মুদ্রা ও নোটের যাকাত এর পরিমাণ

মুদ্রা ও নোটের যাকাত, টাকার যাকাত,পয়সার যাকাত,নোটের যাকাত,মুদ্রার যাকাত

মুদ্রা ও নোটের যাকাত

সরকারী মুদ্রা, যে কোনো ধাতুর হোক না কেন এবং কাগজের নোট প্রভৃতির যাকাত ওয়াজিব। তাদের মূল্য তাদের ধাতব দ্রব্য অথবা কাগজ হওয়ার কারণে নয় বরং তাদের ক্রয় ক্ষমতার জন্যে যা আইনত তাদের মধ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে। যার কারণে তা সোনা-চাঁদির স্থলাভিষিক্ত। অতএব যার কাছে ৩৬ তোলা ৫.৫ মাশা চাঁদির মূল্য মুদ্রা অথবা নোটের আকারে থাকবে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে। যে মুদ্রার বাজারে প্রচলন নেই, অথবা খারাপ হয়ে গিয়েছে অথবা সরকার উঠিয়ে নিয়েছে—তার মধ্যে যদি কিছু পরিমাণে সোনা চাঁদি থাকে, তাহলে চাঁদি বা সোনার পরিমাণ অনুযায়ী তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে।

বিদেশী মুদ্রা যদি নিজ দেশে সহজেই আপন মুদ্রার সাথে বদল করা যায় তাহলে তার হুকুম নগদ মূল্যের মতো। যদি বদল করা না যায় তাহলে তার ওপর যাকাত এ অবস্থায় ওয়াজিব হবে যদি তার মধ্যে নেসাব পরিমাণ সোনা চাঁদি থাকে। সোনা চাঁদি না থাকলে যাকাত ওয়াজিব হবে না।

নিসাব পরিমাণ রূপার মূল্যকে টাকার যাকাতের মানদণ্ড নির্ধারণ করা হলে গরীবদের উপকার হয়। কারণ স্বর্ণ অপেক্ষা রূপার মূল্য কম। তাই রূপার নিসাবে যে পরিমাণ লোকের ওপর যাকাত ওয়াজিব হয়, স্বর্ণের নিসাবে সে পরিমাণ লোকের ওপর যাকাত ওয়াজিব হয় না। অতএব, রূপার নিসাবে যাকাত দানকারীর সংখ্যা বাড়বে, ফলে গরীবরা উপকৃত হবে। তবুও আমরা তাদেরকে তিরস্কার করি না, যারা দ্বিতীয় মতকে গ্রহণ করে স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে যাকাত দিবেন। কারণ, মাসআলাটি আলিমদের মাঝে বিরোধপূর্ণ।

অতএব, মালিক যদি রূপার নিসাবের ভিত্তিতে যাকাত দেয়, প্রথম রূপার বাজার দর জানবে। উদাহরণত ৮০ ক্যারেট রূপার বাজার দর জানবে। কারণ, ৮০ ক্যারেট রূপা মানুষের মাঝে প্রচলিত ও সচরাচর আদান-প্রদান করা হয়, অতঃপর এক গ্রাম রূপার মূল্যকে ৫৯৫ দিয়ে গুণ দিবে, যে অংক আসবে সেটি রূপার নিসাবের মূল্য। এবার দেখবে রূপার নিসাবের মূল্য ও যাকাত দানকারীর স্বর্ণ-রূপার মূল্য ও নগদ অর্থ বরাবর কি না, যদি বরাবর বা তার চেয়ে বেশি হয়, তার ওপর যাকাত ওয়াজিব, অর্থাৎ প্রত্যেক হাজার থেকে পঁচিশ টাকা যাকাত দিবে, যা যাকাত দানকারীর মোট সম্পদের ২.৫%। উদাহরণত কেউ ১০০০০০০০ এক কোটি টাকার মালিক, তার যাকাত হবে: ১০০০০০০০ এর ২.৫% = ২৫০০০০ টাকা। যদি রূপার মূল্যকে মানদণ্ড মানা হয়।

আর যদি স্বর্ণ-রূপা ও নগদ অর্থের যাকাত বের করার সময় দ্বিতীয় ফতোয়া মোতাবেক স্বর্ণের মূল্যকে যাকাতের মানদণ্ড মানা হয়, প্রথম ২১ ক্যারেট স্বর্ণের বাজার দর জানবে। কারণ, এই ক্যারেট স্বর্ণ সবার নিকট পরিচিত ও সচরাচর আদান-প্রদান করা হয়, অতঃপর একগ্রাম স্বর্ণের মূল্যকে ৮৫ দিয়ে গুণ দিবে, গুণফল ৮৫ গ্রাম স্বর্ণের বাজার মূল্য, যা স্বর্ণের নিসাব। যদি কারও স্বর্ণ-রূপার মূল্য ও নগদ অর্থ এই পরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়, তার ওপর দ্বিতীয় ফতোয়া মোতাবেকও যাকাত ওয়াজিব হবে, অর্থাৎ প্রতি হাজার থেকে পঁচিশ টাকা যাকাত দিবে। যেমন পূর্বে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন :

জাকাত কি ?

যাকাতের নিসাব কি

যাদের উপর যাকাত ফরজ

যাকাত দেওয়ার নিয়ম কানুন

যাকাতের গুরুত্ব

স্বর্ণের যাকাতের নিসাব কত

যাকাত ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি

যাকাত আদায় সহীহ হওয়ার শর্ত

যে সব সম্পদের যাকাত দিতে হয় না

ট্যাগ সমূহ : মুদ্রা ও নোটের যাকাত, টাকার যাকাত,পয়সার যাকাত,নোটের যাকাত,মুদ্রার যাকাত,মুদ্রা ও নোটের যাকাত এর পরিমাণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top