ইমাম আবু হানীফা রহ এর জীবনী

ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু হানীফা (রহ.) কয়জন ছাহাবীর সাক্ষাৎ পান, হাদীস শাস্ত্রে ইমাম আবু হানীফা,  ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-এর জীবনকাল কত, মুসনাদে ইমাম আবু হানীফা রহঃ,ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু হানীফা রহ এর জীবনী, ইমাম আবু হানীফা রহ, ইমাম আবু হানিফার ছাত্র, ইমাম আবু হানিফা pdf,  ইমাম আবু হানিফ,  ইমাম আবু হানিফা রঃ, ইমাম আবু হানিফা বই, ইমাম আবু হানিফা আল্লাহকে দেখেছেন কিনা,  ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহ আলাইহির জীবনী,  was imam abu hanifa a tablee,  imam abu hanifa was a,  was imam abu hanifa a tabieen, imam abu hanifa a sahabi, was imam abu hanifa a sufi, হযরত ইমাম আবু হানিফা,  ইমাম আজম আবু হানিফা,ইমাম আজম আবু হানিফা, ইমামে আজম আবু হানিফা,  ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম বুখারী,  ইমাম আবু হানিফা জীবনী, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আবু হানিফা রাঃ এর জীবনী, ইমাম আবু হানিফা,  হযরত ইমাম আবু হানিফার জীবনী, ইমাম হানিফা রহ,  ইমাম আবু হানিফা রহঃ, ইমাম আবু হানিফা এর আসল নাম কি,  ইমাম আবু হানিফা এর জীবনী, ইমাম আবু হানিফার জীবনী, ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর জীবনী,  imam abu hanifa on beard,  abu hanifa on , imam abu hanifa on muawiya,ইমাম আবু হানীফা রহ এর জীবনী,  আবু হানীফা রহমতুল্লাহি জীবনী,আবু হানিফা, ইমাম আবু হানীফা রহ,  ইমাম আবু হানিফার ছাত্র, imam abu hanifa,  imam abu hanifa books,  imam abu hanifa biography,  imam abu hanifa family tree, imam abu hanifa real name,ইমাম আবু হানীফা (র)-এর জীবনী,

ইমাম আবু হানীফা রহ এর জীবনী

আকাইদ ও ফিকহশাস্ত্রে যাঁরা মুসলিম ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছেন, ইমাম আবু হানীফা নামটি তাঁদের সবার শীর্ষে। তিনি ছিলেন আকাইদ ও ফিকহ জগতের প্রদীপ্ত সূর্য, ইমামুল আইম্মা। যুগের ক্রান্তিলগ্নে যার জন্ম ও জীবনকর্ম ছিল আল্লাহর পক্ষ হতে এক বিশেষ রহমতস্বরূপ। আইম্মায়ে ফোকাহার পথিকৃৎ, মুসলিম উম্মাহর আশীর্বাদ ও ইমামগণের নেতা আবু হানীফা (র) তাঁর কঠোর ত্যাগ, সাধনা ও বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য আকাইদ ও ফিকহশাস্ত্রের ইতিহাসে নন্দিত, আলোচিত ও সমাদৃত হয়ে আছেন। নিম্নে তাঁর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তাঁর রচিত ফিকহুল আকবার গ্রন্থের আলোকে তাঁর আকিদা আলোচিত হলো।

ইমাম আবু হানীফা রহ এর জীবনী

ইমাম আযম আবু হানীফা (র)-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী নিম্নরূপ-

১. নাম ও পরিচিতি : তাঁর নাম নোমান, উপনাম আবু হানীফা, কারো মতে আবু নোমান, উপাধি ইমামুল আযম, পিতার নাম সাবেত, দাদার নাম যাওতা আল কুফী । তাঁর ঊর্ধ্বতন পুরুষ হযরত সালমান ফারেসী (রা)-এর বংশধর ছিলেন।

২. জন্ম : ইমাম আবু হানীফা (র) হিজরী ৮০ সন মোতাবেক ৬৯৯ মতান্তরে ৭০০ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের বিখ্যাত কুফা নগরে জন্মগ্রহণ করেন।

৩. শৈশবকাল : শৈশবেই তাঁর পিতা মারা যান। সন্তানের লালনপালন ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাঁর মা হযরত ইমাম জাফর আস সাদেকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ফলে সেখানেই ইমামের শৈশবকাল অতিবাহিত হয়।

৪. প্রাথমিক জীবন : বাল্যকালে ইমাম আবু হানীফা (র) প্রখর ধীশক্তি ও তীক্ষ্ণ মেধার অধিকারী ছিলেন। তাঁর পিতা তাঁকে হযরত আলী (রা)-এর কাছে দোয়া গ্রহণের জন্য নিয়ে গেলে হযরত আলী (রা) তাঁর জন্য দোয়া করেন। হয়তবা সে দোয়ার বরকতেই তিনি জগদ্বিখ্যাত ইমামের মর্যাদা লাভ করেছেন।

৫. শিক্ষাজীবন : ইমাম আযম বাল্যকালে ও কৈশোরে যথেষ্ট জ্ঞানচর্চা করেন। যৌবনে তিনি বিদ্যা শিক্ষার চেয়ে ব্যবসায়ের প্রতি অধিক অনুরাগী ছিলেন। তিনি কাপড়ের ব্যবসায় করতেন। একদিন ইমাম শাবী (র) বললেন, তোমার মধ্যে প্রতিভা আছে, তুমি আলেমদের সাথে ওঠাবসা কর। এ উপদেশের পর তিনি বিদ্যানুরাগী হন এবং জ্ঞানসিন্ধুর অমূল্য রত্ন অর্জন করেন।

৬. জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় দক্ষতা : ইমাম আবু হানীফা ফিকহশাস্ত্রে অদ্বিতীয় পণ্ডিত ছিলেন। ফিকহশাস্ত্র ছাড়াও ইলমে হাদীস, ইলমে কালাম, ইলমে বালাগাত, ইলমে নাহু, ইলমে সরফ, ইলমে তাফসীর প্রভৃতি বিষয়ে তিনি গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তিনি তৎকালীন শ্রেষ্ঠ ফকীহ ও মুহাদ্দিস হাম্মাদ (র)-এর নিকট সুদীর্ঘ ১৮ বছর হাদীস ও ফিকহশাস্ত্র অধ্যয়ন ও গবেষণা করেন।

৭. ইমামের শিক্ষকমণ্ডলী : ইমাম আবু হানীফা (র) অসংখ্য শিক্ষকের কাছ থেকে জ্ঞানার্জন করেছেন। আবু হাকাম কবীর তাঁর উস্তাদের সংখ্যা চার হাজার বলেছেন। তিনি যেসব মুহাদ্দিস হতে হাদীস অধ্যয়ন করেছেন, তাদের সংখ্যাই ছিল তিন শতাধিক।

৮. তাঁর শিষ্যবৃন্দ : তাঁর থেকে যারা ইলমে ফিকহ ও হাদীসের শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তাদের সংখ্যা অনেক। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন-

ক. আবদুল্লাহ ইবনুল মোবারক (র),
খ. ওকী ইবনুল জাররাহ (র),
গ. ইয়াযিদ ইবনে হারূন (র),
ঘ. কাজী আবু ইউসুফ (র),
ঙ. মুহাম্মদ ইবনে হাসান শায়বানী (র), চ. ইমাম যুফাৱ (র),
ছ. হাম্মাদ ইবনে আবি হানীফা (র),
জ. আবু আসেম (র) প্রমুখ।

৯. সাহাবীদের সাথে সাক্ষাৎ : ইমামের বয়স যখন ১২/১৩ বছর তখন তিনি হযরত আনাস (রা)-এর খেদমতে হাজির হন এবং তার থেকে ইলমে দীনের শিক্ষা লাভ করেন। হযরত আনাস (রা) তাঁর ধীশক্তি ও মেধার পরিচয়ে অত্যন্ত মুগ্ধ হয়ে তাঁর জন্য দোয়াও করেন। ইমাম আযম তিনজন সাহাবী হতে শিক্ষাগ্রহণ করেন। ইবনে খাল্লিকান (র) বলেছেন, তিনি চারজন সাহাবীর যুগ পেয়েছেন; কিন্তু সাক্ষাৎ পাননি। এ চারজন সাহাবী হলেন-

ক. বসরার শাসনকর্তা হযরত আনাস (রা)
খ. কুফার শাসনকর্তা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবি আওফা (রা)
গ. মদিনার শাসনকর্তা হযরত সাহল ইবনে সাদ (রা)
ঘ. মক্কার শাসনকর্তা হযরত আবু তোফায়েল (রা)।

১০. ব্যবসায় বাণিজ্য : পিতার কাপড়ের ব্যবসায়ের মধ্য দিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। নগরে-বন্দরে বিভিন্ন স্থানে তিনি ব্যবসায়ের প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। সে কালে তাঁর সমপর্যায়ের ধনী খুব কমই ছিল। নিজস্ব এ অর্থানুকূল্যের দরুন তিনি সে সময়ে সমাজকল্যাণ ও সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য অর্জন করেন।

১১. শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন : ১২০ হিজরীতে উস্তাদ হাম্মাদ (র) ইন্তেকাল করলে বৃঢ় ইমাম আবু হানীফা (র) তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি তখন বুঝতে পারেন যে, উস্তাদের অপূর্ণ কাজ তাঁকেই সমাপ্ত করতে হবে। আর তাই শিক্ষাদানকে তিনি কর্মজীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন। জীবনের আসল ঠিকানা তিনি এ পেশার মাধ্যমেই পেয়ে যান।

১২. ফিকহ সংকলন : ইমাম আবু হানীফা (র) মাসয়ালার সমাধানকল্পে তাঁর প্রধান চল্লিশজন শিষ্য নিয়ে مجلس تدوين الفقه তথা ফিকহ সম্পাদনা পরিষদ গঠন করেন। তাঁরা সুদীর্ঘ ২২ বছরের অক্লান্ত সাধনায় ৮৩ হাজার মাসয়ালা সংবলিত كتب حنفية নামে একটি বিশাল পাণ্ডুলিপি সম্পাদন করেন।

১৩.বিচারপতির পদ প্রত্যাখ্যান ও কারাবরণ : উমাইয়া খলিফা আল মানসুর তাঁকে কুফার প্রধান বিচারপতির পদ অলঙ্কৃত করার আমন্ত্রণ জানালে তিনি দৃঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেন। এতে খলিফা আল মানসুর তাঁকে কারাগারে বন্দি করেদৈহিক ও মানসিক নির্যাতনে জর্জরিত করে।

১৪. শিক্ষা মজলিস প্রতিষ্ঠা : ইমাম আযম আবু হানীফা (র)-এর সুদক্ষ শিষ্যবর্গ ছিলেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষা প্রচারের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে কুফার প্রতিষ্ঠানটি সর্বাধিক খ্যাত ।

১৫. হানাফী মাযহাব প্রতিষ্ঠা : ইমাম আবু হানীফা (র) সর্বপ্রথম ইলমে ফিকহ সংকলনের মাধ্যমে এবং তা সর্বাধিক যুক্তিযুক্ত ও শক্তিশালী দলীলের ভিত্তিতে স্থাপন করায় দলে দলে লোকজন তাঁর অনুসরণ ও অনুকরণ করতে থাকে। তাঁর মাযহাবের নাম হয় হানাফী মাযহাব। উল্লেখ্য, এ মাযহাব শক্তিশালী ও যুক্তিযুক্ত বলেই বিশ্বের তিনচতুর্থাংশ মুসলমান এ মাযহাবের অনুসারী। ইমাম আবু হানীফা (র) সকল বিষয়কে যুক্তির আলোকে যাচাই করতেন। এজন্য তাঁর মাযহাবের উদ্ভাবিত মাসয়ালাসমূহ কুরআন ও হাদীসের আনুকূল্যের পাশাপাশি যুক্তিনির্ভর বলে বেশি দৃঢ়তা বহন করে।

১৬. ইসলামী উম্মাহর শ্রেষ্ঠতম আইনজ্ঞ : ইমাম আবু হানীফা (র) তীক্ষ্ণ মেধা, অনন্য প্রতিভা, অসাধারণ ধীশক্তি, সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত, দীনের গভীর জ্ঞান, অতুলনীয় বাগ্মিতা ও বিরল গুণাবলির জন্য বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আইনজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।

১৭. ধার্মিকতা : ইমাম আবু হানীফা (র) ছিলেন একাধারে আলেম, মুজতাহিদ, আবেদ, ইমাম এবং মুত্তাকী। ইমাম আবু হামেদ গাযালী বলেন, তিনি অর্ধরাত জেগে মহান আল্লাহর ইবাদত করতেন। কুফার বিচারপতির পদ প্রত্যাখ্যান দ্বারা তাঁর ব্যক্তিত্ব ও তাকওয়ার পরিচয় পাওয়া যায় ।

১৮. গঠন অবয়ব : তিনি ছিলেন সুঠামদেহী অথচ মধ্যম গড়নের। উত্তম চেহারার অধিকারী ও মিষ্টভাষী। কেউ কেউ বলেন, তিনি ছিলেন দীর্ঘকায় ।

১৯. গ্রন্থ রচনা : ইমাম আবু হানীফা (র) আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদাসহ বহু গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে প্রসিদ্ধ কয়েকটি গ্রন্থ হলো-

الفقه الأكبر (١)
الـعـالـم والـمـتـعلـم (٢)
الرسالة إلى عثمان البتي (٣)

الرد على القدرية (٤)
وصية أبي حنيفة (٥)
مسند أبي حنيفة .(٦)

২০. ইন্তেকাল : এ মহামানব সত্যের জয়গান গেয়ে অবশেষে লৌহ শলাকার চার দেয়ালে নির্জন সেলে নির্মম কারাবরণকারী সৈনিক হিসেবে জীবনের শেষ সময় অতিবাহিত করেন। ১৫০ হিজরী মোতাবেক ৭৭০ খ্রিস্টাব্দে খলিফা মানসুর কর্তৃক বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে এ মহান ব্যক্তির জীবনাবসান ঘটে। বাগদাদের খাইযরান নামক স্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

‘ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থের আলোকে আবু হানীফার আকিদা :

ইমাম আযম আবু হানীফা রচিত ফিকহুল আকবার গ্রন্থে আকাইদ সম্পর্কিত কতিপয় বিষয় আলোচিত হয়েছে, যার উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো নিম্নরূপ-

১. ঈমান এবং ঈমানের দাবিদার সম্পর্কে তাঁর অভিমত : বিশ্বাসের দিক থেকে মানুষের তিনটি পর্যায় রয়েছে। যথা-

ক. যে ব্যক্তি অন্তরে ও মুখে আল্লাহ ও তাঁর বিধিবিধানের প্রতি বিশ্বাস করল।

খ. যে ব্যক্তি মুখে মুখে বিশ্বাসের কথা বললেও অন্তরে অবিশ্বাস করল।

গ. যে ব্যক্তি অন্তরে বিশ্বাস করল কিন্তু মুখে অস্বীকার করল।

প্রথমোক্ত ব্যক্তি মহান আল্লাহর সমীপে যেমন মুমিন, তেমনি সৃষ্টির নিকটও মুমিন। দ্বিতীয় ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কাফের কিন্তু মানুষের দৃষ্টিতে মুমিন। কেননা মানুষ অন্তরের অবস্থা জানে না। তৃতীয় ব্যক্তি যথাসম্ভব নিজেকে বাঁচানোর জন্য কুফরী প্রকাশ করছে। আল্লাহর সমীপে সে মুমিন। ইমাম আযম আবু হানীফা (র)-এর মতে, শুধু অন্তরের বিশ্বাসই ঈমান নয়; বরং এর সাথে মুখে স্বীকৃতি প্রদান, আত্মসমর্পণ এবং সন্তুষ্টি প্রকাশ অত্যাবশ্যক ।

২.আমল ঈমানের অংশ নয় : ইমাম আযম আবু হানীফা (র)-এর মতে, আমল ঈমানের অংশ নয়। তবে মুতাযিলা, খারেজী এবং ফকীহ ও মুহাদ্দিসগণের একটি দল আমলকে ঈমানের অংশ মনে করেন।

৩. ঈমানের হ্রাসবৃদ্ধি : ইমাম আযম আবু হানীফা (র) বলেন, ঈমান বাড়েও না এবং কমেও না। তাঁর মতে, আসমান ও যমীনের অধিবাসী, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল উম্মত এবং আম্বিয়ায়ে কেরামের ঈমান এক। আমরা সকলেই তাতে ঈমান রাখি, যাতে নবী রাসূলগণ ঈমান এনেছেন; কিন্তু পূর্ণ ঈমান এবং পূর্ণ আনুগত্যে তাঁরা আমাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।

৪. গুনাহগারদের অবস্থা : ইমাম আযম আবু হানীফা (র)-এর মতে, মুমিন গুনাহগার কাফের নয়। কেননা তার মধ্যে মূল ঈমান বিদ্যমান। কারণ তাঁর মতে, অন্তরের বিশ্বাসের নাম হলো ‘ঈমান’ এবং এতে কোনো হ্রাসবৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। যার ঈমান আছে সে ব্যক্তি আমল না থাকা সত্ত্বেও মুমিন। তবে সে গুনাহগার মুমিনের মধ্যে গণ্য । ইমাম আবু হানীফা (র)-এর দৃষ্টিতে মানুষের তিনটি পর্যায় রয়েছে। যথা-

ক. আম্বিয়ায়ে কেরাম নিঃসন্দেহে জান্নাতী এবং তাঁদের অনুসারীগণ যাদেরকে তাঁরা জান্নাতী মনে করতেন, তাঁরাও জান্নাতী।
খ. মুশরিকরা অকাট্যভাবে জাহান্নামী।
গ. সাধারণ মুমিন, যাদের জান্নাতী কিংবা জাহান্নামী হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু বলা যায় না, আমরা তাদের ব্যাপারে কিছু বলা থেকে বিরত থাকব। এ ব্যাপারে আমরা তাই বলব, যা মহান আল্লাহ স্বয়ং ইরশাদ করেছেন, তাদের মাঝে ভালোমন্দ আমলের সংমিশ্রণ ঘটেছে, হয়তবা আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন।

৫. তাকদীর এবং মানুষের কার্যাবলি : ইমাম আযম আবু হানীফা (র) তাকদীর সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ও চর্চা পরিহার করে চলতেন এবং স্বীয় ভক্ত অনুরক্ত ও শিষ্যদেরকে এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা ও বাকবিতণ্ডা পরিহার করে চলার উপদেশ দিতেন। কেননা তাকদীর সম্পর্কে যে ব্যক্তি যতবেশি গভীর চিন্তা ও অনুসন্ধান করবে, সে ব্যক্তি ততবেশি জটিলতা ও দ্বিধাদ্বন্দ্বে পতিত হবে।

৬. পবিত্র কুরআন অবিনশ্বর মতবাদ : ইমাম আযম আবু হানীফা (র) রচিত ‘আল ফিকহুল আকবার’ গ্রন্থে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কুরআন অপরিবর্তনীয়, এটা নতুনও নয় বা মাখলুকও নয়। যে ব্যক্তি কুরআন মাখলুক ও নতুন কোনো বিষয় অথবা এ দু’ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে, সে কাফের। কুরআন আল্লাহর কালাম, যা কিতাব আকারে লিখিত, অন্তরের মধ্যে রক্ষিত, মুখে উচ্চারিত এবং মহানবী (স)-এর ওপর অবতারিত।

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যার সোনালি আভায় পরিপূর্ণ, মুসলিম জাতির জন্য যিনি ছিলেন মহান আল্লাহর রহমত, যাঁর কল্যাণকর কর্ম আজ কোটি মানবের জীবন চলার পথকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করেছে, সে উজ্জ্বল নক্ষত্র ইমাম আবু হানীফা (র)। যার সাধনার ফল আমাদের জীবন চলার পথের পাথেয়।

আরো পড়ুন :

আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি এর জীবনী

আল্লামা জালালুদ্দীন মহল্লী এর জীবনী

ট্যাগ সমূহ : ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু হানীফা (রহ.) কয়জন ছাহাবীর সাক্ষাৎ পান?, হাদীস শাস্ত্রে ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-এর জীবনকাল কত?, মুসনাদে ইমাম আবু হানীফা রহঃ,ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু হানীফা রহ এর জীবনী, ইমাম আবু হানীফা রহ, ইমাম আবু হানিফার ছাত্র, ইমাম আবু হানিফা pdf, ইমাম আবু হানিফ, ইমাম আবু হানিফা রঃ, ইমাম আবু হানিফা বই, ইমাম আবু হানিফা আল্লাহকে দেখেছেন কিনা, ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহ আলাইহির জীবনী, was imam abu hanifa a tablee, imam abu hanifa was a, was imam abu hanifa a tabieen, imam abu hanifa a sahabi, was imam abu hanifa a sufi, হযরত ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আজম আবু হানিফা,ইমাম আজম আবু হানিফা, ইমামে আজম আবু হানিফা, ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম বুখারী, ইমাম আবু হানিফা জীবনী, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আবু হানিফা রাঃ এর জীবনী, ইমাম আবু হানিফা, হযরত ইমাম আবু হানিফার জীবনী, ইমাম হানিফা রহ, ইমাম আবু হানিফা রহঃ, ইমাম আবু হানিফা এর আসল নাম কি, ইমাম আবু হানিফা এর জীবনী, ইমাম আবু হানিফার জীবনী, ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর জীবনী, imam abu hanifa on beard, abu hanifa on , imam abu hanifa on muawiya,ইমাম আবু হানীফা রহ এর জীবনী, আবু হানীফা রহমতুল্লাহি জীবনী,আবু হানিফা, ইমাম আবু হানীফা রহ, ইমাম আবু হানিফার ছাত্র, imam abu hanifa, imam abu hanifa books, imam abu hanifa biography, imam abu hanifa family tree, imam abu hanifa real name,ইমাম আবু হানীফা (র)-এর জীবনী,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top