আকিদা শব্দের অর্থ কি

 আকিদা শব্দের অর্থ কি,আকীদাহ শব্দের অর্থ কী, আকীদাহ আত-তাওহীদ, আকিদা কি, ইসলামী আকীদাহ, আকিদা বলতে কি বুঝ, সহি আকিদা কি,বিশুদ্ধ আক্বিদা কি,আকিদা অর্থ কি,akida ki, আকিদা মানে কি, আকিদা শব্দের অর্থ কি,  আকিদা অর্থ কি,  আকিদা, আকিদা কাকে বলে, আকিদা কত প্রকার ও কি কি,ইসলামি আকিদা,  ইসলামী আকিদা,  আকিদা কি,আকীদাহ শব্দের অর্থ কী,

আকিদা শব্দের অর্থ কি

অদৃশ্য আল্লাহর একত্ববাদ এবং তাঁর নির্দেশিত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করার নাম ইসলামী আকিদা। নির্ভেজাল ইসলামী আকিদা অর্জন এবং তদনুযায়ী আমল করার মাধ্যমে ইহ-পরকালীন মুক্তি অর্জনই প্রতিটি মুসলিমের পরম লক্ষ্য। নিম্নে এ সম্পর্কিত আলোচনা উপস্থাপন করা হলো-

আকীদাহ এর পরিচিতি :

আকিদা শব্দের অর্থ কি : বিশ্বাস, আস্থা, ধর্মমত, মতাদর্শ।
এছাড়াও এর অর্থ হলো- পরিপূর্ণ করা, পালন করা ইত্যাদি। যেমন, কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে- وَٱلَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَـٰنُكُمْ فَـَٔاتُوهُمْ نَصِيبَهُمْ ۚঅর্থাৎ, যারা তোমাদের সাথে কৃত অঙ্গীকারসমূহ পূরণ করে, তাদেরকে তাদের অধিকার প্রদান কর। (সূরা নিসা, আয়াত : ৩৩)

আকীদাহ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো- Article of faith, Bind, tie, Confidence, Ideology ইত্যাদি ।

আকীদাহ এর পারিভাষিক অর্থ : মানুষ ধর্ম হিসেবে যা গ্রহণ করে, তাকে আকিদা বলা হয়। (বলা হয়) তার ভালো আকিদা আছে, অর্থাৎ তার সন্দেহমুক্ত বিশ্বাস আছে।

অর্থাৎ, এমন এক সত্য যার ওপর মানুষের দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে, যেমন এ সত্য যে, আল্লাহ এক এবং তাঁর সত্তা, গুণাবলী, হুকুক ও এখতিয়ারে তাঁর সাথে কেউ শরীক নেই। এ হলো মুসলমানের আকীদাহ্ ।

ইসলামী আকিদার মূলনীতিসমূহ :

ইসলামী আকিদার মূলনীতি মোটামুটি ছয়টি। যথা-

১. আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস।
২. ফেরেশতাগণের ওপর বিশ্বাস ।
৩. কিতাবসমূহের ওপর বিশ্বাস ।
৪. রাসূলগণের ওপর বিশ্বাস ।
৫. আখেরাতের ওপর বিশ্বাস
৬. তাকদীরের ওপর বিশ্বাস।

ঈমান হলো ১. আল্লাহর ওপর, ২. তাঁর ফেরেশতাগণের ওপর, ৩. তাঁর নাযিলকৃত কিতাবসমূহের ওপর, ৪. তাঁর রাসূলগণের ওপর, ৫. আখেরাতের ওপর এবং ৬. তাকদীরের ভালো বা মন্দের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা।

ইসলামী চিন্তাবিদদের অনেকেই ইসলামী আকিদার গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয় হিসেবে আরো দুটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। তা হলো-
৭. মুজিযাসমূহের ওপর বিশ্বাস ।
৮. মিরাজের ওপর বিশ্বাস ।

ইসলামী আকিদার গুরুত্ব :

ইসলামী আকিদার গুরুত্ব নিম্নে তুলে ধরা হলো-

১. নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর ইবাদত : ইসলামী আকিদা প্রতিটি মুসলিমকে নিরঙ্কুশ ও শিরকমুক্তভাবে আল্লাহর ইবাদত করতে শেখায়। মানুষ সৃষ্টির ব্যাপারে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যও তাই। মহান আল্লাহ এ বিষয়ে ইরশাদ করেন-وما خلقت الجن والإنس إلا ليعبدون ما أريد منهم من رزق وما أريد أن يطعمون.

২. দৃঢ় ঈমান অর্জন : ইসলামী আকিদার অধ্যয়ন মুসলমানদেরকে দৃঢ় ও নির্ভেজাল ঈমানের অধিকারী হতে সহায়তা করে। এর ফলে মানুষ পার্থিব ও পরকালীন জীবনে সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন- فمن يكفر بالطاغوت ويؤمن بالله فقد استمسك بالعروة الوثقى لا انفصام لها.

বস্তুত যে ব্যক্তি নির্ভেজাল ও সুদৃঢ় ঈমানের অধিকারী হয়, সে ব্যক্তি যাবতীয় ভ্রষ্টতা ও বাতিল মত ও পথ থেকে সুরক্ষিত থাকে।

৩. মুসলিম উম্মাহর অখণ্ড ঐক্য অর্জন : নির্ভেজাল ইসলামী আকিদার ফলে মুসলিম উম্মাহর অখণ্ড ঐক্য সৃষ্টি হতে পারে। মুসলিম উম্মাহর চিন্তার পারস্পরিক অবধারণগত বৈসাদৃশ্য (Cognitive dissonance) দ্বন্দ্ব, দর্শনগত পার্থক্য থেকে মুক্ত থাকতে সক্ষম হয়। এর ফলে মুসলমানদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত, বিতর্ক ও হানাহানি দূর হতে পারে। মুসলমানদের জীবন ও সম্পদ পরস্পরের নিকট সম্মানীয় হয়ে ওঠতে পারে। রাসূল (স) এ বিষয়ে বলেন-أمرت أن أقاتل الناس حتى يقولوا لا إله إلا الله فإذا قالواها عصموا مني دمائهم وأموالهم إلا بحقها

৪. পরকালীন শাস্তি থেকে পরিত্রাণ : বিশুদ্ধ ইসলামী আকিদা মানুষকে কেয়ামতের ভয়াবহ শাস্তি থেকে রক্ষা পেতে পথনির্দেশনা প্রদান করে। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে- عن جابر (رض) أن رسول الله (ص) قال من لقي الله لا يشرك شيئا دخل الجنة ومن لقيه يشرك به شيئا دخل النار বস্তুত আকাইদের যথার্থ জ্ঞান ব্যতিরেকে বিবিধ অজ্ঞাত, জ্ঞাত জ্ঞাত শিরক থেকে আত্মরক্ষা করা অসম্ভব।

৫. একত্ববাদের যথার্থ শিক্ষা : আকাইদশাস্ত্র একত্ববাদের যথার্থ শিক্ষা প্রদান করতে সাহায্য করে। এর ফলে মানুষ মহান আল্লাহর সত্তা, গুণাবলির ব্যাপ্তি, তাঁর প্রতি বিশ্বাসের দাবি ইত্যাদি সবিস্তারে জানতে পারে। মানুষ পরোক্ষ প্রত্যক্ষ সম্ভাব্য সকল শিরক থেকে মুক্ত থেকে নিরঙ্কুশভাবে মহান আল্লাহর ইবাদত করতে সক্ষম হয়।

ইসলামের আকিদাগত বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ বর্তমান মুসলিম উম্মাহ । বিশুদ্ধ আকিদা ও অভিন্ন মতাদর্শ অর্জনের লক্ষ্যে আল কুরআন ও হাদীসের ভিত্তিতে ইসলামী আকিদার শাস্ত্র অধ্যয়ন ও বাস্তব জীবনে এর পতিপালন অতীব জরুরি। পৃথিবীতে শান্তি ও সাফল্য এবং পরকালের আযাব থেকে মুক্তি অর্জনের জন্য ইসলামের বিশুদ্ধ আকিদার কোনো বিকল্প নেই।

আরো পড়ুন :

গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি ?

নামাজের ফরজ মোট 13 টি

রোজার ফরজ কয়টি ও কি কি ?

ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি ?

ট্যাগ সমূহ : আকিদা শব্দের অর্থ কি,আকীদাহ শব্দের অর্থ কী, আকীদাহ আত-তাওহীদ, আকিদা কি, ইসলামী আকীদাহ, আকিদা বলতে কি বুঝ, সহি আকিদা কি,বিশুদ্ধ আক্বিদা কি,আকিদা অর্থ কি,akida ki, আকিদা মানে কি, আকিদা শব্দের অর্থ কি, আকিদা অর্থ কি, আকিদা, আকিদা কাকে বলে, আকিদা কত প্রকার ও কি কি,ইসলামি আকিদা, ইসলামী আকিদা, আকিদা কি,আকীদাহ শব্দের অর্থ কী,ইসলামী আকিদার মূলনীতি,ইসলামী আকিদার গুরুত্ব

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top