প্রশ্ন: কঠিন বর্জ্য কি? কঠিন বর্জ্যের উৎস ও শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।

কঠিন বর্জ্য কি, কঠিন বর্জ্যের উৎস ও শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর,
কঠিন বর্জ্য কি

প্রশ্ন: কঠিন বর্জ্য কি? কঠিন বর্জ্যের উৎস ও শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।

উত্তর : কঠিন বর্জ্যের সংজ্ঞা : যে সকল বর্জ্য পূর্ণ ব্যবহারের অনুপযোগী, পরিত্যক্ত এবং যা খাল, বিল বা নদীতে পরিবহনযোগ্য নয় কিংবা বায়ুমণ্ডলে সহজেই গ্যাসীয় অবস্থায় নির্গমন করা যায় না, সে বর্জ্যগুলোকে কঠিন বর্জ্য বলে। কঠিন বর্জ্যসমূহকে প্রধাত চার শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। নিম্নে কঠিন বর্জ্যের উৎস ও শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ আলোচনা করা হলো :

১. গৃহস্থালি বর্জ্য : গৃহস্থালি বর্জ্য থেকে কঠিন বর্জ্যের এক বিরাট অংশ আসে। গৃহস্থালি বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে তরি-তরকারি, ফলমূলের খোসা, মাছ মাংসের জঞ্জাল, বর্জ্য কাগজ, প্লাস্টিক দ্রব্যাদি ভগ্নাবশেষ, ছেঁড়া কাপড়, পলিথিন ব্যাগ, খাদ্যবিশেষ ইত্যাদি।
২. পৌর বর্জ্য : বাসস্থান, অফিস, হোটেল, বাজার, বিপণিবিতান প্রভৃতি থেকে প্রাপ্ত আবর্জনা ও জঞ্জাল রাস্তাঘাটের পাতা, ঝাড়ু কৃত দ্রব্যাদি নানা প্রকার খাদ্যসামগ্রীর মোড়ক ইত্যাদি পৌর বর্জ্যের অন্তর্ভুক্ত।

৩. শিল্পজাত বর্জ্য : শিল্পজাত কঠিন বর্জ্যকে সাধারণত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় :
(ক) শিল্প প্রক্রিয়া বহির্ভূত বর্জ্য : এ বর্জ্যের মধ্যে শিল্প উৎপাদ বহির্ভূত আবর্জনাসমূহ অন্তর্ভুক্ত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অফিস এবং ক্যাফেটেরিয়া থেকে সৃষ্ট বর্জ্য, প্যাকেটিং সংশ্লিষ্ট বর্জ্য।
(খ) শিল্প প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট বর্জ্য : এ ধরনের বর্জ্যের প্রকৃতি বিভিন্ন শিল্পভেদে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের ওপর নির্ভর করে উদ্ভূত বর্জ্যের বৈশিষ্ট্য।

৪. কৃষিজাত বর্জ্য : কৃষি খামার, পোলট্রি, দুগ্ধ খামার, পশুপালন প্রভৃতি থেকে উৎসারিত বর্জ্য কৃষিজাত বর্জ্যের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও রয়েছে কসাইখানার বর্জ্য, গৃহপালিত পশু থেকে সৃষ্ট বর্জ্য, উদ্ভিদের লতাপাতা ইত্যাদি।

এছাড়া বিশেষ বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন উৎস থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন ক্ষতিকর বর্জ্য :
(ক) পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গবেষণাগার, হাসপাতাল, পরীক্ষাগার প্রভৃতি থেকে উৎসারিত কঠিন বর্জ্য।
(খ) বিভিন্ন টক্সিক পদার্থ থেকে উদ্ভূত বর্জ্য, উদাহরণস্বরূপ, কীটপতঙ্গ, ভারী ধাতুর স্লাজ, ফার্মাসিউটিক্যালস থেকে সৃষ্ট বর্জ্য।
(গ) জীব সম্পর্কিত উৎপাদনসমূহ যেমন- এনজাইম, প্যাথোজেনিক এবং প্যাথোলোজিক্যাল বর্জ্য ইত্যাদি ।
(ঘ) বিভিন্ন প্রকৃতির উৎপাদ যেমন- দাহ্য পদার্থ, ক্ষয়কারী বস্তু, বিস্ফোরক দ্রব্য, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বর্জ্য ইত্যাদি ।

দূষণ উৎসের গুরুত্ব বিচারে পানি ও বায়ুর পর তৃতীয় স্থানে কঠিন বর্জ্য। মানুষের ক্রিয়াকর্মের ফলে কঠিন বর্জ্য সৃষ্টি হয় এবং গৃহ, শিল্প-কারখানা, কৃষিকাজ ও খনি খনন এর প্রধান কয়েকটি উৎস।

আরো পড়ুন: নাইট্রোজেন গঠিত রাসায়নিক সারের ক্ষতিকর প্রভাব আলোচনা কর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top