচিত।
এ নিঃস্ব কাঙ্গালগণকে দেখে এদের সদকা ও দানের আবেদন করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ আয়াত তেলাওয়াত করা এ কথারই পরিষ্কার ইঙ্গিত বহন করে যে, সমাজের অসহায় ও দরিদ্রদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা না করা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও ক্রোধ উদ্রেকের কারণ। সূরায়ে হাশরের যে আয়াত তিনি পাঠ করেছিলেন তার অর্থ হলো, হে ঈমানদার লোকেরা! আল্লাহকে ভয় করো। প্রত্যেক লোকেরই এ বিষয়ে ভেবে দেখা উচিত। কিয়ামতের জন্যে সে কি জমা করেছে ? হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা যা করছো সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্পূর্ণভাবে অবহিত ।
এ আয়াত পাঠ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একথার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন যে, দরিদ্র ও অভাবীদের অভাব মোচনে যে অর্থ ব্যয় করা হয় তা ধ্বংস হয় না বরং আখেরাতের পুঁজিতে পরিণত হয়। যে ব্যক্তি প্রথমে দান করেছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রশংসা করে ঘোষণা করেছেন। এ ব্যক্তি নিজের সদকার জন্যে সওয়াব তো পাবেই সংগে সংগে তার দেখা দেখি অন্য যারা সদকা করেছে, তাদের সকলের সমান ছওয়াব ও সে পাবে ।
ট্যাগ সমূহ : সৃষ্টির প্রতি দয়া, সৃষ্টির প্রতি দয়া সম্পর্কে হাদিস, আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে আয়াত, আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে হাদিস, সৃষ্টির প্রতি দয়া করা কি, সৃষ্টি,সৃষ্টির প্রতি দয়া, সৃষ্টির প্রতি দয়া সম্পর্কে হাদিস, আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে আয়াত, আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে হাদিস, সৃষ্টির প্রতি দয়া করা কি, সৃষ্টি,,সৃষ্টির প্রতি দয়া, সৃষ্টির প্রতি দয়া সম্পর্কে হাদিস, আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে আয়াত, আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে হাদিস, সৃষ্টির প্রতি দয়া করা কি, সৃষ্টি, |
আরো পড়ুন :