ওশরের মাসয়ালা বিস্তারিত

ওশরের মাসয়ালা,গুপ্তধন ও খনিজ দ্রব্যাদির মাসয়ালা,ওশরের মাসয়ালা,ওশরের পরিমান,

ওশরের মাসয়ালা

১. ওশর মোট উৎপন্ন ফসলের আদায় করতে হবে। ওশর আদায়ের পর অবশিষ্ট ফসল থেকে কৃষির যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে। যেমন কারো জমিতে ত্রিশ মণ ফসল হলো। এক-দশমাংশ তিন মণ ওশর দেয়ার পর বাকী সাতাশ মণ থেকে কৃষির খরচপত্র বহন করতে হবে।

২. কারো বাগানে ফল হয়েছে। তা পাকার পূর্বে বিক্রি করলে ওশর খরিদদারের ওপর ওয়াজিব হবে। পাকার পর বিক্রি করলে ওশর বিক্রেতার ঘাড়ে পড়বে।

৩. ফসল যখনই ব্যবহারযোগ্য হবে তখনই তার ওপর ওশর ওয়াজিব হবে। যেমন-ছোলা, মটর, আম প্রভৃতির পাকার পূর্বেই ব্যবহার হতে তাকে। অতএব তখন যে পরিমাণ হবে তার ওশর বের করতে হবে। ওশর বের করার পূর্বে তা ব্যবহার করা দুরস্ত নয়।

৪. ওশর ফরয হওয়ার জন্যে নেসাব কোনো শর্ত নয় । ফসল কম হোক বেশী হোক ওশর দিতে হবে। অবশ্য দু আড়াই কিলো পরিমাণ ফসল ধর্তব্যের নয়।

ইমাম আযম ও ইমাম শাফেয়ীর মতে গাঁচ ওয়াসাক (ত্রিশ মণ)-এর কম হলে তার ওপর নেই। আহলে হাদীসের অভিমতও তাই। ওশর কর হওয়ার এ একটি শর্ত যে, উৎপন্ন ফসল অন্তত পাঁচ ওয়াসাক বা ত্রিশ মণ হবে। তার প্রমাণ নিম্ন হাদীস : ليس فيما دون خمسة أوسق صدقة . (بخاری) “পাঁচ ওয়াসাকের কম ফসলের ওপর যাকাত ওয়াজিব নয়।- (বুখারী)

৫. জমিতে যে চাষ করবে ওশর তার ওপরেই ওয়াজিব হবে তা সে জমি ভাড়া নিয়ে চাষ করুক অথবা বর্গা নিয়ে চাষ করুক।

৬. দু’জনে মিলে চাষাবাদ করলে ওশর উভয়ের ওপর ওয়াজিব হবে তা যদি বীজ একজনের হয় তবুও।

৭. বৃষ্টির পানিতে উর্বর জমিতে কৃত্রিম উপায়ে সেচ কার্য করলে তার ওশর নির্ধারণে—এ বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে যে, স্বাভাবিক বর্ষণের কারণে সে জমি অধিক উর্বরতা লাভ করেছে, না সেচের কারণে।

৮. ওশরে বছর পূর্ণ হওয়ার প্রশ্নও নেই। বরঞ্চ যে জমিতে বছরে দু ফসল হয়, তার প্রত্যেক ফসলের ওশর দিতে হবে।

৯. নাবালেগ শিশু ও মাথা খারাপ লোকের ফসলেরও ওশর ওয়াজিব।

১০. ওয়াক্ফ করা জমি চাষ করলে চাষীর ওপর ওশর ওয়াজিব হবে।

১১. জমির খাজনা দিলে ওশর মাফ হয় না।

১২. বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে যেসব জমি মুসলমানদের মালিকানায়আছে, তা ওশরী এবং তার ওশর দিতে হবে।

১৩. ওশর ফসলের আকারেও দেয়া যায় অথবা তার মূল্য।

১৪. জাকাত যেসব খাতে ব্যয় করা হয় তেমনি ভাবে ওশরও সেসব খাতে ব্যয় করতে হবে।

গুপ্তধন ও খনিজ দ্রব্যাদির মাসয়ালা

মাটির নিচে রক্ষিত সম্পদ ও খনিজ দ্রব্যাদির মাসআলা নিচে দেওয়া হলো-
১. মাটির নীচে রক্ষিত প্রাপ্ত সম্পদের পাঁচ ভাগের এক ভাগ বায়তুল মালের জন্য নির্দিষ্ট। হাদীসে আছে, অর্থাৎ গুপ্তধনের এক-পঞ্চমাংশও বায়তুল মালে দেয়া ওয়াজিব।

২. যেসব খনিজ দ্রব্য আগুনে পোড়ালে নরম হয় না যেমন জাওহার ইত্যাদি অথবা তরল পদার্থ যেমন কেরোসিন ও পেট্রোল ইত্যাদি। এসব দ্রব্যে বায়তুলমালের কোনো অংশ নেই।

৩. খনিজ দ্রব্য তা ধাতব পদার্থ হোক যেমন লোহা, রূপা, সোনা, রাং ইত্যাদি; অথবা অধাতব পদার্থ যেমন গন্ধক, এর পাঁচ ভাগের এক ভাগ বায়তুল মালের অংশ। আর বাকী চার ভাগ খনির মালিক পাবে।

আরো পড়ুন :

ওশর শব্দের অর্থ কি

ওশরের বিধান

ওশর কাকে বলে

ওশরের পরিমান

ফসলের ওশর

জাকাত কি ?

যাকাতের নিসাব কি

যাদের উপর যাকাত ফরজ

যাকাত দেওয়ার নিয়ম কানুন

যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

যাকাতের গুরুত্ব

ছাগলের যাকাতের নিসাব

গরুর যাকাতের নিসাব কয়টি

উটের যাকাতের নিসাব কয়টি

গহনা ও অলংকারের যাকাত

স্বর্ণের যাকাতের নিসাব কত

ব্যবসার মালের যাকাত এর পদ্ধতি

যাকাতের বিভিন্ন মাসআলা মাসায়েল

শতকরা কত পার্সেন্ট যাকাত দিতে হয়

কাদের কে যাকাত দেওয়া জায়েয নেই

যাকাত এর গুরুত্ব ও ফজিলত

যাকাত ওয়াজিব হওয়ার শর্ত কি কি

যাকাত আদায় সহীহ হওয়ার শর্ত

যে সব সম্পদের যাকাত দিতে হয় না/

মুদ্রা ও নোটের যাকাত এর পরিমাণ

ট্যাগ সমূহ : ওশরের মাসয়ালা,গুপ্তধন ও খনিজ দ্রব্যাদির মাসয়ালা,ওশরের মাসয়ালা,ওশরের পরিমান,



Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top