সুচিপত্র:
রাসেল ভাইপার সাপ
রাসেল ভাইপার (Daboia russelii), চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত, ভাইপারিডি পরিবারের একটি বিষধর সাপ। এটি ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশ এবং ফিলিপাইনের স্থানীয়। স্কটিশ সার্জন এবং প্রকৃতিবিদ প্যাট্রিক রাসেলের নামানুসারে রাসেল ভাইপার সাপের নামকরণ করা হয়েছে। ১৭৮১ সালে ভারতে এসে তিনি এই অঞ্চলের সাপের উপর গবেষণা শুরু করেন। কাতুকা রেকুলা পোদা নামক সাপটি, যা কোবরার পর দ্বিতীয় বেশিরভাগ প্রাণঘাতী ছিল, তিনিই শনাক্ত করেছিলেন। এই সাপটিই আজকের রাসেল ভাইপার।
চেহারা:
- রাসেল ভাইপার মাঝারি আকারের, ১.২ থেকে ১.৫ মিটার (৪.০ থেকে ৫.০ ফুট) দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়।
- এর শরীর বাদামী বা লালচে বাদামী রঙের, গাঢ় বাদামী বা কালো দাগযুক্ত।
- এর মাথা ত্রিভুজাকৃতির এবং এর চোখের মধ্যে একটি উল্লম্ব ছাত্র রয়েছে।
- এর লেজি ছোট এবং তীক্ষ্ণ।
আচরণ:
- রাসেল ভাইপার স্থলচর এবং দিনের বেলায় সক্রিয় থাকে।
- এটি বন, জঙ্গল, তৃণভূমি এবং কৃষি জমিতে পাওয়া যায়।
- এটি একটি খাদ্যশিকারী যা ইঁদুর, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভয়চর এবং সরীসৃপ খায়।
- এটি একটি ঘাতক, শিকারের জন্য অপেক্ষা করে এবং তারপর আক্রমণ করে।
বিষ:
- রাসেল ভাইপারের বিষ হেমোটক্সিন, যা রক্ত কোষকে ধ্বংস করে এবং টিস্যু ক্ষতি করে।
- এর কামড় ব্যথাযুক্ত এবং প্রাণঘাতক হতে পারে, বিশেষ করে ছোট শিশুদের জন্য।
- রাসেল ভাইপারের কামড়ের জন্য একটি অ্যান্টিভেনম রয়েছে, তবে চিকিৎসা দ্রুত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
রাসেল ভাইপার সাপ কোথায় থাকে?
রাসেল ভাইপার সাপ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উষ্ণ ও আর্দ্র এলাকায় বাস করে।
বিশেষ করে: ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশ এবং ফিলিপাইনের কিছু দ্বীপে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে, রাসেল ভাইপার সারাদেশে পাওয়া যায়, তবে এটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বেশি দেখা যায়। এই সাপগুলো বিভিন্ন ধরণের বাসস্থানে বাস করে, যার মধ্যে রয়েছে-
- বন
- জঙ্গল
- তৃণভূমি
- কৃষি জমি
- শুষ্ক এলাকা
- পাহাড়ি এলাকা
রাসেল ভাইপার সাপ গর্ত, পাথুরে ফাটল, গাছের গোড়া এবং ধ্বংসাবশেষের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। রাতের বেলা বেশি সক্রিয় থাকে, তবে দিনের বেলাও দেখা যেতে পারে। এই সাপ শিকারী এবং ইঁদুর, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভয়চর এবং সরীসৃপ খায়। রাসেল ভাইপার বিষাক্ত এবং এর কামড় প্রাণঘাতক হতে পারে।
রাসেল ভাইপার ও পাইথন চেনার উপায়?
রাসেল ভাইপার এবং পাইথন দুটি ভিন্ন ধরণের সাপ, তবে তাদের কিছু মিল রয়েছে যা তাদের চিহ্নিত করা কঠিন করে তুলতে পারে। তবে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে যা আপনাকে তাদের আলাদা করতে সহায়তা করতে পারে যেমন-
মাথা:
- রাসেল ভাইপার: ত্রিভুজাকৃতির মাথা, স্পষ্ট কানের ছিদ্র, চোখের মধ্যে একটি উল্লম্ব ছাত্র।
- পাইথন: বৃত্তাকার বা ডিম্বাকৃতির মাথা, অস্পষ্ট কানের ছিদ্র, চোখের মধ্যে একটি গোলাকার ছাত্র।
শরীর:
- রাসেল ভাইপার: পাতলা, পেশীবহুল শরীর, স্পষ্ট স্কেল রিজ, বাদামী বা লালচে বাদামী রঙের, গাঢ় বাদামী বা কালো দাগযুক্ত।
- পাইথন: মোটা, মসৃণ শরীর, অস্পষ্ট স্কেল রিজ, বিভিন্ন রঙের (যেমন বাদামী, কালো, সবুজ) হতে পারে, কিছু প্রজাতিতে জটিল নিদর্শন থাকে।
চোখ:
- রাসেল ভাইপার: চোখের মধ্যে একটি উল্লম্ব ছাত্র।
- পাইথন: চোখের মধ্যে একটি গোলাকার ছাত্র।
লেজ:
- রাসেল ভাইপার: ছোট, তীক্ষ্ণ লেজ।
- পাইথন: মোটা, blunt লেজ।
আচরণ:
- রাসেল ভাইপার: স্থলচর, দিনের বেলা সক্রিয়, আক্রমণাত্মক।
- পাইথন: স্থলচর বা গাছের উপরে বাস করে, রাতের বেলা সক্রিয়, সাধারণত অ-আক্রমণাত্মক।
আরও তথ্য:
- রাসেল ভাইপার: বিষাক্ত, কামড় প্রাণঘাতক হতে পারে।
- পাইথন: অ-বিষাক্ত, মানুষের জন্য खतरा নয়।
দ্রষ্টব্য:
- সাপ চিহ্নিত করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
- যদি আপনি নিশ্চিত না হন যে কোন ধরণের সাপ আপনি দেখছেন, তাহলে এটি থেকে দূরে থাকুন এবং একজন পেশাদারকে ডাকুন।
রাসেলস ভাইপার কতটা বিষাক্ত?
রাসেল ভাইপার অত্যন্ত বিষাক্ত সাপ এবং এর কামড় প্রাণঘাতক হতে পারে।
বিষের প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে:
- স্থানীয় ব্যথা, ফোলাভাব এবং লালভাব
- বমি বমি ভাব, বমি
- ডায়রিয়া
- চোখে রক্তক্ষরণ
- ভারসাম্য হারানো
- মৃত্যু
বিষের তীব্রতা নির্ভর করে বিভিন্ন কারণের উপর, যার মধ্যে রয়েছে:
- ইনজেক্ট করা বিষের পরিমাণ
- সাপের আকার
- কামড়ানো ব্যক্তির বয়স ও স্বাস্থ্য
চিকিৎসা না করা হলে, রাসেল ভাইপারের কামড় 50% ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তবে, অ্যান্টিভেনম উপলব্ধ থাকলে, মৃত্যুর হার 1%-এর কাছাকাছি নেমে আসে। বাংলাদেশে, রাসেল ভাইপারের কামড়ে প্রতি বছর প্রায় 10,000 মানুষ মারা যায়।
যদি আপনি মনে করেন যে আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ রাসেল ভাইপার দ্বারা কামড়ানো হয়েছে, তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা নিন।
এখানে কিছু টিপস রয়েছে যা আপনাকে রাসেল ভাইপারের কামড় থেকে নিরাপদ থাকতে সাহায্য করতে পারে:
- ঘন বন, ঝোপঝাড় এবং লম্বা ঘাসের এলাকা এড়িয়ে চলুন যেখানে রাসেল ভাইপার পাওয়া যায়।
- জুতা এবং লম্বা প্যান্ট পরুন যখন আপনি এমন এলাকায় থাকেন যেখানে রাসেল ভাইপার থাকতে পারে।
- একটি টর্চলাইট ব্যবহার করুন রাতে যখন আপনি বাইরে থাকেন।
- সাপকে বিরক্ত বা মেরে ফেলার চেষ্টা করবেন না।
- যদি আপনি একটি রাসেল ভাইপার দেখেন, তাহলে ধীরে ধীরে সরে যান এবং এটি থেকে দূরে থাকুন।
মনে রাখবেন, সতর্কতা অবলম্বন করা এবং সাপ সম্পর্কে সচেতন থাকা রাসেল ভাইপারের কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করার সর্বোত্তম উপায়।
রাসেলস ভাইপার উত্তেজিত হলে কি করে?
রাসেল ভাইপার যখন উত্তেজিত হয় তখন এটি বিভিন্নভাবে আচরণ করতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে-
- শরীর ফুলে ওঠা: এটি সাপকে বড় দেখাতে এবং হুমকি প্রদান করতে সাহায্য করে।
- মাথা উঁচু করা: এটি সাপকে তার চারপাশের পরিবেশ আরও ভালভাবে দেখতে সাহায্য করে এবং শিকার বা হুমকি চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
- ফিসফিসানি: এটি একটি শব্দ যা সাপ তার মুখ দিয়ে বের করে এবং এটি হুমকির সতর্কবার্তা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- লেজ ঝাঁকানি: এটি একটি শব্দ যা সাপ তার লেজ দিয়ে তৈরি করে এবং এটি হুমকির সতর্কবার্তা বা আক্রমণের প্রস্তুতি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- আক্রমণ: যদি রাসেল ভাইপার মনে করে যে এটি খুব বেশি হুমকির মুখে রয়েছে, তবে এটি আক্রমণ করতে পারে।
আরও কিছু নির্দিষ্ট আচরণ রয়েছে যা রাসেল ভাইপার উত্তেজিত হলে প্রদর্শন করতে পারে:
- জিহ্বা বের করা: রাসেল ভাইপার তার জিহ্বা ব্যবহার করে তার পরিবেশকে গন্ধ করে এবং এটি উত্তেজনা বা উদ্বেগের লক্ষণ হতে পারে।
- চোখের পলি ছোট করা: যখন রাসেল ভাইপার আক্রমণাত্মক হয় তখন তার চোখের পলি ছোট হয়ে যেতে পারে।
- মাথার দিক দিয়ে দ্রুত নড়াচড়া: এটি আক্রমণের প্রস্তুতি হতে পারে।
যদি আপনি একটি রাসেল ভাইপার দেখেন যা এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি প্রদর্শন করছে, তাহলে ধীরে ধীরে সরে যান এবং এটি থেকে দূরে থাকুন।
রাসেল ভাইপার সাপ কোন কোন জেলায় আছে ?
রাসেল ভাইপার সাপ বর্তমানে বাংলাদেশের 32 টি জেলায় পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের জুন মাসের তথ্য অনুযায়ী, এই জেলাগুলো হলো-
ঢাকা | পাবনা | কিশোরগঞ্জ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া |
রাজশাহী | কুষ্টিয়া | মুন্সিগঞ্জ | শেরপুর |
চট্টগ্রাম | নওগাঁ | নারায়ণগঞ্জ | যশোর |
খুলনা | বগুড়া | মানিকগঞ্জ | ঝিনাইদহ |
বরিশাল | জয়পুরহাট | চাঁদপুর | হাটিয়া |
সিলেট | পঞ্চগড় | শরিয়তপুর | নওখালী |
ময়মনসিংহ | ঠাকুরগাঁও | মাদারীপুর | ফেনী |
ফরিদপুর | দিনাজপুর | গাজীপুর | লক্ষ্মীপুর |
উল্লেখ্য যে, রাসেল ভাইপারের ব্যাপ্তি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি জেলায় এদের দেখা যেতে পারে। আপনার এলাকায় রাসেল ভাইপার আছে কিনা তা জানতে, আপনি স্থানীয় বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
রাসেল ভাইপার সাপের বৈশিষ্ট্য
রাসেল ভাইপার সাপের বৈশিষ্ট্য:
শারীরিক বৈশিষ্ট্য:
- মাথা: ত্রিভুজাকৃতির মাথা, স্পষ্ট কানের ছিদ্র, চোখের মধ্যে একটি উল্লম্ব ছাত্র।
- শরীর: পাতলা, পেশীবহুল শরীর, স্পষ্ট স্কেল রিজ, বাদামী বা লালচে বাদামী রঙের, গাঢ় বাদামী বা কালো দাগযুক্ত।
- লেজ: ছোট, তীক্ষ্ণ লেজ।
- আকার:
- দৈর্ঘ্য: 60 থেকে 165 সেমি (2 থেকে 5.4 ফুট)
- ওজন: 1.5 থেকে 2.5 কেজি (3.3 থেকে 5.5 পাউন্ড)
বিষ:
- অত্যন্ত বিষাক্ত, হেমোটক্সিন এবং নিউরোটক্সিন ধারণ করে।
- কামড়ানোর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ব্যথা, ফোলাভাব, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, চোখে রক্তক্ষরণ, ভারসাম্য হারানো, আক্ষেপ এবং মৃত্যু।
- চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যুর হার 50%।
আচরণ:
- স্থলচর, দিনের বেলা সক্রিয়, আক্রমণাত্মক হতে পারে।
- ঘন বন, ঝোপঝাড়, তৃণভূমি, কৃষি জমি, শুষ্ক এলাকা এবং পাহাড়ি এলাকায় বাস করে।
- ইঁদুর, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভয়চর এবং সরীসৃপ খায়।
পরিবেশগত ভূমিকা:
- শিকারী হিসাবে, ইঁদুর এবং অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণীর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- খাদ্য শৃঙ্খলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মানুষের সাথে সম্পর্ক:
- রাসেল ভাইপারের কামড় মানুষের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
- প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় 10,000 মানুষ রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা যায়।
- সতর্কতা অবলম্বন করা এবং সাপ সম্পর্কে সচেতন থাকা রাসেল ভাইপারের কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করার সর্বোত্তম উপায়।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- রাসেল ভাইপার ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশ এবং ফিলিপাইনের কিছু দ্বীপে পাওয়া যায়।
- এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিষাক্ত সাপগুলির মধ্যে একটি।
- রাসেল ভাইপারকে “চন্দ্রবোড়া” বা “উলুবোড়া” নামেও পরিচিত।
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় ?
রাসেল ভাইপার বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত সাপগুলির মধ্যে একটি এবং তাদের কামড় মানুষের জন্য মারাত্মক হতে পারে। কামড়ের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- স্থানীয় ব্যথা, ফোলাভাব এবং লালভাব
- বমি বমি ভাব, বমি
- ডায়রিয়া
- চোখে রক্তক্ষরণ
- ভারসাম্য হারানো
- মৃত্যু
বিষের তীব্রতা নির্ভর করে বিভিন্ন কারণের উপর, যার মধ্যে রয়েছে:
- ইনজেক্ট করা বিষের পরিমাণ
- সাপের আকার
- কামড়ানো ব্যক্তির বয়স ও স্বাস্থ্য
চিকিৎসা না করা হলে, রাসেল ভাইপারের কামড় 50% ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তবে, অ্যান্টিভেনম উপলব্ধ থাকলে, মৃত্যুর হার 1%-এর কাছাকাছি নেমে আসে। বাংলাদেশে, রাসেল ভাইপারের কামড়ে প্রতি বছর প্রায় 10,000 মানুষ মারা যায়।
যদি আপনি মনে করেন যে আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ রাসেল ভাইপার দ্বারা কামড়ানো হয়েছে, তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা নিন।
রাসেল ভাইপার সাপের ইতিহাস
রাসেল ভাইপার সাপের ইতিহাস নিচে দেওয়া হলো-
নামকরণ:
- স্কটিশ সার্জন এবং প্রকৃতিবিদ প্যাট্রিক রাসেলের নামানুসারে রাসেল ভাইপার সাপের নামকরণ করা হয়েছে।
- ১৭৮১ সালে ভারতে এসে তিনি এই অঞ্চলের সাপের উপর গবেষণা শুরু করেন।
- কাতুকা রেকুলা পোদা নামক সাপটি, যা কোবরার পর দ্বিতীয় বেশিরভাগ প্রাণঘাতী ছিল, তিনিই শনাক্ত করেছিলেন।
- এই সাপটিই আজকের রাসেল ভাইপার।
ইতিহাস:
- দক্ষিণ এশিয়ার স্থানীয়
- প্রায় ১৬০ মিলিয়ন বছর আগে বিবর্তিত বলে ধারণা করা হয়।
- ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল, চীন, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃত এলাকায় পাওয়া যায়।
- বিভিন্ন ধরণের আবাসস্থলে বাস করে, যার মধ্যে রয়েছে বন, তৃণভূমি, কৃষিজমি, এমনকি গ্রামাঞ্চল।
গুরুত্ব:
- বিষধর সাপ, যার কামড় মারাত্মক হতে পারে।
- রাসেল ভাইপারের বিষ হিমোটক্সিন, নিউরোটক্সিন এবং মায়োটক্সিনের মিশ্রণ।
- বিষের প্রভাবের মধ্যে রয়েছে তীব্র ব্যথা, ফোলাভাব, রক্তক্ষরণ, টিস্যু মৃত্যু, শ্বাসকষ্ট, পক্ষাঘাত এবং মৃত্যু।
- প্রতি বছর, রাসেল ভাইপারের কামড়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়।
- এশিয়ায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
- খাদ্য শৃঙ্খলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ইঁদুর, frogs, lizards, birds সহ বিভিন্ন ছোট প্রাণী শিকার করে।
সংরক্ষণ:
- আইসিইউএন লাল তালিকায় “কম ঝুঁকিপূর্ণ” হিসেবে তালিকাভুক্ত।
- তবে, বাসস্থান হ্রাস এবং শিকারের কারণে কিছু এলাকায় হুমকির মুখে।
- সংরক্ষণের প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে বাসস্থান ব্যবস্থাপনা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বিষ প্রতিষেধক উন্নয়ন।
বাংলাদেশে:
- রাসেল ভাইপার বাংলাদেশের সবচেয়ে সাধারণ বিষধর সাপের মধ্যে একটি।
- “চন্দ্রবোড়া” নামেও পরিচিত।
- দেশের সকল এলাকায় পাওয়া যায়।
- গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য বিশেষ হুমকি।
- প্রতি বছর, রাসেল ভাইপারের কামড়ে অনেক মানুষ মারা যায়।
রাসেল ভাইপার সাপের ছবি
রাসেল ভাইপার সাপের বংশবিস্তার সম্পর্কে
রাসেল ভাইপার সাপের বংশবিস্তার:
- প্রজনন হার: রাসেল ভাইপার সাপ একবারে 6 থেকে 63 টি বাচ্চা প্রসব করে।
- খাদ্যের প্রাচুর্য: ইঁদুর, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভয়চর এবং সরীসৃপের মতো তাদের প্রিয় শিকারের প্রাচুর্য রয়েছে।
- আবাসস্থলের উপলব্ধতা: ঘন বন, ঝোপঝাড়, তৃণভূমি, কৃষি জমি, শুষ্ক এলাকা এবং পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন ধরণের আবাসস্থলে বাস করতে সক্ষম।
- কম শিকারী: তাদের খুব কম প্রাকৃতিক শিকারী রয়েছে।
- জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের আবাসস্থল পরিবর্তিত হচ্ছে এবং নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
প্রভাব:
- মানুষের উপর প্রভাব: রাসেল ভাইপারের সংখ্যা বৃদ্ধি মানুষের জন্য হুমকি তৈরি করছে কারণ তাদের কামড় মারাত্মক হতে পারে।
- পরিবেশগত প্রভাব: স্থানীয় খাদ্য শৃঙ্খলে ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
- অর্থনৈতিক প্রভাব: কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতি করতে পারে এবং জনস্বাস্থ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
নিয়ন্ত্রণ:
- সচেতনতা বৃদ্ধি: রাসেল ভাইপার সাপ সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
- আবাসস্থল ব্যবস্থাপনা: তাদের আবাসস্থল ধ্বংস রোধ করা এবং নিয়ন্ত্রণ করা।
- শিকারী পুনরুদ্ধার: তাদের প্রাকৃতিক শিকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
- বিষ নিয়ন্ত্রণ: রাসেল ভাইপারের কামড়ের জন্য অ্যান্টিভেনম আরও সহজলভ্য করা।
উপসংহার:
রাসেল ভাইপার সাপের বংশবিস্তার একটি জটিল সমস্যা যার মানুষ, পরিবেশ এবং অর্থনীতির উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন যার মধ্যে রয়েছে সচেতনতা বৃদ্ধি, আবাসস্থল ব্যবস্থাপনা, শিকারী পুনরুদ্ধার এবং বিষ নিয়ন্ত্রণ।
ট্যাগ : রাসেল ভাইপার সাপ,রাসেল ভাইপার সাপ কোথায় থাকে,রাসেল ভাইপার সাপের ছবি,রাসেল ভাইপার ও পাইথন চেনার উপায়,রাসেলস ভাইপার কতটা বিষাক্ত,রাসেলস ভাইপার উত্তেজিত হলে কি করে,রাসেল ভাইপার সাপ কোন কোন জেলায়,রাসেল ভাইপার সাপের বৈশিষ্ট্য,রাসেল ভাইপার সাপের বংশবিস্তার,রাসেল ভাইপার সাপ কোন দেশের, |