প্রশ্ন: পলিক্লোরিনেটেড বাইফনাইলসমূহ (PCBs) শনাক্তকরণ ও পরিমাণ নির্ণয়ের পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা কর।

পলিক্লোরিনেটেড বাইফনাইলসমূহ (PCBs) শনাক্তকরণ ও পরিমাণ নির্ণয়ের পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা কর।
পলিক্লোরিনেটেড বাইফনাইলসমূহ (PCBs) শনাক্তকরণ

প্রশ্ন: পলিক্লোরিনেটেড বাইফনাইলসমূহ (PCBs) শনাক্তকরণ ও পরিমাণ নির্ণয়ের পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা কর।

উত্তর : 1966 সালে পরিবেশগত নমুনায় PCB এর উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। বর্তমানে যান্ত্রিক পদ্ধতির উৎকর্ষতার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশগত নমুনায় P-C-B এর নির্ণয় সীমা 1 mg/μl পর্যন্ত অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। নমুনায় বিশেষ করে পানিতে PCB শনাক্তকরণ এবং নির্ণয়ের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য যান্ত্রিক বিশ্লেষণীয় পদ্ধতি হচ্ছে গ্যাস তরল ক্রোমাটোগ্রাফি, উচ্চ নৈপুণ্য তরল ক্রোমাটোগ্রাফি, গ্যাস ক্রোমাটাগ্রাফি-ভর বর্ণালিমিতি এবং উচ্চ নৈপুণ্য তরল ক্রোমাটোগ্রাফি ভর বর্ণালিমিতি, HPLC-MS

PCB নির্ণয় পদ্ধতি : প্রথমে পানির নমুনাকে পরিস্রাবণ করতে ভাসমান কণাকে পৃথক করা হয়। পাণিতে দ্রবণীয় PCB-কে ডাইক্লোরোমিথেন দ্বারা পৃথক করা হয়। ভাসমান কণা থেকে PCB নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে টলুইন ব্যবহার করা হয়। নমুনা থেকে PCB এবং পলিঅ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনকে পৃথক করার জন্য কলাম ক্রোমাটোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়।

পৃথককৃত PCB এর নমুনাকে আইসোঅকটেন দ্বারা দ্রবীভূত করে GC, HPLC, GC-MS অথবা, HPLC – MS দ্বারা বিশ্লেষণের উপযোগী করা হয়। নিম্নে গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফিয় পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো। গ্যাস তরল ক্রোমাটোগ্রাফি এক ধরনের পার্টিশন ক্রোমাটোগ্রাফী, যেখানে চলমান দশাটি একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস এবং স্থির দশাটি কঠিন পৃষ্ঠদেশের উপর অধিশোষিত উচ্চ স্ফুটনাঙ্কবিশিষ্ট তরল।

নমুনাকে গ্যাসীয় দশায় অন্তঃক্ষেপ করা হলে নমুনা বাষ্পীভূত হয়ে তরল দশায় (কলামে) প্রবাহিত হয়। স্থির দশায় উপাদানসমূহের আপেক্ষিক আসক্তির উপর নির্ভর করে পৃথকীকরণ সম্পন্ন হয়। নমুনার বাষ্প, কলামের গ্যাস এবং তরল দশায় বিভাজিত হওয়ার কারণে উপাদানসমূহ বিশ্লিষ্ট হয়।

বাহক গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ, কলাম থেকে উপাদানসমূহকে ক্রম বর্ধমান বণ্টনের অনুপাতের ভিত্তিতে বের করে নিয়ে আসে। বাহক গ্যাস হিসেবে Ar, He, N2 বা CO2 ব্যবহৃত হয়। কলামের মধ্যে দিয়ে বাহক গ্যাস প্রবাহিত করে ইল্যুশন সম্পন্ন করা হয় । কলামের অভ্যন্তরে বিভিন্ন উপাদানের অভিবাসন হার স্থির তরল দশায় তাদের দ্রবীভূত হওয়ার প্রবণতার ওপর নির্ভর করে।

স্থির দশায় যেসব উপাদানের নগণ্য দ্রাব্যতা রয়েছে, সেগুলো কলামের ভেতর দিয়ে দ্রুত বেরিয়ে আসে। যেসব উপাদানের বণ্টন সহগ দ্রাবক তরল দশার প্রতি অনুকল, সেগুলো কলাম থেকে নিম্ন গতিতে নিষ্ক্রান্ত হয়। পৃথককৃত উপাদানসমূহ কলামের উপর প্রান্ত দিয়ে নিষ্ক্রান্ত হয়ে শনাক্তকারকে উপনীত হয় । উপাদানসমূহের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ডিটেক্টর ব্যবহৃত হয়। ডিটেক্টর গ্যাসীয় দশায় উপাদানের ঘনমাত্রাকে বৈদ্যুতিক সংকেত পরিণত করে।

সিগন্যালসমূহ রেকর্ডার বা ইন্টিগ্রেটরে লিপিবদ্ধ করা হয়, যাতে করে পৃথককৃত উপাদানসমূহের মাত্রিক বিশ্লেষণ সম্ভবপর হয়। সময়ের বিপরীতে ডিটেক্টর সিগন্যালের অঙ্কিত লেখচিত্রকে ক্রোমাটোগ্রাম বলা হয়। যে বিন্দুতে নমুনা প্রবেশ করানো হয়েছে, সে বিন্দু থেকে প্রতিটি সিগন্যালের চূড়ার মধ্যবিন্দু পর্যন্ত সময়কে এ উপাদানের ধারণ সময় বলা হয়। ধারণ সময় দ্বারা উপাদানের গুণগত বিশ্লেষণ করা হয় এবং চূড়ান্ত উচ্চতা বা মোট ক্ষেত্রফল থেকে পরিমাণগত বিশ্লেষণ করা হয়।

আরো পড়ুন : CFC কি? ওজোন স্তর ক্ষয়ে CFC এর ভূমিকা আলোচনা কর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top