দোয়া কবুলের সময় সমূহ

দুআ কবুলের সময়,দোয়া কবুলের সময় ও স্থান,দোয়া কবুলের সময় সমূহ, দোয়া কবুলের সময় কখন,দোয়া কবুলের সময় গুলো,আজানের সময় দোয়া কবুল হয়,ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়,ইকামতের সময় দোয়া কবুল,দোয়া কবুলের উত্তম সময়,দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়,দুআ কবুলের তারিখ,যে সময় দোয়া কবুল হয়,ঋণ শোধ করার দোয়া,দুআ কবুলের দুআ,কোন সময় দোয়া করলে কবুল হয়,কোন সময় দোয়া কবুল হয়,
দোয়া কবুলের সময় সমূহ

দোয়া কবুলের সময় সমূহ

আল্লাহর দরবারে দুআর দরজা সব সময়ই খোলা। তবুও এমন বিশেষ কিছু সময় আছে—যখন দুআ করলে আল্লাহ তা দ্রুত দুআ কবুল করেন। দোয়া কবুলের সময় সমূহ গুলো হলো-

শেষ রাতে : রাতের শেষ অংশে আল্লাহ প্রথম আসমানে নেমে আসেন, আর ডাকতে থাকেন—‘কেউ কি আছ, যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো। কেউ কি আছ—যে আমার নিকট কিছু চাইবে? আমি তার চাওয়া পূরণ করে দেবো!’ সুবহানাল্লাহ! (সহিহ বুখারি : ১১৪৫)

ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে : ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে দুআ করলে আল্লাহ দুআ কবুল করেন। এই সময়টায় আমাদের গল্পগুজব বা খাবার নিয়ে কথাবার্তা না বলে আল্লাহর দরবারে দুআ করা উচিত। (জামে আত-তিরমিজি : ৩৬৬৮)

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে : আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে আল্লাহ দুআ কবুল করেন। তাই এই সময়টাকে আমাদের কাজে লাগানো উচিত। (সুনানে আবু দাউদ : ৫২১)
ধরুন, জোহরের আজান হলো, ইমাম সাহেব এখনও আসেননি। মুসল্লিরা জোহরের সুন্নাহ নামাজ পড়ে বসে আছেন এবং ইমামের জন্য অপেক্ষা করছেন। এই ফাঁকা সময়টা কিন্তু এমনি বসে না থেকে আমরা কাজে লাগাতে পারি; আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে দুআ করতে পারি।

প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে : ‘প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর দুআ কবুল হয়।’ (জামে আত-তিরমিজি : ৩৪৯৯) এই সময়টায় আমাদের দুআ করা উচিত। তবে আমাদের দেশে যেভাবে হয়, সেভাবে না। এভাবে আল্লাহর রাসূল ও সাহাবিগণ দুআ করতেন না। নামাজ শেষে তাড়াহুড়ো না করে ধীরস্থির হয়ে বসে তাসবিহ পড়ুন, তারপর বসে বসে আল্লাহর কাছে দুআ করুন।

সিজদায় : সিজদার দুআ কবুল হয়। বান্দা যখন সিজদায় লুটিয়ে পড়ে, তখন সে মহান আল্লাহ তায়ালার সবচেয়ে নিকটতম অবস্থায় চলে যায়। তাই রাসূল এই বিশেষ মুহূর্তটিকে দুআ করে কাজে লাগাতে বলেছেন। (সহিহ মুসলিম : ৯৭০)

জুমার দিনে : জুমার দিনের একটা মুহূর্ত আছে, যে মুহূর্তে দুআ করলে আল্লাহ কবুল করেন। সেই মুহূর্তটি কখন? এটা নিয়ে অবশ্য স্কলারদের মধ্যে একাধিক মতামত আছে। বেশিরভাগের মত হলো—আসর থেকে মাগরিবের মাঝের সময়। (সুনানে আবু দাউদ : ১০৪৮)

লাইলাতুল কদরের রাতে : লাইলাতুল কদরের রাতে দুআ করলে আল্লাহ দুআ কবুল করেন। আমরা বাংলাদেশে মনে করি, লাইলাতুল কদর মানে শুধু ২৭ রমজান। না, রমজানের শেষ দশ রাতের যেকোনো বিজোড় রাত হলো লাইলাতুল কদর।

বৃষ্টির সময় : বৃষ্টির সময় দুআ কবুল হয়। এই সময় দুআ করলে আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। (সুনানে আবু দাউদ : ২৫৪০)

জমজমের পানি পানের সময় : জমজমের পানি পানের সময় দুআ করলে দুআ কবুল হয় (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩০৬২)। আমাদের দেশের পেক্ষাপটে জমজমের পানি পাওয়া খুবই দুরূহ। যদি কখনো এই পানি পানের সুযোগ পাই, তবে অবশ্যই দুআ কবুলের এই সুযোগটাকে হাতছাড়া করব না। কারণ, যে নেক উদ্দেশ্যে আমরা জমজমের পানি পান করব, সেই উদ্দেশ্য আল্লাহ কবুল করবেন।

আরাফার দিনে : ‘আরাফার দিনে দুআ কবুলের দিন। এই দিন বান্দা যে দুআ করে, আল্লাহ তা কবুল করেন।’ (জামে আত-তিরমিজি : ৩৫৮৫)

জিহাদের ময়দানে : ইসলামের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য মুজাহিদরা যখন দাঁড়িয়ে থাকেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখনকার সেই কঠিন মুহূর্তটা দুআ কবুলের জন্য মোক্ষম সময়। এই সময়টা মুমিনের জন্য সুবর্ণ সুযোগ! (আবু দাউদ : ২৫৪০; ইবনে মাজাহ, হাকিম, সহিহুল-জামি : ৩০৭৯)

রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠলে : রাতে ঘুম ভাঙলে সাধারণত আমরা আবার ঘুমিয়ে পড়ি। তবে কেউ যদি এ সময়টায় আল্লাহর স্মরণ করেন, দুআ করেন, তবে আল্লাহ সেই দুআ কবুল করবেন। (সহিহ বুখারি : ১১৫৪)

অজুর পর : ‘অজু করার পর দুআ করলে তা কবুল হয়।’ (সহিহ মুসলিম : ২৩৪)

কাবার ভেতরে অবস্থানের সময় : কাবার ভেতরে দুআ করলে তা কবুল হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র জায়গা হলো কাবাঘর। এখানে দুআ করলে তা মঞ্জুর হওয়ার সম্ভাবনা যে অনেক—সেটা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই। (মুসলিম : ২/৯৬৮)

জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন : ‘জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন দুআ কবুলের সময়।’ (সহিহ বুখারি : ৯৬৯)

রোগী দেখার সময় : রোগী দেখার সময় দুআ কবুল হয়। নবিজি বলেছেন— ‘রোগীকে বা (দাফনের আগে) লাশ দেখার সময় ভালো কথা বলবে। কারণ, তখন তোমরা যা-ই বলো, ফেরেশতারা আমিন বলেন।’ (সহিহ মুসলিম : ২১২৬)

মৃত্যুর সময় : মৃত্যুর সময় দুআ কবুলের অন্যতম সুযোগ তৈরি হয়। মানুষ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে যাত্রা শুরু করে অসীমের পথে—এমন ঘনঘোর সময়ে আশেপাশে যারা থাকবেন, তাদের গুরুদায়িত্ব হলো—এই মৃত্যুপথযাত্রী লোকটির জন্য সবচেয়ে ভালো ভালো দুআ করা। মৃত্যুর ফেরেশতারা মানুষটির আত্মা বের করে নিতে তখন খুব কাছেই থাকেন। এই মুহূর্তে আমরা যা-ই বলি, তাতেই তাঁরা আমিন বলেন। (মুসলিম, আবু দাউদ, আহমাদ, সহিহুল-জামি : ৭২৬৬)

এবার আপনি কী কী চান—তার একটা তালিকা করুন। তারপর দুআ কবুলের সময়গুলোতে তালিকা ধরে একটা একটা করে দুআ করুন। বিশ্বাসীরা উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কাজটি করে। ‘Don’t work hard, work smart.

আরো পড়ুন :

দুআয় কী চাইব

দোয়ার আদব সমূহ

ট্যাগ সমূহ : দুআ কবুলের সময়,দোয়া কবুলের সময় ও স্থান,দোয়া কবুলের সময় সমূহ, দোয়া কবুলের সময় কখন,দোয়া কবুলের সময় গুলো,আজানের সময় দোয়া কবুল হয়,ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়,ইকামতের সময় দোয়া কবুল,দোয়া কবুলের উত্তম সময়,দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়,দুআ কবুলের তারিখ,যে সময় দোয়া কবুল হয়,ঋণ শোধ করার দোয়া,দুআ কবুলের দুআ,কোন সময় দোয়া করলে কবুল হয়,কোন সময় দোয়া কবুল হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top