
হযরত ওসমান রাঃ এর জীবনী
ইসলামের তৃতীয় খলিফা বিশিষ্ট সাহাবী হযরত ওসমান (রা)-এর জীবনী নিম্নরূপ-
১. নাম ও পরিচিতি :
তাঁর নাম ওসমান, কুনিয়াত আবু আবদুল্লাহ, আবু লায়লা। লকব যুন্নুরাইন ও গনী। তাঁর পিতার নাম আফ্ফান ইবনে আবিল আস। মাতার নাম আরওয়া বিনতে কুরাইয। রাসূল (স)-এর জামাতা ও তৃতীয় খলিফা। তিনি কুরাইশ বংশের উমাইয়া শাখার সন্তান।
২. নসবনামা :
তাঁর নসবনামা হলো, ওসমান ইবনে আফফান ইবনে আবিল আস ইবনে উমাইয়া ইবনে শামস ইবনে আবদে মানাফ ।
৩. রাসূল (স)-এর সাথে সম্পর্ক :
কয়েকটি দিক হতেই তাঁর সাথে রাসূল (স)-এর সম্পর্ক রয়েছে।
ক. তাঁর ঊর্ধ্ব পুরুষ আবদে মানাফের সাথে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (স)-এর বংশ সূত্র মিলে যায় ।
খ. তাঁর নানী বায়দা বিনতে আবদিল মুত্তালিব রাসূল (স)-এর ফুফু।
গ. রাসূলুল্লাহ (স) স্বীয় দু’কন্যা রুকাইয়া ও উম্মে কুলসুমকে তাঁর নিকট বিবাহ দেন। এ কারণেই তাঁকে যুন্নুরাইন বলা হয়। মহানবী (স)-এর নিম্নবর্ণিত বাণী থেকে ওসমান (রা)-এর সাথে তাঁর গভীরতম সম্পর্কের প্রমাণ মেলে। যেমন তিনি বলেছেন- لِكُلِّ نَبِي رفيق وَرَفَيقِي فِي الْجَنَّةِ عُثْمَانُ অর্থাৎ, প্রত্যেক নবীরই বন্ধু রয়েছে। আর বেহেশতে আমার বন্ধু হবে ওসমান (রা)।
৪. ইসলাম গ্রহণ :
ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁকে আসসাবিকুনাল আউওয়ালূন বলা হয়। তিনি বলেন, আমি ইসলাম গ্রহণকারী চার জনের মধ্যে চতুর্থ। তিনি হযরত আবু বকর (রা)-এর দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেন।
৫. হিজরত :
নবুয়তের পঞ্চম বছরে মক্কার কাফেরদের অত্যাচারে মুসলমানদের যে দলটি হাবশায় হিজরত করে তাঁদের সাথে তিনিও সপরিবারে হাবশায় হিজরত করেন। হাবশায় বেশ কিছুদিন অবস্থানের পর গুজব শুনলেন, মক্কার নেতারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তখন তিনি মক্কায় ফিরে আসেন। রাসূলুল্লাহ (স)-এর মদিনায় হিজরতের পর তিনি মদিনায় হিজরত করেন। উল্লেখ্য, হাবশায় অবস্থানকালে তাঁর পুত্র আবদুল্লাহর জন্ম হয়।
৬. জেহাদে অংশগ্রহণ :
ইসলামে যতগুলো যুদ্ধ সংঘটিত হয় তন্মধ্যে বদর এবং বাইয়াতে রিদওয়ান ব্যতীত বাকি সকল যুদ্ধেই তিনি অংশগ্রহণ করেন। বদরের সময় তাঁর স্ত্রী রুকাইয়া অসুস্থ থাকায় রাসূলুল্লাহ (স) তাঁকে রোগীর সেবার নির্দেশ দেন। আর বাইয়াতে বিদওয়ান তো তাঁর মক্কায় অবরুদ্ধ হওয়ার কারণেই সংঘটিত হয়েছিল ।
৭. দৈহিক আকৃতি :
তিনি ছিলেন মধ্যম আকৃতির সুঠাম দেহের অধিকারী। মাংসহীন গণ্ডদেশ, ঘন দাড়ি, উজ্জ্বল ফর্সা, ঘন চুল, কোমর ও বুক প্রশস্ত, কান পর্যন্ত ঝুলানো জুলফী, পায়ের নালা মোটা, পশম ভরা লম্বা বাহু, মুখে বসন্তের দাগ, মেহেদি রঙের দাড়ি এবং স্বর্ণখচিত দাঁত।
৮. খেলাফতের দায়িত্ব পালন :
হযরত ওমর (রা)-এর ইন্তেকালের পর তাঁর অসিয়ত মোতাবেক মুসলমানদের পরামর্শক্রমে ২৪ হিজরীর ১ মহররম সোমবার সকালে তিনি খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বারো দিন কম বারো বছর তিনি খেলাফতের দায়িত্ব পালন করেন।
৯. হাদীসের খেদমত :
রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার ফলে তাঁর বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা অতি নগণ্য। তিনি রাসূল (স)-এর নিকট হতে সর্বমোট ১৪৬ খানা হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী (র) তন্মধ্য হতে ১১ খানা হাদীস স্বীয় গ্রন্থে উল্লেখ করেন।
১০. শাহাদাত :
৩৫ হিজরীর ১৮ যিলহজ্জ শুক্রবার আসর নামাযের পর তাঁর বাসভবনে আল আসওয়াদুত তুজিবী তাঁকে হত্যা করে। তখন তাঁর বয়স কত হয়েছিল এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে নির্ভরযোগ্য বর্ণনা মতে, তাঁর বয়স ৮২ হতে ৯০-এর মধ্যেই ছিল।
১১. দাফন :
তাঁকে জান্নাতুল বাকী কবরস্থানের হাশশে কাওকাব অংশে মাগরিব ও এশার মাঝামাঝি সময়ে দাফন করা হয়।
আরো পড়ুন :
ট্যাগ সমূহ : হযরত ওসমান রাঃ এর জীবনী,হযরত ওসমান রাঃ এর শাসন ব্যবস্থা,হযরত ওসমান রাঃ এর জীবনী pdf, হযরত ওসমান রাঃ এর স্ত্রীর নাম কি, হযরত ওসমান রাঃ মৃত্যু, হযরত ওসমান রাঃ এর বাণী,হযরত ওসমান (রা),হযরত উসমান (রা) এর জানাযার নামাজের ইমামতি কে করেছিলেন,হযরত উসমান (রা) এর জীবনী,হযরত উসমান রা,হযরত ওসমান রা কে জামিউল কুরআন বলা হয় কেন,হযরত উসমান রাঃ,হযরত উসমান রাঃ জীবনী,হযরত উসমান রাঃ এর জীবনী,হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর জীবনী,হযরত ওমর রা এর জীবনী,ওসমান রাঃ,ওসমান রা,ওসমান রাঃ এর জীবনী,হযরত ওসমান রা,হযরত ওসমান রা:,হযরত ওসমান রা: এর জীবনী,হযরত ওসমান গনি,হযরত ওসমানের জীবনী,হযরত ওমর রাঃ জীবনী,হযরত ওমর রা জীবনী,হযরত উসমান এর জীবনী,হযরত উসমান রাঃ এর দান,হযরত উসমান,হযরত উসমান রাঃ এর জীবনী pdf,হযরত ওমর ফারুক রা,হজরত ওসমান রাঃ,হযরত ওসমান রাঃ এর জীবনী |