মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান

মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,মুত কে কাফন, মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরানোর নিয়ম, মৃত ব্যক্তির কাফন পরানোর নিয়ম, মৃত মহিলাকে কাফন পড়ানোর নিয়ম, মৃত ব্যক্তির কাফফারা,মেয়েদের কাফন পড়ানোর নিয়ম, কাফন আমার আপন কবর আমার মাটি, মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,কাফন দাফন ও কবরের জীবন,কাফন আমার আপন,মৃত কে কাফন দেওয়ার বিধান,মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,
মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান

মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান

মৃতকে কাফন দেয়া ফরযে কিফায়। মৃত ব্যক্তির খালেস সম্পদ দ্বারা কাফনের কাপড় খরিদ করবে; যে সম্পদ ও মাল অন্য কারো হক নেই। আর যদি মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ না থাকে তাহলে মৃতের জীবনে ভরণ-পোষণের দায়িত্ব যার উপর ছিল, তার উপরই কাফনের কাপড় কিনার দায়িত্ব আরোপিত হবে। মৃতের যদি এমন কেউ না থাকে এবং সম্পদও রেখে না যায়; তাহলে রাষ্ট্রীয় কোষাগাড়, বাইতুল মাল থেকে অথবা রাষ্ট্রীয় কোষাগাড় থেকে টাকা উঠানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়; তাহলে কাফনের দায়িত্ব সমষ্টিকভাবে সকল মুসলমানের। কেউ একা বা সকলে মিলে এ দায়িত্ব পালন করবে।

উল্লেখ্য যে, স্ত্রী মারা গেলে স্বামীর উপর কাফনের খরচ ওয়াজিব হবে। কোন কারণে কবর থেকে যদি মৃত ব্যক্তির লাশ উঠানো হয় আর তার কাফনের কাপড় না থাকে তাহলে তার শরীর অক্ষত থাকলে, পঁচে না গেলে দ্বিতীয়বার তাকে কাফন দিতে হবে এবং উল্লেখিত তরতিবে তার খরচ বহন করা হবে। আর যদি শরীর ক্ষত হয়ে যায়, পঁচে গলে যায়; তাহলে একটি কাপড় দ্বারা আচ্ছাদিত করে দাফন করে দিবে। [আহসানুল ফাতওয়া – (৪/২০৪) ফাতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ – (৫/২৪৯)]

কাফনের কাপড়

কাফন এমন ধরনের কাপড় দ্বারা দেয়া হবে যা জীবিত অবস্থায় ব্যক্তির জন্য জায়িয ছিল। আর জীবিত অবস্থায় যেই কাপড় পরিধান করা নিষেধ ছিল ঐ ধরনের কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া যাবে না। সুতরাং মৃত পুরুষকে রেশম কাপড় বা জাফরান দ্বারা রঙ্গিন কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া যাবে না। তবে মহিলাদেরকে ঐসব কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া যাবে।

যে ধরনের কাপড় পরানো মুস্তাহাব

যেই কাপড় দিয়ে মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেয়া হবে তা পরিস্কার ও পবিত্র হওয়া জরুরী।পরিস্কার ও পবিত্র হওয়ার পর নতুন পুরাতনের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। নতুন কাপড় দ্বারা ও কাফন দেয়া যায় আবার পুরাতন কাপড় দ্বারাও কাফন দেয়া যায়। তাই বর্ণনায় পাওয়া যায় যে,

হযরত আবু বকর (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বে বলে গিয়েছিলেন যে, আমার এ কাপড় দু’খানা ধুয়ে এতে আমাকে কাফন দিবে। এমনিভাবে হযরত আবদুল্লাহ ইবনুল মোবারক (রহ:) বলেন যেই কাপড় পরিধান করে নামায পড়েছে সেই কাপড়ে কাফন দেয়া ভাল।

সুতরাং উক্ত আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল যে ইহারামের বা অন্য পুরাতন পবিত্র কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া যাবে। এই ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় হলো, ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় যেই ধরনের কাপড় পরিধান করে ঈদের নামায বা জুমআর নামায অথবা মহিলা যে ধরনের কাপড় পরিধান করে পিতার বাড়িতে যেত সেই ধরনের কাপড় দিয়ে অর্থাৎ সেই মানের কাপড় দিয়ে কাফন দেয়া উচিৎ কেননা রাসূল (সা:) বলেন তোমাদের ভাইকে কাফন দেয়ার ক্ষেত্রে তার কাফনটি ভাল ধরনের দাও। (মুসলিম শরীফ)।

এ বর্ণনাটি আবু দাইদ শরীফ, মুসনাদে আহমদেও ইল্লেখ রয়েছে। সুতরাং নিম্নমানের কাপড় দিয়ে সবাইকে কাফন দেয়া উচিত নয় । আবার এর সাথে সাথে ঐ কাপড়টি সাদা হওয়া আরেকটি মুস্তাহাব। কেননা হযরত জাবের ইবন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত রয়েছে যে রাসূল (সাঃ) বলেন সাদা কাপড় আল্লাহ তাআলার নিকট পছন্দনীয়, সুতরাং তোমাদের জীবিতগণ যাতে তা পরিধান করে আর তোমাদের মৃতদেরকে তাতে কাফন দাও।”

কাফনের কাপড়ের সংখ্যা

কাফনের কাপড়ের সংখ্যা এবং ধরন মানুষের অবস্থার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে। আর এ ক্ষেত্রে মানুষের তিনটি অবস্থা হতে পারে।

১. এমন জায়গায় মারা যাওয়া যেখানে কাপড়ের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাহলে সেখানে যতটুকু কাপড় পাওয়া যাবে ততটুকু দিয়েই কাজ সম্পাদন করা হবে। যদি এক কাপড়ের বেশি-পাওয়া না যায় তাহলে এক কাপড় দিয়েই কাফন দিবে, আর পরিপূর্ণ শরীর ঢাকা যায় এমন একটি কাপড়ও যদি পাওয়া না যায় তাহলে যতটুকু ঢাকা যায় ততটুকু কাপড় দ্বারা ঢাকবে। আর বাঁকি শরীর অন্য কিছু দ্বারা ঢেকে দিবে (যাকে ফুকহায়ে কেরামের পরিভাষায় “كفن الضرورة” বলা হয়)।

বর্ণীত আছে যে, হযরত মুসয়াব ইবন উমায়ের (রাঃ) যখন শহীদ হলেন তখন তাকে একটি কাপড়ে কাফন দেয়া হয়েছিল, আবার তাও ছিল এমন যে এর দ্বারা মাথা ঢাকলে পা বের হয়ে যেত আর পা ঢাকলে মাথা বের হয়ে যেত (রাসূল (সাঃ)- কে জানানো হলে) রাসূল (সা:) বললেন তার মাথার দিক ঢেকে পায়ে ইজখির ঘাম দিয়ে দাও। (বুখারী, মুসলিম) এমনিভাবে সাইয়্যেদুশ শুহাদা হযরত হামজা (রা:) শহীদ হলে তাঁকেও একটি কাপড়ে-ই কাফন দেয়া হয়েছিল। [ফাতওয়ায়ে শামী – (৩/৯৬) আলবাহরুর রায়েক – (২/৩০৮)।বাদায়েউস সানায়ে – (২/৩৯)]

২. আর দ্বিতীয় ধরনের কাফন হলো কাফনুল কিফায়া-(كفن الكفاية) অর্থাৎ এতটুকু কাপড় দ্বারা কাফন দেয়া যার থেকে কম করলে কাফন অসম্পূর্ণ আর মাকরূহ হয়ে যাবে। আর তাহলো পুরুষের জন্য দুই কাপড় আর মহিলাদের জন্য তিন কাপড়। পুরুষের দুই কাপড় হলো ইযার এবং লেফফা। আর মহিলাদের তিন কাপড় হলো: উর্ণা- আর দুই কাপড়। অর্থাৎ কামিস আর ইযার, – তবে উর্ণা (খিমার) ব্যতীত বাকী দুটি কাপড়ের দু’টিই ইযার হওয়া উত্তম [বাদায়েউস্ সানায়ে – (২/৩৮), ফাতওয়ায়ে শামী – (৩/৯৮),]

উল্লেখ্য যে পুরুষকে দুই কাপড়ে আর মহিলাকে তিন কাপড়ে কাফন দেয়া কোন বিশেষ সময়ের সাথে খাস। তাছাড়া স্বাভাবিক অবস্থায় সুন্নত কাফন পড়ানো উত্তম, যার বর্ণনা সামনে আসছে। যেই অবস্থায় কিফায়ার কাফন দেয়া উত্তম, তাহলো: মৃত ব্যক্তি যদি সামান্য সম্পদ পরিত্যাগ করে যায় অথচ তার ওয়ারিসের সংখ্যা অনেক বেশী তাহলে পুরুষকে দুই আর মহিলাকে তিন কাপড় দ্বারা কাফন দিবে। [ফাতওয়ায়ে শামী-(৩/৯৮)]

৩. আর তৃতীয় ধরনের কাফন হলো, সুন্নত কাফন। স্বাভাবিক অবস্থায় যাদ্বারা কাফন দেয়া হয়।

আরো পড়ুন :

মৃতকে গোসল দেওয়ার নিয়ম

ট্যাগ সমূহ : মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,মুত কে কাফন, মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরানোর নিয়ম, মৃত ব্যক্তির কাফন পরানোর নিয়ম, মৃত মহিলাকে কাফন পড়ানোর নিয়ম, মৃত ব্যক্তির কাফফারা,মেয়েদের কাফন পড়ানোর নিয়ম, কাফন আমার আপন কবর আমার মাটি, মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,কাফন দাফন ও কবরের জীবন,কাফন আমার আপন,মৃত কে কাফন দেওয়ার বিধান,মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,মৃত ব্যক্তিকে কাফন দেওয়ার বিধান,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top