আদ জাতির ইতিহাস

আদ জাতির ঘটনা,আদ ও সামুদ জাতির ঘটনা,আদ জাতির ইতিহাস,আদ জাতির ছবি,আদ কারা,কওমে আদ জাতি,আদ জাতির ধ্বংসাবশেষ,আদ জাতির ধ্বংসের কারণ,আদ জাতির ইতিহাস,আদ জাতির ধ্বংসাবশেষ, আদ জাতির ধ্বংসের কারণ,আদ জাতির ধ্বংসের ইতিহাস,আদ জাতির ঘটনা,আদ জাতির উচ্চতা,আদ জাতির ছবি,আদ জাতির নবী,
আদ জাতির ঘটনা

আদ জাতির ইতিহাস

আদ সম্প্রদায়ের এক ঊর্ধ্বতন পুরুষের নাম ছিল আদ। আর আদের পিতামহ ছিল ইরাম । তাই এ সম্প্রদায় আদ এবং ইরাম উভয় নামেই পরিচিত ছিল। কুরআনে এদের কিছুটা পরিচয় পাওয়া যায়। প্রত্নবিদ ও ঐতিহাসিকদের মতে, এ জাতি হযরত ঈসা (আ)-এর দু’হাজার বছর পূর্বে আহকাফ নামক স্থানে বসবাস করত। এরা প্রাচীন আরবের একটি গোত্র অথবা হযরত নূহ (আ)-এর পুত্র সাম-এর বংশধর । প্রাচীন আদ সম্প্রদায়কে আদে ইরামও বলা হতো। কারণ সামের পুত্র ইরামের নাম অনুসারে তারা এ নামে পরিচিত হয়েছিল।

তৎকালীন পৃথিবীতে তাদের মতো উন্নত ও শক্তিশালী আর কোনো জাতি ছিল না। এরা অবয়বের দিক দিয়ে অত্যন্ত বৃহদাকার দৈহিক গঠন ও শক্তিসাহসে অন্য সব জাতি থেকে স্বতন্ত্র ছিল । এরা দৈর্ঘ্যে প্রায় ত্রিশ গজের মতো লম্বা ছিল। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) ও মুকাতিল (র) থেকে তাদের উচ্চতা ১২ হাত তথা ১৮ ফুট বর্ণিত আছে।

পবিত্র কুরআনে তাদের সম্পর্কে অত্যন্ত পরিষ্কার ভাষায় উল্লেখ আছে- يُخْلَقُ مِثْلُهَا فِى اليلاد অর্থাৎ, এমন দীর্ঘকায় ও শক্তিশালী জাতি ইতঃপূর্বে সৃজিত হয়নি। কথিত আছে, তাদের একজনে একবারেই একটি উটের গোশত ভক্ষণ করত। এরা ধনসম্পদে সমৃদ্ধ ছিল । উঁচু স্তম্ভের উপর ছাদবিশিষ্ট ইমারত তারাই পৃথিবীতে প্রথম নির্মাণ করেছিল । কারো মতে, কুরআনে ‘যাতুল ইমাদ’ বলে এজন্যই তাদেরকে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ভ্রান্তজাতিকে হেদায়াতের জন্য আল্লাহ তায়ালা হযরত হুদ (আ)-কে তাদের কাছে নবী হিসেবে প্রেরণ করলেন। হযরত হুদ (আ) তাদেরকে শিরক পরিত্যাগ করে আল্লাহর ওপর ঈমান আনার জন্য আহ্বান করলেন। ইহ এবং পরকালে আল্লাহর আযাবের ভয় প্রদর্শন করলেন; কিন্তু ভয়ঙ্কর আদ জাতি নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নিজেদের শক্তি ও সম্পদের গর্বে হযরত হুদ (আ)-কে আযাব এনে দেখাতে বলল ।

তাদের আকাঙ্ক্ষা মোতাবেক হুদ (আ) আল্লাহর কাছে আযাব প্রার্থনা করলেন। শাস্তিস্বরূপ আল্লাহ তাদের ওপর তিন বছর বৃষ্টি বন্ধ রাখলেন। ফলে দেশময় প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ দেখা দিল । তৎকালীন আরবের মধ্যে একটা প্রথা ছিল যে, কোনো বিপদাপদ দেখা দিলে জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকলে মক্কায় আল্লাহর ঘরের নিকট হাজির হয়ে বিপদ মুক্তির জন্য প্রার্থনা করত অথবা কোনো সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক দল লোক পাঠাত, তারা প্রতিনিধি হিসেবে কাবা ঘরের কাছে সমবেত হয়ে সকলের জন্য প্রার্থনা করত। ফলে সকলেই বিপদমুক্ত হতো।

এ জাতির নেতৃস্থানীয় লোকগণও অনাবৃষ্টিজনিত বিপদ মুক্তির জন্য তাদের প্রাচীন রেওয়াজ মতো ফায়ীল ইবনে আনয-এর নেতৃত্বে সত্তর জন লোকের একটি কাফেলা মক্কার উদ্দেশ্যে প্রার্থনার জন্য পাঠাল। তারা কাবা ঘরের নিকটে উপস্থিত হয়ে কাবা ঘরের সেবক মুয়াবিয়া ইবনে বকরের বাড়িতে অতিথি হলো এবং পরদিন কাবার কাছে গমন করে কাকুতি-মিনতি করে বৃষ্টি প্রার্থনা করল। এসময় আকাশে তিন খণ্ড মেঘ দেখা দিল; সাদী কালো ও লাল তিন রঙের । আর অদৃশ্য হতে আওয়াজ আসল, ফায়ীল। এদের মধ্যে যে খণ্ড চাও, গ্রহণ করতে পার।

আনন্দে আত্মহারা হয়ে ফায়ীল বেশি পানির আশায় কালো মেঘ খণ্ডকে পছন্দ করল। মেঘ খণ্ডটি ইয়েমেনের আহকাফ এলাকায় আদ জাতির বসতির উপর গিয়ে থামল । এটা ছিল গজবের মেঘ । সর্বপ্রথম মেহদী নাম্নী এক মহিলা আগুনের লেলিহান শিখা দেখে চিৎকার দিয়ে বলল, হে লোকেরা! তোমরা হুদের প্রতি ঈমান আন নতুবা তোমাদের ধ্বংস অনিবার্য। আগুন সংকেতের পরপরই তাদের ওপর প্রবল ঘূর্ণিঝড় শুরু হলো। অনবরত সাত রাত আট দিনের ভীষণ ঘূর্ণিঝড়ে আদ জাতির বেঈমান লোকেরা এবং তাদের লোকালয় ধ্বং স্তূপে পরিণত হলো; কিন্তু আল্লাহর অসীম দয়ায় হযরত হুদ (আ) ও তাঁর মুমিন সঙ্গীগণ সুস্থ ও অক্ষত থাকলেন, তাঁদের কোনো ক্ষতি হলো না। এভাবেই আল্লাহ তায়ালা জালেম ও পাপাচারী জাতিকে ধ্বংস করে থাকেন ।

মুফাসসিরগণের কেউ কেউ বলেন, ইরাম আদ তনয় শাদ্দাদ নির্মিত বেহেশতের নাম। এর বিশ্লেষণ , কেননা এ অনুপম প্রাসাদটি বহু স্তম্ভের ওপর দণ্ডায়মান এবং স্বর্ণরৌপ্য ও মণিমুক্তা দ্বারা নির্মিত ছিল, যাতে মানুষ পরকালের বেহেশতের পরিবর্তে এ নগদ বেহেশতকে পছন্দ করে নেয় । কিন্তু এ বিরাট প্রাসাদের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর যখন শাদ্দাদ সভাসদ সমভিব্যাহারে এ বেহেশতে প্রবেশ করার ইচ্ছা করল, তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব নাযিল হলো। ফলে সবাই ধ্বংস হলো এবং কৃত্রিম বেহেশতও ধূলিসাৎ হয়ে গেল। এ তাফসীরের দিক দিয়ে আয়াতে আদ গোত্রের একটি বিশেষ আযাব বর্ণিত হয়েছে, যা শাদ্দাদ নির্মিত বেহেশতের ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। প্রথম তাফসীর অনুযায়ী এতে আদ গোত্রের সমস্ত আযাবের কথাই বর্ণিত হয়েছে। (কুরতুবী)

আরো পড়ুন :

ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি ?

গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি ?

সমাজে প্রচলিত কিছু বিদআত

সমাজে প্রচলিত কিছু শিরক

ট্যাগ সমূহ : আদ জাতির ঘটনা,আদ ও সামুদ জাতির ঘটনা,আদ জাতির ইতিহাস,আদ জাতির ছবি,আদ কারা,কওমে আদ জাতি,আদ জাতির ধ্বংসাবশেষ,আদ জাতির ধ্বংসের কারণ,আদ জাতির ইতিহাস,আদ জাতির ধ্বংসাবশেষ, আদ জাতির ধ্বংসের কারণ,আদ জাতির ধ্বংসের ইতিহাস,আদ জাতির ঘটনা,আদ জাতির উচ্চতা,আদ জাতির ছবি,আদ জাতির নবী,আদ জাতির ঘটনা,আদ ও সামুদ জাতির ঘটনা,আদ জাতির ইতিহাস,আদ জাতির ছবি,আদ কারা,কওমে আদ জাতি,আদ জাতির ধ্বংসাবশেষ,আদ জাতির ধ্বংসের কারণ,আদ জাতির ইতিহাস,আদ জাতির ধ্বংসাবশেষ, আদ জাতির ধ্বংসের কারণ,আদ জাতির ধ্বংসের ইতিহাস,আদ জাতির ঘটনা,আদ জাতির উচ্চতা,আদ জাতির ছবি,আদ জাতির নবী

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top