জুমার নামাজের শর্ত
জুমার নামাজ সহীহ এবং ওয়াজিব হওয়ার জন্য শরীয়ত কিছু শর্ত আরোপ করেছে। যদি এসব শর্ত পাওয়া না যায়, তাহলে জুমা ওয়াজিব হবে না। এসব শর্ত আবার দু’প্রকারের। কিছু শর্ত এমন যা নামাজের মধ্যেই থাকা জরুরী। তাকে শারায়েতে ওজুব বলে। কিছু শর্ত এমন যা নামাজের বাইরে পাওয়া জরুরী। এসবকে বলে শারায়েতে সেহহাত।
শারায়েতে ওজুব
জুমার নামাজ ওয়াজিব হওয়ার জন্য পাঁচটি শর্ত।
১. পুরুষ হওয়া। নারীর জন্য জুমা ওয়াজিব নয়।
২. স্বাধীন হওয়া। গোলামের ওপর ওয়াজিব নয়।
৩. বালেগ এবং জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া। নাবালেগ এবং পাগলের ওপর ওয়াজিব নয়।
৪. মুকীম হওয়া। মুসাফিরের জন্য ওয়াজিব নয় ।
৫. সুস্থ হওয়া। রোগী ও অক্ষমের জন্য ওয়াজিব নয়। রোগী হওয়ার অর্থ এই যে, যে মসজিদ পর্যন্ত যেতে পারে না। কিন্তু যারা চলাফেরা করে এবং মসজিদ পর্যন্ত যেতে সক্ষম তার ওপর জুমার নামায ওয়াজিব।
অক্ষম দু’প্রকারের। প্রথম যার দৈহিক কোনো অক্ষতা রয়েছে। যেমন, অন্ধ, খণ্ড, এমন বৃদ্ধ যে চলতে পারে না। দ্বিতীয় ঐসব লোক যাদের বাহির থেকে কোনো অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। যেমন ঝড়-তুফান, বৃষ্টি-বাদল, পথে কোনো হিংস্র জানোয়ার, শত্রু প্রভৃতির ভয় হওয়া।
শারায়েতে ওজুব পাওয়া না গেলে জুমার নামাজের হুকুম
জুমার নামাজ তো এমন ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব যার মধ্যে উপরের পাঁচটি শর্ত পাওয়া যাবে। কিন্তু কোনো ব্যক্তির মধ্যে যদি এসব শর্ত বা কিছু পাওয়া না যায় এবং সে যদি জু: র নামায পড়ে তাহলে তার নামাজ দুরস্ত হবে। অর্থাৎ জুমার নামায পড়ার পর তাকে আর যোহর নামাজ পড়ার দরকার হবে না। যেমন- কোনো মহিলা মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়লো, তাহলে তার নামায দুরত হবে এবং যোহর নামাজ পড়তে হবে না।
শারায়েতে সেহ্হাত
জুমার নামায সহীহ হওয়ার জন্য পাঁচটি শর্ত পুরা না করলে জুমার নামার দুরস্ত হবে না। এসব শর্ত পূরণ ব্যতিরেকে কেউ ঘৃনা পড়লে তার সোহরা পড়ার প্রয়োজন হবে। শর্তগুলো নিম্নরূপ-
১. মেসরে জামে’ হওয়া ।
২. যোহরের ওয়াক্ত হওয়া।
৩. খুতবা হওয়া।
৪. সর্ব সাধারণের জন্য নামাযে অনুমতি থাকা।
শর্তগুলোর ব্যাখ্যা
১. মেসরে জামে’ বন জংগল, পল্লীগ্রাম, সাময়িক অবস্থানের জায়গার জুমার নামায দুরও হবে না । হযরত আলী (রা:) বলেন- জুমা এবং ঈদাইনের নামাজ মেসরে জামে’ ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে দুরস্ত হবে না।
মেসরে জামে’ বলতে বুঝায় এমন এক শহর অথবা বড়ো বস্তি যেখানে এত সংখ্যক মুসলমান আছে যাদের ওপর জুমা ওয়াজিব, তারা যদি ঐ বস্তির কোনো মসজিদে জমা হয় তাহলে তাদের স্থান সংকুলান হবে না।
● সাধারণত নেসরে জামে’র উপরোক্ত সংজ্ঞা হচ্ছে হানাফী ফকীহদের। এ ছাড়াও আরও বহু সংজ্য বর্ণিত আছে যেমন-
১. যে স্থানের লোকসংখ্যা দশ হাজার, তা মেসর।
২. অথবা মেসর (শহর) তাকে বলে যেখানে সকল প্রকার পেশার লোক জীবিকা অর্জন করে।
৩. সমকালীন ইমাম যে স্থানকে মেসর বলে উল্লেখ করে জুমা প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেবেন তা ফেসর।
৪. মেসর ঐ স্থানকে বলে যেখানে বাজার, সড়ক এবং মহা আছে এবং সেখানে এমন একজন পরিচালক থাকবে যে বালেমের হাত থেকে মানুষের অধিকার আদায় করতে পারে এবং এমন একজন আলেম থাকবে যার নিকটে লোক মাসয়ালা-মাসায়েল শিখতে আসবে।
আরো পড়ুন :
ট্যাগ সমূহ : জুমার নামাজের শর্ত সমূহ, জুমার নামাজের শর্ত, জুমার নামাজের শর্তাবলী,জুমার নামাযের শর্ত,জুমার নামাজের শর্ত,জুমার নামাজের শর্ত.জুমার নামাজের শর্ত |