যাকাতের নিসাব
যাকাতের নেসাব বলতে বুঝায় মূলধনের সেই সর্বনিম্ন পরিমাণ যার ওপর শরীয়াত যাকাত ওয়াজিব করে। যে ব্যক্তির কাছে নেসাব পরিমাণ মূলধন থাকবে তাকে সাহেবে নেসাব বলা হয়।
যাকাতের নিসাবের পরিমাণ কত
নিসাবের পরিমাণ : নিসাবের পরিমাণ কমপক্ষে সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমতুল্য সম্পদ বা অর্থ। নগদ অর্থের যাকাত রূপার হিসাবে দেয়া ঐচ্ছিক, স্বর্ণের হিসাবে দেয়া আবশ্যক। ঐ পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ কারো নিকট পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী থাকলে তার উপরে যাকাত ফরজ হয়। যাকাত দিতে হয় সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ সম্পদ। অর্থাৎ ২.৫ %
যাকাতের অন্যতম বুনিয়াদী উদ্দেশ্য হলো অর্থনৈতিক ভারসাম্য সৃষ্টি করা। ধন আবর্তনশীল রাখার জন্যে এবং সমাজের সকল শ্রেণীর সুবিধা ভোগের জন্যে ধনশালী ও পুঁজিপতিদের নিকট থেকে যাকাত নেয়া হয় এবং দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। নবী করীম (স) বলেন : আল্লাহ তায়ালা লোকের ওপর সদকা (যাকাত) ফরয করেছেন। তা নেয়া হবে ধনীদের কাছ থেকে এবং বিলিয়ে দেয়া হবে দুঃস্থদের মধ্যে।-(বুখারী, মুসলিম প্রভৃতি)
শরীয়াতের দৃষ্টিতে ধনী ও সচ্ছল তারা যাদের কাছে নেসাব পরিমাণ মাল মওজুদ থাকে এবং বছর অতীত হওয়ারপরও মওজুদ থাকে। নবীর যমানায় ঐসব লোক ধনী ও সচ্ছল ছিল যাদের কাছে খেজুরের বাগান, সোনা, চাঁদি, গৃহপালিত পশু ছিল এবং শরীয়াত ঐসব জিনিসের একটা বিশিষ্ট পরিমাণ নির্ধারণ করে বলে যে, অন্তত এতটুকু পরিমাণ যার কাছে মওজুদ থাকবে শরীয়াতের দৃষ্টিতে সে সচ্ছল । তার মাল থেকে সদকা আদায় করে সমাজের দুঃস্থদেরকে দেয়া হবে। নবী (স) বলেন, পাঁচ ওয়াসাক ওজনের কম খেজুরের যাকাত নেই। পাঁচ উকিয়ার কম চাঁদির যাকাত নেই এবং পাঁচ উটের কম হলে তার যাকাত নেই-(বুখারী, মুসলিম)। [ওয়াসাক্ ও উকিয়ার জন্যে পরিভাষা দ্রঃ]
স্বর্ণের যাকাতের নিসাব কত
সোনার নেসাব বিশ তালাই মিসকাল যার ওজন পাঁচ তোলা আড়াই মাশা সোনা। যার কাছে এতো ওজনে সোনা হবে এবং তারপর এক বছর অতীত হবে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে। তার কম ওজনের সোনার জন্যে যাকাত দিতে হবে না। এ নেসাবে মাওলানা আবদুস শুকুর সাহেবের গবেষণার ফল (ইলমুল ফেকাহ) যা মাওলানা আবদুল হাই ফিরিংগী মহল্লী সমর্থন করেন। অবশ্য সাধারণত এ ধারণা প্রচলিত আছে যে, সোনার নেসাব সাড়ে সাত তোলা। (বেহেশতী জেওর)
চাঁদির নেসাব দু’শ দিরহাম যার ওজন ছত্রিশ তোলা সারে পাঁচ মাশা চাঁদি হয়। যার কাছে এ পরিমাণ চাঁদি থাকবে এবং তার ওপর এক বছর অতীত হবে তার যাকাত ওয়াজিব। তার কম ওজনের চাঁদির যাকাত ওয়াজিব নয়।
এ নেসাবও মাওলানা আবদুশ শুকুর সাহেবের গবেষণালব্ধ (ইলমুল ফেকাহ দ্রঃ)। মাওলানা আবদুল হাই ফিরিংগী মহল্লীর গবেষণাও তাই। অবশ্যি কিছু আলেমের মতে চাঁদির নেসাব সাড়ে বায়ান্ন তোলা। এটাই অধিক প্রচলিত।
আরো পড়ুন :
যাকাত ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি
যে সব সম্পদের যাকাত দিতে হয় না
ট্যাগ সমূহ : যাকাতের নিসাব,যাকাতের নিসাব কি,যাকাতের নিসাব পরিমাণ কত,যাকাতের নিসাব বলতে কি বুঝায়,স্বর্ণের যাকাতের নিসাব কত,যাকাতের নিসাব কত,যাকাতের নিসাব কাকে বলে,সোনা ও চাঁদির নিসাব |