জ্বর কেন হয়
জ্বর কি
জ্বর কোনো ধরনের রোগ নয়। বরং এটাকে রোগের উপসর্গ বলা যেতে পারে। আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করে। বিভিন্ন সময়ে তাপমাত্রা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। নভেল করোনাভাইরাসের অন্যতম প্রধান লক্ষণ জ্বর হওয়া। আবার জ্বর হলেই যে আপনি নতুন ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন, ব্যাপারটি কিন্তু তা নয়। এই জ্বর কখন হয়, কেন হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের নামী চিকিৎসক সারা কায়াত।
সারা লিখেছেন, ‘যে কোনো ইনফেকশনের সময় শরীর যখন আমাদের রক্ষার চেষ্টা করে, তখন জ্বর হয়। এতে সারা দিন শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করে। সাধারণত সকালের দিকে কম থাকে, সন্ধ্যার পর বেড়ে যায়।’
কত তাপমাত্রাকে জ্বর বলে
তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৯.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট উঠলে তাকে জ্বর বলা হয়। শরীরের কোন স্থানে (মুখ/বগল) থার্মোমিটার রেখে মাপছেন সেটির কারণে এই মাত্রার হেরফের হতে পারে।
জ্বরের কারণ
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় জ্বর কোনো রোগ নয়। অন্য রোগের উপসর্গ। ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাসের কোষ প্রাচীর থেকে পাইরোজেন এবং কিছু টক্সিন জাতীয় পদার্থের নিঃসরণের কারণে এই জ্বর হয়। আবার এর পাশাপাশি আমাদের শরীর নির্দিষ্ট কিছু ভাইরাসের এবং ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসলে জ্বর হয়।
পাইরোজেন রক্তে মিশে যায়। এরপর ব্রেনের হাইপোথ্যালামাস এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে পৌঁছে যায়।
জ্বরের উপকারিতা
আগে ধারণা করা হতো জ্বর শুধু শরীরের রোগজীবাণু তাড়ানোর পরিবেশ সৃষ্টি করে, কিন্তু বর্তমান আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে জ্বরের ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও শক্তিশালী হয়।
আরো পড়ুন : প্রাপ্তবয়স্কদের হাঁপানির কারণ কি
শরীরের কোনো কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে ধ্বংস করতে এগিয়ে আসে টি-সেল। এই সেলগুলো জ্বরের কারণে বৃদ্ধি পায়।
জ্বরে ক্ষতি
জ্বর সব সময় আবার উপকারও করে না। অতিরিক্ত তাপমাত্রা আমাদের কোষের ক্ষতি করে। ১০৫.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় অনেক কোষ মরে যায়। এভাবে চলতে থাকলে প্রদাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে যেতে পারে।
নির্দিষ্ট একটি সময় পরে অধিকাংশ রোগী পুরোপুরি সেরে ওঠেন। কিন্তু দীর্ঘদিন তাপমাত্রা বেশি থাকলে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়। এক পর্যায়ে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
জ্বর সারানোর উপায়
ওষুধ ছাড়াই অধিকাংশ সময় জ্বর নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ জন্য ঢিলেঢালা এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখে এমন পোশাক পরা উচিত। একই সঙ্গে প্রচুর তরল পদার্থও পান করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের জুসের পাশাপাশি সেটি পানিও হতে পারে।
এসবে না কমলে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। তবে ডাক্তার না দেখিয়ে এন্টিবায়োটিক কখনোই খাওয়া যাবে না।
ট্যাগ : জ্বর কেন হয়,জ্বর কি,কত তাপমাত্রাকে জ্বর বলে,জ্বরের কারণ,জ্বরের উপকারিতা,জ্বরে ক্ষতি,জ্বর সারানোর উপায় |