প্রশ্ন: মানুষের স্বাস্থ্যের উপর আর্সেনিকের ত্বক সংক্রান্ত প্রভাব লেখ।
উত্তর : গৃহীত আর্সেনিক প্রধানত মানবদেহে ত্বক, নখ এবং চুলে সঞ্চিত থাকে। এই কারণে আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় ত্বক সংক্রান্ত প্রভাব অন্যান্য অঙ্গতন্ত্রের উপর সৃষ্ট প্রভাব থেকে কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতিসম্পন্ন।
(ক) সূক্ষ্ম প্রভাব :
১. আর্সেনিক কণা বা অ্যারোসল যখনই ত্বকের সংস্পর্শে আসে, ত্বকে তাৎক্ষণিক বিষক্রিয়া অনুভুত হয়। দেহত্বকের সর্বত্র ফুসকুড়ির (rash) আবির্ভাব ঘটে। আর্সেনিকের প্রভাবে ত্বকের অভ্যন্তরে এনজাইমের কার্যকারিতা বিনষ্ট হওয়ার কারণে ত্বকে এ ধরনের রাশের উদ্ভব ঘটে।
২. আর্সেনিকের বাষ্প কিংবা আর্সেনিকযুক্ত কণা মুখ ও চোখের পাতার প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে তীব্র প্রদাহযুক্ত ‘ইরাইথিমা’ সৃষ্টি হয়।
(খ) ক্রনিক প্রভাব
দেহ কর্তৃক দীর্ঘমেয়াদে আর্সেনিক সম্বলিত খাদ্য, পানীয় জল গ্রহণের কারণে ক্রনিক আর্সেনিক সংক্রমণে বিভিন্ন ধরনের ত্বকীয় পরিবর্তন পরিদৃষ্ট হয়। এসব তুর্কীয় প্রতিক্রিয়া বাহ্যিক লক্ষণরূপে প্রকাশ পায়।
১. প্রাথমিকভাবে পরিলক্ষিত ত্বকে রক্তপ্রবাহজনিত রূপান্তরিত হয়। প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট ইরাইথিমেটাস ধীরে ধীরে কেরাটোসিসে রূপান্তরিত হয়।
২. আর্সেনিকের ক্রনিক প্রভাব প্রথমে করতল এবং পায়ের পাতার ত্বকে মাত্রাতিরিক্ত রঞ্জনের সৃষ্টি করে। ত্বকীয় রঞ্জনের আধিক্যের ফলে দেহের বিভিন্ন স্থানে কালচে দাগের উদ্ভব ঘটে। ত্বকের এই অতিরিক্ত রঞ্জন প্রভাব সর্বত্র একইরকম কিংবা অসামঞ্জস্যরূপে হতে পারে।
৩. হাত, পা, বুক এবং মাথার চুল ধীরে ধীরে পড়ে যায়।
৪. হাত এবং পায়ের নখ বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। নখের মধ্যে অসংখ্য সাদা খাঁজের সৃষ্টি হয়। আনুভূমিকভাবে সৃষ্ট এই খাঁজগুলো ‘মিজ রেখা’ নামে পরিচিত।
৫. দেহের যে অংশ সূর্যালোকের জন্য উন্মুক্ত থাকে অংশের ত্বক আর্সেনিক বিষক্রিয়ার প্রভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।
৬. আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার ত্বকের রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে মুখবিবর এবং কাঁধের ত্বকে নীলাভ রক্তোচ্ছ্বাস দেখা দেয় ৷ এই লক্ষণ ‘সায়ানোসিস’ নামে পরিচিত।
আরো পড়ুন : কার্বন ও নাইট্রোজেনের যৌগগুলো কীভাবে বায়ু দূষণের জন্য দায়ী তা ব্যাখ্যা কর।
ট্যাগ :মানুষের স্বাস্থ্যের উপর আর্সেনিকের ত্বক সংক্রান্ত প্রভাব। |