সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ

সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর কার উপর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর,সদকায়ে ফিতর কাকে বলে,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কাদের উপর ওয়াজিব,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের আলোচনা,সদকায়ে ফিতর কি,সদকায়ে ফিতর আদায় করা কি,সদকায়ে ফিতরের নেসাব,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কি,সাদকায়ে ফিতর,ফিতরের অর্থ,সদকায়ে ফিতরের বিভিন্ন মাসায়েল,সদকায়ে ফিতরের তাৎপর্য ও উপকারিতা,সদকায়ে ফিতরের হুকুম,
সূচীপত্র :
১. ফিতরের অর্থ
২. সদকায়ে ফিতর কাকে বলে
৩. সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ
৪. সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার সময়
৫. সদকায়ে ফিতর কার উপর ওয়াজিব
৭. সদকায়ে ফিতর পরিশোধ করার সময়
৮. সদকায়ে ফিতরের তাৎপর্য ও উপকারিতা
৯. সদকায়ে ফিতরের হুকুম
১০. সদকায়ে ফিতরের বিভিন্ন মাসায়েল

ফিতরের অর্থ

ফিতরের আভিধানিক অর্থ রোযা খোলা। সদকায়ে ফিতরের অর্থ রোযা খোলার সদকা।
সদকায়ে ফিতর কাকে বলে
পারিভাষিক অর্থে সদকায়ে ফিতর বলতে বুঝায় সেই ওয়াজিব সদকা যা রমজান খতম হওয়ার এবং রোজা খোলার পর দেয়া হয় যে বছর মুসলমানদের ওপর রমজানের রোযা ফরজ করা হয় সে বছরই নবী করীম (সা:) সদকায়ে ফিতর আদায়ের হুকুম দেন।

সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ

সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ আশি তোলা সেরের হিসেবে এক সের তিন ছটাক গমের আটা। যব বা যবের আটা, অথবা খুরমা, মুনাক্কা দিতে হলে গমের দ্বিগুণ দিতে হবে।

মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর মতে-একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ এক সের সাড়ে বার ছটাক। সারধানতার জন্যে দু’ সের দেয়া ভালো । নবী (স)-এর যুগে সম্ভবত যব এবং খুরমা মুনাক্কার মূল্য সমান ছিল।

সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার সময়

সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার সময় ঈদের দিনের প্রভাতকাল। অতএব যে ব্যক্তি ফজর হওয়ার পূর্বে মারা যায় অথবা ধন-দৌলত থেকে বঞ্চিত হয় তার ওপর ওয়াজেব হবে না। যে শিশু ফজরের পর জন্মগ্রহণ করবে তার ওপরও ওয়াজিব হবে না। তবে যে ঈদের রাতে জন্মগ্রহণ করবে তার ওপর ওয়াজিব হবে। এমনিভাবে যে ফজরের পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করে অথবা ধনের মালিক হয়—তাহলে তার ওপর সদকাদয়ে ফিতর ওয়াজিব হবে।

সদকায়ে ফিতর কার উপর ওয়াজিব

১. সচ্ছল ব্যক্তি তার নিজের ছাড়াও নাবালেগ সন্তানদের পক্ষ থেকে সদকায়ে ফিতর দিয়ে দেবে। নাবালেগ সন্তান যদি ধববান হয় তাহলে তাদের ধন থেকে নতুবা নিজের পক্ষ থেকে দেবে।

২. যারা তাদের খাদেম বা চাকর বাকরের পৃষ্ঠপোষকতা ও ভরণ-পোষণ করে তারা তাদের পক্ষ থেকে সদকা দিয়ে দেবে।

৩. যেসব সন্তান হুঁশ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে তাদের মাল থাক আর না থাক, তাদের পক্ষ থেকে সদকায়ে ফিতর দিয়ে দেয়া ওয়াজিব, তারা সাবালক হোক বা না হোক।

৪. বিবির পক্ষ থেকে ওয়াজিব তো নয়। তবে স্বামী দিয়ে দিলে বিবির পক্ষ থেকে হয়ে যাবে।

৫. সাবালক সন্তানদের পক্ষ থেকে পিতার দেয়া ওয়াজিব যদি তারা দুঃস্থ ও দরিদ্র হয় । মালদার হলে ওয়াজিব হবে না।

৬. স্ত্রীলোক যদি সচ্ছল হয় তাহলে শুধু তার সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব। তার নিজের ছাড়া স্বামী, সন্তান বা মা-বাপের পক্ষ থেকে দেয়া তার ওয়াজিব নয়।

৭. বাপ মারা গেলে দাদার উপরে সকল দায়িত্ব এসে পড়ে যা পিতার ছিল।

সদকায়ে ফিতর পরিশোধ করার সময়

সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার সময় যদিও ফজরের সময় কিন্তু ওয়াজিব হওয়ার তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য এটাই দাবী করে যে, ঈদের কিছু দিন পূর্বে তা অভাবগ্রস্তদের কাছে পৌছিয়ে দেয়া হোক। যাতে করে গরীব দুস্থ অন্ন-বস্ত্রের সামগ্রি নিশ্চিন্তে লাভ করে সকলের সাথে ঈদগাহে যেতে পারে ।

বুখারী শরীফে আছে যে, সাহাবায়ে কেরাম (রা) দু’ একদিন পূর্বেই সদকায়ে ফিতর বিতরণ করতেন। দু’ চার দিন পূর্বে দেয়া না গেলে ঈদের নামাজের পূর্বে অবশ্যই সদকায়ে ফিতর দিয়ে দেয়া উচিত।

নবী করিম (সা:) বলেন, “যে ব্যক্তি সদকায়ে ফিতর নামাজের পূর্বে আদায় করবে তাহলে সেটা হবে আল্লাহর নিকটে গৃহীত সদকা। আর যে নামাজের পরে দেবে, তাহলে তার সদকা হবে দান খয়রাতের মতো একটি সদাকা।”

সদকায়ে ফিতরের তাৎপর্য ও উপকারিতা

রমযান মাসে রোযাদারগণ তাঁদের সাধ্যানুযায়ী এ চেষ্টা করেন যাতে করে তাঁরা রমযানের মর্যাদা রক্ষা করতে পারেন এবং ঐসব সীমারেখা, নিয়ম পদ্ধতি ও শর্তাবলীর প্রতি পূর্ণ দৃষ্টি রাখেন যা মেনে চলার জন্যে শরীয়াতে তাকীদ করা হয়েছে। তথাপি জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে মানুষের অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে যায়। সদকায়ে ফিতরের একটি তাৎপর্য এই যে, মানুষ আল্লাহর পথে আগ্রহ সহকারে তার অর্জিত মাল খরচ করবে যাতে করে তার ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষতিপূরণ হয় এবং আল্লাহর দরবারে রোজা কবুল হয়।

উপরন্তু ঈদ উপলক্ষ্যে সদকায়ে ফিতর দেয়ার একটা তাৎপর্য এটাও যে, সমাজের গরীব-দুস্থ লোক যেন নিশ্চিন্তে এবং ভালোভাবে অন্ন-বস্ত্রের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে এবং অন্যান্য মুসলমানদের সাথে ঈদগাহে উপস্থিত হতে পারে যাতে করে ঈদগাহের সম্মেলন বিরাট হয় এবং পথে মুসলমানদের বিপুল জনসমাগমের কারণে ইসলামের প্রভাব প্রতিপত্তির বিস্তার ঘটে।

শাহ অলী উল্লাহ (র) বলেন, ঈদের দিন খুশীর দিন। এদিনে মুসলমানদের বিরাট জনসমাবেশের মাধ্যমে ইসলামের শান-শওকত প্রকাশ পায় এবং সদকায় ফিতরের দ্বারা এ উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়। তাছাড়া সদকায়ে ফিতর রোযার পূর্ণতারও কারণ হয় ।-(হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, নবী (স) সদকায়ে ফিতর এজন্য নির্ধারিত করেছেন যে, এ ফিতরা রোযাদারদেরকে বেহুদা কাজ-কর্ম এবং অশ্লীলতার ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পাক করবে এবং সে সাথে অভাবগ্রস্তদের খানা-পিনার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। অতএব যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের পূর্বে সদকায়ে ফিতর পরিশোধ করবে তার সে সদকা কবুল হবে এবং যে নামাযের পরে পরিশোধ করবে তা সাধারণ দান খয়রাতের মতো একটি সদকা হবে।-(আবু দাউদ)

সদকায়ে ফিতরের হুকুম

সদকায়ে ফিতর এমন প্রত্যেক সচ্ছল মুসলমান নারী-পুরুষ, নাবালক সাবালকের ওপর ওয়াজিব। যার কাছে তার প্রকৃত প্রয়োজনের অতিরিক্ত এতো মূল্যের মাল হবে যার ওপর যাকাত ওয়াজিব হয়। সে মালের ওপর যাকাত ওয়াজিব হোক বা না হোক। যেমন ধরুন, কারো কাছে তার বসবাসের গৃহ ছাড়া আরও বাড়ী-ঘর আছে যা খালি পড়ে আছে অথবা ভাড়ার জন্যে তৈরী করা হয়েছে। যদি সে ঘর-বাড়ীর মূল্য নিসাব পরিমাণ সম্পদ হয় তাহলে তার মালিকের ওপর সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব হবে যদিও সে বাড়ীর ওপর জাকাত ওয়াজিব নয়।

তবে যদি বাড়ীর ভাড়ার দ্বারা সে জীবিকা অর্জন করে তাহলে তা তার প্রকৃত প্রয়োজনের মধ্যে শামিল হবে এবং তার ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে না অথবা কারো ঘরে ব্যবহারের সামগ্রি ছাড়াও কিছু আসবাবপত্র আছে যেমন, তামার বাসনপত্র, মূল্যবান ফার্নিচার প্রভৃতি যার মূল্য নেসাবের পরিমাণ অথবা তার অধিক, তাহলে তার ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে। যদিও সে সব মালের যাকাত দিতে হবে না।

সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার জন্যে ওপরে বর্ণিত নেসাব ছাড়া অন্য কোনো শর্ত নেই। না আযাদী কোনো শর্ত, আর নাবালেগ হওয়া অথবা হুঁশ জ্ঞান থাকা। গোলামের ওপরও ওয়াজিব। কিন্তু তার মনিব তা দিয়ে দিবে। নাবালেগ ও পাগল ছেলেমেয়েদের ফিতরা তার বাপ-মা অথবা ওলী দিয়ে দেবে।

সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার জন্যে এটাও শর্ত নয় যে, মাল এক বছর স্থায়ী হতে হবে। বরঞ্চ সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পূর্বেও যদি কেউ ধন-দৌলতের মালিক হয়, তাহলে তার ওপরও সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে।

সদকায়ে ফিতরের বিভিন্ন মাসায়েল

১. যে ব্যক্তি কোনো কারণে রমজানের রোজা রাখতে পারেনি, তারও সদকায়ে ফিতর দেয়া ওয়াজিব। সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার জন্যে রোজা শর্ত নয়।

২. গমের পরিবর্তে অন্য কিছু যেমন জোয়ার, বাজরা, ছোলা, মটর প্রভৃতি দেয়ার ইচ্ছা থাকলে গম অথবা যবের মূল্যে পরিমাণ হওয়া উচিত।

৩. সদকায়ে ফিতর খাদ্য শস্যের আকারেও দেয়া যায়, তার মূল্যও দেয়া যায় । দেয়ার সময় ফকীর মিসকীনদের সুবিধা বিবেচনা করে খাদ্য শস্য বা মূল্য দেয়া উচিত।

৪. প্রয়োজন হলে ফিতরা অন্যস্থানেও পাঠানো যায়। তবে ন্যায়সংগত কারণ ছাড়া অন্যত্র না পাঠানো উচিত।

৫. একজনের সদকায়ে ফিতর একজন ফকীরকেও দেয়া যায় এবং কয়েকজনকেও দেয়া যায়। তেমনি কয়েকজনের ফিতরা একজনকেও দেয়াযায় এবং কয়েক জন কেও দেয়া যায়।

৬. সদকায়ে ফিতরের ব্যয়ের খাতও তাই, যা জাকাতের।

৭. কারো কাছে কিছু গম এবং কিছু জব আছে। তাহলে হিসেব করে সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ পূর্ণ করে দেবে।

আরো পড়ুন :

ওশর শব্দের অর্থ কি

ওশরের বিধান

ওশর কাকে বলে

ওশরের পরিমান

ফসলের ওশর

জাকাত কি ?

যাকাতের নিসাব কি

যাদের উপর যাকাত ফরজ

যাকাত দেওয়ার নিয়ম কানুন

যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

যাকাতের গুরুত্ব

ছাগলের যাকাতের নিসাব

গরুর যাকাতের নিসাব কয়টি

উটের যাকাতের নিসাব কয়টি

গহনা ও অলংকারের যাকাত

স্বর্ণের যাকাতের নিসাব কত

ব্যবসার মালের যাকাত এর পদ্ধতি

যাকাতের বিভিন্ন মাসআলা মাসায়েল

শতকরা কত পার্সেন্ট যাকাত দিতে হয়

ট্যাগ সমূহ : সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর কার উপর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর,সদকায়ে ফিতর কাকে বলে,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব?,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কাদের উপর ওয়াজিব,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের আলোচনা,সদকায়ে ফিতর কি,সদকায়ে ফিতর আদায় করা কি,সদকায়ে ফিতরের নেসাব,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কি,সাদকায়ে ফিতর,ফিতরের অর্থ,সদকায়ে ফিতরের বিভিন্ন মাসায়েল,সদকায়ে ফিতরের তাৎপর্য ও উপকারিতা,সদকায়ে ফিতরের হুকুম,সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর কার উপর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর,সদকায়ে ফিতর কাকে বলে,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব?,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কাদের উপর ওয়াজিব,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের আলোচনা,সদকায়ে ফিতর কি,সদকায়ে ফিতর আদায় করা কি,সদকায়ে ফিতরের নেসাব,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কি,সাদকায়ে ফিতর,ফিতরের অর্থ,সদকায়ে ফিতরের বিভিন্ন মাসায়েল,সদকায়ে ফিতরের তাৎপর্য ও উপকারিতা,সদকায়ে ফিতরের হুকুম,সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর কার উপর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ,সদকায়ে ফিতর,সদকায়ে ফিতর কাকে বলে,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব?,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কাদের উপর ওয়াজিব,কার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব,সদকায়ে ফিতরের আলোচনা,সদকায়ে ফিতর কি,সদকায়ে ফিতর আদায় করা কি,সদকায়ে ফিতরের নেসাব,সদকায়ে ফিতরের ফজিলত,সদকায়ে ফিতর কি,সাদকায়ে ফিতর,ফিতরের অর্থ,সদকায়ে ফিতরের বিভিন্ন মাসায়েল,সদকায়ে ফিতরের তাৎপর্য ও উপকারিতা,সদকায়ে ফিতরের হুকুম,



.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top